বিষ্ণুপুর রাসমঞ্চ
নমস্কার বন্ধুরা,
কালাচাঁদ মন্দির দেখা শেষ হতেই বিষ্ণুপুর শহরের একাংশ ঘোরা শেষ হয়ে গেলো। মাত্র কিলোমিটারের মধ্যে বেশ কয়েকটা মন্দির থাকার জন্য হেঁটে হেঁটেই সব দেখতে পারলাম। আমার মূলত ইচ্ছে ছিলো দুপুরের খাবারের আগ পর্যন্ত টানা ঘুরে ফেলার। সেটাতে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সফল হলাম যখন কালাচাঁদ মন্দির দেখা শেষ হলো। এরপর আমি চলে গেলাম বিষ্ণুপুরের মধ্যমণি অর্থাৎ রাসমঞ্চ দেখতে। যেটা দেখতে দূর দূর থেকে পর্যটকরা বিষ্ণুপুর ঘুরতে আসেন। অনেকটা পথ হেঁটেছি তাই পা গুলোকে কিছুটা আরাম দেওয়ার জন্য টোটো চাপলাম। মাত্র দুটো গলি পেরিয়েছি কিনা টোটো ওয়ালা ঠিক রসমঞ্চের সামনে নামিয়ে দিলো। পায়ের আরাম আর হলো না, টোটো থেকে নেমে পড়লাম।
বাংলার পুরোনো জনপদ বা গ্রামে রাসমঞ্চ একটা আবশ্যিক অংশ। মূলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নাম কীর্তন করার জন্য মঞ্চের মতো জায়গাগুলোকে বানানো হয়। যেখানে সারা বছর ফাঁকা থাকলেও একটা সময় সব গ্রামবাসীরা এসে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অষ্ট প্রহর কীর্তন করেন। যেকদিন ধরে কীর্তন হয় সে কদিন কীর্তনের পাশপাশি ভোগ প্রসাদ ব্যবস্থা হয়। বিষ্ণুপুরের রাস মঞ্চটা সেরমই। বিষ্ণুপুরের চারপাশে যেহেতু অনেক গুলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মন্দির রয়েছে সেজন্য বিষ্ণুপুরের মাঝে তৈরি করা হয়েছিল রাসমঞ্চ।
বিষ্ণুপুরে প্রাচীনতম এই রাসমঞ্চটি ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে মল্ল রাজা হাম্বির প্রতিষ্ঠা করেন। মাকড়া পাথর বা ল্যাটেরাইট পাথরের ভিত্তিবেদীর উপরে বর্গাকার কাঠামো তার উপরে পুরো সৌধটি বানানোর রয়েছে। এর ঠিক মধ্যিখানে রয়েছে এক ছোট্ট গর্ভ গৃহ আর তিনদিকে রয়েছে বারান্দা। গর্ভ গৃহের চারপাশে তিন সারিতে রয়েছে দরজা। পনেরশো শতাব্দীতে স্থাপন হওয়া হয় রাস মঞ্চটি বাংলার স্থাপত্যশৈলীর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
বর্তমানে যদিও রাসমঞ্চের বেশিরভাগ শিল্প কলা আজ অনেকটা ক্ষয়ে গিয়েছে। আগের মত এখানে শ্রী কৃষ্ণ রাস হয় না তবে গুরুত্ব যে এখনো সমান ভাবে বজায় রয়েছে সেটা রাসমঞ্চে গিয়ে বুঝতে পারা যায়।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
দাদা বিষ্ণুপুর গিয়ে সত্যিই অনেক গুলো মন্দির দর্শন করেছেন। মন্দির গুলো একেবারে কাছাকাছি হওয়ায়, অল্প সময়ের মধ্যেই সবগুলো মন্দিরে যেতে পেরেছেন। যাইহোক বিষ্ণুপুর রাসমঞ্চে গিয়ে দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করেছেন দাদা। বিষ্ণুপুর রাসমঞ্চ মন্দির এবং মন্দিরের এরিয়াটা আসলেই খুব সুন্দর। সবমিলিয়ে পোস্টটি দারুণ লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চের কথা অনেক শুনেছি, তবে কখনো যাওয়া হয়নি। তোমার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি এবং টুকটাক যে বর্ণনা দিয়েছো, তার মাধ্যমে এই রাসমঞ্চ সম্পর্কে মোটামুটি একটা আইডিয়া পেয়ে গেলাম। তবে দাদা ঘুরতে গেলে পায়ের আরামের কথা চিন্তা করলে কিন্তু হবে না। ঘুরতে গেলে পায়ে ব্যথা হবেই, এটাকে মেনে নিয়েই ঘোরাঘুরি করতে হবে। হা হা হা...🤭🤭