জেনারেল রাইটিং বৃষ্টি ভেজা একদিন

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।

বৃষ্টি ভেজা একদিন

1000012538.jpg

Source

বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি আমাদের শৈশবে স্মৃতি নিয়ে। আমাদের সবার জীবনে শৈশব স্মৃতি অনেক রয়েছে। আর শৈশবের স্মৃতি গুলো সব সময় মধুর হয়ে থাকে। বেশ কিছু দিন প্রচন্ড তাপমাত্রা ছিল কোথা ও বৃষ্টির দেখা ছিল না। তবে আজ কয়েক দিন ধরে সব জায়গায় কম বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। আর এখন সবাই একটু আরামে আছেন। আসলে একদিকে আরামে থাকলে আবার অন্য দিকে বেশির ভাগ বাচ্চারা ঠান্ডা জ্বরে ভুগছে। যাইহোক আমরা সবাই সাবধান থাকার চেষ্টা করবো।গত দুই দিন ধরে আমাদের এদিকে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টি অন্য দিকে কৃষকের ধান কাটা লেগেছে। আসলে নিয়তির কি নিয়ম।যখন কৃষকের বৃষ্টি দরকার ছিল তখন ছিল রোদ আর এখন দরকার রোদ এখন হচ্ছে বৃষ্টি। আসলে এখানে আমাদের কারো হাত নেই। তবে আল্লাহু যা করেন আমাদের ভালোর জন্যই করে থাকেন।গত দুই দিন ধরে ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে অনেক ইচ্ছে ছিল বৃষ্টিতে ভেজার কিন্তু সাহস হলো না। আসলে বৃষ্টিতে ভেজলে জ্বর আসার সম্ভবনা থাকে বেশি।তবে গত বৃহস্পতিবারে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে দেখি অনেক বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজছে। তাদের ভেজা দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম শৈশব নিয়ে আমাদের মাঝে লিখি।তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।


আমরা একদলে মানে একই জায়গা থেকে চারজন এক সাথে স্কুলে যেতাম।আমি, বাসার, নিপা ও লিপি। আমার তবে আমার বাড়ির পাশের আপুটা মানে লিপি আমাদের এক ক্লাস ওপরে পড়তো। তবে ওপরে পড়লেও আমরা একেবারে বান্ধবীর মতো মিশতাম। তখন ছিল বর্ষাকাল। আমরা চারজন একসাথে স্কুলে যাবার জন্য রওনা দিলাম। যদিও আমাদের সবার কাছে ছাতা ছিল। আমি ক্লাস ফোরে পড়ি আর আপুটা ফাইভে পড়ে।আমরা যখন স্কুলে গিয়েছি তখন কোন বৃষ্টি ছিল না । আমরা স্কুলে যাবার পরপরই শুরু হলো তুমুল ঝড় বৃষ্টি। আবার এদিকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। এই দেখে টিচাররা আমাদের ছুটি ঘোষণা করলো। তবে এতো বৃষ্টি নামছে তাই দেখে সকল বাচ্চাদের ক্লাস রুমে বসে থাকতে বললো।আর বললো সবাই বৃষ্টি কমলে যার যার মতো বাড়িতে চলে যাবে। যেহেতু আমরা চারজন এক দলের তাই আমাদের বাড়ির লোকজনের তেমন টেনশন ছিল।তবে দুপুরে একটু বৃষ্টি কমলেও অনেকে চলে গিয়েছিল কিন্তু আমরা আসিনি। তখন প্রায় সবাই চলে গিয়েছে।আমরা বই খাতা রেখে চারজনে বৃষ্টিতে গোসল করতে লাগলাম ।


গোসল করতে করতে আবার শুরু হলো ঝড় বাতাস। এমন ভাবে শুরু হলো আর থামার নাম নেই। আসলে আমরা ভিজা কাপড়ে স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলাম । ঝড়বাতাস যখন একটু কমতে লাগলো তখন বিকেল চারটা ভেজে গেল কিন্তু বৃষ্টি কমছে না। আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম এখন বৃষ্টিতে ভিজে বাড়িতে যাব।এদিকে স্কুল থেকে বাড়ি অনেকটা দূর। তারপর আমরা সবাই একসাথে রওনা দিলাম।আমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে দূর্বল সে বেশ কিছু দূর আসার পরে হঠাৎ পা পিছলে পড়ে গেল।এদিকে বৃষ্টি কোন রকম থামছে না তাকে টেনে আবার কে তুলবে। কথায় আছে না চাচা আপন জান বাঁচা। তবে আমরা তখন এতোটাও বুঝতাম না। অনেক চেষ্টার পরে সে আর উঠতে পারছে না। তারপর চারদিকে পাট ও ধান ক্ষেত।বৃষ্টি পেয়ে যেমন শেয়াল ও ব্যাঙ ডাকছে। আসলে চারপাশ এভাবে ঘেরা দেখে আমাদের ভয় ও লেগেছিল। আবার ওকে ওখানে রাখা নিরাপদ নয়।তাই আমি একটা বুদ্ধি বের করলাম। একজনকে রেখে আমরা দুজন চলে আসলাম বাড়িতে খবর দেবার জন্য।

আমরা দুজন বৃষ্টি ভিজতে ভিজতে নিপাদের বাড়িতে খবর দিলাম নিপা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারপর আমরা বাড়িতে এসে ড্রেস চেঞ্জ করলাম। অন্য দিকে নিপাকে রেখে আরেক ও চলে এসেছে। আর নিপা ঠান্ডায় আর শিয়ালের ডাকে ভয়ে দাঁত লেগে ধান ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে আছে। আসলে নিপার আগে থেকে অসুস্হ ছিল তারপর আবার বৃষ্টিতে ভিজেছে । তারপর আবার বৃষ্টিতে গোসল করে বাড়িতে আসছে তাই আরো বেশি হয়েছে। নিপার বাবা মা গিয়ে দেখে এভাবে মাঠের মধ্যে শুয়ে আছে। প্রথমে সবাই ভেবেছিল মারা গিয়েছে কিন্তু তারপর দেখলো ঠান্ডায় শুধু কাঁপছে। তারপর বৃষ্টি কিছুটা থামলো। সেই অবস্থায় নিপাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। তখন ডাক্তার বললো অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ভেজার জন্য এমন হয়েছে। তারপর ডাক্তার কিছু ঔষধ পত্র দিল।তারপর আস্তে আস্তে নিপা সুস্থ হতে লাগলো। আসলে আমরা প্রথমে শখ ভিজেছিলাম। আসলে এই শখ অনেক সময় বড় ধরের বিপদ ডেকে আনি। কিন্তু এটা আমাদের করা অবশ্যই উচিত নয়।আর নিপার কথা মনে হলে আমি আজও বৃষ্টিতে ভিজতে ভয় পায়।।তাই আমাদের উচিত শখ হোব বা নাই হোক অতিরিক্ত কিছুই ভালো না। আশাকরি আমার লেখাটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর



আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

1000000175.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

1000000177.gif

1000000178.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

আসলে ছোট্টবেলার জীবন কতই না সুন্দর ছিল। স্কুল যখন ছুটি হবে তার আগে এইভাবে বৃষ্টি নামলেই তখন ছুটি ঘোষণা করা হতো । কি যে আনন্দ লাগতো সেই মুহূর্তটা মিস করি। আমরা বাড়িতে বই রেখে বৃষ্টিতে ভিজতাম এবং পিচ্ছিল কাদামাটির উপরে খেলাধুলা করতাম । সেই দিনগুলো হারিয়ে গিয়েছে আপনার ছোটবেলার গল্পটি পড়লাম বান্ধবীদের সাথে দারুন সময় উপভোগ করেছেন। কিন্তু সেদিনের খারাপ একটা অভিজ্ঞতার বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন। আপনার বান্ধবী শিয়ালের ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।

 2 months ago 

আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

বেশ ভয়ানক একটি ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নিপার এমন মুহূর্তে সত্যিই শঙ্কিত সময়ে। আপনারা যে দ্রুত এসে খবর দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। স্কুল লাইফে এমন অনেক ঘটনা আমাদের। বৃষ্টির কারণে বাড়ি আসতে দেরি হয়েছে। তবে রাস্তার পাশে স্কুল থাকায় আমাদের মাঠ পেরুতে হতে হয়নি। যাক ঘটনাটা জেনে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

আমাদের স্কুল বাড়ি থেকে অনেক দূরে ছিল আর ফসলের মাঠের মধ্যে আসতে হতো।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

বৃষ্টিতে ভেজা একদিন আপনার স্কুল জীবনের গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু। গল্পটি থেকে আমি অনেক কিছুই শিখলাম। তবে একটা জিনিস আপনি ঠিকই বলেছেন অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। আপনাদের স্কুল ছুটির পর চারটা বেজে যাচ্ছে তার পরেও বৃষ্টি থামছে না। তারপর আপনারা চারজন একসাথে আসতে আসতে হঠাৎ নিপা পা পিছলে পড়ে যায় সে অসুস্থ থাকার কারণে। তবে আপনার এটা ঠিকই করেছেন যে একজনকে রেখে দুইজন বাড়িতে খবর দেওয়ার জন্য চলে এসেছেন। তবে নিপাকে একা রেখে আপনার ওই বান্ধবী চলে আসাটা ঠিক হয়নি এতে ও আরো ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছে। যাইহোক পরবর্তীতে সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন এটাই অনেক ভালো।

 2 months ago 

আসলে আপু তখন আমরা কেউ তেমন বুঝতাম না, ধন্যবাদ আপু সাবলীল মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

প্রথম দিকে যখন বৃষ্টিতে ভেজার কথা বলছিলেন তখন ভাবলাম হয়তো খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু যেটা পড়লাম আসলে এটা আশা করিনি। সবাই মিলে আনন্দ করেছেন ঠিকই কিন্তু এভাবেই নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে নিয়ে এসেছেন। এত ঝড়ের মধ্যে ভিজে ভিজে বাড়িতে গিয়েছেন তার পাশাপাশি আবার আপনাদের দলের একজন সেখানে পড়ে রয়েই গেল। আসলে যদি কোন অঘটন ঘটে যেত তাহলে হয়তো এর জন্য আপনারা নিজেরাই নিজেদের দায়ী মনে করতেন। যাই হোক ভালো লাগলো মুহূর্তটা পড়ে।

 2 months ago 

আসলে আপু তখন বুঝার মতো বয়স ছিল, এখন যতটা বুঝি। ধন্যবাদ আপু সাবলীল মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

আপনি বৃষ্টি ভেজা দিনের বেশ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করলেন। যদিও গল্পটি আপনাদের বাস্তব গল্প ছিল। তখনকার স্কুল গুলো খুবই দূরে ছিল হঠাৎ করে বৃষ্টি আসলেই বেশ বিপদে পড়ে যেতাম। যেহেতু ছোট বাচ্চা ছিলাম আমরা বুঝতাম না তাই ছাতা নিয়ে যেতাম না। কিন্তু নিপাকে এভাবে ফেলে আসা উচিত হয়নি। আপনারা ছোট বাচ্চারা বুঝতে পারেননি। অবশেষে মা-বাবা যেয়ে নিপাকে ঘরে নিয়ে আসলো ভালো করলেন খবর দিয়ে।

 2 months ago 

আসলে আপু এখনকারের মতো ততটা বুঝতাম না, ধন্যবাদ আপু গঠন মূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

তবে দুপুরে একটু বৃষ্টি কমলেও অনেকে চলে গিয়েছিল কিন্তু আমরা আসিনি। তখন প্রায় সবাই চলে গিয়েছে।আমরা বই খাতা রেখে চারজনে বৃষ্টিতে গোসল করতে লাগলাম ।

সবাই যখন বাড়ি চলে যাচ্ছিল তখন আপনাদেরও বাড়ি চলে যাওয়াটা উচিত ছিল। তাছাড়া আপনাদের বান্ধবী নিপা কে ওইভাবে ঝড় বৃষ্টির ভিতর একা ফেলে রেখে আসা উচিত হয় নি আপনাদের। যদিও আপনারা তখন অনেক ছোট ছিলেন, হয়তো খুব বেশি বুঝতেন না। তবে ঐদিন হয়তো আপনাদের বান্ধবী অনেক বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গেছিল।

 2 months ago 

জি ভাইয়া আমরাও তেমন বুঝতাম না ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66521.28
ETH 3454.20
USDT 1.00
SBD 2.67