লাল কাঁকড়া সমুদ্র সৈকতে
নমস্কার বন্ধুরা,
সরস্বতী পুজো শেষ হওয়ার পর আরো একদিন কাঁথিতে থেকে গিয়েছিলাম। তার কারণটা হলো, কাঁথি এসে সমুদ্র সৈকতে যাবো না তা তো হতে পারে না। পুজোর পরদিনই ছুটে গেলাম সমুদ্র সৈকতের পানে। যদিও শেষ পর্যন্ত দীঘা পৌছতে পারিনি তবে মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটা সমুদ্র সৈকতে একদিনেই ঘুরে নিয়েছিলাম। মেদিনীপুর জেলার ম্যাপ লক্ষ্য করলে দেখা যায় জেলার বেশিরভাগ অংশ বঙ্গোপসাগরের গা ঘেঁষা। আর সমুদ্রের এত কাছে চলে এসে যদি সমুদ্র সৈকত না ঘুরে ফিরে যাই তাহলে কাঁথি আসা অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যেতো। তবে পর্যটকরা যেখানে দীঘা কিংবা মন্দারমনিতে ঘুরতে যান আমি শুরু করেছিলাম সেই সব সমুদ্র সৈকত দিয়ে যেগুলোতে পর্যটক তুলনামূলকভাবে কম আসেন। আসলে আমার ব্যক্তিগতভাবে একটু নির্জন জায়গাতে ঘুরতে বেশি ভালো লাগে।
দুপুর দুপুর নাগাদ একটা স্কুটার ও একটা বাইক নিয়ে আমরা চারজন বেরিয়ে পড়লাম। নির্জন সমুদ্র সৈকতের খোঁজে পৌঁছে গিয়েছিলাম, লাল কাঁকড়ার বিচে। সমুদ্র সৈকতের নাম এমন হওয়ার কারণ হল এইখানে প্রচুর পরিমাণে লাল কাঁকড়া দেখতে পাওয়া। যা দেখা যায় বিশেষ করে জোয়ারের সময়। তখন নাকি লাল কাঁকড়ার ভীড়ে পুরো সমুদ্র সৈকতটা লাল হয়ে যায়।
মূল রাস্তা থেকে ঢালু পথে নেমে কিছুটা কংক্রিটের পাকা রাস্তা ধরে মৎস্যজীবীদের গ্রাম পার হতেই বঙ্গোপসাগরের সামনে উপস্থিত হলাম। সমুদ্রের নোনতা হাওয়া যেটা ক্ষীণ ভাবে নাকে আসছিলো সেটা আরো তীব্রতর হলো। বিশাল ঢেউয়ের জলরাশি কানে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মতো লাগতে থাকলো। লাল কাঁকড়া চোখে না এলেও সৈকতের ধার দিয়ে বিশাল রাশি রাশি গাছ চোখে এলো। সমুদ্রের দিকে কিছুটা এগোতেই মাটিতে অনেক গর্ত নজরে আসছিলো। তার মধ্যে কিছু গর্তের বাইরে কাঁকড়া নজরে এলো, তবে কাছে পৌঁছতেই তারা গর্তে ঢুকে পড়ছিলো। শুনলাম যখন সমুদ্রে জোয়ার হবে তখন সব গর্ত গুলো থেকে লাল কাঁকড়া বেরিয়ে পুরো সৈকত টাকে লাল করে দেয়।
যেকটা কাঁকড়া অল্প সাহস করে বেরিয়ে ছিল যেই তাদের গর্তের দিকে ছুটে গেছি তখনই তারা টুক করে গর্তে ঢুকে পড়েছে। উপায় না পেয়ে শুধুমাত্র গর্তের ছবি তুলেই শান্ত হতে হলো। দুটো ইচ্ছে নিয়ে লাল কাঁকড়ার সমুদ্র সৈকতে আসা তার মধ্যে একটিই পূর্ণ হলো। তখন আমরা ব্যতীত অন্য কোনো পর্যটক সৈকতে ছিলো না। তবে যেটা পূর্ণ হলো না, তা হলো লাল কাঁকড়া দেখা। পরেরবার এসে তাদের দেখে যাবো এই ইচ্ছা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
ঠিক বলেছেন দাদা সমুদ্রের কাছে এসে সমুদ্র পা না ভিজিয়ে কি ফিরে আসা যায়। অসম্ভব ভালো লাগে আমার কাছে সমুদ্র। ভালো করেছেন বাইক নিয়ে গিয়ে। সমুদ্রের পাড়ে বাইকে ঘুরতে আরো বেশি ভালো লাগে। আর কাকড়া গুলো হয়তো আপনাদের মতলব বুঝে গিয়েছিল এজন্যই উকিঁ দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। তাই আপনাদেরকে হতাশ হতে হলো। যাক ভালো লাগলো আপনাদের ঘোরাঘুরির মুহূর্ত দেখে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সমুদ্রের কাছে এসে সমুদ্র না দেখে চলে গেলে ভাইয়া আসলেই ঘুরাঘুরি টা বৃথা হয়ে যেতো।সমুদ্র মানুষের প্রান কে উজ্জিবিত করে দেয়।দারুন একটা ব্লগ শেয়ার করেছেন সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন ধন্যবাদ দাদা।
নির্জন জায়গা ঘুরতে যাওয়া আমারও খুব পছন্দ। তবে লাল কাঁকড়ার বিচে আপনার সাথে লাল কাঁকড়ার সাক্ষাৎ হলো না, এটা জেনে ভীষণ খারাপ লাগলো। তবে আপনার পরবর্তী প্রদক্ষেপ, জোয়ারের মুহূর্তে যাওয়া এবং লাল কাঁকড়ার সৌন্দর্য উপভোগ করবেন এবং তা আমাদের সাথে শেয়ার করবেন সে প্রত্যাশা রইলাম।
সমুদ্রের নামটা পড়েই বুঝতে পেরেছিলাম এখানে নিশ্চয়ই লাল কাঁকড়া বেশি পাওয়া যায়। তাই জন্য মূলত এই নামকরণ করা হয়েছে। এখন দেখছি সেটাই সত্যি হলো। যাইহোক বাইক আর স্কুটি নিয়ে দেখছি সমুদ্র সৈকতে এসে গেলেন। আমার কাছে সমুদ্রে ঘুরতে যেতে ভীষণ ভালো লাগে। জায়গাটা দেখছি খুবই সুন্দর একটা জায়গা। শেষ পর্যন্ত কাঁকড়ার ছবি না তুলতে পেরে, গর্তের ছবি তুলে দেখছি শান্তি হলেন।
অবশেষে লাল কাঁকড়া দেখার সৌভাগ্য হলো না এটা শুনে সত্যি খারাপ লাগলো। আসলে সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গেলে এই ধরনের দৃশ্যগুলো অনেক দেখা যায়। আর এত সুন্দর পরিবেশে সময় কাটাতে ভালো লাগে দাদা। আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো এত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নির্জন জায়গায় ঘুরতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। তবে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দুইটি ইচ্ছের মধ্যে একটি পূর্ণ হয়েছে। যাইহোক দাদা আপনার কাঁকড়ার গর্তে দেখেই ভয় লেগেছিল। নিশ্চয় আপনি একটু সময় কাটিয়েছেন।পরিবার নিয়ে আবার অন্য একটা ইচ্ছে পূরণ করবেন।ধন্যবাদ দাদা।
গর্তের ছবি তুলেছেন ঠিক আছে কিন্তু যার ধারণা দিলেন,তথ্য দিলেন এ থেকে কিন্তু অনেক কিছু জানতে পারলাম। আর স্থানটাও বেশ চমৎকার। অজানা কোন বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে আমার অনেক ভালো লাগে। ঠিক তেমনি কাঁকড়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরে একটা অজানা কিছু প্রথম জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
যাইহোক দাদা সমুদ্র সৈকতের নাম যেমন হবে হোক দেখতে খুবই সুন্দর। বেশিরভাগ সমুদ্রে লাল কাঁকড়া গুলো দেখা যায়। তবে কোন কোন সমুদ্র সৈকতে বেশি দেখা যায়। আপনার কথা মতো বুঝতে পারলাম এই সমুদ্রে বেশি লাল কাঁকড়া আছে। আর আমার কাছেও নিরিবিলি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনারা তো সমুদ্রে ঘোরাঘুরি করার জন্য বাইক নিয়ে চলে গেলেন। চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করলেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো।
দাদা লাল কাঁকড়া গুলো এমনই, সামনে গেলেই গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়। আমাদের দেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ইনানী বিচ এবং লাল কাঁকড়ার বিচে অনেক লাল কাঁকড়া দেখা যায়। এই বছর ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে অনেক গুলো লাল কাঁকড়া দেখেছিলাম। যাইহোক লাল কাঁকড়ার দেখা না পেলেও, সমুদ্র সৈকতে গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন দাদা। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।