ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প) || প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই(প্রথম পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। মূলত আমার পরিচিত একজন প্রবাসীর জীবনের কিছু কষ্টের কথা শেয়ার করার চেষ্টা করবো। যাইহোক আমি সবসময় চেষ্টা করি বাস্তব ঘটনাগুলো গল্প আকারে শেয়ার করতে। আসলে কাল্পনিক ভাবে অনেক গল্প লেখা যায়, কিন্তু আমার কাছে মনে হয় বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো গল্প আকারে শেয়ার করলে,জীবন সম্পর্কে অনেকেই ধারণা পাবে। আসলে বেশিরভাগ প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই। প্রবাসীরা বিদেশে যে কতো কষ্ট করে, সেটা একমাত্র প্রবাসীরা ই উপলব্ধি করতে পারে। কারণ প্রবাসীদেরকে সবদিক দিয়েই চাপের মধ্যে থাকতে হয়।
যেমন বাহিরের কাজের চাপ,রুমে ফিরে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাপ,তারপর বাংলাদেশে থাকা পরিবার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা করতে হয়। আসলে দূরে থাকলে দুশ্চিন্তা এমনিতেই বেশি হয়। এতো কষ্ট করার পরেও যদি নিজের পরিবার একজন প্রবাসীর কষ্ট না বুঝে,তাহলে নিজেকে চরম ব্যর্থ মনে হয়। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক,দক্ষিণ কোরিয়াতে আমরা যে এরিয়াতে থাকতাম, সেখানে আমাদের পরিচিত আরও কয়েকজন ভাই ব্রাদার ছিলো। মোটামুটি আমরা ৮/১০ জন ছিলাম একেবারে কাছাকাছি। তো অফিস শেষ করে প্রায় প্রতিদিনই একে অপরের রুমে গিয়ে আড্ডা দিতাম। যাইহোক এর মধ্যে হঠাৎ একদিন বাবু ভাইয়ের রুমে সন্ধ্যার পর আড্ডা দিতে গিয়ে একজন বয়স্ক লোককে দেখতে পেলাম। সেই লোকটার বয়স ৫০ এর কাছাকাছি। লোকটার নাম ছিলো মোবারক।
মূলত বাবু ভাইয়ের পরিচিত একজন লোক,মোবারক ভাইকে বাবু ভাইয়ের রুমে পাঠিয়েছিলো কিছুদিন থাকার জন্য। কারণ বাবু ভাই রুম ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন। এমনিতে বাবু ভাইয়ের দেশের বাড়ি আমাদের নারায়ণগঞ্জে। যাইহোক বাবু ভাইয়ের রুমে ঢুকে সেই বয়স্ক লোক অর্থাৎ মোবারক ভাইয়ের সাথে প্রথমেই পরিচিত হলাম। এটা মূলত ২০২০ সালের কথা। তারপর কথায় কথায় জানতে পারলাম মোবারক ভাই নব্বই দশকের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়াতে ঢুকে প্রায় ১২ বছর ছিলেন এবং তারপর বাংলাদেশে চলে গিয়েছিলেন। এরপর বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর থাকার পর উনার আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো,তারপর তিনি আর্জেন্টিনা চলে যান এবং তিনি আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব লাভ করেন। কিন্তু আর্জেন্টিনাতে বেশি টাকা ইনকাম করতে পারতেন না বলে,২০২০ সালে আবারও দক্ষিণ কোরিয়াতে পাড়ি জমান।
যাইহোক উনি যখন নব্বই দশকের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়াতে যান,তখন উনার বয়স ছিলো ১৯/২০ বছর বয়স। উনার দেশের বাড়ি খুলনাতে। তো উনি কোরিয়াতে যাওয়ার পর মোটামুটি বেশ ভালো টাকা ইনকাম করতেন এবং সব টাকা উনার মা বাবার কাছেই পাঠাতেন। কারণ তিনি তখন অবিবাহিত ছিলেন। মূলত মোবারক ভাইয়ের পরিবারে ৩ ভাই এবং ২ বোন ছিলো। মোবারক ভাই ছিলেন উনার মা বাবার বড় সন্তান। উনি যেহেতু অবৈধভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করতেন, তাই বাংলাদেশে ছুটিতে যাওয়ার কোনো সুযোগ তিনি পাননি। মূলত তখন প্রায় সবাই অবৈধ ভাবেই দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করতো। কারণ দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজ করার জন্য তখন বৈধ কোনো ভিসা ছিলো না। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের জীবনে আর কি কি ঘটেছিলো, সেটা পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | গল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২২.৬.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রবাস জীবন মানেই দুঃখ কষ্টের জীবন। প্রবাসে গিয়ে কাজ করা টা অতটা সহজ নয়।যারা প্রবাসে গিয়ে কাজ করে তারাই শুধু এই দুঃখ কষ্ট গুলো বুঝে। তাদের কে সব সময় নিজ পরিবার কে খুশি করার চিন্তা মাথায় রাখতে হয়। আপনি আজকে একজন প্রবাসী ভাই কে নিয়ে একটি গল্প লিখেছেন। আসলেই প্রবাস জীবন মানেই জেলখানা।
আসলেই ভাই প্রবাসে গিয়ে থাকাটা খুবই কষ্টের। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রবাস জীবন মানে কষ্টের জীবন প্রবাসে যারা থাকে তারা অনেক পরিশ্রম করে নিজের পরিবারকে ভালো রাখার চেষ্টা করে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে মোবারক ভাইয়ের প্রবাস জীবনর কিছু কথা জানতে পারলাম। তিনি অনেক অল্প বয়সেই বিদেশে যায়। কারন তার উপর নির্ভর করে পরিবার চলে। যাই হোক আপনি অনেক সুন্দর করে প্রবাসীদের জীবনের দুঃখের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। গল্পটি যেহেতু চলমান রয়েছে আশা করি পরবর্তী পর্বটি খুব দ্রুত আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। এর মাধ্যমে আমারা এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে পারবা। ধন্যবাদ ভাই
পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করবো ভাই। যাইহোক গল্পটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অপেক্ষায় রইলাম ভাই গল্পের শেষ জানার জন্য সু স্বাগতম ভাই।
পরবর্তী পর্ব ইতিমধ্যেই শেয়ার করেছি ভাই। আশা করি সময় করে পড়ে নিবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
ওহ আচ্ছা অবশ্যই পড়বো ভাই। সু স্বাগতম
ওয়ালাইকুম আসসালাম,
আপনার লেখা পড়ে মনটা ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে উঠল। প্রবাসীদের জীবনের কষ্টের কথা যেভাবে আপনি বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। মোবারক ভাইয়ের জীবনের সংগ্রাম এবং ত্যাগের কাহিনী আমাদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। আপনার লেখার স্টাইল এবং ঘটনাগুলো গল্প আকারে উপস্থাপন করার পদ্ধতি সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রবাসীদের জীবনের এমন বাস্তব চিত্র আরও বেশি মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি পরবর্তী পর্বগুলোও তেমনি মুগ্ধ করবে। ইনশাআল্লাহ, আমরা আপনার পরবর্তী লেখা পড়ার জন্য অপেক্ষা করব।
ধন্যবাদ,
[@redwanhossain]
বেশিরভাগ প্রবাসীদের জীবনে অনেক কষ্ট। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।