আমেনার জীবন (পর্ব-০৭)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২১শে আষাঢ় | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বর্ষা-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
ষষ্ঠ পর্বে আমেনার মনের মধ্যে যে অনুভূতি কাজ করছিল সে পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম। ছেলেটা আমেনার কাছে মনের কথা ব্যক্ত করেছিল তারপর থেকেই আমেনা ছেলেটার প্রতি অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ঠিক একইভাবে ছেলেটাও আমেনার প্রতি যথেষ্ট দুর্বল ছিল। রাত পেরিয়ে সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমেনা তাদের পাশের বাগানের দিকে বারবার দেখছিল কেননা সেই বাগানে এসেই ছেলেটি আমেনার জন্য অপেক্ষা করত। সকাল বেলায় আমেনা প্রতিদিন রান্নাবান্নার কাজে তার মাকে সাহায্য করে কিন্তু সেদিন সকালবেলায় আমেনা একটু এলোমেলো ছিল শুধু বাগানের দিকে তাকাচ্ছিল। তখন আমিনার বাবা আমিনাকে বলছিল কি হয়েছে রে মা বাগানের দিকে কি হয় ওখানে কি কিছু এসেছে নাকি?? আমেনা তখন বলছিল না বাবা এমনিতেই দেখছি। আমিনার বাবার কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমেনা সেখানে আর বারবার না তাকিয়ে তার মায়ের কাজে সহযোগিতা করছিল যখন আমেনার মায়ের রান্না শেষ হয়ে যায় আমেনার বাবা কাজে বেরিয়ে পড়ে তখন আমেনা বাগানের দিকে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কখন ছেলেটি আসবে। কিছু সময়ের মধ্যেই আমেনার মা ও কাজে চলে যায় বাড়িতে আর কেউ থাকে না আমেনা ঘরের দরজা লাগিয়ে বাগানে গিয়ে বসে থাকে ছেলেটা কখন আসবে সেই অপেক্ষায় সময় গুনতে থাকে।
চারিদিকে ঝিলমিল রোদ আবহাওয়াটা অনেক সুন্দর রোদের তাপ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে সবাই নিজেদের মতো কাজে বেরিয়ে পড়ে তার কিছু সময় পরেই আমেনা দেখতে পেল ছেলেটি গুটি গুটি পায়ে আমেনাদের বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। প্রতিদিন আমেনা যেমন স্বাভাবিকভাবে ছেলেটার সাথে কথা বলে কিন্তু আজকের দিনটা আমেনার কাছে অন্যরকম ছিল ছেলেটা তার মনের কথা আমেনার কাছে প্রকাশ করেছে যার কারণে ছেলেটাকে আমেনা আজ অন্য চোখে দেখছে। তবে ছেলেটা তখনো আমেনার মুখ থেকে ভালোবাসার কথাটা শুনতে পারেনি। তাই সেই অন্তিম মুহূর্তের অপেক্ষা করছিলে যখন আমেনা নিজেও ছেলেটাকে মনের কথা বলবে। তবে আমেনা একটু চিন্তা করছিল সে যেহেতু অনেক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে আর ছেলেটা তুলনামূলক একটা স্বাভাবিক সচল পরিবারের ছেলে সেহেতু তাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানলে কেমন পরিস্থিতির তৈরি হবে সেটা নিয়ে ভাবছিল।
এসব চিন্তা করতে করতেই হঠাৎ ছেলেটা আমেনার পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল কেমন আছো। আমেনা অনেকটা চমকে গেল ছেলেটা বলছিল কি হয়েছে আজকে হঠাৎ এতটা ভয় পাচ্ছো কেন? আমেনা কোন উত্তর দিল না শুধু মিটমিট করে হাসছে। তারা দুজন এক অপরের দিকে চেয়ে আছে যেন চোখের পলক পরছে না। সময় পার হচ্ছে কিন্তু তারা কেউই একে অপরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিতে পারছে না অনেক সময় একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকলো। হঠাৎ করে এই ছেলেটি বলে বসলো আচ্ছা চলো আমরা মাঠের দিকে যাই। আমেনা তখন বলে উঠলো কেন আমাকে দেখতে কি ভালো লাগছে না?? ছেলেটা আবার একটা মুচকি হাসি দিল আর বলছিল আচ্ছা তাহলে চলো আমরা এখানে বসি। যেহেতু তারা দুজনেই বড় হয়েছে তাই তাদের দুজনের একসাথে এরকম আশপাশের লোকজন দেখলে সমস্যা হতে পারে তাই সে দিক থেকে দুজনেই সতর্ক থাকার চেষ্টা করছিল। অনেক সময় সেখানে তারা গল্প করছিল। আসলে তারা দীর্ঘ সময় পার করেছে কিন্তু সেই সময়টা কিভাবে ফুরিয়ে গিয়েছে সেটা বুঝতে পারেনি। কিছু সময় পর ছেলেটিকে বলল আচ্ছা আজকে আর কথা বলবো না তুমি তো আমার কাজে যাও, আমি বাড়িতে যাব কিন্তু ছেলেটা বলছিল আমার তো কোন কাজ ভালো লাগে না শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে। আমেনা তখন একটা হাসি দিয়ে বাড়ির দিকে চলে গেল।
প্রথম দিন দুজনের মাঝে বেশ ভালোই কথোপকথন হয়েছে। একে অপরকে বেশ ভালোভাবেই বোঝার চেষ্টা করেছে দুজনের প্রতি যথেষ্ট দুর্বলতা তৈরি হয়েছে দুজনের মাঝে যথেষ্ট ভালোবাসা তৈরি হয়েছে। যেন একে অপরকে না দেখলে তাদের সময় কাটে না এরকম অবস্থা। দুপুর বেলায় প্রতিদিন তারা একে অপরের সাথে গল্প করত আর শেষ বিকেলে এসে আমেনার বাড়ির পাশ থেকে ছেলেটা আমেনাকে দেখে যেত আবার সুযোগ পেলে দুজন দীর্ঘ সময় বসে গল্প করত যেহেতু আমেনার বাবা-মা সারাদিন বাড়িতে থাকে না তাই সেই সুযোগে আমেনা যথেষ্ট সময়। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কিছু অর্থ উপার্জন করে আমেনার বাবা এবং মা দুজনই বাড়িতে ফিরত। যখন আমেনার বাবা এবং মা দুজনে বাড়িতে থাকতো তখন আর আমেনা বাইরে যেতে সাহস পেত না তাছাড়া আমেনার বাবা-মা বাড়িতে আসার পরে আমেনা নিজেদের সংসারের সব ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকত যার কারণে ছেলেটা বাগানে আমেনার জন্য অপেক্ষা করলেও দেখা হতো না শুধু প্রতিদিন দুপুর বেলায় একে অপরের সাথে দেখা হতো। তাদের দুজনের ভালবাসার সম্পর্ক এভাবেই চলতে থাকে যত দিন যাচ্ছিল একে অপরের প্রতি ভালোবাসার সম্পর্কটা যেন মজবুত হচ্ছিল।
অন্যান্য দিনের মতো আমেনার বাবা এবং মা সকালবেলা বাড়ির কাজ শেষ করে অন্যের বাড়িতে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বে। আমেনা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিনের মতো তার মাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছে যেন কাজ শেষ করে আমেনার মা অন্যের বাড়িতে কাজে যেতে পারে। এমন সময় আমেনার মা লক্ষ্য করল বাগানের মাঝে একটি ছেলে বসে আছে আর তাদের বাড়ির দিকে বারবার তাকাচ্ছে। ব্যাপারটা আমেনার মায়ের কাছে খুব একটা সুবিধার মনে হয়নি।
(..........চলবে)
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই গল্পটার আগের পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। গল্পটার আগের পর্বটা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিল। আর তেমনি ভাবে আজকের পর্বটা পড়ে আরো বেশি ভালো লাগলো। তাদের দুজনেরই দেখছি একে অপরের প্রতি অনেক ভালোবাসা আর দুর্বলতা ও সৃষ্টি হয়েছে। তবে শেষে দেখলাম আমেনার মা ছেলেটাকে দেখে সন্দেহ করলো। এখন পরবর্তী পর্বে কি হবে এটা জানার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ জন্মেছে। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বটার রিভিউ পড়ার জন্য।
বাড়িতে একটা মেয়ে থাকে আর সেই বাড়ির আশেপাশে যদি একটা ছেলে ঘোরাফেরা করে তাহলে সন্দেহ করাটা স্বাভাবিক। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন ধন্যবাদ।