বর্তির বিলে একদিন - পর্ব : ০৩

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

বিলের মাঝামাঝি একটা স্থানে খালের উপর একটা ব্রীজ রয়েছে । মাত্র পনেরো ফিটের এই ছোট্ট ব্রীজের নাম লাল ব্রীজ । ব্রীজ থেকে খালটা দারুন সুন্দর লাগে দেখতে । ব্রীজের পাশে একটা ঝাঁকড়া কুল-বড়োই গাছ আছে । ছোট্ট ছোট্ট কুল এসে গিয়েছে দেখলাম গাছে এরই মধ্যে । ব্রীজের দক্ষিণ দিকে জেলেদের টং ঘর আর খালের জলে জাল পাতা রয়েছে । উত্তর দিকে একটা ছোট্ট চায়ের দোকান আছে । এই দোকানে মাটির ভাঁড়ে চা-কফি আর স্ন্যাক্স পাওয়া যায় । এই দোকানদারের নিজস্ব বোটিং সার্ভিস আছে । খালের জলে নৌকো ভাড়া করে ঘোরা যায় খুশিমতো ।

আমরা সবাই মিলে এই চায়ের দোকানে মাটির ভাঁড়ে চা খেলাম । আর ক্রিম রোল । এরপরে উত্তর দিকে বাইক ছোটালাম । এই দিকে দেখলাম অসংখ্য পেঁয়াজের ক্ষেত করেছে কৃষকেরা । বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়ে একটা নির্মীয়মান পিকনিক স্পটের খোঁজ পেলাম । এই বিল এখন আর আগের সেই বিল নেই । আমরা আগে যখন এখানে আসতাম তখন কেউই আসতো না এখানে । এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে বর্তির বিলে । আগে রাস্তা দুর্গম ছিল । এখন চওড়া রাস্তা হয়েছে । বড় চার চাকা অব্দি ঢুকে যায় ।

আগে যেখানে কৃষকেরা ছাড়া কেউ থাকতো না এখন সেখানে বড় বড় তিন-চারটে রেস্টুরেন্ট খুলে ফেলেছে । চায়ের দোকান হয়েছে । পিকনিক স্পট হয়েছে । গাড়ি করে মানুষ পিকনিক স্পট আর রেস্টুরেন্টে আসছে । নির্জনতার সেই শান্ত স্নিগ্ধ রূপটা তাই এখন দিন দিন মলিন হয়ে যাচ্ছে ।

সূর্য ডোবার ঠিক আগের মুহূর্তে আমরা বর্তির বিল ত্যাগ করলাম । এরপরে বর্তির বিল থেকে হাফ কিলোমিটার দূরের বর্তির হাটে এসে সিঙ্গাড়া, আলুর চপ আর বেগুনি খেলাম তিনজনে মিলে । তারপরে বিলের টাটকা মাছ কিনলাম অনেক । খলসে, পুঁটি, মৌরালা আর দেশি কৈ কিনলাম । তারপরে, বর্তির বিলের ক্ষেতের টাটকা শাক সবজি কিনলাম ব্যাগ ভর্তি করে । এরপরে বাইক স্টার্ট দিলাম বাড়ির পথে । সূর্য তখন ডুবে গিয়েছে । ঠান্ডা কনকনে শীতের মধ্যে দিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে বাড়ির দিকে ছুট লাগলাম আমরা । পেছনে পড়ে রইলো শীতের কুয়াশামাখা বিষণ্ণ একাকী বর্তির বিল । জোৎস্নার ঘোলাটে আলো তখন তার খালের জলে পড়ে চিক চিক করছে ।


অনেকগুলি জেলে ডিঙি নৌকা এভাবে বাঁধা ছিল বর্তির খালে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


জেলেদের টং ঘর । খালের জলে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


গোধূলি বেলায় কিষাণেরা মাঠ থেকে গরু নিয়ে ঘরে ফিরছে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৫০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এই রঙিন ডিঙি নৌকো গুলো হলো বোটিং সার্ভিসের নৌকা । নির্দিষ্ট ভাড়ায় এই নৌকোগুলো করে খালের জলে ঘোরা যায় ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৫০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এই সেই জেলেদের বেসাতি জাল । একে বেসান জাল ও বলা হয় অঞ্চলভেদে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৫০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


খালের পারের ছোট্ট চায়ের দোকানে বসে ভাঁড়ে করে গরম চায়ে চুমুক দিতে সেই মজা ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৫ টা ০০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


মাঠের মধ্যে সূর্য অস্ত যেতে বসেছে । আমরাও ফেরার পথ ধরলাম ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৫ টা ২০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৪৪৩ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 7b37da0c2b2258f166b46d66b9546c35f7c36897864d7dd9e258cc1142d609ea

টাস্ক ৪৪৩ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  
 9 months ago 

গ্রাম পর্যায়ে ও বলতে গেলে দাদা প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে এখন ।সেখানেও রেস্টুরেন্ট তৈরি হচ্ছে । তবে খালের মধ্যে এখনো রঙিন নৌকা দেখে এটা আসলে খুবই ভালো লাগলো । আর এমন পরিবেশে টঙের চা খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম । আজকের পর্বটি উপভোগ করলাম দাদা ।

Can you follow up and get a reply?

 9 months ago 

বর্তির বিলের ভ্রমণের বেশ সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন এই পর্বে। আজকাল কিন্তু যেসব জায়গায় মানুষ যাওয়া আসা করতে না সেসব জায়গাতে অনেক বেশি মানুষের আনাগোনা। আপনি যেহেতু বললেন চার চাকা ওয়ালা গাড়ি পর্যন্ত প্রবেশ করে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে সেখানে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। যেহেতু যেখানে কৃষক ছাড়া অন্য মানুষ যেতনা সেখানে তিন চারটে রেস্টুরেন্ট মানে অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। তো টাটকা শাক সবজি কিনলেন। দেশি মাছ কিনলেন অনেক ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Can you follow up and get a reply?

 9 months ago 

মাটির কাপে করে চা খাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু পাশে যদি খাল বিল থাকে তাহলে তো আরো সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। বিলটা তো বেশ চিকন, এখানে নৌকায় উঠে ঘুরবে কিভাবে। যদিও বিলের পাড়ে অনেকগুলো নৌকা দেখা যাচ্ছে। টাটকা শাক সবজি কিনেছেন বাড়ির মহিলারা খুশি হবে 🤣

 9 months ago (edited)

দাদা আজও বর্তির বিল ভবনের তৃতীয় পর্বে আপনি দারুন সব ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। শেয়ার করা প্রতিটি ফটোগ্রাফি যেন বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ করছে। তবে মনে হচ্ছে বেশ। ইনজয় করেছেন। এরকম পরিবেশে মাটির পাত্রে চা খাওয়ার মজাই কিন্তু আলাদা। সবমিলিয়ে আজকের পর্বটিও দারুন ছিল

Posted using SteemPro Mobile

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 9 months ago 

দাদা বর্তির বিলে ঘুরতে গিয়ে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। আসলে বর্তির বিলে গিয়ে বেশ ভালো খাবার খেয়েছেন।সত্যি দাদা এই হালকা শীতে এমন ভাজাপোড়া খাওয়ার মজাই আলাদা। বিল থেকে বেশ সুন্দর মাছ কিনেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল দাদা ।

 9 months ago 

দাদা মাটির কাপে চা খেতে দারুণ লাগে, ভিন্ন রকম অনুভূতি হয় মনের মধ্যে। রঙিন ডিঙি নৌকা গুলো খুবই সুন্দর লাগছে দেখতে। আমার তো ইচ্ছে করছে এখনই নৌকায় উঠে কিছুক্ষণ ঘুরতে। এমন নিরিবিলি জায়গায় পিকনিক করতে এবং ঘুরাঘুরি করতে অনেক ভালো লাগবে। ফটোগ্রাফি গুলো এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। নিঃসন্দেহে বলা যায়, আপনারা চমৎকার সময় কাটিয়েছেন সেখানে। যাইহোক এমন মনোমুগ্ধকর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

পিকনিক স্পট ও রিসোর্ট তৈরির হিরিকে প্রকৃতি তার নির্জনতা হারাতে বসেছে।এভাবে চলতে থাকলে আর প্রকৃতির নির্জনতা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।যাই হোক বর্তির বিলে ঘুরতে গিয়ে বেশ সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। বেশ সুন্দর হয়েছে ফটোগ্রাফিগুলো। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

Can you follow up and get a reply?

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 58495.14
ETH 2461.74
USDT 1.00
SBD 2.36