পুরী ভ্রমণ - পর্ব 0২

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago (edited)

পুরী ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই অর্থাৎ ভোর পাঁচটা বাজার সাথে সাথে আমরা সবাই মিলে পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের সামনে জমায়েত হলুম । সূর্য ওঠার তখনও প্রায় এক ঘণ্টা বাকি আছে । বিশাল লম্বা লাইন । মন্দিরে ঢোকার পূর্ব মুহূর্তে সবার মোবাইল, মানিব্যাগ আর জুতো জমা রাখলো । ওগুলো নিয়ে মন্দিরে ঢোকা নিষেধ । এরপরে অনেক লম্বা লাইনের একদম শেষে গিয়ে দাঁড়ালুম ।

মন্দিরে ঢোকার প্রধান তোরণে অসম্ভব ভীড় । এই ভীড় কন্ট্রোলে ব্যর্থ মন্দির কর্তৃপক্ষ । আর পুণ্যার্থীরাও কোনোও নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করে না । ফলতঃ বিশাল ধাক্কাধাক্কি লেগে গেলো । সর্বত্রই বিশাল বিশৃঙ্খলা অবস্থা । এর মধ্যে পুজো দেওয়ার জন্য একজন সরকারি পান্ডা ধরে মন্দিরের পুজো দেওয়ার লাইনে দাঁড়ালো সবাই । সেখানেও অসম্ভব ভীড় আর বিশৃঙ্খলা । হুড়োহুড়ি আর বিস্তর ধাক্কাধাক্কির শেষে অবশেষে জগন্নাথদেবের দর্শন মিললো ।

তারপরে হোটেলে যখন ফিরে এলুম তখন সকাল আটটা দশ বেজে গিয়েছে । দ্রুত ব্রেকফাস্ট সেরে নিয়ে ছোট্ট একটা ঘুম দিলাম । ঘুম থেকে উঠে দেখি প্রায় সাড়ে বারোটা বেজে গিয়েছে । আমরা বাদে আমাদের সঙ্গী সাথীদের সকলের দুপুরের সমুদ্র স্নান সারা । আমরা ৪ জনও অবশেষে নেমে পড়লুম জলে । আমি আর গোলটু হাঁটু অব্দি জলে আর তনুজা কোমর অব্দি জলে নেমে গেলো । পুরীর সমুদ্রে এই সময়টায় অসম্ভব ঢেউ ওঠে । গাঢ় নীলাভ সবুজ জলের মাথায় বিশাল বিশাল সাদা ফেননিভ ঢেউ জাগছে মুহুর্মুহু । দেখতে অসাধারণ লাগছে ।

সমুদ্রের বীচে তখন হাজার হাজার মানুষ । কেউ স্নান করছে, কেউ ঢেউয়ের মাথায় চড়ে হুটোপুটি করছে, কেউ বালিতে শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে, কেউ বালি দিয়ে ভাস্কর্য তৈরী করতে লেগেছে, কেউ ফুটবল খেলছে আবার কেউ কেউ উট বা ঘোড়ার পিঠে উঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।

আমরা প্রায় ঘন্টা খানেক সমুদ্রের জলে কাটিয়ে অবশেষে হোটেলের পথ ধরলাম । ফেরার পথে বীচের এক জায়গায় দেখি ডাব বিক্রি হচ্ছে । ডাব দেখে কি আর লোভ সামলানো যায় ? অগত্যা, ডাব খাওয়া শুরু করলাম । ডাব টাব খেয়ে খুশি মনে অবশেষে হোটেল রুমে ফিরে এলাম । এরপরে লাঞ্চ করে ল্যাপটপ ওপেন করে একটু কাজ সেরে নিতে নিতে সন্ধ্যে । সন্ধ্যেয় আবারো সী বীচে গেলুম । আবার সমুদ্রের জলে পা ভেজালাম । অনেকক্ষণ হাঁটলাম ঠান্ডা ভিজে বালির ওপর দিয়ে । এরপরে মাছ আর চিংড়ী-কাঁকড়া ভাজা খেয়ে ডিনারের জন্য পা বাড়ালাম হোটেলের উদ্দেশ্যে ।


IMG_20231230_074447.jpg

পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির ।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : ভোর ৫ টা ২৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


পুরীর সী বীচ ।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


পুরীর সী বীচে তনুজা ঢেউয়ে ভিজছে ।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ৫০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


পুরীর সী বীচে তনুজা আর টিনটিন আনন্দ করছে।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ৫৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


পুরীর সী বীচে প্রচুর সুসজ্জিত উট রয়েছে
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ০১ টা ১৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


উটের পিঠে সওয়ার হয়ে আপনিও ঘুরে বেড়াতে পারবেন সী বীচে ।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ০১ টা ৩০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


দুপুর দু'টো নাগাদ আমরা হোটেলের উদ্দেশ্যে সী বীচ ত্যাগ করলাম ।
তারিখ : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ০১ টা ৫০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ



------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৪৫৯ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 4c67ffccece194dce936c036a1db92d7012772f3f85b8bef994a8a82fa2c0402

টাস্ক ৪৫৯ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Sort:  
 6 months ago 

গতকালকের মতো আজও আবার এসে গিয়েছি দু'টো Fairy creatures এর NFT আর্ট নিয়ে । এই আর্ট দু'টিও হলো রূপকথার অদ্ভুত সুন্দর কিছু কাল্পনিক প্রাণীর ।

রূপকথার কাল্পনিক মায়াবী জগৎ যেমন আমাদের ছোটবেলা মাতিয়ে রাখতো তেমনই বড়বেলাতে এসেও ছোটবেলার সেসব সোনালী দিনগুলিতে ফিরে যাওয়ার জন্য কিছু প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে আমার । এরকমই একটা প্রচেষ্টা হলো রূপকথার কাল্পনিক জগতের অদ্ভুত সব প্রাণীদের আর্ট করা ।

সেসব নিয়েই আমার আজকের NFT আর্ট দু'টি -


Fairy Creatures (Rare)


Screenshot 2024-01-01 193443.png


Screenshot 2024-01-01 193540.png

Ato cute dada.

 6 months ago 

আজকের গুলো বেশী কিউট হয়েছে দাদা, দেখে মনে হচ্ছে পুরো কিউটের গ্যাং হা হা হা।

 6 months ago 

সুন্দর হয়েছে দাদা, Fairy creatures গুলো।

 6 months ago 

আজকে দেখছি আপনার nf আর্ট এর মধ্যে এক ঝাঁক কিউট পরী। খুবই সুন্দর হয়েছে অনেক ভালো লাগলো আজকের এনএফটি আর্ট দেখে।

 6 months ago 

এই এন এফ টি গুলো দেখলে মুগ্ধ হয়ে যাই দাদা। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Loading...
 6 months ago 

সমুদ্র দেখলে কারোরই মাথা ঠিক থাকে না। সকল দুঃখ কষ্ট ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। যেমনটা কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে আমার সাথে হয়েছিল। মন্দিরের ভিড় ছিল প্রচন্ড ভালোই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে ছিলেন দেখছি। ঘুম থেকে উঠে সমুদ্রে গোসল করার মুহূর্তের দৃশ্য খুব ভালো লাগলো দেখে। এরকম ঢেউ আমার তো মনে হচ্ছে এখনই গিয়ে সমুদ্রের গোসল করে আসি। সব মিলিয়ে দারুন সময় পার করেছেন দেখছি।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 6 months ago 

পুরী ভ্রমণে দ্বিতীয় পর্বটি অসাধারণ ছিল দাদা। যেহেতু জগন্নাথ দেবের দর্শনে গেলেন সেখানে তো বিশাল লাইন দেখলাম। এত সকালে যাওয়ার পরেও এত লম্বা লাইন বেশ অবাক করার মত। তবে একটা বিষয় ভালো লাগলো অবশেষে পুজো দিয়ে রুমে চলে আসেন। আর সমুদ্রের গোসল করা দেখে তো আরো অনেক ভালো লাগলো। অনেক লোকজন ছিল সমুদ্র পাড়ে। খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করলেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 6 months ago 

সমুদ্র স্নানের ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে এখনই ঝাঁপিয়ে পড়ি। সমুদ্র আমার অসম্ভব পছন্দ। বৌদিকে দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজা করে স্নান করেছে। তবে আমাদের দেশে কক্সবাজারে ঘোড়া থাকলেও কখনো উট দেখিনি। উট দেখে মনে হচ্ছে একবার উটের পিঠে চলতে পারলে মন্দ হোতো না। সময়টা আপনাদের বেশ ভালই কেটেছে সেটা আপনার পোস্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

সূর্য উঠার এক ঘন্টা আগে গিয়ে ও লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হলো দাদা।তারপরেও জগন্নাথ দেবের দর্শন মিললো জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। পুরীর সমুদ্রে সবাই সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। দিদি তো খুব বেশী ইনজয় করেছে।সত্যি কথা বলতে সমুদ্রের কাছে গেলে আমিও এমনটাই করি।খুব ভালো লাগলো দাদা অনুভূতি গুলো পড়ে। সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো ভীষণ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

দাদা ভোরবেলা জগন্নাথদেবের মন্দিরের সামনে চলে গিয়েছেন এবং সকাল সকাল জগন্নাথদেবের দর্শন করতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। তারপর নাস্তা করে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে, সমুদ্র সৈকতে গিয়ে পানিতে নেমে বেশ মজা করেছেন মনে হচ্ছে। সমুদ্রের পানিতে নেমে লাফালাফি করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। আসলে সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়ে পানিতে না নামলে,সমুদ্র ভ্রমণ মনে হয় অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। সুসজ্জিত উটগুলো দেখতে দারুণ লাগছে। সবমিলিয়ে সেখানে আপনারা দারুণ সময় কাটাচ্ছেন দাদা। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

দ্বিতীয় দিনটা কিন্তু সত্যি সুন্দর কেটেছে। বিশাল সমুদ্রে গোসল করায় অন্যরকম একটা মজা আছে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, সন্ধার পরে বা রাতে সমুদ্রের বীচে হাঁটাহাঁটি করতে অনেক ভালো লাগে। নির্মল বাতাস আর সমুদ্রের গর্জন - অসাধারণ।

The second episode of the Puri travel seems more fun than the first episode.

I really enjoyed reading this interesting post, as I read, I could imagine as if I were there but I have a question, @rme Dada.

How well can you swim? Because if I were there, I'd make sure I swim well.

Thanks for sharing this travel experience with us, I eagerly anticipate the third episode

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57899.47
ETH 3134.16
USDT 1.00
SBD 2.39