জেনারেল রাইটিং :- বাবা হারানোর কষ্ট
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি ।
জেনারেল রাইটিং :- বাবা হারানোর কষ্ট
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি একটা জেনারেল রাইটিং নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং লেখার চেষ্টা করি। আসলে আমার বাংলা ব্লগ এমন একটা জায়গা যেখানে আমাদের মনের কথা গুলো প্রকাশ করা যায়। আসলে অনেক সময় মনের ভিতরে এমন কিছু কথা মনে পড়ে কষ্ট হয় যা কাউকে বলা যায় না আবার সহ্য করা ও কষ্টকর। আসলে এমন কিছু কথা আছে যা বললে মনটা একটু হালকা হয়। যাইহোক আজ কয়েক দিন ধরে কমিউনিটিতে চলছে শোকের ছায়া। সত্যি তো আমাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে বা চির বিদায় নিলে আমরা কেউ ভালো থাকতে পারিনা।পৃথিবীতে বাবা মা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সম্পদ।যার বাবা নেই সেই বুঝে বাবা মা কি জিনিস। আসলে বাবা যদি আমাদের কিছু নাও দিতে পারে, তবে তার মূল্য অনেক। বাবা একটা কথা বললে আমাদের অনেক উপকার হয়। বাবা হচ্ছে আমাদের বটগাছ। সে আজীবন আমাদের ছায়া দিয়ে রাখে।
আমি যখন এসএসসি পাশ করেছি ঠিক তখনি আমার বাবা আমাকে কলেজে ভর্তি করে দিয়ে এসেছে। আমার প্রথম যেদিন ক্লাস শুরু হয়েছিল সেই দিন আমার বাবা আমাকে কলেজে সাথে করে নিয়েছিল।যেহেতু আমি গ্রামের স্কুল থেকে এস এসসি পাশ করেছি। তাই আমাকে ফরিদ পুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে ভর্তি করে দিল।আসলে তখন তো একা একা আর শহরে যেতে পারতাম না।সত্যি বলতে এখনকার বাচ্চারা হলে ঠিক একাই যেতে পারতো।আসলে আমাদের আশেপাশে কেউ সরকারি কলেজে চান্স পায়নি শুধু আমি একটা পেয়েছিলাম। তার পর বাবা আমাকে প্রথম এক সপ্তাহ কলেজে নিয়ে যেত আবার নিয়ে আসতো।আমার ক্লাস শুরু হবার দশ দিনের দিন সকাল ছয়টার সময় আমার বাবা মারা গেল। আসলে ভালো মানুষ রাতে ঘুমিয়েছি হালকা কাশি ছিল। তবে বেশ ভালোই ছিল হঠাৎ করে ভোর ছয়টার সময় দেখি মা চিৎকার করে সবাইকে ডাকছে। তারপর আমরা গিয়ে পানি মুখে দিতে দিতে বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।সেই স্মৃতি মনে পড়লে কখনো গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।সেই দিনের কথা আজীবনে ও ভুলার মতো নয়।
আজ থেকে আরো (১৫-১৬) বছর আগের কথা। আমাকে সবাই বলে আমি নাকি সম্পূর্ণ আমার বাবার মতো হয়েছি।আমার বাবা মারা যাবার পরে আমি প্রায় পাগলের মতো হয়েছিলাম।আসলে আমি আর আমার ছোট ভাই দুজনে অনেক স্বপ্ন দেখতাম বাবাকে।বাবা প্রতি রাতে আমার কাছে আসতো আর বলতো মা তুমি কিন্তু কখনো পড়াশোনা বাদ দেবে না।বাবা মারা যাবার প্রায় একমাস পরে আমি কলেজে গিয়েছিলাম একাই। সত্যি বলতে বাবা যেদিন মারা গেল সেই দিন যতটা কষ্ট লেগেছিল তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম একা কলেজে যাবার সময়।সেই দিন মনে হচ্ছিল আর পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই । কিছু দিন অনেক কষ্ট হয়েছে বাবাকে ছাড়া। যদিও আমার বড় ভাই বোনদের সাপোর্ট ছিল আমার সাথে। তারপর বারবার বাবার কবরের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলতাম। আসলে কিছুতেই বাবাকে ভুলতে পারছিলাম না।যেখানে যেতাম সেখানেই শুধু বাবার স্মৃতি মনে পড়তো।
তবে এখন বাবাকে অনেকটা ভুলে গিয়েছি৷আসলে বাবার স্মৃতি তো কখনো ভুলা যায় না তবে অনেক চাপা পড়ে গেছে। আর যখন কারো বাবা মারা যায় তখন আমার বাবার কথা মনে পড়ে যায়।আজ যখন বাবার কথা মনে পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। তাই মনের কিছু কথা লিখলাম। আসলে বাবাকে নিয়ে লেখে কখনো শেষ করা যাবে না। আজ যখন লিখছি তখন দুচোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছে। আসলে নিজের অজান্তেই চোখের পানি ধরে আর রাখতে পারিনি।তবে জন্ম নিলে মৃত্যু বরণ করতে হবে এটা চিরন্তন সত্য।বাবার মতো আমরা ও একদিন পৃথিবী থেকে চলে যাব।দোয়াকরি ওপারে ভালো থাকবে বাবা।আশাকরি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
https://x.com/MimiRimi1683671/status/1811772357964640540?t=yBxQnYqnekhln1kk17FDJg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাবাকে হারানো প্রতিটা ছেলে মেয়ের জন্যই ভীষণ কষ্টের । এটি মেনে নেওয়া ভীষণ কষ্টকর। আপনার বাবা আপনাদের ছেড়ে যেভাবে চলে গিয়েছেন তা সত্যিই ভীষণ কষ্টের ছিল । এভাবে হঠাৎ মৃত্যু মেনে নেওয়া অনেক বেশি কষ্টের হয়ে থাকে । পরবর্তীতে আপনার একা কলেজে যাওয়ার সময় বাবাকে বারবার মনে পড়াটাই স্বাভাবিক ছিল । যাই হোক বাবার জন্য বেশি বেশি দোয়া করবেন । এটা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই । ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন বাবার জন্য দোয়া ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে পৃথিবীতে যাদের বাবা-মা আছে তারা অনেক সৌভাগ্যবান। বাবা হল মাথায় উপরের ছাদ । আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো আপু আপনার কলেজে ভর্তি হওয়ার ১০ দিনের মাথায় আপনার বাবা আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে এটা জেনে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে বাবা হারানো কষ্টের কথা কোনদিনও ভুলা যাবে না। আপু আপনার বাবার আত্মার শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আপনার বাবাকে জান্নাত দান করেন।
জি আপু বাবার কথা কোন দিন ও ভুলার মতো নয়, ধন্যবাদ আপু।
বাবা হচ্ছে ছেলেমেয়েদের জন্য বড় একটি ছায়া। আর বাবা যদি এই পৃথিবীতে না থাকে তাহলে বোঝা যায় বাবা কি জিনিস। আপনার বাবা ১৫ থেকে ১৬ বছর আগে মারা গেল এখনো তার স্মৃতি আপনার মাঝে আছে। আর বাবার স্বপ্ন থাকে সব ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে মানুষ হোক। আপনার বাবা আপনাকে কলেজে নিয়ে গেল স্মৃতিগুলো আপনার এখনো মনে পড়ে। আল্লাহ যেন আপনার বাবাকে জান্নাতবাসী করে এটাই কামনা করি।
আসলে আপু বাবার স্মৃতি কখনো ভুলবার নয়,আমার মনে হয় যাদের বাবা নেই তারা শুধু বাবার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকে আজীবন। ধন্যবাদ আপু।
সন্তানের কাছে পিতা খুবই মূল্যবান একটি জিনিস৷ আর এই পিতা মারা গেলে তার থেকে কষ্টের বিষয় আর কিছু হতে পারে না৷ সন্তানদের কাছে তাদের পিতা একজন নায়ক হিসেবে থাকে৷ আর যখন সেই নায়ক পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় তখন তার থেকে দুঃখের বিষয় আর কিছু হতে পারে না৷ আপনার কাছ থেকে এরকম একটি পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷