নাটক রিভিউ || প্রিয় লাইলী

বাবার একমাত্র ছেলে মজনু। মা মারা যাওয়ার পর বাবার আদরেই বড় হয়েছে। মজনুর বাবা শহরে থাকতো মজনুকে নিয়ে । পাটকলে চাকরি করতো মজনুর বাবা। কিন্তু একটি এক্সিডেন্টে মজনুর বাবার চোখ দুটি নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে চাকরিটাও হারায় মজনুর বাবা। বাবাকে নিয়ে তখন গ্রামে চলে আসে মজনু! বাবা ছেলে মিলে ভালোই থাকে জীবন। একদিন মজনু গ্রামে একটি মেয়েকে দেখতে পায়। প্রতিদিন তার বাবার সাইকেল দিয়ে যাওয়ার পথে মেয়েটিকে দেখতে পায়। মেয়েটি প্রথম প্রথম এতো পাত্তা দেয়নি। কিন্তু মেয়েটি মজনুর সরলতার মায়ায় আটকে যায়। মেয়েটির নাম লাইলী! লাইলীর বান্ধবী সেটা ভালো করেই বুঝতে পারে।

প্রতিদিন পথে দেখা হয় লাইলীর সাথে। লাইলীর হাসি দেখে বুঝে যায় সে তাকে পছন্দ করে। একটা পর্যায়ে এসে সেটা ভালো লাগা থেকে ভালোবাসায় পরিণত হয়। একদিন মজনু একটি মেয়েকে নিয়ে লাইলীর সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছিল। লাইলী সেটা দেখে ভীষণ মন খারাপ করে বসে থাকে। লাইলীর বান্ধবী সেটা ভালো করেই বুঝতে পারে। এদিকে মজনু লাইলীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে কিন্তু সে আর আসে না। লাইলীর বান্ধবীর কাছে তখন জানতে পারে বিষয়টা। লাইলীর বান্ধবী তখন লাইলীকে আসল ঘটনা খুলে বলে। লাইলী শুনে তো ভীষণ খুশি। পরদিন দুজনে দেখা করে।

লাইলীর বাবা গ্রামের প্রভাবশালী একজন লোক। তার একমাত্র মেয়েকে ডাক্তার বানানোর ইচ্ছে! সেজন্য হোম টিউটর রেখে পড়াশোনা করায়। কিন্তু সেই হোম টিউটরের চাকরি চলে যায়। তারপর লাইলী তার বাবাকে বলে যে গ্রামে আরেকজন টিচার আছে, অংক খুব ভালো পড়ায়। তারপর তার বাবা সে টিচারের সাথে দেখা করতে চাই। মজনু তার বাবার সাথে দেখা করে এবং প্রাইভেট যেন ভালোভাবে পড়ায় সে কথা বলে। তো প্রাইভেট পড়াতে এসে তাদের সম্পর্কটা যেন আরও গভীর হতে থাকে। একটা পর্যায়ে এসে তারা চিঠির মাধ্যমে ভাবের আদান-প্রদান করতে থাকে।

কিন্তু লাইলীর বাবা সেটা ভালো করেই বুঝে ফেলে। তারপর লাইলীর বাবা বুদ্ধি করে চিঠির লেখা পরিবর্তন করে দেয়। চিঠি হাতে পেয়ে লাইলী ভীষন অবাক হয় অন্যদিকে মজনু চিঠি পেয়ে ভেঙে পরে। সে জানতে পারে তাকে লাইলী ভালোবাসেনি। কিন্তু তারা দুজন কখনো জানতে পারলো না যে চিঠিটা তাদের লেখা ছিল না। অবশেষ লাইলীর বিয়ে হয়ে যায় আর অন্যদিকে মজনু রাস্তায় রাস্তায় পাগলবেশে ঘুরে বেড়ায়। আর সেখানেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।

নাটকটি আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লেগেছে। গ্রামীণ পরিবেশে নির্মিত নাটকগুলো দেখতেও ভালো লাগে। আর নাটকের গল্পটাও দারুণ ছিল। সমাজে এমন ঘটে থাকে প্রতিনিয়ত। কিছু ভালোবাসার যেন পরিপূর্নতা পায় না। হেরে যায় বাস্তবতার কাছে। খায়রুল বাসার আর সাদিয়া আয়মানের নাটক এর আগেও দেখেছি। খুবই ভালো লাগে অভিনয় দুজনের।