বৃষ্টি দিয়েই নিস্তার

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতায় বিগত ক'দিন ধরে রোদের তাপ সেরকম তীব্র না হলেও আবহাওয়া এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। আসলে কদিন যাবত আদ্রতা এতটা পরিমাণ বেড়ে গেছিল দিনে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও অনুভূতিটা ৫০ ডিগ্রির মতনই হচ্ছিলো। আর হবেই না কেন? অল্প ভ্যাপসা গরম হতেই মানুষজন রীতিমতো সারাদিন সারারাত এসি চালিয়ে রাখার যেন হিড়িক পড়েছে। সেটা পরিবেশের ক্ষতি করার সাথে সাথে পারিপার্শ্বিক যারা এসিতে থাকেন না তাদের জীবন কেও একপ্রকার দুর্বিষহ করে তুলেছিলো। প্যাচপ্যাচে থেকে বাঁচার জন্যই আমি দৌড়ে কাঁথি ছুটে এলাম।

GridArt_20240622_003832634_copy_1228x690.jpg

সৌভাগ্যবশত যখন কাঁথি পৌঁছলাম তখন দুরন্ত বঙ্গোপাগরীয় হাওয়া পেলাম। কাঁথি নেমে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। কলকাতাতেও রাত্তিরে হাওয়া হয় তবে সেখানে এসির দৌরাত্বে রাত্তিরের ঠান্ডা হাওয়া গরম হয়ে যায়। কাজেই কাঁথি নেমে মন আনন্দে নাচতে শুরু করলো। আসলেই মহানগরী থেকে বেরিয়ে ছোট খাটো শহরে যখন কেউ প্রবেশ করে তখন মহানগরীর সাথে সেখানের আবহাওয়ার বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা যায়। এতো সুন্দর হাওয়ার মধ্যে বন্ধুর বাড়ির ছাদেই মশারি টাঙিয়ে থেকে গেলাম।

IMG20240620141158.jpg

IMG20240620141137.jpg

পরদিন সকালে ঘুম ভাঙলো, তীব্র ভ্যাপসা গরমে।দুপুর পর্যন্ত ভ্যাপসা গরমের মধ্যেই কাটলো। পরিবর্তন শুরু হলো দুপুরবেলা থেকে, দূরে মেঘের গুড় গুড় করে ডাক শোনা গেল সেই সাথে হালকা ঠান্ডা হওয়া। বুঝতে পারছিলাম দূরে কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আকাশেও মেঘ কালো করে এলো তারপর আবার তা কেটেও গেল। আমি তো ভাবলাম এত দূরে এসে বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়েও হয়তো বৃষ্টির নাগাল পাবো না।

IMG20240620145332.jpg

মন খারাপ করে বসে আছি! সেই সময় আকাশ ফের কালো হওয়া শুরু হলো। তারপর টিপটিপ করে বৃষ্টি শুরু। বৃষ্টির গতিবেগ ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে ঝমঝমিয়ে শুরু হয়ে গেল। চারিদিকে আবহাওয়া কয়েক নিমেষের মধ্যে যেন শীতল করে দিল। তারপর শুনি কলকাতাতেও বৃষ্টি হচ্ছে।। মনে মনে কিছুটা হেসে নিলাম। একটা রাতের আরামের জন্যই এতদূর ছুটে আসা!! হাঃ হাঃ! বৃষ্টি আবহাওয়া ঠান্ডা করে দিলো সেই সাথে কেলেঙ্কারি স্বরূপ সন্ধ্যের পরপর গাছের ডাল বিদ্যুতের তারের উপর ফেলে একটা তার ছিঁড়ে ফেললো। বিদ্যু দফতরে ফোন লাগানো হলো, তাঁরাও জানিয়ে দিলো বৃষ্টি না থামলে আসতে পারবে না। ফ্যানের অভাবটা না বুঝলেও মোবাইলে চার্জ না থাকার অভাব বুঝলাম। রাতে হ্যাংআউটে যুক্ত হতে পারলাম না। মাঝরাতে বিদ্যু দফতরের কর্মীরা সব ঠিক করে দিয়ে গেলেন বটে তবে ফ্যানের প্রয়োজন রাতে আর পড়লো না।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

আসলেই বেশ কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে সব মানুষ বেশ অস্থির। অল্প বৃষ্টি তে বেশ শীতল হয়ে গিয়েছে,আবহাওয়া ঠান্ডা ভালো লাগবে গেলেন আপনি যাওয়াতে কলকাতায়ও নাকি বৃষ্টি দাদা এতদিন মনে হয় আপনার জন্যই বৃষ্টি আসে নি আপনি কলকাতা ছাড়বেন তারপর বৃষ্টি হবে এটাই পরিকল্পনা ছিলো। যাই হোক ছাদে যে ঘুমালেন যদি পেত্নী এসে নিয়ে যেতে😝😝।ধন্যবাদ
হলে

 4 months ago 

সত্যিই কলকাতায় এই কদিন গরম যে জায়গায় পৌছে গেছিল তা যেন অসহ্য এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এখন প্রাক বর্ষা ঢুকে যাওয়ায় একটু স্বস্তি দিয়েছে। তবে দিনে দিনে পরিবেশের যে অবস্থা হচ্ছে তা যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না। নিজের মধ্যেই এক অবসাদ ভিড় করে। আতঙ্ক দানা বাঁধে। পরবর্তী প্রজন্মকে কি পরিবেশ দিয়ে যাচ্ছি আমরা।

 4 months ago 

আসলেই দাদা এই তীব্র গরমে বৃষ্টি হলেই শান্তি পাওয়া যায়। তীব্র গরমের সময় যতই এসি অন করে ঘুমাই না কেনো,এমনিতে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলে ঘুম খুব ভালো হয়। তাছাড়া ভালোভাবে বৃষ্টি হলে ফ্যান চালু না করলেও হয়। যাইহোক বন্ধুর বাড়ির ছাঁদে মশারি টাঙ্গিয়ে বেশ ভালোই ঘুম দিয়েছেন দাদা। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা এর প্রভাব হয়তো আমরা এখন বুঝছি না। কিন্তু ভবিষ্যতে বুঝতে পারব। এই এসি পরিবেশের তাপমাত্রা কীভাবে বৃদ্ধি করছে। আপনি তো ওখানে গিয়ে শান্ত হয়ে গেলেন। আপনার অসাধারণ ফটোগ্রাফি গুলো যেন কাঁথির পরিবেশ এবং ওখানের শান্ত আবওহাওয়া সম্পর্কে আমাদের জ্ঞাত করছে। চমৎকার ছিল আপনার পোস্ট টা দাদা । ধন্যবাদ আপনাকে।।

 4 months ago 

আপনি কলকাতা ছাড়লেন আর বৃষ্টিও আসলো, কথা হলো বৃষ্টির সাথে আপনার ঝামেলাটা কত দিন ধরে চলছে, হা হা হা।

 4 months ago 

আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। কলকাতার ভ্যাপসা গরম থেকে কাঁথির শীতল হাওয়ায় পালিয়ে যাওয়ার আইডিয়াটি সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রকৃতির মাঝে গিয়ে এতটা প্রশান্তি পাওয়া যায়, তা আপনার লেখায় স্পষ্ট হয়েছে। মশারির ভেতরে খোলা আকাশের নিচে ঘুমানোর অভিজ্ঞতাও বেশ রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে।

যেভাবে বৃষ্টির আগমনের বর্ণনা দিয়েছেন, তা বৃষ্টির পর পরিবেশের শীতলতা এবং অপ্রত্যাশিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট, সব মিলিয়ে একটি নিখুঁত গ্রামীণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রকৃতির সাথে এইরকম সংযোগ আমাদের সকলের জন্যই অনেক আরামদায়ক এবং আনন্দদায়ক।

আশা করি, এই ছোট্ট ছুটি আপনার মনকে আরও প্রফুল্ল এবং সতেজ করে তুলেছে। পরবর্তী সময়েও এমন অভিজ্ঞতা ভাগ করার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

ধন্যবাদ,
[@redwanhossain]

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67779.88
ETH 2396.01
USDT 1.00
SBD 2.32