আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে টেলিপ্যাথি। এই নাটকটি ২ দিন আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে তৌসিফ মাহবুব এবং তানজিন তিশা। এই দুজনের অনেক নাটক আমি দেখেছি। এই দুজনের জুটি মোটামুটি ভালোই লাগে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।

নাটকের নায়ক তৌসিফ এবং নায়িকা তিশা প্রেমিক প্রেমিকা। তারা একে অপরকে প্রচন্ড ভালোবাসে,কিন্তু কথায় কথায় একে অপরের সাথে প্রতিদিন ঝগড়া করে এবং আবার মিলে যায়। কারণ একে অপরকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারে না। মূলত তাদের প্রথম পরিচয় হয়েছিল কাকতালীয় ভাবে একটি রেস্টুরেন্টে। এরপর থেকে তারা একে অপরের সাথে মিশতে মিশতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। যাইহোক ঝগড়াঝাটি, খুনসুটি এভাবেই তাদের সম্পর্ক চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে তারা কারণ অকারণে ঝগড়া করে, বেশ কয়েকদিন একে অপরের সাথে কথা বলে না। তখন তৌসিফ এবং তিশার বন্ধু বান্ধবীরা দুজনকেই বলে যে, যেহেতু একে অপরকে ছাড়া তারা থাকতে পারেনা তাহলে ঝগড়া কেনো করে। এরপর দুজনকেই ফোন দিয়ে কথা বলতে বলে একে অপরের সাথে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

কিন্তু ইগোর কারণে কেউ কাউকে সহজে ফোন দিতে চায় না। যখন দুজনই একে অপরকে ছাড়া একেবারেই থাকতে পারেনা, তখন তার একে অপরকে ফোন করে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে দুজন একই সাথে ফোন করে। কারণ তাদের দুজনের মধ্যেই টেলিপ্যাথি কাজ করে। তাদের দুজনের মনের প্রচন্ড মিল। দেখা যায় তৌসিফ তিশাকে কিছু বলতে যাবে, তখন তিশাও বলে আমি তো এটাই বলতে চেয়েছিলাম। যাইহোক একবার তাদের মধ্যে প্রচন্ড ঝগড়া হয় এবং কেউ কাউকে ফোন করে না অনেকদিন ধরে। এদিকে তানজিন তিশার মা তার বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লাগে। তানজিন তিশাও তৌসিফ এর উপর রাগ করে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু পাত্রপক্ষ তাদের বাসায় আসার পর তানজিন তিশার একটুও পছন্দ হয় না।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এদিকে তৌসিফের বন্ধু তৌসিফ এর জন্য একটি মেয়ে ঠিক করে এবং বলে যে কথাবার্তা বলতে, যদি ভালো লাগে তাহলে ফ্রেন্ডশিপ করতে। তবে তৌসিফ সেই মেয়ের সাথে অযথাই ঝগড়া করে চলে যায়। যাইহোক একদিকে তিশার বিয়ের আয়োজন চলছে ঠিকই, কিন্তু সে মোটেই খুশি নয়। কারণ সে তৌসিফকে খুব ভালোবাসে। এদিকে তৌসিফও তানজিন তিশাকে ছাড়া একেবারেই ভালো নেই। কিন্তু একে অপরকে ফোন করে না ইগোর কারণে। তৌসিফ এর শরীরটা তেমন ভালো না। তাই হসপিটালে গিয়ে ডক্টরকে দেখায় এবং তারপর জানতে পারে তৌসিফ ক্যান্সারে আক্রান্ত। আর মাত্র কয়েকটা দিন তৌসিফ বাঁচবে। তৌসিফ আবদ্ধ ঘরে একা একা বসে কাঁদে এবং তিশা তৌসিফকে ভুলে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারছে না বিধায় কাঁদে। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

নাটকটি শুরু থেকে মজার হলেও শেষের দিকটা বেশ কষ্টের। আসলে বাস্তবে তাদের দুজনের মতো এমন মনের মিল খুব কম দেখা যায়। কিন্তু এটা ঠিক অনেক সম্পর্ক বাস্তবেও ইগোর কারণে নষ্ট হয়ে যায়। আমার মতে মন থেকে কাউকে ভালবাসলে, তার সাথে ইগো দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। আসলে ভালোবাসার মধ্যে ঝগড়াঝটি, খুনসুটি হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে ইগো দেখিয়ে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করা উচিত নয়। একে অপরকে সরি বলে ঝগড়াঝাটি মীমাংসা করে নেওয়া উচিত। কেউ আগে সরি বললে ছোট হয়ে যাবে, নিচু হয়ে যাবে বা নত হয়ে যাবে, এটা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা। আসলে দিনশেষে ভালোবাসার মানুষ দুটি ভালো থাকাটাই মুখ্য বিষয়। আর একটি সম্পর্কের মধ্যে যত বেশি ত্যাগ তিতিক্ষা থাকবে, সেই সম্পর্কটা তত বেশি সুন্দর হয়। আমাদেরকে সব সময় একটা কথা মনে রাখতে হবে,বর্তমানে প্রকৃত ভালোবাসা পাওয়াটা খুবই কঠিন। সুতরাং ছোটখাটো এমন বিষয় নিয়ে, ভালোবাসার মানুষকে দূরে ঠেলে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এই নাটকে সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।

আমার রেটিং