বর্তির বিলে একদিন - পর্ব : ০২

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

বর্তির বিলে পৌঁছেই আমরা বিলের পশ্চিম দিকের রাস্তা ধরে মিনিট পনেরো বাইক চালিয়ে বিলের পশ্চিম প্রান্তে একটা পিকনিক স্পটের কাছাকাছি পৌঁছলাম । এখান থেকে আর অল্প কিছুটা দূরত্বে আবার গ্রাম শুরু হয়েছে । এই খানে একটা কালভার্টের ওপর বাইক দু'টো স্ট্যান্ড করিয়ে আমরা ফোটোগ্রাফিতে মন দিলাম । সবুজ ধানক্ষেত, ছোট্ট খাল আর নৌকোর ছবি তুলতে লাগলাম ।

ঠিক এই সময়ে দেখলাম মাঠ থেকে কাজ করে কিষাণেরা নৌকোয় করে বাড়ি ফিরছে । স্বচ্ছ নির্মল নিস্তরঙ্গ জলে মৃদু ঢেউ তুলে নৌকোটা বয়ে চলেছে । আমরা সেই দিকে মোবাইলের ক্যামেরা ঘোরাতেই দেখি নৌকার মাঝি লগি ধরে আমাদের ক্যামেরার সামনে পোজ দিচ্ছে । দৃশ্যটায় বেশ মজা পেলুম ।

এরপরে আবার আমরা বিলের উত্তর দিকে বাইক ঘোরালাম । মাঝামাঝি একটা জায়গায় এসে দেখি এক পাল গরু নিয়ে কৃষকেরা বাড়ি ফিরছে । সঙ্গে সঙ্গে নেমে পড়লুম বাইক থেকে । এরপরে ছবি তুললাম কিছু, গরু নিয়ে কৃষকদের বাড়ি ফেরার ছবি । তারপরে দেখি খালের এক জায়গায় তিনটে ডিঙি নৌকো এক সাথে বাঁধা রয়েছে । এরপরে এক জায়গায় দেখি জেলেরা বেসাতি জাল ফেলে মাছ ধরছে । এই খালে বড় কোনো মাছ পাওয়া যায় না । সবই কুঁচো-কাচা মাছ । তবে স্বাদে দারুন । খালে কুঁচো চিংড়ি, শোল, গজার, ল্যাটা (টাকি), পুঁটি, মৌরালা, মায়া চেলা, বেলে, খলসে, বান (পাঁকাল), তেলাপিয়া এই সব মাছ পাওয়া যায় ।

খাল থেকে নিয়মিত মাছ ধরে জেলেরা বর্তির হাটে বিক্রি করে । হাটে খুব ভোরবেলায় আর সন্ধ্যায় পাওয়া যায় এই মাছ । একজন জেলের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এখন খালে মাছের যোগান খুবই কমে গিয়েছে । মাত্রারিক্ত মৎস্য আহরণ আর দূষণ এর জন্য দায়ী । ডিমওয়ালা মাছ আর পোনা মাছ ধরার কারণে দিন দিন মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে । মানুষ বোঝে না যে মাছ কখনো আকাশ থেকে টুপ্ করে খসে পড়ে না । মাছের ডিম থেকে পোনা হয়, সেই পোনা বড় হলে মাছ হয় । যদি ডিমওয়ালা মাছ আর পোনা সব ধরে উজাড় করে দেয়া হয় তবে মাছের যোগানও বন্ধ হয়ে যায় । এই সোজা হিসেবটাই মানুষ বোঝে না ।


শেষবেলায় ছোট্ট খালের জলে পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া সূর্যের রশ্মি প্রতিফলিত হচ্ছে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ২৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটা আমি । একটা সেলফি বর্তির বিলে, ছোট্ট খালের ধারে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৩০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


শেষ বেলায় ডিঙি নৌকো করে বর্তির বিল থেকে ঘরে ফিরছে এক কৃষক পরিবার । এই ছোট্ট ডিঙি নৌকো খালের নিস্তরঙ্গ জলে মৃদু ঢেউ তুলে জল কেটে তির তির করে বয়ে চলেছে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৩৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


আমাদের পাশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে নৌকোটা এগিয়ে যাচ্ছিলো সামনের দিকে । নৌকোতে শুকনো লাকড়ি । কৃষক ছেলেটি আমরা ছবি তুলছি টের পেয়ে আমাদের দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে পোজ দিচ্ছে ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৩৫ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


খালের অপরপাড়ে একদল ছাগল চরছে । মনের সুখে ঘাস খাচ্ছে তারা ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৪০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


খালের জলে এটা একটা টং ঘর । খালের জলে বেসাতি জাল ফেলে জেলে এই টং ঘরে ঘুমোয় ।
তারিখ : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : বিকেল ০৪ টা ৪০ মিনিট
স্থান : কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৪৪১ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : ac13a2d008f844635819d99777e5a9e1b4ca3e7b503182945193c64f598c3798

টাস্ক ৪৪১ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  
 9 months ago 

বর্তির বিল সম্পর্কে ব্ল্যাক্স দাদার পোষ্টে প্রথম জানতে পেরেছিলাম।আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আবারো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো দাদা।আসলেই গ্রাম্য পরিবেশ শীতের মিঠে রোদ্রে খুবই ভালো লাগে।দারুণ সময় পার করেছেন আপনারা তিনজনে।ছোট ছোট মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা তবে এভাবে ডিমওয়ালা মাছ আর পোনা সব ধরে উজাড় করে দিচ্ছে যেটা খুবই খারাপ লাগার বিষয়।ফটোগ্রাফিগুলি অসাধারণ ছিল, ধন্যবাদ আপনাকে।

Postingan anda sangat menarik dan memberi inspirasi bagi saya tentang makna ikan. Bahwa ikan bukan jatuh dari langit, melainkan melalui proses, bertelur sampai dia besar.

Pelajaran yang bisa saya ambil dari tulisan ini adalah sangat penting menjaga ekosistem ikan, agar manusia dapat menikmati daging ikan yang sudah siap intuk di panen. Jadi jangan sembarang tangkap terutama anak ikan yg msh kecil.

Biarkan dia rumbuh berkembang sampai saatnya tiba untuk dipanen. Mari menjaga ekosistem ikan 🙏🙏🤲

 9 months ago 

এই ধরনের বিলে যে মাছগুলো পাওয়া যায় সেগুলো আসলেই দারুন স্বাদের হয়। বিশেষ করে বিলের শোল মাছ আমার খুবই পছন্দের। জায়গাটা ঘোরাফেরার জন্য আসলেই দারুন। আপনার ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

The sun is really very beautiful and the photos you did are really very nice I really like it

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 9 months ago 

বাইক নিয়ে ঘুরার এটাই সব চেয়ে ভালো দিক, সুযোগ পেলেই সাথে সাথে সেটাকে কাজে লাগানো যায়। আর এই রকম পরিবেশে সুযোগ গুলো যেন আপনা আপনিই তৈরী হয়ে যায়। দারুণ ফটোগ্রাফি দাদা।

 9 months ago 

আসলেই দাদা মাছের পোনা সহ নিয়ে খেলে ফেললে মাছের যোগানও কমে যাচ্ছে। মানুষ সহজ ব্যাপারটা বুঝতে চাই না। তবে বিলের পাশে পরিবেশটা ভালো লাগলো দাদা। আপনি দারুণ সময় কাটিয়েছেন। বিলের মাঝ দিয়েই নৌকা চলে যাচ্ছে 🌼

 9 months ago (edited)

বর্তির বিলের ২য় পর্ব আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা। আজ তো আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথাও শেয়ার করেছেন। আসলেই কিন্তু আজ কালকার জেলেরা এটাই বুঝতে চায় না যে মাছ আর আকাশ থেকে পড়ে না। ডিমওয়ালা মাছগুলো ধরে ফেললে কি করে মাছ পাবো আমরা? ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

এমন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে ফটোগ্রাফি করতে ভীষণ ভালো লাগে। গ্রাম এবং বিলের মধ্যে ঘুরাঘুরি করতে গেলে ফটোগ্রাফি করার সুযোগ তৈরি হয় খুব ভালোভাবে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে চোখ দুটি একেবারে জুড়িয়ে গিয়েছে দাদা। আমরা মানবজাতি দিনদিন আধুনিক হলেও,মাঝেমধ্যে সহজ হিসাব নিকাশ বুঝেও মানতে চাই না। যেমন ডিমওয়ালা মাছ আর পোনা সব ধরে নিয়ে যাওয়ার কারণে, এখন আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। কিন্তু সবাই নগদে বিশ্বাস করে এখন। পরবর্তীতে নিজেদেরই ক্ষতি হবে সেটা চিন্তা ভাবনা করে না। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। এমন মনোমুগ্ধকর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 58034.65
ETH 2448.81
USDT 1.00
SBD 2.38