মাঝ রাতের শো: পর্ব ১
বছর চারেক হলো সুতীর্থা "আমার এফ এম কলকাতা" এর ক্রিয়েটিভ রাইটারের পদে চাকরি করছে। রেডিও সঞ্চালক হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা না থাকায় কোনো রেডিও কোম্পানিই তাকে সরাসরি রেডিও সঞ্চালকের জায়গা দিতে চায়নি। পছন্দের কাজের সাথে জড়িয়ে থাকবে তাই সে চাকরিটা নেয়। আসলে ছোটোবেলা থেকেই সুতীর্থার গলা যেন আবৃত্তি এবং গানের জন্যই তৈরী। সুমিষ্ট গলার অধিকারী হওয়ার সাথে ১৬ বছরের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষা সুতীর্থার গলায় এক অন্য মাত্রা নিয়ে এসেছে। তার খালি গলার আবৃত্তি কিংবা গান শুনলে যে কেউই মন্ত্রমুগ্ধের মত শোনে। খুব ছোটবেলায় খালি গলার গান শুনেই সুতীর্থার ঠাম্মা তাকে বড় হয়ে রেডিও সঞ্চালক হওয়ার উপদেশ দেন। যদিও ছোট্ট সুতীর্থা তখন রেডিও সঞ্চালক খায় না মাথায় দেয় সেটা আদৌ বুঝতে পারেনি তবে ধীরে ধীরে বয়স বাড়ার সাথে সাথে রেডিওর প্রতি তার অদ্ভুত ভালো লাগা তৈরী হতে থাকে।
রেডিওর প্রতি সুতীর্থার এই ভালোলাগা তৈরী হওয়ার পেছনে রয়েছেন সুতীর্থার সেই ঠাম্মাই। গান শুনতে পছন্দ করেন বলে সুতীর্থার ঠাকুর্দা সত্তরের দশকে স্ত্রীকে উপহার দেন একটি মারফি-র রেডিও। যেটাতে সারাদিন ধরে বাড়িতে আকাশবাণী কলকাতা থেকে গান চালিয়ে রাখতেন ঠাম্মা। সুতীর্থার ঠাকুর্দা গত হওয়ার পরেও স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত সেই রেডিও চলতো সারাদিন, যা শুনে শুনেই রেডিওর প্রতি ভালো লাগা তৈরী হয় সুতীর্থার মনে।
সুতীর্থার জন্মের কয়েক বছর আগে ঠাকুর্দা গত হয়েছেন তাই স্বচক্ষে তাকে দেখেনি সে তবে ঠাম্মার মুখে ঠাকুর্দার অনেক গল্প শুনেছে। ঠাম্মা বারবার বলতো, যুবক কালে সুতীর্থার ঠাকুর্দা নাকি ভালো গান গাইতেন। আকাশবাণীতে তিনি বেশ কয়েকবার গান গেয়েওছেন। সেই গান শুনেই নাকি সুতীর্থার ঠাম্মা প্রেমে পড়েন। ঠাকুর্দা গত হলে সুতীর্থার ঠাম্মা তাই বেশি করে স্বামীর স্মৃতির সেই রেডিও টাকে কাছে টেনে ধরেন।
ছোটোবেলায় সুতীর্থার গান শুনে তার ঠাম্মা বলতো সে নাকি আসলে তার ঠাকুর্দার ধারাই পেয়েছে। একদিন সুতীর্থার গলায় গান শুনতে শুনতে ঠাম্মাই তাকে রেডিওর সঞ্চালক হতে বলেন। সেই কথা সুতীর্থার মনে গেঁথে যায়। বড়ো হয়ে তাই পেশা হিসেবেও বেছে নেয় রেডিও-কে। যদিও রেডিও সঞ্চালক হওয়ার ইচ্ছে নিয়ে তার এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসা তবে সঞ্চালকের কাজ জোটেনি। নতুন বলেই হয়তো তাকে কেউ সুযোগ দিতে চায়নি। শুধুমাত্র ভালো লাগার কাজের সাথে জড়িয়ে থেকে ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বাড়াবে ভেবেই আমার এফ এম কলকাতার ক্রিয়েটিভ রাইটারের পদে যোগ দেয়। সেটা চার বছর আগের কথা...
দাদা সত্যি কথা বলতে কি ৩/৪ বছর আগে আমিও রেড়িও প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম ৷ রেডিও কে ভালো ভাবে শোনার জন্য তার দিয়ে লাইন লাগানো ৷ আজকে তারই একটি পোষ্ট পরলাম ভালো লাগলো ৷ তবে ভালো লাগলো ঠাম্মা এখনো ঠাকুর্দার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে রেড়িও শুুনে ৷ ভালোবাসা আসলে এটাই ৷
রেডিও আসলে অনেকের কাছেই একটা ভালোলাগা
আমাদের মনে কোন কিছুর ইচ্ছা আশা জাগে সাধারণত বড় কারো থেকে শুনেই। এক্ষেত্রে সুতীর্থার ক্ষেএেও তাই হয়েছে। সে তার ঠাম্মার কাছে শুনে নিজে রেডিও সঞ্চালক হতে চেয়েছে। তার উপর তার গলা টা অসাধারণ সমুধুর। কিন্তু সমস্যা হলো পরিচিত কেউ না থাকলে কাঙ্ক্ষিত জায়গাই যাওয়া এককথায় কঠিন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।
বর্তমানে এটা একটা বাস্তব, পরিচিত কেউ না থাকলে কাঙ্ক্ষিত জায়গাই পৌছানো কঠিন
আসলেই সুতীর্থা তার ঠাকুরদার মতোই হয়েছে। আসলে বংশের ধারা অনেকেই পেয়ে থাকে। ছোটবেলা থেকে আমাদের মাথায় যেটা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়,মূলত সেটা সহজে বের হয় না। যাইহোক বড় হয়ে সুতীর্থা রেডিও সঞ্চালক হতে না পারলেও, যেহেতু আমার এফ এম কলকাতার ক্রিয়েটিভ রাইটারের পদে যোগ দিয়েছে, আশা করা যায় একসময় তার মনের আশা পূরণ হবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
ছোটো থেকে যে বিষয় গুলো নিয়ে আমার শুনতে থাকি সেটাই মনে বেশি করে গেঁথে যায়।
সুতীর্থার জীবনের গল্পের বেশ কিছুটা অংশ শুনে বেশ ভালো লাগলো দাদা। সুতীর্থার আজকের এই পজিশনের জন্য যে তার ঠাম্মা সবথেকে বেশি ভূমিকা রেখেছে, সেটা তো পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম। তবে একটা বিষয়ে বেশ খারাপ লাগলো যে, রেডিও সঞ্চালক হওয়ার ইচ্ছে নিয়ে সুতীর্থার এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসা হলেও, তার সঞ্চালকের কাজ জোটেনি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতেই এই বিষয়টা আছে। গুরু থাকা খুব জরুরি।