শুক্রবারের বিকেল
04-02-23
২২ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
আসলে পৃথিবীতে রক্তের সম্পর্কের বাইরেও একটা সম্পর্ক থাকে আমাদের! একে অপরের সাথে! সেটা হতে পারে প্রতিবেশীর সাথে অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে! তবে এ সম্পর্কগুলো কিন্তু রক্তের সম্পর্কের চেয়েও গভীর! বলতে গেলে আপন ভাইয়ের মতো! শুরুটা হয়েছিল ২০২১ সালের মে কিংবা জুন মাসের দিকে! একই সাথে ব্লগিং করা! ডিস্কর্ডে কথোপকথন! অতঃপর ভালো একটি সম্পর্ক! দুজনেই ব্যাচমেট তবে এতো তাড়াতাড়ি যে একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে যাবে কে জানতো! বলছি @sagor1233 ভাইয়ের কথা! সেই শুরু থেকে সাগর ভাইয়ের সাথে পরিচয়! ভার্চুয়ালি কথা বলে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়! স্টিমিটের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় আমি প্রথম জানতাম না! বলতে গেলে স্টিমিট সম্পর্কে আমার নলেজ শূন্য ছিল। জাস্ট পোস্ট করা, মার্কডাউন, পাওয়ার আপ এসব বিষয়। আমার বুঝতে সমস্যা হলে সোজা চলে যেতাম সাগর ভাইয়ের কাছে। যদিও আমরা সেইম ব্যাচ কিন্তু আমি সাগর ভাই বলেই সম্বোধন করে আসছি!
মাঝে মাঝে পড়াশোনা, ফিউচার প্লেনিং নিয়েও আলোচনা হতো সাগর ভাইয়ের সাথে! তখন জানতে পেরেছিলাম ডুয়েট প্রিপারেশন নেয়ার কথা! সাগর ভাই কম্পিউটার ডিপার্টমেন্ট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করছে! আর আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে। সাগর ভাই শুরুতেই বলেছিল ডুয়েট চলে আসবে। এডমিশন প্রিপারেশন নেয়ার জন্য। হলোও তা! তিনমাস আগেই চলে আসা। সাগর ভাইকে বলেছিলাম একদিন দেখা হবে আমাদের! ডিসটেন্সটা অনেক মাঝে! তবে একটা সুযোগ! গাজীপুরে আসলে দেখা করা যাবে! কিন্তু আমি এডমিশন প্রিপারেশন নিয়ে পড়ে যায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে! যাবো কি যাবো না! এছাড়া তিনমাস ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করেছি আপনারা সবাই হয়তোবা জানেন! আবার এডমিশনে যেতে হলে ফিন্যানশিয়াল একটা ব্যাপারও থাকে সেখানে। আমি নির্দ্বিধায় সাগর ভাইকে সবকিছু শেয়ার করতাম। এখনও করি! আমাকে পরামর্শ দিয়েছিল যেন এডমিশনে আসি! যদিও একটু টাফ আনুষঙ্গিক খরচসহ! স্টিমিটের দামও কম ছিল তখন! এখন একটু বেড়েছে। হাফিজ ভাইয়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পাওয়ার ডাউন দেয়! আর যত টাকা পেয়েছিলাম সেটা কোচিং ফি এর জন্য রেখে দিয়েছিলাম!
ভেবেছিলাম স্বপ্ন পূরণের একধাপ এগিয়ে গেছি! স্বপ্ন ডুয়েট জয়! সাগর ভাই আগেই এসে গিয়েছিল! বলে রেখেছিলাম গাহীপুরে এসে দেখা হবে! দুজনের একটাই ইচ্ছে স্বপ্নের ডুয়েট জয়! ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (ডুয়েট) বাংলাদেশের ডিপ্লোমাধারীদের জন্য এটা পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটি! সবার স্বপ্ন থাকে এই ভার্সিটিতে পড়ার! আসার সময় বাসা খোজাঁ-খুজিঁ নিয়ে এক ঝামেলা গেল! কোচিং এর ক্লাসও শুরু হলো। কিন্তু টাইমিং মিলাতে পারছিলাম না! কারণ বিকালে কোচিং টাইম দিয়েছে! সাগর ভাইকে গাজীপুরে এসেই বলেছি দেখা করার কথা! সাগর ভাইয়েরও কিছু কাজের ঝামেলা এছাড়া কোচিং এ প্রেসার তো ছিলই! আমি বলেছিলাম গতকাল বিকালে বের হতে। কিন্তু আমি কোচিং থেকে টায়ার্ড হয়ে শুয়ে পরেছিলাম! ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যার কাছাকাছি হয়ে গেছে। আজকে আর দেখা হবে না তাহলে। সাগর ভাই তখন বলেছিল শুক্রবারে বিকালে সময়টা ফ্রি আছে। তখন বেরোনো যাবে!
আমি তখন বলি ঠিক আছে কাল দেখা হচ্ছে! অর্থাৎ আজ শুক্রবার বিকালে! আজ বিকালে ঘুমায়নি! সাগর ভাইকে ফোন দেয় ডুয়েট ক্যাম্পাসে চলে আসতে। সাগর ভাই তো আমার আগেই এসে হাজির! আমি তখন সোজা চলে গেলাম ডুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে! গিয়ে দেখি সাগর ভাই দাড়িঁয়ে আছে। পাশে ডাবের একটি দোকান ছিল। ভেনগাড়িতে করে ডাব বিক্রি করছে। সাগর ভাই তখন দুটি ডাব নিল। দুজন মিলে খেলাম এবং সেখানে দাড়িঁয়ে কথা বললাম! ডাব খাওয়া শেষে চলে গেলাম সোজা ক্যাম্পাসের ভিতরে! মাঠে ক্রিকেট খেলা হচ্ছিল। পাশেই বেঞ্চের মতো সিট করা ছিল সেখানে বসেই আমরা খেলা দেখছিলাম আর কথা বলছিলাম!
সাগর ভাইয়ের সাথে কথা বলে অনেক কিছুই জেনেছি! আমার আসলে নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। কথা হলো ব্লগিং নিয়ে, পড়াশোনা নিয়ে। সবমিলিয়ে চাপের মধ্যেই যাচ্ছে দুজনের! আপনারা হয়তো জানেন যে সাগর ভাই দাদার আরেকটি কমিউনিটি ট্রন ফ্যান ক্লাব এর মডারেটর এর গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব পালন করছেন! তো দায়িত্ব নিয়ে আসলে অযুহাত দিতে নেই! আপনার কাজ বা ব্লগিংটাকে ভালোবাসলে দেখবেন সব সম্ভব! স্টিমিটের প্রাইজ কম দেখে অনেকেই ব্লগিংটাই ছেড়ে দিয়েছে! এতে কিন্তু তারই ক্ষতি হয়েছে!
কাজ করতে করতে এখন এটা প্রফেশনালের মতো হয়ে গিয়েছে। আগে যারা কন্টেন্ট লিখতে একটু ঝামেলা হতো! কি লিখবে বুঝে উঠতে পারতো না! তারা এখন ভালো অবস্থানে আছে। সামনে আরও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। তবে সব থেকে মজার ব্যাপার সাগর ভাইয়ের সাথে কথা বলে মনেই হয়নি আমি দূরের কেউ! ভার্চুয়ালি যেভাবে কথা হতো সামনাসামনি ঠিক সেভাবেই কথা হলো। এ সম্পর্কগুলো সুন্দর! আপন ভাইয়ের থেকেও কোনো অংশে কম নয়! সাগর ভাইয়ের সাথে শুক্রবারের বিকেলটা ভালোই কেটেছে। ক্রিকেট খেলা দেখে আবার শৈশবের স্মৃতিচারণও করলাম দুজন! এখন তো ক্রিকেট খেলাই হয়না! শুধু দর্শক সারিতে বসে উপভোগ করা!
বিকালের পর সময়টা মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়! সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল! আর বেশিক্ষণ ক্যাম্পাসের ভিতরে আর বসিনি! ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে ঠিক কোণায় খেয়াল করলাম চিকেন ফ্রাই, বার্গার বিক্রি করছে! সাগর ভাইয়ের পক্ষ থেকে ট্রিট! যাক, খাওয়া শেষ করে হাটঁতে হাটঁতে চলে আসি! তবে এই দেখা কিন্তু শেষ দেখা নয়! যেহেতু গাজীপুরেই আছি, তো আবার দেখা হতে পারে! সাগর ভাইকে বিদায় জানিয়ে আমি সোজা বাসায় চলে এলাম!
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | w3w |
Date | 03 February, 2023 |
আজ বিদায় নিলাম! আবারো হাজির হবো নতুন কোনো অনুভূতি শেয়ার করার জন্য! সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি ঠিক বলেছেন রক্তের সম্পর্কে থেকে বড় সম্পক থাকে।আর আমরা যখন ডিস্ককে কথা বলি তখন আসলে মনে হয় না যে ভার্চুয়ালি এরা মনে হয় অনেক কাছের কেই।যাইহোক ভাইয়া আপনার ও সাগর ভাইয়ের সম্পর্ক সারা জীবন এভাবে থাকুক,সেই দোয়া করি। ধন্যবাদ
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 😍
শুক্রবারের বিকেল বেলায় সাগর ভাইকে নিয়ে চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনি ঠিক বলেছেন আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল সদস্যদের প্রতি অনেক সুন্দর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। আপনাদের দুজনকে এক সাথে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আমাদের ও দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
জি! ইনশাআল্লাহ আপনার সাথেও একদিন দেখা হবে, যেহেতু গাজীপুরেই আছি।
পড়াশোনার ব্যস্ততা এমনভাবে ঘিরে ধরেছে যে রুম থেকে বের হওয়ার সময়ই পাওয়া যায় না। আপনার সাথে দেখা করে একটা আলাদা রিফ্রেশমেন্ট কাজ করতেছে। যাই হোক, সময়টা আসলেই অনেক ভালো ছিল। 💝
হুমম ভাই! মাঝে মাঝে বের হয়েন রুম থেকে। বাহিরে কিছুক্ষণ বসে আড্ডা দিলেও মনটা ভালো হয়
পৃথিবীর সব সম্পর্ককে যদি রক্তের সম্পর্ক দিয়ে মাপা হতো তাহলে এত সুন্দর সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠত না।আমি মনে করি এই দুনিয়াতে যত সম্পর্ক আছে তার মধ্যে আত্মার সম্পর্ক সব চাইতে সুন্দর সম্পর্ক।আপনি আর সাগর ভাইয়ের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের কথা শুনে অনেক ভালো লেগেছে।দুজনে অনেক আড্ডা করেছেন ক্যাম্পাসের ভিতরে এবং শেষে খাওয়া-দাওয়া করে বাসায় চলে এসেছেন পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
ঠিক বলেছেন আপু! ভাল একটা সময় কাটিয়েছে ডুয়েট ক্যাম্পাসের ভিতরে, নতুন কিছু জানতেও পেরেছি
কিছু কিছু সম্পর্ক এমন যে কখনো তা রক্তের সম্পর্কে ও ছাড়িয়ে যায়। আপনার এবং সাগ্র ভাইয়ের সম্পর্কটা আমার মনে হয় তেমন কিছুই যেটা বলে বোঝানো যাবে না। এমন সম্পর্কগুলো অনেক কঠিন সম্পর্কে ও ছাড়িয়ে যায়। আপনার এই সম্পর্কটা যেন যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।
অনেক দিন পর আপনার সঙ্গে সাগর ভাইয়াকে দেখে ভালো লাগলো।আসলে সব সম্পর্ক রক্তের হতে হয় না।যাইহোক আপনারা সেম ব্যাচের জেনে ও ভালো লাগলো ।মানুষের ইচ্ছে শক্তিটাই বড়ো।আপনারা দুজন দারুণ সময় পার করেছেন আশা করি।ধন্যবাদ আপনাকে।
জি দিদি! মানুষের ইচ্ছে শক্তিটাই বড়! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি 🌼