ট্রাভেল পোস্ট- " সুবর্ণ গ্রাম ভ্রমণ পর্ব-৫ " II written by @maksudakawsarII
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
মাঝে মাঝে নিজেকে ফ্রেশ করার জন্য কিছু সময়ের জন্য হলেও বাহিরের পরিবেশে ঘুরে আসা প্রয়োজন। কারন বাহিরের প্রকৃতির মাঝে ঘুরে ঘুরে নিজের দেহের জন্য একটু সতেজতা খুঁজে আনলে দেহ পাবে প্রাণ শক্তি। আর তাই তো আমিও মাঝে মাঝে চেষ্টা করি বাহিরের পরিবেশে নিজেকে একটু প্রাণবন্ত করে নিতে। সত্যি বলতে প্রকৃতির দু হাত মেলে বিলানো ভালোবাসা কখনও শেষ হাবার নয়। আর সেই ভালোবাসায় আছে অপরিসিম অক্সিজেন। যা আমাদের দেহ মন কে এনে দিতে পারে সতেজতা।
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন বলেন তো? আলহামদুলিল্লাহ্ ক দিন যাবৎ বেশ ভালো যাচ্ছে আমার সময় গুলো। যদিও শাররীক ভাবে এখনও কিছুটা দূর্বল আছি। তবে যেমনই থাকি না কেন। প্রতিদিন আপনাদের মাঝে একটি করে পোস্ট তো করতেই হবে। আর পোস্ট করতে হবে বলেই আজও আবার চলে আসলাম চলে আসলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। অবশ্য এতক্ষনে টাইটেল পড়ে আপনারা বেশ ভালোই বুঝে গেছেন যে আজ আমি কি পোস্ট নিয়ে এসেছি। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে সুবর্ণ গ্রাম ভ্রমণের ৫ম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আজকের পর্ব ও আপনাদের ভালো লাগবে।
বন্ধুরা আপনারা যারা নিয়মিত আমার পোস্ট পড়েন তারা অনেকেই জানেন যে কিছুদিন আগে আমি পরিবার সহ সুবর্ণ গ্রাম রিসোর্ট ভ্রমনে গিয়েছিলাম। অবশ্য ইতিমধ্যে আপনাদের মাঝে মোট ৪টি পর্ব শেয়ার করেছি সেই ভ্রমনের কাহিনী নিয়ে। তাই আজও আবার চলে আসলাম। বন্ধুরা সেদিন আমরা যখন বিকেলে সুবর্ণ গ্রামের ফুড কোর্টে বসে পিঠা আর কফি খাওয়া শেষ করলাম তখন সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা স্পিটবোডে না উঠে সাফারী পার্কে ঘুরতে যাবো। কারন সাফারী পার্কে গেলে তো অনেক পশু পাখি দেখতে পারবো। আর আপনাদের সাথে শেয়ারও করতে পারবো। কিন্তু স্পিটবোডে উঠলে তো আর এত সুন্দর সুন্দর পশু পাখি দেখতে পারবো না। তাই যেই ভাবনা সেই কাজ। ব্রীজ দিয়ে উপরে উঠে সাফারী পার্কে যাওয়ার জন্য টিকেট কাটতে গেলাম।
ওরে বাপ রে বাপ। সেখানে তো যেয়ে দেখি অনেক ভিড়। ভিড় দেখে তো মাথা খারাপ হয়ে গেল। তবে এখানে সাফারী পার্ক ঘুরে দেখার জন্য দই রকমের বাহন আছে। একটি হলো জীপ গাড়ী আর একটি হলো ঘোড়ার গাড়ী। দুটো টিকেটের মূল্যই এক। কিন্তু আমরা যখন গেলাম তখন টিকেট দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু জনগন সেটা মানতে নারাজ। বেশ হট্রগোল পাকিয়ে দিয়েছে সেখানে মানুষ জন। এদিকে প্রায় সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই। আর এমন সময় এত গুলো মানুষ কে পুরো সাফারী পার্কে ঘুরাতে ঘুরাতে তো রাতই হয়ে যাবে। হয়তো এই কারনেই টিকেট বন্ধ করে দিয়েছে। অবশেষে মালেক পক্ষের একজনের হস্তক্ষেপে টিকেট দেওয়া শুরু হলো। তাও আবার দুই দিকের গেইট লাগিয়ে দিয়ে। অবশ্য এখানে টিকেট অফেরত যোগ্য। একবার কেনা হলে আর ফেরত দেওয়া যাবে না। যাই হোক আমরা টিকেট নিয়ে ভিতরে গেলাম। সেখানে তো যেয়ে দেখি ঢাকা শহরের মত করে জ্যাম লেগে গেছে।
একদিকে মানুষে মানুষের মাথা খাচ্ছে। আর অন্য দিকে বেটারা দুটি জিপ বন্ধ করে বসে আছে। এই অবস্থা দেখে আমরা সবাই গেলাম গাড়ী ছাড়ানোর জন্য। অবশ্য আমাদের চাপাচাপিতে গাড়ী ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তাতে কি? এক গাড়ীতে তো আর ১৫ জনের বেশী মানুষ ধরে না। আবার অন্য দিকে সেখানে মানুষ তো হবে ৩০০ কি ৪০০ এর মত। চিন্তুায় পড়ে গেলাম অবশেষে কি সাফারী পার্কে ঘরতে পারবো ? নাকি টিকেট এর টাকাটাই মাইর। পিচ্চি বোন কে বললাম তুইঁ লাইন দিয়ে একটি সামনে আগানোর চেষ্টা কর। আমার বুদ্ধি মত সে তাই করলো। ওমা কিছুক্ষন পরই দেখি টিকেট পেয়ে গেছি গাড়ীতে উঠার। কিন্তু কি জানেন? টিকেট আর আমাদের হাতে রইল না। এক লেডি মাস্তান এসে হাত থেকে ছুঁ মেরে টিকেট নিয়ে নিলো। তারপর চিৎকার চেচামেচি করে সুবর্ণ গ্রাম কে আকাশে তুলে দিলো। আমরা অনেক পিছের মানুষ হয়ে কেন আগে টিকেট কেটে জিপে উঠবো।ওমাগো কি জে জল্লাদ মহিলারে। তার সাথে অবশ্য ইচ্চি পিচ্চি আর মোটা মোটা কয়েকজন পুরুষ মানুষ সহ মোট ১৫-১৬ জন হবে। ভাবলাম এই জল্লাদের সাথে ঝগড়া করে নিজেকে নিচে নামালে মুডই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আর বেশী কিছু বললাম না। তা না হলে চুল ছিড়ে পুকুরে নামিয়ে দিতাম।
এরপর আমাদের পিচ্চি আমাকে মনে করিয়ে দিলো যে এই লেডি মাস্তান নাকি সেখানে আমাদের পরে ঢুকেছে। দেখলেন আপনারা চোরের মার কেমন বড় গলা? মেজাজ গরম হয় নাকি। চেয়েছিলাম ধরতে। শুধু আমাকে ওরা ধরে রেখেছিল বলে। তা না হলে সেদিন ইতিহাস হয়ে যেত। কি আর করার মুড ভালো করার জন্য নিজের কিছু ফটোগ্রাফি করা শুরু করলাম। যাতে করে আপনাদের কে দেখাতে পারি। আর উপভোগ করতে লাগলাম একটির পর একটি দৃশ্য। মানুষের বাধঁ ভাঙ্গা আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে যেন সেদিন সুবর্ণ গ্রামের প্রকৃতি প্রাণ খুঁজে পেয়েছিল।
সন্ধ্যা প্রায় হয়ে এলো এলো। এখন আর সাফারী পার্কে যেয়ে কি হবে? কিছু কি দেখতে পাবো? ভেবেই শেষ। মনে হয় চলেই যেতে হবে। এর মাঝে জীপ গাড়ী আসছে আর মানুষগুলো কে বহন করে ছুটে চলছে। আমাদের আর সুযোগ আসে না। অবশ্য এরই মধ্যে সেই লেডি মাস্তানরা সবাই একই গাড়ীতে উঠে পড়েছে। তিনটি সীট খালি ছিল। আমাদের কে অফার করা হলেও আমরা সেই গাড়ীতে উঠিনি। অপেক্ষ করতে লাগলাম। একদিকে সন্ধ্যা, আর অন্য দিকে মানুষ কমে যাচ্ছে একের পর এক। আর আমাদেরও চিন্তা হতে লাগলো আমরা কি সাফারী পার্ক ঘুরে দেখতে পারবো? আপনারাই বলেন তো সেদিন কি সাফারী পার্কে ঘুরা হয়েছিল আমাদের?
শেষ কথা
শেষ কথা
পথে চলতে গেলে মাঝে মাঝে এমন কিছু বিরক্তি কর মানুষের সাথে দেখা হয়, যাদের কে দেখলে আনন্দ গুলো দৌঁড়ে পালায় বহুদূর। তাই বলে কি আনন্দ কে থামিয়ে দিতে হবে। আমি কিন্তু এর পক্ষপাতি না।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
সব জায়গাতেই এরকম আপু, কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা নিজের ক্ষমতার বলে অসহায়দের থেকে নিজের সুবিধা আদায় করে নেয়। আর এরকম মানুষ গুলো যাত্রাপথে দেখা হয়ে গেলে সত্যি কথা এটাই যে আনন্দটা একদম মাটি হয়ে যায়। সুবর্ণগ্রাম ঘুরতে যাওয়া নিয়ে এই পর্বে মনের বেশ কিছু তিক্ততা প্রকাশ করেছেন। আমার মতে যেহেতু ওই মহিলা আপনাদের পরে ঢুকেছিল তাই ওর চুল ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল হি হি। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের দেখা যাক আপনারা সুবর্ণগ্রাম ভালোভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন নাকি না।
আমিও মনে করি যে বেশ ভালো হতো যদি চুল ছিড়ে দিতে পারতাম। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
খুবই সুন্দর একটি জায়গা ভ্রমণ করেছেন মনে হয় আপু। দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। জায়গাটা অনেক বেশি সুন্দর। আসলে ভ্রমণ করছে দেখলে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যারা ভ্রমণ করে তাদের মন মানসিকতা অনেক বেশি ফ্রেশ থাকে। মাঝে মাঝে আমাকে ও বলিয়েন যাওয়ার জন্য হাহাহা
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
সুবর্ণগ্রাম ভ্রমণের পঞ্চম পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু। চমৎকারভাবে আপনি এই ভ্রমণ বিষয়টা আমাদের মাঝে তুলে ধরেন। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার আজকের এই পোস্ট। যার মাধ্যমে অনেক কিছু জানার সুযোগ হলো আমার। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপু সত্যি বলছি আপনার পোস্ট পড়ে হাসতে হাসতে পেটে ব্যাথা করছে। সেদিন কিন্তু আমারও মনে চেয়েছিল যে ঐ বেটির চুল ধরে ছিড়ে দেই। আপনার আজকের পোস্ট পড়ে সেই কথাই মনে হয়ে গেল। আমিও বলবো না সেদিন কি আমরা সাফারী পার্ক ঘুরতে পেরেছিলাম কিনা। দেখি কে কি বলে।
দুজনে মিলে চুল ছিড়লে আরও মজা হতো। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।