ভালোবাসার শেষ পরিনতি//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


ভালোবাসা হৃদয়ের অনুভূতি, হৃদয় থেকে যার প্রতি ভালোবাসার জন্ম হয়। এই ভালোবাসা যেন ধর্ম বর্ণ, ধনী-গরিব উঁচু নিচু, কোন কিছুই ভেবে হয় না। এটা মনের মিলন থেকেই এই ভালোবাসার তৈরি হয়। আর এই ভালোবাসা বড় এবং ছোটকে দেখে না, গরিব, ধনী দেখেনা। ভালোবাসা দেখে মনের মিল। আর এই ভালোবাসা শেষ পরিণতি কখনো কখনো আনন্দের হয়ে থাকে। কখনো কখনো দুঃখ হয়ে থাকে। আবার কখনো জীবন একদম শেষ করে দেয়। তাই ভালোবাসার অনুভূতিগুলো সত্যি অন্যরকম হয়ে থাকে।যদি এই ভালোবাসার প্রিয় মানুষকে নিয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকতে পারা যায় এবং তাকে সাথে নিয়ে পথ চলা যায় আসলে ভালোবাসা শেষ পরিণতি আনন্দে হয়।আজকে আমি আপনাদের মাঝে সত্যি ঘটনার অবলম্বনে আমার কিছু অনুভূতি বা গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আসলে এটি আমাদের গ্রামেই কিছুদিন আগেই ঘটে গেছে এই ঘটনাটি। আমি গতকাল শুনতে পেয়েছি আমার বন্ধুদের কাছ থেকে। সেই ঘটনার মুহূর্ত গুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম। ভালবাসার শেষ পরিণতি কি হয়ে ছিলো এই গল্পটি পড়ে আপনারা জানতে পারবেন, তো বন্ধুরা গল্পটি পড়া শুরু করা যাক।


sunset-7126126_1280.jpg

source

আমাদের গ্রামে খুবই সম্মানীত ব্যাক্তি শাহজাহান স্যার। শাহজাহান স্যার আমাদের গ্রামেরই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তার ব্যবহার এবং তার কথাবার্তা এত সুন্দর, ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে এসে আপনি করে কথা বলতেন এবং সালাম দিয়ে কথা বলতেন। শাজাহান স্যার আমাদেরও শিক্ষক ছিলেন। সত্যি তিনি তার ব্যবহার অসাধারণ। গ্রামের সকল মানুষই তাকে সম্মান করে এবং ভালোবাসে। আর এই শাহজাহান স্যারের ছেলের নাম হল রতন। আসলে রতন আমাদের থেকে দুই বছরে ছোট, ও রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে।রতন খুবই ভালো স্টুডেন্ট। বাপের মতই সৎ এবং সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে।তো রতন যখন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনা করে তখন আমাদের পাশের গ্রামের চেয়ারম্যান এর মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয় এবং সে ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনা অবস্থায় তার সাথে রিলেশন করে। আর এই রিলেশন অনেকদিন ভালোভাবে চলতে ছিল।


চেয়ারম্যানের মেয়ের নাম ছিল সনিয়া, তো সনিয়ার সাথে রতনের ভালোবাসাটা ভালই দূর এগিয়ে যায়। শহরের ভেতর দিয়ে ওরা ঘোরাফেরা করে, আর এই ঘোরাফেরার দৃশ্যগুলো শহরের ভিতরে অনেকেই দেখতে পায়। আর গিয়ে চেয়ারম্যানকে বলে দেয়, অর্থাৎ সোনিয়ার বাবাকে বলে দেয়। আর সোনিয়ার বাবা খুবই খারাপ মানুষ ছিল। তার ব্যবহার জঘন্য। গ্রামের মানুষ তার প্রতি অতিষ্ঠ। আসলে গ্রামের কিছু কিছু চেয়ারম্যান থাকে যারা খুবই খারাপ হয়ে থাকে। মানুষের সম্পদ লুটে নেয়, জমি দখল করে নেয়। এরকম টাইপের লোক ছিল। তো রতনকে শহরের ভিতরে ডেকেই সোনিয়ার বাবার রেক অনেক বকাবকি করেছিল। এমনকি রতনকে নির্যাতন গাযে হাতও তুরেছিলো । তখন থেকে রতন ওইভাবে মিশতে চায় না।সনিয়াকে বলে যে তোমার বাবা আমাকে কখনোই মেনে নেবে না, আমাদের এখানেই সমাপ্তি করে দেওয়া উচিত।না হলে আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে তোমার বাবা।আর আমার বাবা খুবই সহজ সরল একজন মানুষ। আমার বাবা এসব জানতে পারলে আমাকে একদম মেরে ফেলবে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস হারাবে।


সোনিয়া আসলে রতনকে খুবই ভালোবাসতো। আর সোনিয়া ওর বাবার মত না সোনিয়া খুবই ভালো মনের মানুষ ছিল, শুনে বলতো ঠিক আছে তাহলে আমরা আর দেখা করবো না। ঘোরাঘুরি করবো না, কিন্তুু আমাদের মনের ভালোবাসা থাকবে। যতটুকু পারি আমরা আমাদের মধ্যে যোগাযোগ করব, এইভাবে রতন তখন পড়াশোনা শুরু করে দেয়।সোনিয়ো মন দিয়ে পড়াশুনা শুরু করে দেয়, তাদের মধ্যে যোগাযোগ মোটামুটি হয়ে থাকে এবং দেখা করলেও খুবই সাবধানের সাথে। সনিয়ার বাবা তখন মনে করেছে ওদের মধ্যে আর যোগাযোগ নেই। এভাবেই অনেক বছর চলে যায়। রতন তখন রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে চান্স পায়। আর সোনিয়া পাবনা মেডিকেলে চান্স পায়।ওরা খুবই ভালোভাবে পড়াশোনা করে এবং খুবই ভালো স্টুডেন্ট ছিল।


কিছুদিন আগে সোনিয়ার বাবা, সোনিয়ার বিয়ে ঠিক করেছে সিরাজগঞ্জেরই মেডিকেল কলেজের এক ডাক্তারের সাথে। আর এটা সোনিয়া জানতো না, সোনিয়াকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে, নিয়ে আসার পরে জানানো হয়েছে। কিন্তু সোনিয়া বলছে আমি এখন বিয়ে করবো না আমার পড়াশোনা এখনো শেষ হয়নি। পড়াশোনা শেষ হতে এখনো দুই বছর আমার বাকি। তখন সোনিয়া বাবা বলছে যে কোন সমস্যা নেই। শুধু বিয়েটা ঠিক করে রাখবো, এই ডাক্তারের সাথে আমার ভালো একটা সম্পর্ক হয়েছে। তাকে আমার পছন্দ হয়েছে। আর সেই ডাক্তার তোমাকেও পছন্দ করেছে। কিন্তু সোনিয়া কোনোভাবে রাজি না। যার কারণে এই সমস্যাটা সোনিয়ার সাথে ওর বাবার মধ্যে হচ্ছিল কিছু দিন হলো,ওর বাবা ভাবতেছিল মেয়ে কিসের জন্য রাজি না। এটা বের করতেই হবে। আসলে খারাপ মানুষের লোক থাকে অনেক। যার কারণে তার মেয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্য লোক সেট করে দেয়।


সোনিয়া সকল কথা রতনকে বলে, রতন তাই দেখা করতে সোনিয়ার সাথে পাবনা চলে যায়। আর পাবনা গিয়ে ওরা অনেক কথাবার্তা বলে। আরো কিছুদিনের মধ্যেই সোনিয়ার বাবার লোকজন জানতে পারে রতনের সাথে এখনো সোনিয়া কথা হয়। এসে সোনিয়ার বাবাকে বলে দেয়। আর সেই চেয়ারম্যান গিয়ে রতনের বাবাকে অপমান করে। আর বলে আপনার ছেলেকে কিন্তু একদম হারাবেন। যদি বুড়া বয়সে আপনার ছেলেকে না হারাতে চান তাহলে আপনার ছেলেকে আপনার মাধ্যমে নিয়ে আসুন না। হলে কিন্তু খবর আছে। অনেকভাবে অপমান করে, শাজাহান স্যার যেন একদম শেষ বয়সে এসে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে এভাবে অপমান হওয়াতে। অসুস্থ হয়ে যায়, তার এই ছেলের নামে এই কথাগুলো শুনতে পেয়ে।


সোনিয়ার বাবা শাহজাহান স্যারকে অপমান করেছে, এটা রতন ভাই জানতে পারে আর রতন ভাই সোনিয়াকে সকল কথা বলে। তখন সোনিয়া বলেছে আমার বাবা কোন দিন মেনে নিবে না, সে ভালো হবে না। আমার এখুন বয়স হয়েছে। আমি এখন যা করব আমাকে কেউ বাঁধা দিতে পারবেনা। আমি এখন তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তুমি কি রাজি আছো নাকি। যদি রাজি থাকো তাহলে আমাকে বিয়ে করো।আইন বলে কিছু আছে আমার বাবা কিছুই করতে পারবে না।আর যদি বিয়ে না করো তাহলে আমার বাবা যাকে বিয়ের জন্য ঠিক করেছে তাকেই বিয়ে করতে হবে।আর কোন উপায় দেখছি না। রতন ভাই বলে যে বিয়ে করলে যদি আমার বাবাকে আরো অনেক কিছু বলে, তাহলে তো বাবা মারা যাবে। তারপরে সোনিয়া বলে তাহলে ভুলে যাও আমাকে। রতন বলে ভুলে গেরে আগেই ভুলতাম।আমি বিয়ে করতে রাজি, যা হয় হবে,আল্লাহ কপালে যা রাখছে তাই হবে। তো বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি। গল্পের বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ। 🙏🤲🙏


আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago (edited)

গল্পটি পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম অনেক মানুষের জীবনে এরকম ঘটনা ঘটে। সোনিয়ার বাবা চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে তার অনেক লোক আছে তা ছাড়াও চেয়ারম্যান অনেক খারাপ লোক ছিল। কিন্তু রতনের বাবা শাজাহান একজন মাস্টার তার চরিত্র অনেক ভালো সে অনেক ভালো লোক। এখন রতন আর সোনিয়া পরিস্থিতির শিকার হয়ে যদি পালিয়ে বিয়ে করে তাহলে হয়তোবা রতনের বাবাকে চেয়ারম্যান কিছু একটা করবে নয়তো রতনের। তবে যাই হোক আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 2 months ago 

মনে হয় রতনের কপালে দুঃখ আছে। যেহেতু চেয়ারম্যান অনেক খারাপ মানুষ অনেকবার হুমকি দিল রতন কোন কথাই মানতে চায় না। কারণ যেহেতু তার বাবাকেও হুমকি দিয়ে আসলো তাকে একটু সাবধান হওয়া উচিত ছিল। ভালোবাসার বিনিময়ে যে জীবন দিতে হবে বাবাকে হারাতে হবে এমন ভালোবাসা না করাই উচিত। তারা এখন উচ্চশিক্ষিত বুঝে শুনে সব কিছু ভুল করলে তো হবে না। দেখা যাক শেষ পরিণতি কি হয়। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।

 2 months ago 

পরিবারের উচ্চ মর্যাদা এবং ক্ষমতার দাপটে অনেক ভালোবাসা এভাবে সমাজ থেকে হারিয়ে যায়। জানিনা রতনের কপালে কি আছে, তবে সোনিয়ার রতনকে খুবই ভালোবাসতো। সেই ইন্টারমিডিয়েট থেকে শুরু করে এখনো সে ভালোবেসে যাচ্ছে। বাবার পছন্দের বিয়ে করতে চাচ্ছে না। দেখা যাক রতন যেহেতু বিয়েতে রাজি হয়েছে আগামীতে কি ঘটে সেই অপেক্ষায় রইলাম।

 2 months ago 

রতন বলে ভুলে গেরে আগেই ভুলতাম।

ভাই উপরের লাইনে একটু ভুল হয়েছে। বর্তমান সময়ে প্রেম ভালোবাসার জন্য মা বাবাদের বিভিন্ন ধরণের অপমান সহ্য করতে হয়। রতন এর বাবা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। এর পরের রতন মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছে পরের পর্বে দেখা যাক কি হয়। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68726.56
ETH 3273.79
USDT 1.00
SBD 2.67