তিন বন্ধুর শীতের বিকাল উপভোগ ও আড্ডাবাজি।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


ক্যাম্পিং থেকে ফেরার পর আমরা সবাই যার যার বাড়ি গিয়ে আমি ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। ফেরার সময় কথা হয়েছিল যদি বিকালে শরীর ভালো লাগে তাহলে তিন জনে আড্ডা দিতে বের হবো। তবে আমি যখন বাড়ি ফিরছিলাম তখন মনে হচ্ছিল আজকে বিকালে আর কেউ বাড়ি থেকে বের হবে না। আমি বাড়ি ফিরে যথারীতি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যখন বাড়ি ফিরছিলাম তখন মনে হচ্ছিল বাসায় গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেই ঘুম চলে আসবে। কিন্তু সারারাত জেগে থাকার পরও বাসায় গিয়ে শোয়ার পরে দেখি ঘুম আসছে না। শেষ পর্যন্ত সকাল আটটার দিকে ঘুমিয়ে দশটা সাড়ে দশটার দিকে ঘুম থেকে উঠে গিয়েছিলাম। কিন্তু সারারাত ঘুম না হওয়ার কারণে শরীরের ভেতর কিছুটা অস্বস্তি লাগছিলো।

IMG_20231211_165135.jpg

এর ভেতর দুপুরে বন্ধু রাসেল ফোন দিলো বের হবো কিনা সেটা জিজ্ঞেস করার জন্য। আমি তখন ওকে জানালাম তোরা বের হলে আমার কোন সমস্যা নেই। তখন ঠিক হোলো বিকালে আমরা তিনজন ট্যাপাখোলায় দেখা করবো। বিকাল চারটার দিকে আমি আর রাসেল ট্যাপাখোলায় উপস্থিত হলাম। তবে সেখানে গিয়ে দেখি ফেরদৌস এখনো এসে পৌঁছায়নি। এর ভিতরে আসরের আযান হয়ে গেলে আমি রাসেলকে অপেক্ষা করতে বলে নামাজ পড়তে গেলাম। আমি নামাজ পড়ে আসার কিছুক্ষণ পরে দেখি ফেরদৌস আসছে। আসার পরে তিন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম আমরা নদীর পাড়ের দিকে হাঁটতে যাবো। এই পরিকল্পনা মোতাবেক তিন বন্ধু ধীরেসুস্থে হাঁটতে লাগলাম।


IMG_20231211_165124.jpg

শীতের বিকালে এমনিতেও হাটাহাটি করতে বেশ ভালো লাগে। গরমের দিনে যেমন আপনি অল্প হাঁটাহাঁটি করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। শীতের দিনে তেমনটা হয় না। যাই হোক তিন বন্ধু হাঁটতে হাঁটতে গল্প করছিলাম আর ক্যাম্পিংয়ে আমাদের কি কি সমস্যা হয়েছিল সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হাঁটাহাঁটির ভেতরেই পরবর্তী ক্যাম্পিং নিয়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। তিনজনে একটা বিষয়ে একমত হয়েছিলাম যে এই ছোট তাবু নিয়ে ক্যাম্পিং করা যাবে না। ক্যাম্পিং করতে হলে বড় একটি তাবু কিনতে হবে। তাছাড়া এত কম লোক নিয়েও ক্যাম্পিং করা যাবে না। ক্যাম্পিং করতে হলে আরো বেশি লোকের প্রয়োজন হবে। কারণ লোকজন বেশি হলে সময় কাটাতে সুবিধা হয় আর তাছাড়া ক্যাম্পিং করতে হলে অবশ্যই ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে সবাই একমত হলাম।


IMG_20231211_165231.jpg

হাঁটতে হাঁটতে এক পর্যায়ে রাসেল বলছিল চল একটা জায়গা থেকে চপ খেয়ে আসি। আমাদের এক বন্ধুর বড় একটা ফার্ম রয়েছে। সেই ফার্ম থেকে কিছুটা দূরে একটি ভাজা পড়ার দোকান আছে। দোকানটা একেবারেই গ্রামের সাধারণ দোকানের মতো। কিন্তু সেখানকার মুরগির চপ খুবই মজাদার হয়। তাই রাসেল প্রস্তাব দেয়ার সাথেই আমি আর ফেরদৌস রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেখানে যেতে হলে আমাদেরকে হেটে যেতে হবে। আর আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকে সেই জায়গাটা বেশ খানিকটা দূরে। যাই হোক তিন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম গল্প করতে করতে আমরা সেখানে চলে যাবো। এদিকে প্রায় মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে এসেছে।


IMG_20231211_165220.jpg

মাগরিবের আযান দিয়ে দিলে আমি মাগরিবের নামাজ পড়তে ঢুকলাম। আর ওদেরকে বললাম সেই দোকানের দিকে আগাতে। আমি নামাজ পড়ে এসে ওদের সাথে যোগ দেবো। আমি নামাজ পড়ে এসে আর না হেঁটে একটা অটো রিক্সায় উঠে সেই চপের দোকানে পৌঁছালাম। সেখানে গিয়ে দেখি ফেরদৌস আর রাসেলের ইতিমধ্যে খাওয়া শেষ। তারা আরো কিছু খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। কারণ দোকানদার তখন তার কড়াইতে নতুন চপ দিয়েছে ভাজার জন্য। আমিও সেখানে ঢুকে সিঙ্গারা পুরি আর চপ খেলাম। খাওয়া দাওয়ার এক পর্যায়ে আমরা আলোচনা করতে লাগলাম নতুন একটি রেস্টুরেন্ট নিয়ে। যেটা ফরিদপুরের ট্যাপাখোলা লেকপারে অবস্থিত। অল্প কিছুদিন হলো রেস্টুরেন্টটা চালু হয়েছে। বাঙালিয়ানা রেস্টুরেন্ট সেই রেস্টুরেন্টে ব্যতিক্রমধর্মী কিছু খাবার পাওয়া যায় যেমন চিতই পিঠা হাঁসের মাংস শীত রুটি পায়েস ভেজানো পিঠা খিচুড়ি মুরগির মাংস আরো বেশ কিছু খাবার পাওয়া যায় সেখানে তবে এখন পর্যন্ত সেখান থেকে আমাদের কারোরই খাওয়া হয়নি সেই মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নিলাম এখন সেই রেস্টুরেন্টে খেতে যাব সেই গল্প হবে পরের পর্বে


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

জীবনের একটি বিশেষ অংশ বন্ধু-বান্ধব। তাদের নিয়ে কত শত স্মৃতি রয়েছে। আপনার লেখা পরে সেসব কথা মনে পরে গেলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপনি আপনার এতো সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 7 months ago 

শীতকালের পড়ন্ত বিকেল আসলেই মনোমুগ্ধকর। আর তা যদি হয় নদী বা পুকুরপাড়। আর যদি বন্ধুরা সাথে থাকে, তাহলে কথাই নেই, ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া যায় অনায়াসে। বন্ধুরা মিলে আপনারাও ভালো কাটিয়েছেন,বোঝা যাচ্ছে। ছবি গুলোও সুন্দর হয়েছে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 7 months ago (edited)

ভাইয়া বেশ লাকী পারসোন। যার এমন কিছু বন্ধু আছে, যাদের কাছে গেলে মনটা সত্যিকারের অর্থে বেশ ভালো হয়ে যায় সেতো লাকী পারসোনই। তবে এটা কিন্তু ঠিক রাতে ঘুম না হলে সারাদিন যেন কেমন লাগে। আর আপনাদের শীতের বিকেলের ঘুরাফিরার গল্প পড়ে আমার কিন্তু বেশ ভালো লাগছে, আবার আফসোস ও হচ্ছে। ইস্ আমি যদি এমন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে পারতাম!

 7 months ago 

পরবর্তী ক্যাম্পিং করার সময় অবশ্যই বড় তাঁবু লাগবে এবং ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৫/৬ জন মানুষ হলে খুব ভালো হবে। যাইহোক তিন বন্ধু মিলে নদীর পাড়ে বেশ ভালোই হাঁটাহাঁটি করলেন। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করলাম, একমাত্র আপনি নামাজ পড়তে যান সবসময়, আর আপনার বন্ধুরা নামাজ পড়তে যায় না। আমার বন্ধু বান্ধবদের ও একই অবস্থা। কোথাও গেলে আমি আর এক বন্ধু নামাজ পড়তে যাই,আর কেউ যায় না নামাজ পড়তে। ওদেরকে বললেও যেতে চায় না। যাইহোক বেশ ভালোই ভাজাপোড়া খেলেন আপনারা। শীতকালে ভাজাপোড়া খেতে বেশ ভালোই লাগে। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 67044.89
ETH 3251.74
USDT 1.00
SBD 2.64