কোলকাতার পুজো - পর্ব ০৮

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

আজকের পুজো প্যান্ডেলের থিমটা আমার কাছে বেশ ইউনিক লেগেছে । দূর্গা পুজোর আয়োজনে সব চাইতে বড় প্রয়োজনীয় জিনিসটা হলো দূর্গা প্রতিমা । আর সেটা পালদের ছাড়া কখনো সম্ভবপর ছিল না । মূর্তি নির্মাণে পালেদের ছাড়া অন্য কাউকে সেখানে ভাবাই যায় না । বাংলার মৃৎ-শিল্পী বলতে সবার আগে আসে পালেদের নাম । এখন যদিও অন্য জাতের মানুষ এই মৃৎ-শিল্পে যোগদান করছে তবুও এখনো ৯০% মৃৎ-শিল্পীই পাল । তাদের মতো এতো নিখুঁতভাবে দ্রুততার সাথে মূর্তি নির্মাণে আর কোনো জাতই পাল্লা দিতে পারে না ।

বাংলায় দূর্গা পুজোর জন্য প্রত্যেক বছর কয়েক লক্ষ দূর্গা প্রতিমা এই পালেরাই নির্মাণ করে থাকেন । সেই পালেদের মূর্তি নির্মাণের ষ্টুডিও হলো এই পুজো প্যান্ডেলের থিম । সেই সাথে গ্রামীণ আবহে দূর্গা ও কালী পুজোর চিত্র অত্যন্ত সুনিপুন আর দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই পুজো প্যান্ডেলে ।

আর সবশেষে বলতে হয় যে এই পুজো প্যান্ডেলে মোট প্রতিমার সংখ্যা ছিল তিনটি তার মধ্যে দু'টি প্রতিমা অসাধারণ হয়েছে । প্রথমটি হলো ছোটবেলায় আগমনীতে বাচ্চাদের শিব-দূর্গা, লক্ষী-সরস্বতী, কার্তিক-গণেশ, সিংহ, অসুর প্রভৃতি সাজার চিত্র । আর দ্বিতীয়টি হলো মূল মাতৃমূর্তি । অপরূপ হয়েছে ব্যতিক্রম ঘরানার এই দূর্গা প্রতিমাটি । প্রতিমার গায়ে এখানে কোনো রং ব্যবহার করা হয়নি । মাটির রংটাই রয়েছে এখানে । সো, বলতেই হবে অরিজিনালিটি আছে এই প্রতিমার ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.17.59_9ae7d343.jpg

"পাল পাড়া মৃৎ-শিল্পী সমিতির" পুজো প্যান্ডেলে ঢোকার প্রধান "প্রবেশ তোরণ" ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ০৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.01_34a52a22.jpg

এটি একটি মডেল ষ্টুডিও । মৃৎ শিল্পীর ষ্টুডিও । এখানেই শিল্পী যাবতীয় মূর্তি নির্মাণ করে থাকেন । কলকাতার কুমোরটুলিতে যেমন আছে এই ধরণের শত শত মৃৎ-শিল্পীর ষ্টুডিও । এই মডেল মৃৎ-শিল্পের শিল্পীর নাম অভয় পাল ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ১০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.00_2fde6ffc.jpg

এই প্রাচীন টিনের ঘরটিও একটা মডেল আর্ট । গ্রামীণ বাড়ি ঘর অধিকাংশই এখন মাটির ঘরের ওপর খড়ের ছাউনি অথবা টিনের ছাউনি । এই রকম একটা গ্রামের বাড়ি তথা পালেদের ষ্টুডিওর একটা ছোট্ট মডেল তৈরী করেছেন শিল্পী গীতা পাল ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.09_8ebbeef4.jpg

এটি একটি গ্রামের দশকর্মা ভান্ডার । তবে আসল নয়, মডেল । অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই, এতো নিখুঁতভাবে তৈরী করা হয়েছে । দশকর্মা ভাণ্ডারে পুজো, শ্রাদ্ধ থেকে শুরু করে সকল পারলৌকিক ও মঙ্গলক্রিয়ার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় । শিল্পী রাখাল পাল ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.02_be3a4be3.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.08_51e1e299.jpg

রক্ষাকালী ও শনিদেবতার মূর্তি পাশাপাশি রেখে পুজো করার প্রচলন অত্যন্ত প্রাচীন । গ্রাম-গঞ্জ-শহরের প্রায় সর্বত্রই কালী ও শনি মন্দির রয়েছে । এই থিমটির শিল্পী রুদ্র পাল ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ২০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.04_e38a9e9c.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.05_9c25b3e3.jpg

এক জন মৃৎ-শিল্পীর ষ্টুডিওর ভেতরকার দৃশ্য । এটি মূলতঃ ষ্টুডিও সংলগ্ন বাসস্থান । নেতাজির মূর্তি দেখা যাচ্ছে । সেই সাথে রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ সহ অনেক মনীষীর চিত্র দেখা যাচ্ছে ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ২৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.08_401122c1.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.06_960b03cd.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.04_e59f7028.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.03_f5d34d05.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.07_51ebc689.jpg

এটি শিল্পী গোরাচাঁদ পালের তৈরী আগমনী থিম । আগমনীতে গাঁয়ের ছোট ছোট বাচ্চারা শিব-দূর্গা, লক্ষী-সরস্বতী, কার্তিক-গণেশ, অসুর-সিংহ প্রভৃতি সেজে দূর্গা দূর্গা খেলা খেলতো । খেলার শেষে দূর্গা মহিষাসুরকে বধ করতো । পুরোনো সে সব সোনা ঝরা দিনের একটি দৃশ্য তুলে আনা হয়েছে এই প্যান্ডেলে ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ৩৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.10_849ebd95.jpg

WhatsApp Image 2023-10-27 at 17.18.10_cdf894b9.jpg

মহিষাসুর মর্দ্দিনী । ব্যতিক্রম ঘরানার মূর্তি এটি । মূর্তির গায়ে কোনো রং ব্যবহার করা হয়নি । কাঁচা মাটি শুকোনোর পরে শুধু হালকা করে পাতলা খড়িমাটি জলে গুলি লেপন করা হয়েছে । মূর্তির গায়ের রং তাই কাঁচা মাটির রং । দারুন হয়েছে দেবী প্রতিমা ।
তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : রাত ১২ টা ৪০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ



------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৪৩৭ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : f4469f4731e93039ea3b5e005aad50f29e61f34860c9e750b85da1fef11a8cde

টাস্ক ৪৩৭ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  

Hi guys, for those of you interested in earning money by simply writing articles, do check out my article:
https://vocal.media/motivation/how-to-make-money-by-writing?via=thewriterstavern

If you are interested in boosting your earnings by joining challenges on vocal(Which can pay up to $700USD for first place!), do upgrade your membership here!
https://vocal.media/vocal-plus?via=thewriterstavern

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

পালদের ঐতিহ্য তাহলে বেশ পুরনো দাদা। পাল বলতে আমি বুঝতাম যারা পালকিতে করে বউকে নিয়ে যায়। তবে পাল সম্প্রদায় যে চমৎকার প্রতিমা তৈরি করে এটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। বিশেষ করে তাদের স্টুডিও এর সামনের ডিজাইনটাও দারুণ একদম, লাইটিং সহ চমৎকার লাগছে দেখতে।

 8 months ago 

পালকিতে করে যারা বৌ নিয়ে যায় তাদেরকে বলে বেহারা । আর পাল বলে কুমোরদের । কুমোর চেনেন তো ? যারা মাটি দিয়ে মূর্তি, পুতুল, হাঁড়ি, কলসি, বাসন-কোসন তৈরী করে ।

 8 months ago 

জি দাদা একদম চিনতে পেরেছি। প্যাচ লাগিয়ে দিয়েছিলাম তাহলে পাল আর বেহারাদের মধ্যে

 8 months ago 

অনেক পুরানো ঐতিহ্য নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন। সত্যি দাদা আপনার পোস্ট না পড়লে হয়তো জানতে পারতাম পালদের ঐতিহ্য অনেক পুরানো। মৃৎ-শিল্পীর ষ্টুডিওর ভেতরকার দৃশ্য দেখে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি মাটির জিনিসের তুলনা হয় না। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

পালদের পুরনো ঐতিহ্য আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। যা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। পুজো প্যান্ডেলের প্রতিমার সংখ্যা ছিল তিনটি তার মধ্যে দুটি প্রতিমা অসাধারণ লেগেছে দাদা আপনার জেনে ভালো লাগলো। যারা প্রতিমা গুলো তৈরি করেন তারা এত নিখুঁতভাবে তৈরি করেন সত্যিই প্রশংসনীয়। মৃৎশিল্পীরা কত নিখুঁতভাবে সবকিছু তৈরি করেন। মাটির তৈরির ঘরগুলো আসলেই সুন্দর লাগে। দাদা আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 8 months ago 

হুম দাদা ছেলেবেলায় কোন বইতে যেন এই বিষয়টি পড়েছিলাম। আর পালেরাই যে এত সুন্দর মূর্তি বানায় সেটাও জেনেছিলাম। আজ আপনার পোস্টের মাধম্যে সেই কথাগুলোই আবার মনে পড়ে গেল। দারুন কিছু ফটোগ্রাফিও করেছেন দেখছি। আপনার আজকের ফটোগ্রাফি দেখেও কিন্তু মুগ্ধ হলাম দাদা। ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

আসলেই পাল দের ক্রিয়েটিভিটির প্রশংসা করতেই হয়। কারণ তারা এতো নিখুঁতভাবে প্রতিমা গুলো তৈরি করে, যা সত্যিই বেশ প্রশংসনীয়। যাইহোক পাল পাড়া মৃৎ-শিল্পী সমিতির পূজা প্যান্ডেলে ঢোকার প্রধান প্রবেশ তোরণ এবং স্টুডিও দেখে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। কতো নিখুঁতভাবে তৈরি করেছে সবকিছু। মাটির তৈরি ঘর দেখতে আসলেই খুব সুন্দর লাগে। দাদা সবমিলিয়ে বেশ উপভোগ করলাম সম্পূর্ণ পোস্টটি। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

আপনার আজকের শেয়ার করা পুজো পর্বের অষ্টম তম পর্ব অসাধারণ ভালো লেগেছে। এই ফটোগ্রাফির মাধ্যমে গ্রামের অনেক সুন্দর সুন্দর ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়া গেছে। যেগুলো মাটির তৈরি ঘর টিনের ছাউনি। এছাড়াও রয়েছে বাঁশের তৈরি ঘর। আপনি দাদা পালদের নিয়ে অনেক তথ্য দিলেন। এই পর্বের থিম গুলো অসাধারণ ছিল। আপনি বিস্তারিত শেয়ার করলেন অনেক ভালো লেগেছে দেখে।

 8 months ago 

আশা করি শ্রদ্ধেয় দাদা ভালো আছেন। কোলকাতার পুজো আজকের পর্ব দেখে খুব ভালো লাগলো। পালদের নিপুন হাতে তৈরি করা প্রতিমা গুলো দেখতে খুবই চমৎকার। তারা খুব যত্নসহ কারে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে বিভিন্ন রকমের প্রতিমা তৈরি করে থাকে যা সত্যি খুবই অসাধারণ। পালদের হাতের কাজের প্রশংসা করতে হয়। শ্রদ্ধেয় দাদা আপনার বিভিন্ন রকমের প্রতিমার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। মৃৎ শিল্পীর ষ্টুডিও বেশ অসাধারণ ‌। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

এই পুজোর থিমটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে ভাই, একদম পুরনো ঐতিহ্যকে যেন তুলে ধরা হয়েছে বর্তমান সময়ে। এক কথায় অসাধারণ।

শুভেচ্ছা রইল ভাই 🙏

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 67050.87
ETH 3252.29
USDT 1.00
SBD 2.64