ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের পুজো -০৮"
প্রতিশ্রুতিমতো চৌদ্দ বছর বনবাস ও এক বছর অজ্ঞাতবাসের পরে পাণ্ডবেরা ফিরে এসে তাঁদের রাজ্য দাবি করলে দুর্যোধন তা এক ফুৎকারে উড়িয়ে দেন । তখন পাণ্ডবেরা সংঘাত এড়ানোর জন্য মাত্র পাঁচটি গ্রাম দাবি করেন । কিন্তু, দুর্যোধন বলে পাঠান - "বিনা যুদ্ধে নাহি দেবো সূচাগ্র মেদিনী" । অর্থাৎ, বিনা যুদ্ধে একটা ছুঁচের আগায় যতটুকু মাটি ওঠে তাও পাণ্ডবদের দেবে না দুর্যোধন । ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে । এই যুদ্ধ শুরুর আগে শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধ থামাবার শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে কৌরব রাজসভাতে ভীষ্ম ও ধৃতরাষ্ট্রের কাছে পান্ডব পক্ষের দূত হিসেবে উপস্থিত হন । কিন্তু, তাঁর এই দৌত্যকার্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় । কৌরব রাজসভা থেকে ফেরার পথে দুর্যোধন শ্রীকৃষ্ণকে বন্দী করেন । পরে অবশ্য, ধৃতরাষ্ট্র, ভীষ্ম ও বিদুরের কঠোর তিরস্কারের মুখে শ্রীকৃষ্ণকে দ্রুত মুক্ত করে দেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
অশোক বনে বন্দিনী সীতা । লঙ্কাধিপতি রাবণ সীতাকে হরণ করে এনে লঙ্কার সব চাইতে সুন্দর বাগান "অশোক বনে" তাঁকে বন্দিনী করে রাখে । রাক্ষসী পরিব্যাপ্ত হয়ে সীতা এখানে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন কবে রাম লঙ্কা আক্রমণ করে রাবণকে মেরে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
ভীষ্মের শরশয্যা । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে মহা বীর ভীষ্মকে যখন কোনোক্রমেই পরাজিত করা যাচ্ছিলো না তখন শ্রীকৃষ্ণের সাথে পাণ্ডবেরা গোপন বৈঠক করেন । এই বৈঠকে আলোচনা করা হয় "ভীষ্ম বধের" । শ্রীকৃষ্ণ জানান ত্রিভুবনে হেনো বীর নেই যে ভীষ্মের হস্তে অস্ত্র থাকাকালীন তাঁকে পরাস্ত করতে পারে । তাহলে উপায় ? শ্রীকৃষ্ণ জানান উপায় একটাই । বিরাট রাজার নপুংসক পুত্র শিখন্ডীকে রথের অগ্রভাগে স্থাপন করে অর্জুনকে যুদ্ধ করতে হবে ভীষ্মের সাথে । কারণ, শ্রীকৃষ্ণ জানতেন যে ভীষ্ম নপুংসক দেখলে অস্ত্র ধারণ করেন না । শেষপর্যন্ত এই কৌশলেই ভীষ্মকে অস্ত্রচ্যুত করে অর্জুন কয়েক শত বাণ নিক্ষেপ করে তাঁকে শর শয্যায় শায়িত করে ফেলেন । অর্জুন ভীষ্মকে এতগুলো বাণে বিদ্ধ করেন যে ভীষ্ম যখন রথ থেকে পড়ে যান তখন মাটি স্পর্শ করতে পারেননি । অসংখ্য তীরের ফলা ভীষ্মের দেহকে ভেদ করে মাটিতে বিদ্ধ হয়ে তাঁর দেহকে শূন্যে শায়িত রাখে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
শ্রীরামের অকালবোধন । শ্রীদূর্গার পুজো উদযাপনের আসল সময় হলো বসন্ত ঋতুতে । তাই তার আর এক নাম বাসন্তী পুজো । রাবণের লঙ্কা ও রাবণের রক্ষাকর্ত্রী ছিলেন স্বয়ং দূর্গা । আর তাই কোনোভাবেই রাবণের পতন সম্ভব হচ্ছিলো না । তখন রাম অশ্বিন মাসে অকালে শ্রীদুর্গা পুজোর আয়োজন করেন । আর এখন বর্তমানে এই সময়টাতেই দূর্গা পুজো হয় । অশ্বিন মাসের অকালে পুজো হয় বলে এই পুজোর আর এক নাম অকাল বোধন । দূর্গা পুজোতে মোট ১০৮ টি নীল পদ্ম লাগে । রাম ১০৮ পদ্মই জোগাড় করে অঞ্জলি দেওয়া শুরু করেন । ঠিক সেই সময় দেবী দূর্গা ছল করে একটি নীল পদ্ম লুকিয়ে ফেলেন । অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে একটা পদ্ম কম পড়ছে দেখে রাম চিন্তায় পড়ে গেলেন । অঞ্জলি দেওয়ার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ এত অল্প সময়ের মধ্যে আর একটি নীল পদ্ম জোগাড় করা সম্ভবপর নয় । পুজো যাতে পন্ড না হয় তাই রাম নিজের চোক তীর মেরে তাঁর একটি চোখ উপড়ে দেবীকে নিবেদন করতে উদ্যত হলেন । রামের দুই চক্ষু ছিল নীল পদ্মের ন্যায়, তাই পদ্মের অভাব নিজের চোখ আহুতি দিয়ে পূরণ করতে চেয়েছিলেন । রামের এতো ভক্তি দেখে অবশেষে দেবী দূর্গা প্রকট হন এবং রাবণ বধে যাতে রাম সক্ষম হন সেই আশীর্বাদ করেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
কুম্ভকর্ণ বধ । রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণ । বিরাট তার দেহ, বিকট তার ক্ষিদে । কুম্ভকর্ণের জন্মের পরে মাত্র একটি দিনেই একটি বনের সমুদয় পশুপাখি মায় মুনি ঋষিদের সুদ্ধ খেয়ে ফেলায় ব্রহ্মা তাকে বর দেন যে কুম্ভকর্ণ ৬ মাস ঘুমিয়ে ১ দিন মাত্র জেগে থাকবে । ওই ১ টি দিন ধরে যা মন চায় পেট ভরে খেয়ে পরের দিন থেকে আবার পরবর্তী ৬ মাসের জন্য নিদ্রা যাবে । ব্রহ্মার এই বর না দিয়ে উপায় ছিল না, নইলে সৃষ্টির সকল প্রাণী কুম্ভকর্ণের উদরে প্রবিষ্ট হবে । রামের সাথে এই বিকট ভয়ানক রাক্ষস কুম্ভকর্ণের মধ্যে এক ঘোরতর যুদ্ধের পরে অবশেষে ব্রহ্মাস্ত্রে রাম কুম্ভকর্ণের মস্তক ছিন্ন করেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। বেশ সুন্দরভাবে ইতিহাস তুলে ধরেছেন।সে সাথে জানতে পারলাম দুর্গাপুজার বিভিন্ন নামও। সে সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন দাদা।অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
দাদা আপনি বাংলাদেশে এসে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। কালকে শুনলাম আপনি হয়তো আবার ইন্ডিয়া ব্যাক করবেন। বাংলাদেশের যে সময়টুকু ছিলেন আশা করি খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন।আজকের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল দাদা। অনেক সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন।
রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণ তো দেখছি পুরোপুরি রাক্ষস। ভাগ্যিস কুম্ভকর্ণ ৬ মাস একটানা ঘুমায়, নয়তো পুরো দুনিয়া খেয়ে শেষ করে ফেলতো। দূর্গা পূজা কেনো এই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়,সেটা বিস্তারিত জানতে পারলাম দাদা এই পোস্টের মাধ্যমে। বরাবরের মতো আজকের ফটোগ্রাফি গুলোও এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। পোস্টটি পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কুম্ভকর্ণ যে ছয় মাস একটানা ঘুমায় এটা আজকে জানতে পারলাম দাদা। এর আগে তো ভাবতাম কুম্ভকর্ণ বোধহয় শুধুমাত্র অলস মানুষকে ডাকা হয়। এখন তো দেখছি কুম্ভকর্ণ একেবারে ছয় মাস একটানা ঘুমিয়ে থাকে। শিকদারবাড়ির পুজোর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো দাদা। সেই সাথে পুরনো অনেক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারলাম। আসলে যে বিষয়গুলো আগে কখনো জানতাম না সে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরে ভালো লেগেছে দাদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মাএ পাঁচটা গ্রামের উপর স্বতন্ত্র অধিকার দিয়ে দিলে হয়তো কুরুক্ষেএের যুদ্ধ টা হতো না। যতদূর জানি ভীষ্ম ইচ্ছা মৃত্যুর বরদান প্রাপ্ত ছিলেন। কিন্তু পান্ডবদের জয়ের পথে সবচাইতে বড় বাঁধা ছিলেন তিনি নিজেই। শেষমেশ তিনি অস্ত্র ত্যাগ করেন শিখন্ডীনির সামনে। এছাড়া অন্য মূর্তিগুলো বেশ চমৎকার ছিল। সবমিলিয়ে দারুণ এককথায় চমৎকার করেছেন ফটোগ্রাফি গোপন দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
বাংলাদেশের দূর্গাপূজো -৮ এ আপনি চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন দাদা।বর্ননার সাথে ফটোগ্রাফি গুলো ভীষণ ভালো লেগেছে। শিকদার বাড়ি পূজো পরিক্রমার বেশ ভালোই আয়োজন করেছেন।ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য।
এটা তো জানা ছিল না। বেশ নতুন একটা তথ্য জানলাম ভাই। এবারের পর্বটিও বেশ ভালোই উপভোগ করলাম ভাই।
সিকদার বাড়ির ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। পুরনো অনেক ইতিহাস জানা ছিল না আপনার পোষ্টের মাধ্যমে সেই ইতিহাসগুলো জানা হয়ে গেল। পুজোর সবকিছু জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি অনেক দারুন ছিল দাদা। ধন্যবাদ সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।