আমার বাংলা ব্লগ। ফটোগ্রাফি "ফলের সমাহার"১০% পে-আউট লাজুক খ্যাক এর জন্য।
আর দেরি না করে চলুন যাওয়া আজকের মূল পর্বে।
ফলের সাথে একটা সেলফি নিলাম।
ফটোগ্রাফি - ১ "ফলের দোকান"
বেশ কিছুদিন আগে ঢাকায় গিয়েছিলাম একটা কাজের জন্য। তাই মন চাইলো কিছু ফল কেনার জন্য। ফলের দাম দেখে মাথায় হাত ✋ কিনতে না পেরে একটা সেলফি নিলাম ফলের সাথে,হাহাহা।
মনের কিছু কথা।
তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হলাম ঢাকা যেতে হবে একটা কাজে। তারমধ্যেই ডিউটি চলাকালীন অবস্থায় বেরিয়েছি। সেজন্য টাকাপয়সা তেমন একটা পকেটে ছিল না। তারপরও একবার ছিল না বললেও ভুল হবে হাজার তিন হাজার টাকার মত ছিল। তারপর নিজের কাজকর্ম সেরে আসার সময় তাজা তাজা ফল দেখে দোকানের সামনে একটু এগিয়ে গেলাম দেখি কিছু ফল নেওয়া যায় কিনা। ফলের দাম শুনে মাথায় হাত।
আমি দোকানদারকে বললাম ভাই আপনার কাছ থেকে আমি ফল কিনতে পারব না। তবে যদি অনুমতি দেন একটা সেলফি নেব, তখন লোকটি হেসে বলল কেন ভাই কি হয়েছে। তখন আমি বললাম না কিছু হয়নি। একটা সেলফি নিয়ে পরের ফটোগ্রাফি গুলো করে আমি ওখান থেকে কিছুক্ষণ পায় হাঁটলাম। আমার সাথে বাসএসটান ছিল তারপরও বাসে না উঠে কি যেন ভাবতে-ভাবতে হাঁটা শুরু করলাম।
আমার মনের ভাবনা গুলো ছিল এই, এত মানুষের ভিড়ে লক্ষ লক্ষ হাজার হাজার মানুষ ঢাকা শহরে বসবাস করে। আদৌ কি সম্ভব সবার পক্ষে এত দাম দিয়ে ফল কিনে খাওয়া। মন তো সবারই ছায় দিনশেষে ভালো-মন্দ কিছু না কিছু ঘরে নিয়ে যেতে। বাচ্চাকাচ্চাদের কে নিয়ে ফল ফ্রুট খেতে বা খাওয়াতে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্তে যারা আছে আমার মনে হয় না যে দিনশেষে ১ কেজি ফল নিয়ে ঘরে যেতে পারবে। ১ কেজি ফলের দাম তাতে ওই দাম দিয়ে তার একদিনের সংসার চলে যায় । এ ভাবনাগুলো করতে করতে আমার ক্লান্ত মনে আবার বাসায় ফেরা।
ফটোগ্রাফি - ২ "আমরুজ"
এই ফলটির নাম হচ্ছে আমরুজ। আমরুজ ফল টি কমবেশি আমরা সবাই চিনি। কিন্তু সবাই এ ফলটি খেতে তেমন একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করে না। মানুষের শরীরের জন্য এটা খুবই উপকারী একটা ফল। এটা মানুষের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে। আমরা আগে দেখেছি আমরুজ ফল সাদা। কিন্তু বর্তমানে কয়েক জাতের আমরুজ ফল পাওয়া যায়।তার মধ্যে এটা একটা গাড়ো লাল বর্ণের। দোকান দারকে জিজ্ঞেস করতে বলে ৪০০ টাকা প্রতি কেজি।দাম শুনে আমার চোখ কপালে উঠে গেল।৫০/৬০ টাকা কেজি দরে আমরুজ আর এখন ৪০০ টাকা এটাও কি সম্ভব।
ফটোগ্রাফি - ৩ "পেয়ারা"
এটা হচ্ছে পেয়ারা পেয়ারা। আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী একটা ফল। দাঁতের মাড়ি শক্ত করে এবং দাঁতের দুর্গন্ধ দূর করে এবং পেয়ারাতে মানবদেহের জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভরপুর। সবাই আমরা চিনি এবং সবাই জানি এবং সবারই প্রিয় একটা ফল। যেখানে কেজিপ্রতি আমরা পেয়ারা খেতাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি সেই পেয়ারা যদি ১৫০ টাকা কেজি দরে বলে তখন দোকানদার কে কি করা উচিত।
ফটোগ্রাফি - ৪ "কমলা🍊লেবু"
এটা হচ্ছে কমলা এটাও কেউ না চেনার কথা নয়। কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। মানবদেহের জন্য কমলা গুরুত্ব অপরিসীম ভিটামিন-এ ভরপুর এই কমলা। কমলা আগে আমরা অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনে খাওয়া লাগত। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে কমলা উৎপাদন হয়। কিন্তু মিষ্টিতে একটু ঘাটতি আছে বিধায় এ কমলার চাহিদাটা একটু কম। এই কমলা যেখানে ১২০/১৫০ টাকা কেজি প্রতি আমরা কিনে খাই। বর্তমানে সচরাচর পাওয়া যায় সব জায়গায়। ওই কমলা যদি ২২০ টাকা দরে দাম চায় তখন কেমনডা লাগে বলুন তো । আর বিশেষ করে আমি 🍊 কমলা খেতে পছন্দ করি না। কারণ এটা চিলতে অনেক ঝামেলা এবং কি বিরক্তিকর মনে হয়। আবার যদি কেউ ছিলে দেয় তখন খেতে আবার আলসেমি করি না,হিহিহি।
ফটোগ্রাফি - ৫ "পেঁপে"
এ ফলটির নাম হচ্ছে পেঁপে। এ ফলটি আমাদের বাড়ির আঙিনাতে হয়। কমবেশি সবার বাড়িতে একটা না একটা পেঁপে গাছ থাকে এটা কমন। পেঁপে এমন একটা ফল যেই রোগী কিছু খেতে পারবে না তার জন্য সব কিছু বারন কিন্তু তাকে পেঁপে ফল খেতে নিষেধ করে না। কারণ এই ফলের কোন সাইডএফেক্ট নেই। এটা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। এই ফলে যেই পরিমান ভিটামিন কল্পনা বিহীন। যদিও আমি ব্যাখ্যা করতে পারছিনা এর ভিটামিন সম্পর্কে। এই ফেঁপে জীবনে কেজি দরে কিনে খাই নাই। আর এই পেঁপে কেজি দরে ১৮০ টাকা যদি বিক্রি করে, দোকানদার কে কি করা যায় বলুন তো,হিহিহি।
ফটোগ্রাফি - ৬ "ড্রাগন ফল"
এটা হচ্ছে ড্রাগন ফল, এই ফলটা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। যদিও এই ফলটা আমার বাপ দাদা চৌদ্দগুষ্টি জীবনে চোখে দেখে নাই। কিন্তু আমরা এখন এ ফলের জন্য খুবই পাগল এ ফলটি খুবই সুস্বাদু দামটা একটু বেশি। এই ফলটি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত, এখন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। মানুষ ও এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে এবং কমবেশি সবাই এটা খেতে পছন্দ করে।
ফটোগ্রাফি - ৭ "শালুক"
এটা হচ্ছে শালুক। এই ফলটার শাপলা গাছের শিকড়ের মধ্যে হয়। এই ফলের গুনাগুন সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। তবে মানুষ মুখরোচক হিসেবে এই ফলটি খায়। কিন্তু কথা হচ্ছে যে শালুক মানুষ কিনতে চায় না খেতে আগ্রহ নেই। ওই শালু কেজিপ্রতি যদি ২০০ টাকা হয় । তাহলে বাংলাদেশে থাকার চেয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়াই অনেক ভালো মনে হয়, হিহিহি।
ফটোগ্রাফি - ৮ "আতা ফল"
এ ফলটির নাম হচ্ছে আতা ফল। অন্যান্য ফলের তুলনায় এ ফলটি দিও ভিটামিন-এ ভরপুর। এ ফলটি খুবই সুন্দর দেখতে এবং এ ফলটি খেতে খুবই মিষ্টি এবং বালু বালু একটা ভাব থাকে। এ ফলটি বছরে একবার হয় সিজনাল ফল। কিন্তু এই ফলটার দাম শুনে মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। যেখানে ২০০ টাকা কেজি প্রতি আতাফল খেয়েছি। সেখানে যদি আতা ফলের কেজি সাড়ে ৪৫০০ টাকা হয়, তখন যাদের হার্ট দুর্বল তারা জায়গায় স্ট্রোক করার পর্যায় চলে যায়। এটা হচ্ছে ঢাকা শহর বাংলাদেশের রাজধানীর অবস্থা,হিহিহি।
বন্ধুরা আমি আপনাদের মাঝে কিছু ফলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করলাম। এবং কিছু আলোচনা করলাম। এর মাঝে আমি আমার ভুলটা স্বীকার করে নিচ্ছি এইযে এ বিভিন্ন ধরনের ফলের গুনাগুন এবং ভিটামিন সম্পর্কে কোন ধারণা নেই বিধায় আমি ক্লিয়ার করে বলতে পারেনি। তবুও যতটুকু সম্ভব হয়েছে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করে কমেন্টে জানাবেন। এবং আশা করি সবাই সাথে থাকবেন সাপোর্ট দিবেন আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।
আল্লাহ হাফেজ>>>
ফলের দাম শুনে মাথায় হাত 😄। দারুণ বলেছেন ভাই। কিন্তু কী আর করবেন বলেন সব জিনিসের দাম বেশি। ফল জিনিসটা আমি কিনি আমি জানি কেমন দাম।
আমাদের এলাকায় এই ফলকে জামরুল বলা হয়। আমার খুব পছন্দের। অন্যান্য ফলের ফটোগ্রাফি গুলো ভালো করেছেন। ভালো পোস্ট ছিল।।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আপনার ফলের ছবিগুলো দেখে তো লোভ লেগে যাচ্ছে ।আতাফলটা একসময় খুব খাওয়া হতো। অনেক বছর হলো আতা ফল খাওয়া হয়না। দেখে আবার খেতে ইচ্ছা করছে। তাছাড়া আপনার শালুক ফলটি কখনো খাওয়া হয়নি ।এই প্রথম দেখলাম এই শালুক ফলটি।খেতে কেমন কোন আইডিয়া নেই।
আতাফলের দাম শুনে অবাক হলাম । এই ফলের এত দাম আগে কখনো জানতাম না। যেখানে বাজারের সব জিনিসের দাম বেশি সেখানে ফলের দাম একটু বেশি হবে। আপনার অন্যান্য ফলের দাম গুলো আমার কাছে অনেক বেশি মনে হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই ফলের দাম এরকমই যাচ্ছে বাজারে।
আপু আপনি শালুক বলছিলেন না এটা শাপলা গাছ এবং পদ্মফুল গাছের নিচে হয়। কাছে থাকলে অবশ্যই খাওয়ার সিস্টেম টা দেখায় দিতাম। আপনার এত সুন্দর কমেন্ট সত্যিই আমার খুবই আনন্দ লাগছে আপনার গঠনমূলক কমেন্টে আমাকে মুগ্ধ করেছে। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য আপু।
রবিউল ভাই দেখি ফলের মেলা অনেক রকম ফল দেখলাম আজকে।
ফল সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত এবং খুব সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন আমার অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
বাহ আপনি শীত কালীন সময়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ফলের ফটোগ্রাফিক করেছেন আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে এই অসময়ে পেয়ারার ফটোগ্রাফি টা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এছাড়া আপনি শীতকালীন কিছু ফলের ফটোগ্রাফিও করেছেন দেখছি প্রতিটা ফটোর নীচে অনেক সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য
আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
লেখাটা যখন পড়তে শুরু করলাম বেশ হাসি পাচ্ছিল। তবে পরে নিজেই ভাবতে লাগলাম, রোজ যে বাবা বাজার থেকে এত ফল কিনে আনে। কখনো তো সেগুলোর দাম জানার চেষ্টাও করি নি। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ সবাই খেতে পারবে কিনা সেটাও কখনো ভাবি নি। আজ এই লেখাটা পড়ে অন্যরকম এক অনুভূতি হল। সত্যি অত্যাধিক দাম সব কিছুর। সে তুলনায় মানুষের রোজগার তো বাড়ে নি।
খুব সুন্দর কিছু বিষয় আজ তুলে ধরেছেন। ভালো থাকবেন দাদা।
আপনার হাসির কথা শুনে একটু অবাক হচ্ছি। কারন আমরা যারা ভালোভাবে আছি তারা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের নিয়ে ভাবি না। আবার এইটুকু জেনে খুবই আনন্দিত হলাম যে আপনি আমার পোষ্টের কারনে একটু হলেও অনুভব করছেন যে আসলে গরিব এবং মধ্যবিত্তরা কিভাবে চলে এবং কিভাবে খায়। আপনার গঠনমূলক মন্তব্য জন্য আপনার প্রতি ভালোবাসা অবিরাম। আপনার প্রতি আরও দ্বিগুন বেড়ে গেল ভালোবাসা ভালো থাকবেন দিদি।
আমার মনে হয় যারা এই লেখা পড়েছে তারা শুরুতে হঠাৎ সেলফি তোলার কথা শুনে নিশ্চয় একটু হলেও হেসেছে। কেউ কিনতে পারছে না এই জন্য এই হাসিটা না। আমার পুরো কমেন্ট টা পড়ে যখন মন্তব্য লিখছিলেন তখন বুঝতে পারলে বেশি ভালো লাগতো। ধন্যবাদ
ভাইয়া আপনার পোস্টটা খুবই সুন্দর হয়েছে, প্রতিটা ফলের ছবি ধাপে ধাপে দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। যেটা সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে, লেখা কিছুটা ভুল আছে সেগুলো বুঝে শুধরে নিবেন, আর সব সময় চেষ্টা করবেন উপরের ছবিটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে। ভালো লাগলো।
আপনার পোস্টের উপরের ছবিটি অর্থাৎ কভারের ছবিটি পোস্ট ওপেন না করলে দেখা যাচ্ছেনা। এতে করে পোস্টটি সৌন্দর্য হারাচ্ছে।আপনি মার্ক ডাউনের ক্লাশ গুলো করবেন এবং মার্ক ডাউন ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে দাদার পোস্ট রয়েছে সেগুলো ভালো ভাবে দেখবেন।খুঁজে না পেলে আমাদের জানাবেন। আমি লিংক দিয়ে দিবো।