নাটক রিভিউ-আমি সেই মেয়ে|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। আজকে কি পোস্ট করবো ভেবেই পাচ্ছিলাম না। এরপর ভাবলাম একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করি। আর সেই ভাবনা থেকেই আজকে আমি একটি নাটক রিভিউ সবার মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি এই নাটক রিভিউ সবার ভালো লাগবে।
নাম | আমি সেই মেয়ে |
---|---|
পরিচালনা | মাবরুর রশিদ বান্না |
সম্পাদনা | জুবায়ের আবীর পিয়াল |
রচনা | ফাহাদ আল মুক্তাদির |
অভিনয়ে | মেহজাবিন চৌধুরী, মনিরা মিঠু, ফারহান এবং আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৩৪ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- মেহজাবিন চৌধুরী (ইলা)
নাটকের শুরুতেই দেখতে পাই একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে দেখানো হচ্ছে। একজন বয়স্ক বাবা হুইল চেয়ারে বসে রেডিওতে খবর শুনছেন। আর মা নিজের কাজকর্মে ব্যস্ত আছেন। রেডিওতে একজন ব্যবসায়ীর মার্ডারের নিউজ শোনানো হচ্ছে। এটা শুনে সেই বয়স্ক লোকটি উনার স্ত্রীকে বলছে দিনকাল যা পরেছে এখন তো কেউ ঘরেও নিরাপদ নয়। একজন ব্যবসায়ীকে নিজ বাড়িতে খুন করা হয়েছে। এটা শুনে উনার স্ত্রী রেগে যায় এবং বলে তাতে তোমার কি। তুমি নিজের পরিবার নিয়ে ভাবো আর নিজের সন্তানদের নিয়ে ভাবো। এরপরেই গল্পের অন্যতম চরিত্র ইলা বাসায় ফিরে আসে। ইলা বাবার অসুস্থতার পর পরিবারের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।
ইলা কল সেন্টারে চাকরি করে। সারারাত তাকে বাহিরে কাটাতে হয়। তার বাবা তাকে বলে এই চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারিস না মা। রাতে বাইরে থাকিস আমাদের খুবই ভয় হয়। ইলা বলে আমি এই মুহূর্তে চাকরিটা ছাড়তে পারবো না। এরপর ইলা বলে আমাকে আবারও বেরিয়ে যেতে হবে। এবার তার মা নাস্তা করে যেতে বলে। তখন ইলার বাবা ইলাকে বলে এইমাত্র ফিরলি আবার বাহিরে যাবি? তখন ইলা বলে একজন স্টুডেন্টের মা ফোন দিয়েছিল মনে হয় পাওনা টাকাটা দিবে। তাই নিতে যাচ্ছি বাবা। এটা বলেই ইলা বাহিরে বেরিয়ে যায়। আর যাওয়ার সময় বাবার প্রয়োজনীয় কিছু একটা চুপ করে দিয়ে যায় যাতে করে তার মা বুঝতে না পারে। ইলা সারারাত বাহিরে কাটানোর পর ক্লান্ত শরীরের বাড়ি ফেরে। পরিবারের সব চাহিদা গুলো ইলাকেই মিটাতে হয়
যেহেতু তার বাবা এখন কোন কিছু করতে পারে না তাই সব দায়িত্ব তার উপরে এসে পরেছে। মাঝে মাঝে তার পরিবার তাকে নিয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ে। ইলার বাবা মাঝে মাঝে বলে ইলাকে চাকরিটা ছেড়ে দিতে। তখন ইলা কিছু একটা কথা তার বাবাকে শুনিয়ে দেয়। কিন্তু সেই দৃশ্যটি শুধু দেখানো হয় কথাগুলো শোনানো হয় না। এরপর এভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাদের দিনগুলো। অন্যদিকে পুলিশ খুনের তল্লাশি করে তেমন কিছুই পায় না। শুধু বুঝতে পারে সেই ধনী ব্যবসায়ী মাদকাসক্ত ছিলেন এবং মেয়েদের প্রতি নেশা ছিল। অন্যদিকে ইলাও নিজের মত করে নরমাল জীবন যাপন করতে থাকে। তবে ইলা ভেতরে ভেতরে অন্য কিছু করছিল। তাকে দেখানো হয় একটি ক্লাবে। আর সে একজনকে রুমে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে। আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। আর মাঝে মাঝে পাড়া-প্রতিবেশীও তাদেরকে অনেক কথা শোনায় এবং একদিন এক প্রতিবেশী এসে বলে তার স্বামী ইলাকে একটি ক্লাবে দেখেছে অন্যরকম পোশাকে। এটা শুনে ইলার মা ভীষণ রেগে যায় এবং তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দেয়।
আবারও দ্বিতীয় খুন হয়ে যায়। ইলা প্লান করে সেই লোকটির সাথে দেখা করে এবং তারই পিস্তল দিয়ে তাকে খুন করে ফেলে। এরপর এটা নিয়েও বেশ নিউজ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ খুনিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। পুলিশ তার কাছের বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করে। অবশেষে ইলা নতুন উদ্দেশ্যে এগিয়ে যেতে লাগে। আরেকজনকে খুন করে পালানোর সময় গুলি বিদ্ধ হয় এবং তার বাবা মা বুঝতে পারে আসলে ইলা অন্য কিছু করছে। তখন তার বাবা-মা ভীষণভাবে ভেঙে পড়ে। এরপর ইলা সব কিছু সত্যি বলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। লাইভে এসে সব কিছু বলতে থাকে। সে বলে আসলে তারা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। তার এক বড় বোন ছিল। যার নাম ছিল মীরা। মীরাকে সেই তিন ব্যবসায়ী মিলে ধর্ষণ করেছিল। এরপর খুন করেছে। নিজের বোনের মৃত্যুর কোন বিচার পায়নি তারা। তাই নিজ হাতে সেই জঘন্য মানুষগুলোকে খুন করেছে ইলা। যখন ইলা লাইভে এই কথাগুলো বলছিল তখন কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই লাইভ ভিডিওটি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
সবশেষে ইলা নিজের দোষ স্বীকার করে। এরপর একটি কথাই বারবার বলে যে আমাদের সমাজের মেয়েরা আপনাদের জন্যই নিরাপদ নয়। তারা নিজে চাকরি করে পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাইলেও অনেক সময় সমাজের কিছু নোংরা মানুষগুলোর থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনা। নিজের সম্মান হারিয়ে ফেলে। আর অবশেষে হয়তো জীবন দিয়ে দিতে হয়। আপনারাই হয়তো এর জন্য দায়ী। মেয়েদেরকে সম্মান করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করে। এবার যখন নিজের সব দোষ স্বীকার করে নেয় তখন তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। অন্যদিকে সাংবাদিক মিডিয়া সবাই তার পিছনে পড়ে যায়। আর কিছু কিছু মানুষ তাকে বাহবা দেয়। দোষ স্বীকার করার পর পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায় আর এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
এই নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। অনেক শিক্ষনীয় বিষয় লুকিয়ে আছে। আসলে আমাদের সমাজের নারীরা আজও নিরাপদ নয়। চাকরির জন্য নারীরা অনেক জায়গায় ছুটে বেড়ায়। কিন্তু দিন শেষে অপমান কিংবা লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। আবার চাকরি পেয়ে গেলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লালসার শিকার হতে হয়। তাই নারীরা চাকরি করতে গিয়েও সমস্যায় পরে। সব মিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। আশা করছি এই নাটকটি সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করবে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
গতকাল আইরিন আপু কে দেখেছিলাম এই নাটক রিভিউ দিয়েছেন আর রিভিউ পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। আজ আপনার এই রিভিউ পড়েও খুব ভালো লাগলো। এই নাটক এখনও দেখা হয়নি তবে আপনাদের রিভিউ পড়ে দেখা হয়ে গিয়েছে। সত্যিই মেয়েরা যেন কোথাও তার স্বাধীনতা মেলে ধরতে পারে না। সমাজে যেমন তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তেমনি কর্মক্ষেত্রেও একই সমস্যায় পড়তে হয়। এই ধরনের শিক্ষনীয় নাটক দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনি সেখান থেকে অনেক কিছু শেখাও যায়। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
জি আপু গতকাল আইরিন আপুর পোস্ট আমিও দেখেছিলাম। আর পোস্টটি দেখেই মনে হয়েছিল নাটকটি দেখব। তাই নাটকটি দেখেছি। আর আমিও রিভিউ শেয়ার করেছি আপু।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমি সেই মেয়ে সিনেমার নাম শুনেছি। কিন্তু নাটক আছে বলে আজই জানলাম। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে যা বুঝলাম তাতে মনে হলো নাটকটি সমাজের নারীদের কে নিয়ে লেখা হয়েছে। সত্যি কিন্তু এখনও এ যুগে এসে নারীরা লাঞ্চিত হচেছ। ধন্যবাদ নাটকটি রিভিউ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এই নাটকটি কিছুদিন আগেই রিলিজ হয়েছে আপু। সত্যি আপু এই নাটকটিতে আমাদের সমাজের কিছু চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বেশ ভালো ছিল নাটকটি।
আমায় সব থেকে পছন্দের অ্যাক্টরের মধ্যে মেহজাবিন চৌধুরী সবার আগে। মেহজাবিন চৌধুরীর প্রচুর নাটক আমি দেখেছি। আমার কাছে তার নাটকগুলো অনেক বেশি ভালো লাগে। আসলে প্রত্যেকটা নারী যেখানেই থাক না কেন, তাদের জন্য সেই জায়গা গুলো নিরাপদ হয় না। তারা অনেক কিছু শিকার হয়ে থাকে কোথাও গেলে। চাকরির ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একটু বেশি দেখা যায়, নারীরা সেই সময়টাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়ে থাকে। নাটকটা কিন্তু অনেক সুন্দর ছিল। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে নাটকটার রিভিউ পোস্ট পড়তে।
মেহজাবিন চৌধুরী আপনার পছন্দের অভিনয়শিল্পী জেনে ভালো লাগলো আপু। এছাড়া মেহজাবিন চৌধুরী সত্যি অনেক ভালো অভিনয় করেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
আমি সেই মেয়ে এই নাটকটি আমি দেখেছি। নাটকটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে নাটকটি রিভিউ করেছেন। আপনার রিভিউ পড়ে আরো ভালো লাগলো।
এই নাটকটি আপনি দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো। নাটকটি আমার কাছেও বেশ ভালো লেগেছে ভাইয়া। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের সমাজে ভালো মানুষের মাঝেই খারাপ মানুষের অবস্থান। ঠিক যেমনি উচ্চবিত্ত পরিবারের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারেরও অবস্থান। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সন্তানরাই বড় হবার কারণে তারাই সংসারের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর ফলে তারা পড়ে যায় বিপাকে। কিছু নোংরা মানুষের খপ্পরে পড়ে তাদের সম্মান হারিয়ে ফেলে। আসলে আমাদের জন্যই আমাদের সমাজের মেয়েরা লাঞ্ছিত ধর্ষিত এবং অপমানিত হয় এখানে অন্য কারোর দোষ নেই। যেমন আপনার নাটকের ইলা। নাটকটি সত্যিকার অর্থেই বর্তমান সময়ের বাস্তব ধর্মী কিছু প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরেছে। আপনি নাটকটি খুবই দক্ষতার সাথে দারুণভাবে রিভিউ করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমাদের সমাজে ভালো মানুষের মাঝেই কিছু খারাপ মানুষ লুকিয়ে থাকে। আর তারা সব সময় মেয়েদের ক্ষতি করে।
সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। যদিও নাটকটি দেখা হয়নি। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি সময় পেলে নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করছি ভালো লাগবে আপনার। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি খুব সুন্দর একটি রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন।রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ অনেকটা বেড়ে গেল।সময় করে দেখে নিব নাটকটি।নাটকের গল্পটি ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি নাটকটি দেখতে পারেন। আর এই নাটকটি সত্যি দারুন ছিল। আশা করছি আপনার কাছেও ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার চমৎকার এই নাটকটা রিভিউ করা দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর একটি নাটক সম্পর্কে আমাদের মাঝে ধারণা দিয়েছেন আপনি। অনেক ভালো লাগলো আপনার নাটক রিভিউ।
এই নাটকটি সত্যি দারুন ছিল। আর আমি সুন্দরভাবে রিভিউ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
নাটকটি দেখে মনে হচ্ছে অনেক আবেগ মহি একটি নাটক। আসলে এই ধরনের নাটক গুলো দেখলে আমার চোখে পানি চলে আসে। বাংলাদেশের কিছু কিছু নাটক রয়েছে যেগুলো দেখলে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার এই নাটকটি আমার দেখা হয়নি সময় করে দেখব। মনে হচ্ছে আমার অনেক ভালো লাগবে