বন্ধুদের সাথে আম পাড়তে গিয়ে শ্মশানে ভূত দেখার স্মৃতিময় গল্প// পর্ব- ২

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। এই স্মৃতিময় গল্পগুলো কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। মনে হয় যেন এই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম কতই না ভালো হতো। বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে কাটানো সেই স্মৃতিময় গল্পগুলো বেশি আনন্দদায়ক ছিল। আসলেই বন্ধুদের সাথে নিয়ে আম চুরির হাজারো গল্প রয়েছে আমার জীবনে।আসলে বন্ধুদের সাথে নিয়ে আম, লিচু চুরি গল্প গুলো যেন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে। ছোটবেলার এই ঘটনা গুলো সবার সাথেই যেন মিলে যায়। স্মৃতিময় এই ছোটবেলার দিনের গল্প গুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে স্মৃতিময় একটি গল্প শেয়ার করতেছিলাম, সেটা হলো আম চুরি করতে গিয়ে শ্মশানে ভূত দেখার গল্প। আর এই গল্পটি যেন আমি কোনদিনও ভুলবো না, কারণ সেদিন অনেক বেশি ভয় পেয়েছিলাম। তো বন্ধুরা চলুন আজকে এই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়া শুরু করা যাক।


castle-1483681_1280.jpg

source

শ্মশানের পাশে এই কাঁচা মিষ্টি গাছের কাছে যখন আমরা আসলাম। তখন আমার দুই বন্ধু গাছে উঠল, আসলে গাছ বেশি বড় ছিল না, যার কারণে ওরা গাছে উঠে আম পাড়তে লাগলো। আর আমরা নিচে থেকে এই আমগুলো কুড়াতে ছিলাম এবং অন্যরা দেখতে ছিলাম, কেউ এসে দেখে নাকি। আসলেই রাত হয়েছিল আর এই রাতের সময় শ্মশানের এদিকে কেউই আসে না। তারপরে আমার বন্ধু যখন আম পারতেছিল আম পারার সময় গাছের উপর থেকে কি যেন একটা শব্দ শুনতে পেলাম।আর এই শব্দটি আমিও শুনতে পেয়েছি, আসলে এরকম ভয়ানক শব্দ শুনে আমার খুবই ভয় হচ্ছিল। তখন আমি বন্ধুকে বললাম তাড়াতাড়ি গাছ থেকে নাম, আমরা আর এখানে থাকবো না। কিন্তু আমার বন্ধু গাছ থেকে নামতে চায়লো না।বলল এগুলো কিছুই না কোন ভয় পাস না, কিন্তু মনের ভিতর অনেক ভয় হচ্ছিল আমার।


তারপরে আমি আম কুড়াতে কুড়াতে হঠাৎ করে আমার চোখ শ্মশানের দিকে পরল। আসলে যখন কোন জায়গায় ভয় এর দৃশ্য রয়েছে, সেই জায়গায় আমরা তাকাতে চাই না, কিন্তু হঠাৎ করে চোখ যেন সেদিকে পড়ে যায়। আমি যখন শ্মশানের দিকে তাকালাম, তখন দেখতে পেলাম সাদা কাপড় পড়ে কি যেন শ্মশান থেকে আকাশের দিকে উড়ে আসলো। আর এই উড়ে আসার দৃশ্য দেখতে পেয়ে মনের ভিতর খুবই ভয় হচ্ছিল এবং সেই সাদা দৃশ্যটি উড়ে এসে আমরা যে আম পাড়তে লাগছি এই আম গাছের উপরে এসে বসলো। আমি তখন বন্ধুকে বললাম বন্ধু এখানে ভয় রয়েছে, আমি আর এখানে থাকবো না, কিন্তু আমার সাথে বন্ধু সাজু ছিল সে বলল যে ধুর কি বলল।এই গুলো কিছুই না।মনের ধারণা।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

সাদা এই দৃশ্যটি দেখে আমি যেন মনকে আর মানাতে পারছিলাম না। বারবার শুধু ভয় হচ্ছিল এবং হাসান যে গাছে উঠেছে সেই আম গাছে যেন এই সাদা দৃশ্যটি এসে বসলো। হাসানকে বললাম হাসান বন্ধু তাড়াতাড়ি বাঁচতে চাইলে গাছ থেকে নাম, এখানে ভয়ানক কিছু রয়েছে। কোন কথা বলে না, ওদিকে মানিক যে গাছে উঠেছিল সেই গাছ থেকে মানিক নিচে নেমেছে, হাসানকে আমরা ডাকলাম, ওডাকের কোন আওযাজ দিচ্ছেনা।তখন ছিল রাত লাইটও দিতে পারছিলাম না, তারপর হাসান যে গাছে উঠেছিলো, সেই গাছে একটি ব্যাগ নিয়ে উঠেছিল, সেই ব্যাগে হাসান আম রাখতে ছিল, আর কিছুক্ষণ পরেই সেই হাসানের গাছ থেকে ধাপাশ করে নিচে কি যেন পরল, এই পড়াটা শব্দ পেয়ে আমরা চিৎকার দিয়ে উঠলাম। সাজু তখন ভয়ে কাঁপতে ছিলো।ওখানে কি পড়লো গিয়ে দেখতে পেলাম আমার বন্ধু হাসান পুরে গেছে গাছ থেকে। আর হাসান যেন কোন কথাই বলছে না। পড়ে গিয়ে একদম অজ্ঞান হয়ে গেছে।


হাসান যখন অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন খুব ভয় পেয়েছিলাম, কোন কথা বলতেছিলো না, মনে হচ্ছিল আল্লাহ আমাদের জীবন শেষ, আজকে যদি পরিবারে কেউ জানে তাহলে তো মেরে ফেলবে, আর ওদিকে তো ভূতের ভয় জীবন যেন যায় আসে, কি করব কিছুই বুঝতেছিলাম না। আসলে এত রাতে আর এই শ্মশানের এখানে জীবনের যেন অনেক বড় ভয়াবহ একটি রাত পার করেছি। আসলে এত বড় বিপদের মুখে কোনদিনও পড়িনি। তারপরে সাজু বলল পাশে ইটের ভাটা আছে সেখানে একটা টিউবয়েল রয়েছে। একটু পানি এনে ওকে চোখে মুখে দেলে ভালো হবে।তারপরে আমরা হাসানকে সেখান থেকে নিয়ে আসলাম। তারপর আমরা বন্ধুরা মিলে হাসানকে ধরাধরি করে, সেই টিউবলয়ের পাশে নিয়ে আসলাম এবং হাসানের মাথায় পানি ঢাললাম এবং চোখে মুখে পানি দিলাম ১০ মিনিট পরে হাসানের জ্ঞান ফিরলো।হাসানের জ্ঞান ফিরে আসাতে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলাম। কত বড় যে বিপদ থেকে বাঁচলাম, আজকে যদি বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেত তাহলে আমাদের কি হতো, হাসান জ্ঞান ফেরার পরে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে কোন কথা বলছে না।


হাসান কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পরে বলল যে এখানে আর একটুও দেরি করা যাবে না। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে, এই বলে কান্না করে দিল। আমরা বন্ধুরা বললাম যে তাড়াতাড়ি চল। সাজু বলল যে আমগুলো নিয়ে যাবো নাকি। বললাম তুই আমগুলো নিতে পারলে নেহ, না হলে দরকার নাই। তখন আমরা বন্ধুরা মিলে তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে আসলাম। তো বন্ধুরা হাসানের সাথে গাছে কি হয়েছিল এবং হাসান এতটা ভয় কেন পেয়েছিল, সেই অংশটুকু আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

বন্ধুদের সাথে আম পাড়তে গিয়ে শ্মশানে ভূত দেখার স্মৃতিময় গল্প আমি প্রথম পর্ব পড়েছিলাম। আজকে দ্বিতীয় পর্ব পরে ভীষণ ভয় লেগে গেলো। আসলে গল্পটা বেশ গা ছমছমে ছিলো। তবে আপনাদের কোনো ক্ষতি হয়নি জেনে ভালো লাগলো। যাই হোক আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 months ago 

গল্পটা সত্যিই রোমাঞ্চকর আর তাছাড়া শৈশব কৈশোরের স্মৃতি জাগানিয়া বলাই চলে!
যারা ছোটবেলায় গ্রামে বড় হয়েছে তারা এ গল্পের ভেতরের জিনিস বুঝতে পারবে।
শ্মশান বা চিতলখোলা (গ্রাম্য নাম) একটি নিরেট ভৌতিক জায়গা যা কমবেশি সবার মধ্যেই ভয়ের উদ্রেক করে।

যা হোক, গল্পটি পড়ে আমার নিজের সেই ছোটবেলার ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল।

 2 months ago 

কি ভয়ানক গল্প শেয়ার করেছেন ভাইয়া ।গল্পটা পড়েই তো আমার গা ছমছম করছে। রাতের বেলায় শ্মশানের ধারে যাওয়া আবার গাছ থেকে আম চুরি করা সত্যিই ভীষণ ভয়ংকর ছিল। সত্যিই কি সাদা কাপড় পড়া কিছু দেখেছিলেন কিনা তাই ভাবছি। আর হাসানের সঙ্গেই বা কি হয়েছিল ।পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

আপনার ভূতের গল্পটি পড়ে আমার তো বেশ ভয় লাগছিল। তবে আপনার যে কোন ক্ষতি হয়নি এটা জেনে বেশ খুশি হলাম ভাইয়া। হাসানের সঙ্গে কি হয়েছিল সেটা জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।ধন্যবাদ রোমাঞ্চকর একটি ভূতের গল্প শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

কি ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন ভাইয়া।আসলে প্রেতাত্মা বলে কিছু আছে বলে বিশ্বাস করি।আপনি তো নিজ চোখে দেখেছেন ভুত।আপনার বন্ধুকে মনে হয় গাছ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছে ভুতটি।যাইহোক বড়ো জোর বেঁচে গলেছিলেন। ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করে ভয়ংকর পরিস্থিতি যে পড়েছিলেন সে গল্পটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 64595.89
ETH 3413.52
USDT 1.00
SBD 2.31