অরিগ্যামি বুকমার্ক সিরিজ -১ | কাগুজে বো বুকমার্ক
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
আশাকরি আপনারা বেশ ভালোই আছেন৷ আমিও ভালো আছি। অল্পবিস্তর ঠান্ডা পড়েছে। আর ব্যস্ততাও বেড়েছে। শীতকাল এলে দুপুর বেলায় ছাদে বসে বই পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। ভাগ্যক্রমে পুনের বাড়িতে যে ব্যালকনি রয়েছিস সেটা ছোট্ট একটা ছাদ বলা চলে। আর সেখানে রোদের যাতায়াত অবাধ। তাই আজকাল সময় পেলেই ব্যালকনিতে গিয়ে বই পড়ি। তাই আজকাল বুকমার্কটা বেশ ভালো মতন প্রয়োজন পড়েছে৷ এদিকে আজ কি নিয়ে পোস্ট করব সারাদিনে ভাবিনি। রাতেই তাই মনে হল একটা বুকমার্ক বানিয়ে নিই।
তাছাড়া প্রতি সপ্তাহেই প্রায় একটা করে অরিগেমি পোস্ট করি আমি। যে কাজটা আমি একেবারেই জানতাম না সেই কাজটাই আমার কন্যার সাহায্যে শিখে নিয়ে অল্প বিস্তর করতে পারি। তো আগের দুটো পোস্টে আমি ফুল বানিয়েছি। সেটার নাম তো আর ফুল সিরিজ দিতে পারিনি, বুকমার্ক বানানোর সময় মনে হল অনেক ধরনের যেহেতু বুকমার্ক বানানো যায় তাই একটি সিরিজ করি।
আচ্ছা চলুন দেরি না করে দেখে নিই কি লাগলো আর কিভাবে বানিয়েছি।
🔖উপকরণ🔖
- সবুজ রঙের বর্গাকার কাগজ।
🔖বুকমার্ক তৈরি করার পদ্ধতি 🔖
দুই বিপরীত দিক ভাঁজ করে নিলাম শুরুতেই। ফলে দু'দিকেই সুন্দর দেখতে ত্রিভুজ তৈরি হল।
ভাঁজ খুলে নিয়ে আবার আরে দুই দিকেই ভাঁজ করে নিলাম।
এবার সমস্ত ভাঁজ খুলে, মাঝখানে বিন্দু কি পয়েন্ট করে কাগজটি এমনভাবে মরলাম যাতে দুই দিক ভাঁজ হয়ে ভেতরে চলে যায় এবং উপর থেকে একটি ছোট্ট বর্গক্ষেত্র তৈরি হয়।
খুব সুন্দর দেখতে একটি বর্গক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
বর্গক্ষেত্রের নিচে যে দিকটা খোলা অংশ রয়েছে, সেই অংশটাকে পয়েন্ট করে ত্রিভুজ বানিয়ে একটি ভাঁজ করব। ছবিটা দেখলে স্পষ্ট বোঝা যাবে ভাঁজটা কেমন ভাবে করেছি।
দুই পিঠেই সুন্দর করে ভাঁজ করেছি।
ভাঁজ টাকে খুলে নিয়ে, ভেতর দিকে মুড়ে করে ঢুকিয়ে দিলাম। একইভাবে সামনের দিকের আরেকটি ত্রিভুজের ভাঁজ ভেতরে ঢুকালাম এবং উল্টো পিঠেও করে নিলাম।
শেপটা একই রয়েছে কিন্তু উপরের যে ত্রিভুজ অংশটা, তা ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে বাইরে থেকে আর বোঝা যাচ্ছে না।
যেদিকে ভাঁজটা ঢুকিয়েছে সেই দিকেই খুলে নিচ্ছি লম্বা করে।
মাঝে যে দাগটা তৈরি হয়েছে সেটাকে উপলক্ষ করে নিচের লম্বা অংশটা ভাঁজ করে নেব, পাখির ডানা যেভাবে বার করে সেরকম। ছবিটা দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।
একইভাবে আরও একটি দিক করে নিয়েছি৷
এবার ওই ভাঁজকেই খুলে উপরের অংশটার ভাঁজ খুলে ওপর দিকে করে মুড়ে দিলাম।
দুই রকম ভাবে ছবিতে দেখিয়েছি। আশা করি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে৷
এবার উপরের অংশটা সমান করে উল্টোদিকে ভাঁজ করে নিলাম।
মাঝে যে দুটো ডানার মতো অংশ বেরিয়েছিল তাকে কিছু করবো না সেটা সেরকমই থাকবে।
কাগজটা কি উল্টে দিলাম।
যে অংশটা পেছনদিক থেকে মুড়েছিলাম সেটাকেই আবার উপর থেকে সামান্য একটু বাদ দিয়ে ভাঁজ করলাম। খুব সুন্দর দেখতে একটি ত্রিভুজ তৈরি হলো।
কাগজটা আবার উল্টে দেবো।
আগের ধাপেই যে অংশটা ভাঁজ করেছিলাম সেটাকেই খানিকটা ছেড়ে আবারও ভাঁজ করে সামনে আনলাম।
বাকি অংশটা দু দিকের ডানার মত অংশের মাঝখানে মাপ করে মুড়ে ভেতরে ঢুকিয়ে নিলাম।
দুদিকের ডানার মতো অংশটা মাঝ বরাবর ভাঁজ করে প্রান্তিক কোণগুলো মাঝের অংশে ঢুকিয়ে দিলাম। ছবিটা দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায় ঠিক কোথায় আটকেছি।
দু দিকের অংশে সমানভাবে করার পর তৈরি হয়ে গেল খুব সুন্দর দেখতে একটি বো। সাথে আমার বুকমার্কটিও তৈরি।
🔖🔖অন্তিম দর্শন🔖🔖
বন্ধুরা, কেমন লাগল আমার আজকের বো বুকমার্ক? আশাকরি ভালো লাগবে৷ আমি সবুজটা বানানোর পর মেয়ের আবদারে ওকেও একটা বানিয়ে দিয়েছি। ভালো হয়েছে?
আচ্ছা আবার আসব নতুন কিছু নিয়ে৷ আজ এ পর্যন্তই।
টা টা
পোস্টের ধরণ | অরিগ্যামি পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | আইফোন ১৪ |
লোকেশন | পুনে, মহারাষ্ট্র |
ব্যবহৃত অ্যাপ | কোন এডিট নেই, তাই অ্যাপের ব্যবহার করা হয়নি |
১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
অসাধারণ হয়েছে আপু। অরিগ্যামি বুকমার্ক তৈরির ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা এবং ছবি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/neelamsama92551/status/1862926132296732816?t=mR4BD85XPGVlqD-UJthgyQ&s=19
বুকমার্ক খুবি সুন্দর ভাবে অল্প সময়ে মধ্যে এই ডাই পোস্ট তৈরি করেছেন। ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
না না খুব অল্প সময় লাগেনি৷ একটু সময় তো লেগেইছে। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই৷
@tipu curate
;) Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Upvoted 👌 (Mana: 5/7) Get profit votes with @tipU :)
শীতের দিনে বেলকুনিতে রোদে বসার মজাই আলাদা। তুমি দেখছি সুযোগ পেলেই বেলকুনিতে বসে বই পড়ো।মামনির সাহায্য নিয়ে দারুন বানিয়েছো কাগজের সুন্দর কাগুজে বো বুকমার্ক।ধাপে ধাপে বুকমার্ক বানানো পদ্ধতি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর বুকমার্ক তৈরি পদ্ধতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ৷ আমারও খুব ভালো লাগে রোদ পোহাতে৷
আসলে মেয়েরো এখন উৎসাহ মা ব্লগে কি লিখবে বা কি টা ব্লগের জন্য বানাবে৷ হা হা হা
কাগজের বো তো দারুন সুন্দর বানিয়েছিস। অসাধারণ একটি ভাবনা প্রকাশ ঘটেছে এই ধরনের অরিগামির কাজে। প্রত্যেকটি ধাপ খুব পরিষ্কার এবং এই পোস্ট দেখলে খুব সহজেই একজন এমন বো তৈরি করতে পারবে। খুব সুন্দর ভাবে পোস্টটা উপস্থাপনা করলি।
চেষ্টা করেছি। জানো তো এই সব করতে আমার কেমন ভালো লাগে৷
যারা মোটামুটি বই পড়ে তাদের কাছে এই বুকমার্ক বেশ আকর্ষণীয় এবং প্রয়োজনীয় একটা জিনিস। অনেক সময় অনেকে চেষ্টা করে ভিন্ন ধরনের বুকমার্ক সংগ্রহ করতে। রঙিন কাগজ দিয়ে বুকমার্ক এর অরিগ্যামি টা বেশ চমৎকার তৈরি করেছেন আপু। সুন্দর লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
একদমই তাই। বইপ্রিয় মানুষদের কাছে বুকমার্কের খুজই প্রয়োজনীয়তা আছে৷ আপনার ভালো লাগল জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ নেবেন৷