মাঝ রাতের শো: পর্ব ২
নমস্কার বন্ধুরা,
মাঝ রাতের শো: পর্ব ১ এর পর....
বিগত চার বছর ধরে রেডিও সঞ্চালক হওয়ার বাসনা পূরণ করার জন্য সুতীর্থা কলকাতার বিভিন্ন রেডিও স্টেশনে নিজের অডিও সিডি এবং সিভি পাঠিয়েছে। কিছু রেডিও স্টেশন তাকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে আর কিছু স্টেশন নাকচ করেছে ট্রায়াল নেওয়ার পর। তবে সব কটি রেডিও স্টেশন থেকে না করবার সময় তাকে এক সুর ধরে জানিয়েছে,
-রেডিও সঞ্চালক হওয়ার এক্স ফ্যাক্টরটা নাকি সুতীর্থার গলাতে নেই।
এদিকে সুতীর্থাও হাল ছাড়ার পাত্রী নয়। বারবার রিজেক্টটেড হয়েও মনের জোর হারায়নি। আমার এফ এম কলকাতার ক্রিয়েটিভ রাইটার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সুযোগ পেলেই নানান স্টেশনে রেডিও স্টেশনের সঞ্চালকের পদে আবেদন করতে থাকে। তবে কিছুদিন যাবৎ দুধের স্বাদ ঘোলে মিটছে না। নিজেও বুঝতে পারে বছর চারেক আগে যে উদ্যম নিয়ে সে কাজ শুরু করেছিল সেটা আর পায় না। কাজ করেও তেমন সুখ নেই, ইচ্ছে তো মাইক্রোফোনটার সামনে গিয়ে কথা বলার। এখন তাই নতুন কোনো রিজেকশন পেলে মনকে সান্ত্বনা দেয়, হয়তো মাইক্রোফোনটার সামনে নয়, এপারেই তার ভাগ্যের লেখনী। ভালোলাগার কাজের সাথে জড়িয়ে আছে বলে সুতীর্থার মনে অল্প শান্তি এখন টিকে আছে।
শত টানাপোড়েনের মাঝেও সুতীর্থা আবৃত্তি এবং গানের রেওয়াজ দুটোই চালিয়ে যায়। সেই কারণে তার গলার মাধুর্যতা এবং উচ্চারণ শৈলী দুটোই আগের মতোই আছে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গান নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করার সময়ে সুতীর্থার বাংলা উচ্চারণ নিয়ে প্রফেসররা তাকে খুব বাহবা দিতো। মাঝে মধ্যে নিজের আমার এফ এম কলকাতার রেডিও স্টেশনের কলিগদের সামনে গান গেয়ে তাদের তাক লাগিয়েও দেয়। কিন্তু এতো কিছুর পরেও কিছুতেই চিঁড়ে ভিজছে না।
ইদানিং সুতীর্থা তাই কলকাতার রেডিও স্টেশন গুলোর উপরে হাল ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর শহরের ছোটো রেডিও স্টেশন গুলোতে অডিশন দিচ্ছে। আজ দুপুরে সেরমই দুর্গাপুরের এক ছোটো রেডিও স্টেশনে ভার্চুয়াল অডিশন দিয়েছে। অডিশন দেওয়ার পর থেকেই সুতীর্থার মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে আছে। আসলে অডিশন নেওয়া মানুষটিকে অডিশন শেষে বেশ খুশিই দেখাচ্ছিলো। এবার হয়তো মাইক্রোফোনের সামনে যাওয়ার সুযোগ পাবে সুতীর্থা।
এসবের মাঝে অফিসের কাজ শেষ করতে তার অল্প দেরী হয়ে গেলো। অন্যদিন যেখানে কাজ শেষ করে সন্ধ্যের দিকে বেরিয়ে পড়ে আজ অল্প রাত হয়েই গেলো।
আসলেই ভাইয়া কাজের মধ্যে কখনো নিজের হাল ছাড়তে নেই বারবার হেরে যাওয়ার পরেও। সেটা আপনার আজকের পোস্টে বর্ণিত সুতীর্থাই তার পরিচায়ক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যাল থেকে গানের উপর ডিগ্রী অর্জন করা সত্ত্বেও কলকাতার রেডিও স্টেশনগুলো তাকে নাকোচ করেছিল। তবুও সে হার মানে নেই। স্থান পরিবর্তন করে ফেলল। তারপরেই সফলতার দেখা পেলো। আমার মতেও এটাই ঠিক ভাইয়া চেয়ে স্থান পরিবর্তন করা উচিত কিন্তু নিজের লক্ষ্য থেকে পিছুপা হওয়া মোটেই ঠিক নয়। এই শিক্ষাটি আপনার পোস্ট থেকে পেলাম আমি। পরের পোস্ট এর অপেক্ষায় রইলাম।
দাদা প্রথম পর্ব টা পড়েছিলাম ৷ যা হোক ভালো লাগল সুতীর্থার চার বছরের সাধনা পূর্নতা পেয়েছে ৷ তবে তার পিছনে অনেক সময় ব্যায় ধৈর্য ধারন করতে হয়েছে ৷ যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
বার বার রিজেক্ট হলে মনের জোর ধরে রাখা কঠিন বিষয়। সুতির্থতার জায়গাই যদি আমি নিজে হতাম তাহলে সত্যিই হাল ছেড়ে দিতাম। কিন্তু সে ধরে রেখেছে। আর সত্যি দাদা তার সঞ্চালক হওয়ার ইচ্ছা কিন্তু সেটা কী ঐ রাইটিং করে মেটানো যায়। যাইহোক শেষমেশ একটা আশার আলো হয়তো সে দেখতে পেয়েছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কী হয়।
সুতীর্থার মনোবল দেখে আসলেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। আসলে যেকোনো কাজে লেগে থাকতে হবে, তাহলে সফলতা অবশ্যই অর্জন করা সম্ভব। অবশেষে মনে হচ্ছে সুতীর্থা রেডিও সঞ্চালক হতে পারবে এবং তার মনের আশা পূরণ হবে। যাইহোক সুতীর্থার জন্য শুভকামনা রইল।
রেডিও সঞ্চালক হওয়ার ইচ্ছা অনেকের ভিতরেই থাকে তবে সেই ইচ্ছা পূরণ করতে যে কত পরিশ্রম করতে হয়, সেটা তোমার এই পোস্ট পড়ার ফলে বুঝতে পারলাম দাদা। তবে সুতীর্থা এত পরিশ্রম করার পরেও ঠিকঠাক জায়গায় পৌঁছাতে পারছে না, এটা আফসোসের বিষয় । এখন যেহেতু সে কলকাতার রেডিও স্টেশন গুলোর উপরে হাল ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর শহরের ছোটো রেডিও স্টেশন গুলোতে অডিশন দিচ্ছে, এবার হয়তো তার ইচ্ছা কিছুটা পূরণ হবে।