ভ্রমণ পোস্ট || ওয়াইফকে নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করবো। আপনারা অনেকেই জানেন যে ফেব্রুয়ারি মাসের ১১ তারিখ অর্থাৎ মাস দুয়েক আগে আমি এবং আমার ওয়াইফ কক্সবাজার ট্যুরে গিয়েছিলাম এবং ১৫ তারিখে বাসায় ফিরেছিলাম। তো এই ট্যুরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি পর্ব আকারে সবকিছু শেয়ার করার চেষ্টা করবো। যাতে করে যারা কক্সবাজার যাননি এখনো, তারা যেনো এই সিরিজটি পড়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে পারেন। যাইহোক আমি এর আগেও বেশ কয়েকবার কক্সবাজার গিয়েছি,কিন্তু তবুও কক্সবাজার বারবার যেতে ইচ্ছে করে। কারণ সমুদ্র সৈকত বরাবরই আমার ভীষণ পছন্দ। তো আমার ওয়াইফকে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো কক্সবাজার ট্যুরে গিয়েছিলাম এবার।
যাইহোক আমাদের ইচ্ছে ছিলো কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে করে কক্সবাজার যাওয়ার। কিন্তু টিকেট ম্যানেজ করতে পারিনি বলে,শেষ পর্যন্ত বাসে যেতে হয়েছিল। আমি ইমপেরিয়াল এক্সপ্রেস স্লিপার কোচের দুটি টিকেট কিনেছিলাম ২৮০০ টাকা দিয়ে। বাস ঢাকা আরামবাগ থেকে ছাড়ে এবং রাত ১১ টা বাজে মদনপুর থেকে আমাদের ওঠার কথা। কিন্তু রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে, শেষ পর্যন্ত রাত ১১.৩০ টার দিকে বাস এসেছিল মদনপুরে। তো বাস আসার পর বাসের সুপারভাইজার আমাদের ছোট লাগেজ দুটি ভিতরে ঢুকিয়ে দিলো এবং দুটি টোকেন দিলো। যাইহোক আমাদের সিট ছিলো লোয়ার ডেকের এ-২ এবং এ-৩। তার মানে একেবারে প্রথম সিট। বাসে উঠে কেবিনে ঢুকেই তো শান্তি। দেখলাম যে কেবিন বেশ লম্বা। মিনিমাম ৬ ফিট লম্বা হবে এবং আমরা দু'জন শোয়ার পর একেবারে পারফেক্ট লেগেছিল সবকিছু।
মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা ছিলো, দুই বোতল পানি রাখা ছিলো এবং জুতা রাখার ব্যবস্থা ছিলো। শুয়ে শুয়ে জার্নি উপভোগ করতে লাগলাম এবং মনে হচ্ছিল বাসায় শুয়ে আছি। যাইহোক রাত ১.৪০ টার দিকে কুমিল্লার গ্রীন ভিউ হোটেলে যাত্রা বিরতি দিলো ২০ মিনিটের জন্য। আমরা রাত ১১ টার সময় খাওয়া দাওয়া করে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম বলে ক্ষুধা ছিলো না তখন। তবুও হালকা কিছু খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তারপর দুটি বার্গার অর্ডার করলাম। কিন্তু বার্গার এতটাই বাজে ছিলো যে,অল্প একটু খেয়ে রেখে দিয়েছিলাম। যাইহোক রাত ২ টার পর পুনরায় যাত্রা শুরু করার পর আমরা বেশ কিছুক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম। তারপর বাস কোথাও আর যাত্রা বিরতি দেয়নি। আমরা সকাল ৭.৩০ টার দিকে ডলফিন মোড়ে নামলাম। আগে থেকে আমাদের হোটেল বুকিং দেওয়া ছিলো না। তবে ২০২২ সালের জুলাই মাসে আমরা সেন্ট মার্টিন রিসোর্টে ৪ দিন ছিলাম।
তাই আমরা একটি অটো নিয়ে সোজা সেন্ট মার্টিন রিসোর্টে চলে গেলাম। সেন্ট মার্টিন রিসোর্টটি লাবণী পয়েন্টে এবং সুগন্ধা পয়েন্ট এর মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত। আর একেবারে মেইন রোডের পাশে অবস্থিত বলে,এই রিসোর্টটি আমার খুব ভালো লাগে। তাছাড়া এই হোটেলের স্টাফদের আচার ব্যবহার খুবই ভালো। যাইহোক রিসেপশনে গিয়ে যখন বললাম আমরা এর আগেও এই হোটেলে ছিলাম, তখন রিসেপশনিস্ট আমাদেরকে বেশ ভালোই ডিসকাউন্ট দিয়েছিল। আমরা ৩ দিনের জন্য হোটেল বুকিং দিয়েছিলাম। চেক-ইন করার সময় হোটেলের ছবি তুলতে মনে ছিলো না। পরবর্তীতে সন্ধ্যার পর হোটেলের ফটোগ্রাফি করেছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। যাইহোক আমরা হোটেলে চেক-ইন করে, ৩/৪ ঘন্টা ঘুমিয়েছিলাম। তারপর ১২ টার দিকে হোটেল থেকে বের হয়েছিলাম প্রথমে লাঞ্চ এবং পরবর্তীতে সমুদ্র সৈকতে নেমে গোসল করার জন্য। সেগুলো পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | ভ্রমণ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১৬.৪.২০২৪ |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
কক্সবাজার ভ্রমণ সম্পর্কে অনেক ধারণা পেলাম। অনেক ইচ্ছা আছে যাওয়ার। আমাদের শহর থেকেও স্লিপিং বাস গুলো যায়। সুবিধা অসুবিধা সবকিছু জেনেই বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া কক্সবাজার ভ্রমণের সুন্দর অভিজ্ঞতার প্রথম পর্ব শেয়ার করার জন্য। আশা করছি পরের পর্ব গুলো পড়লে আরো ভালোভাবে জানতে পারবো।
হ্যাঁ আপু এই সিরিজে কক্সবাজার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করবো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X-promotion
আপনার কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম পর্বটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে ভাই। বিশেষ করে হোটেল স্টাফদের ভালো আচরণের বিষয়টি জানতে পেরে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। যাহোক আপনার কক্সবাজার ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা ভাই। যাইহোক ভ্রমণ পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার অনেক আগের একটি পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম এই কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য ট্রেনের টিকিট কেনার কথা। অবশেষে তাহলে সেই ভ্রমণ সম্পর্কে আমরা আস্তে আস্তে জানতে পারবো। যাইহোক ট্রেনের টিকিট না পেলেও স্লিপার বাসের নিশ্চয়ই খুব সুন্দর ভাবে আপনারা কক্সবাজারে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। যাইহোক আমার যেহেতু কক্সবাজার ভ্রমণ করার সুযোগ এখনো হয়নি তাই আশা করা যায় আপনার পোস্টগুলো পড়ে কক্সবাজার ভ্রমণ সম্পর্কে জানতে পারবো।
হ্যাঁ ভাই একটি পোস্টে ট্রেনের টিকেট কেনার কথা শেয়ার করেছিলাম। আপনার তো দেখছি স্পষ্ট মনে আছে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
যেহেতু আমি এখনো কক্সবাজার যাইনি তাই আপনার কক্সবাজার ভ্রমণের পোস্ট গুলো দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। আপনি এই ভ্রমণের সিরিজ শুরু করেছেন দেখে ভালো লাগছে। আপনারা স্লিপার কোচে সেখানে গিয়েছেন। আমারও ইচ্ছে রয়েছে কক্সবাজার স্লিপার কোচে যাওয়ার কারণ বেশ লম্বা একটা জার্নি। ভালো লাগলো ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
স্লিপার কোচে গেলে জার্নি মনেই হয় না। মনে হয় যে বাসায় ঘুমিয়ে আছি। আমি এই সিরিজে কক্সবাজার ঘুরাঘুরি করার বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আশা করি পাশেই থাকবেন। আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।
আপনারা বাসের যে সিটে গিয়েছিলেন, সেটা কিন্তু সত্যিই আরামদায় ছিল ভাই। কারণ সামনের দিকে বাসে ঝাঁকুনি কম হয়। তাছাড়া বাসের ভেতরটাও আমার কাছে অনেক সুন্দর লাগলো। ভাই, আমরাও আসলে যখন কোথাও ঘুরতে যাই তখন হোটেলে গিয়ে বলি যে, আপনাদের হোটেলে আগে এসেছিলাম। তখন আমাদেরও কিছু ডিসকাউন্ট দেয়। হা হা হা... 🤭🤭যাইহোক, আপনাদের ভ্রমণের কাহিনী তো কিছুটা শুনলাম। পরের পর্বগুলোতে আশা করি, আপনাদের কক্সবাজার ভ্রমণের অনেক কিছুই জানতে পারবো।
আমরা এর আগে আসলেই সেই হোটেলে গিয়ে ৪ দিন ছিলাম ভাই। স্লিপার কোচে জার্নি করলে, জার্নি মনেই হয় না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
হ্যাঁ ভাই, ঠিক বলেছেন ।
প্রত্যেক হাজবেন্ডের উচিত তার ওয়াইফকে এভাবে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া। আপনারা কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আশা করি খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন সেখানে। আর আপনার পরিবার বেশ খুশি হয়েছিল আপনার সাথে ভ্রমণ করতে গিয়ে। অনেক ভালো লাগলো বিস্তারিত অনেক কিছু আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরে।
হ্যাঁ আপু আমরা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম সেখানে। যাইহোক ভ্রমণ পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম পর্ব থেকে খুবই ভালো লাগছে৷ প্রথম পর্বের মধ্যে আপনি আমাদের মাঝে অনেক কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন৷ খুব সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে অনেক কিছু আমাদের মাঝে দেখিয়েছেন৷ পরবর্তীতে আরো অনেকগুলো ফটোগ্রাফি আপনার কাছ থেকে দেখার আশায় রইলাম৷ এই কক্সবাজারের অনেক কিছু আপনার কাছ থেকে দেখবো বলে আশা করি৷ ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা ভাই। যাইহোক ভ্রমণ পোস্টটি দেখে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার মধ্যে আপনার স্বার্থকতা শুনে খুব ভালো লাগলো।