গ্রামীণ প্রকৃতি

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

26-09-2023

১১ আশ্বিন , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। ভালো থাকাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ! দিন দিন আমরা যেন সবাই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। হয় শারীরিকভাবে না হয় মানসিকভাবে। আমাদের ভাল না থাকার কারণটাও একই। পরিবেশ ও পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে আমাদের ভালো থাকাটাই এখন কঠিন হয়ে পরেছে। আসলে এই যে পরিবেশের বিরূপ আচরণ এর প্রভাব যে আমাদের উপর পরছে সেটা ভালো করেই খেয়াল করা যাচ্ছে অসময়ে ভারী বর্ষণে বৃষ্টি। আবার তীব্র গরম। সবই তো পরিবেশের বিরূপ আচরণ। এর দায় কাকে দিবেন আপনি? নিশ্চয় আমাদের জন্যই পরিবেশের এমন বিরূপ আচরণ। নিয়ম করে প্রতিনিয়ত আমরা ধ্বংস করছি পরিবেশকে। গড়ে তুলছি আমাদের সভ্যতা।

IMG20230916170014.jpg

IMG20230916170009.jpg

গ্রামের অবস্থাটাও এখন এমন। চাষকৃত জমিতে গড়ে তুলছে বাড়িঘর। উজার করা হচ্ছে গ্রামের সবচেয়ে বড় বড় জঙ্গলগুলো। গ্রামে এমনও জঙ্গল ছিল যেখানে দিনের বেলায় গেলেও মানুষ ভয় পেত। খাঁ বাড়ির জঙ্গল তখনকার সময়ে যেন ভয়ঙ্কর জঙ্গল ছিল। আমরা তো কখনোই সাহস পায়নি এ জঙ্গলের ধারে কাছে যাওয়ার। দিনের বেলায়ই কতো অন্ধকার দেখা যেত। ভূতের ভয় তো আছেই। গ্রামের মানুষও সেটাই বিশ্বাস করতো। গ্রামের মুরব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি, এ জঙ্গলে ভূতের ভয় ছিল। মাঝে মাঝে নাকি রাস্তায় বাশঁ পরে থাকতো। কেউ বাশেঁর উপর দিয়ে গেলেই নাকি মেরে ফেলতো। এসব ঘটনা কতটা যৌক্তিক আমার জানা নেই। জ্বিনের ভয় ছিল প্রচুর তখন।

আল্লাহ তায়ালা জ্বিন জাতিকেও সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তারা অদৃশ্য। তখনকার সময়ে জ্বিনের ভয়ও ছিল। দিনের বেলা জঙ্গলে গেলে নাকি জ্বিনে ভর করত শরীরে!! তারপর হুজুর এনে ছাড়াতো শরীর থেকে!! এতো গেল অনেক আগের কথা! এবার বর্তমানে আসি। এখনকার মানুষ এসবে কোনো ভয়ই পায় না। ভয় পাবেই বা কি করে গ্রামের বিখ্যাত বিখ্যাত জঙ্গলগুলো উধাও! এসব জঙ্গল পরিষ্কার করে শুধু বাড়িঘর তৈরি করা হচ্ছে। কোথা থেকে কোথায় চলে গেলাম। আসলে গতকাল বেরিয়েছিলাম গ্রামটাকে ঘুরে দেখার! এখনকার ওয়েদার এমন যে দেখা যাচ্ছে আকাশে বৃষ্টি কিন্তু একটু পরেই আবার রোদ। আর ছোটবেলায় এটাকে বলতাম শেয়াল মামার বিয়ে হচ্ছে, হাহা।

IMG20230916170027.jpg

IMG20230916170021.jpg

যখন বেরিয়েছিলাম তখন আকাশ একদম নীল। বিকালের দিকে। গ্রামের ভিতর দিয়ে চলার মতো একটি রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়েই মানুষ চলাফেরা করে আসছে। আমি বেরিয়েছিলাম ঝাউগারা দিকে যাওয়ার জন্য। ঝাউগার একটি গ্রাম সেটা আমাদের গ্রামের সাথেই। হেটেঁ যেতে বেশিক্ষণ লাগেনি। ঝাউগারা এর এখানে বিখ্যাত জায়গা হচ্ছে চর। সেখানে মানুষ গিয়ে বসে থাকে। চরের মতো না হলেও মানুষ সেটার নাম তাই দিয়েছে। চরে গিয়ে দেখলাম চারিদিকে সবুজ শ্যামল সব আবাদি ধানের জমি। এখনও ধান হয়নি। তবে অগ্রহায়ণ মাসে ধান ঘরে তুলবে কৃষকেরা। আমি কিছুক্ষণ চরে গিয়ে দাঁড়ালাম। রোদের সাথে মৃদ্যু বাতাস বইছিল। কিছুক্ষণ এর জন্য মুক্ত বাতাস উপভোগ করার চেষ্টা করলাম। মনে মনে ভাবছিলাম, এটাই তো গ্রামের সৌন্দর্য।

তবে বিকেলে চরে কম মানুষের আনাগোনায় পেলাম। বাজারে যাওয়ার জন্য অনেককেই দেখলাম ব্যাগ নিয়ে বাজারে যাচ্ছে। সরু রাস্তা বেয়ে চলে যাচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা! সাথে বেশ কজন প্যাসেঞ্জার। উন্নয়নের ছোয়ায় অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আগে গ্রামের মানুষ হেটেঁ বাজারে চলে যেত, কেউ বা সাইকেল চালিয়ে। এখন আর তেমন দেখা যায় না। তবে গ্রামের সবুজ শ্যামল প্রকৃতি দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে। শহরের দালানকোঠা বেশ কয়েকমাস দেখে অনেক অশান্তিতেই ছিলাম। গ্রামে এসে এখন অনেকটা সুস্থ্য আছি।

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w
Date25 September, 2023


10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

হ্যাঁ ভাই সত্যি পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য আমরাই দায়ী। আমাদের এখন সবার উচিত এই পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখা। সবাই বেশি বেশি করে বৃক্ষরোপণ করলে এই পরিবেশটা আবার সুন্দর হয়ে যাবে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 11 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। আমাদের উচিত বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা তাহলে আগের চিরচেনা রূপ ফিরে পাওয়া সম্ভব

 11 months ago 

গ্রামের প্রকৃতির শেষ নেই। অন্য যে কোন জায়গা থেকে গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্য অপরূপ। আপনি ঠিক বলেছেন ভাই একটা সময় গ্রামের অধিক ঝড় ছিল। আর সে সময়ের মানুষগুলো ছিল সহজ সরল। একটু রাতের বেলায় রাস্তা দিয়ে হাঁটলে যে কোন শব্দতেই তারা ভয় পেত। গ্রামের পরিবেশ গুলো আমাকে মুগ্ধ করে। আপনি খুব গ্রামীণ পরিবেশ নিয়ে চমৎকার লিখেছেন ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

জি ভাই। গ্রামে এখন আগের মতো জঙ্গল দেখা যায় না আর মানুষজনও কোনো কিছুতে ভয় পায় না

 11 months ago 

দারুণফটোগ্রাফি ছিল সাথে বর্ণনা ও অসাধারণ ছিল। গ্রামীণ প্রকৃতি দেখতে খুবই ভালো লাগে। গ্রামের প্রকৃতির মাঝে যতটা আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায় ততটা অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনার প্রতিটি গ্রামের প্রকৃতির ফটোগ্রাফি অসাধারণ ছিল। তাছাড়া আপনার বর্ণনা ও অনুভূতি অসাধারণ ছিল। সব মিলিয়ে দারুণ একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন।

 11 months ago 

জি আপু। গ্রামের মতো সৌন্দর্য আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু

 11 months ago 

গ্রামীণ পরিবেশে প্রকৃতি সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া যদিও আগে মানুষ জঙ্গলে গেলে ভয় পেতো তবে এখন আর মানুষ আগের মতো ভয় পায় না। আপনার চমৎকার চমৎকার সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

 11 months ago 

জি ভাই, আগের মতো এখন মানুষের মাঝে তেমন ভয় দেখি না।

 11 months ago 

আসলেই তাই, গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলোও আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলায় নানুবাড়িতে বেশ কিছু জিনের কাহিনী শুনেছিলাম সবার মুখে। তবে সেগুলো বেশ আগের। এখন চারপাশে এমন পরিবেশ হয়ে গেছে যে ভয় লাগার কোন কারণই নেই। আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলোও বেশ সুন্দর লাগছে দেখতে।

 11 months ago 

হুমম, জিন কিন্তু এখনও আছে। মানুষের সাথে সাথে তো থাকেই। তবে মানুষের এসবে ভয় কম এখন

 11 months ago 

গ্রামীণ পরিবেশে থেকে আপনি এখন বেশ ভালো আছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। সবুজ প্রকৃতির পাশে থাকলে মন এম্নিতেই ভালো হয়ে যায়। সুন্দর বর্ননার সাথে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্য করার জন্য 🦋

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46