গুরুদয়াল কলেজে একদিন
26-11-2023
১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকলেই ভালো। মাঝে মাঝে ভালো না থাকলেও বলতে হয় ভালো আছি। গত কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম কোথাও ঘুরে আসার! বাড়িতে আসার পর থেকে তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি। আমার খুব কাছের এক বন্ধু কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে পড়াশোনা করে। তাকে অবশ্য বলেছিলাম একদিন দেখা করার জন্য। গুরুদয়াল মাঠে আগে যখন কিশোরগঞ্জ থাকতাম তখন এখানে এসে আড্ডা দেয়া হতো। বলতে গেলে অনেকেই এসে সময় কাটায়। বিশেষ করে কাপলযুগল বেশি দেখা যায়। তবে বর্তমানের চিত্রটা কেমন তা জানা ছিল না। আগে তাই ই দেখতাম। এখানে এসে আড্ডা দিতে ভালোও লাগে।
গুরুদয়াল মাঠের কোণায় একজন চা বিক্রেতা মামা বসে! আহা! উনার হাতের বানানো দুধ চা কতো যে খেয়েছি। উনার দুধচায়ের বিশেষত্ব হচ্ছে মাটির হাড়িতেই দুধ চা বানিয়ে দেয়া হয়। কোনেরকম পানি ইউজ করে না। আসলে অনেকদিন ধরে মামার দুধ চা খাওয়া হয়না। এই যে এখন শীতের সময়, উনার দুধ চা খাওয়ার ভীড় পরবে সিউর। আমি ভেবেছিলাম এবার কিশোরগঞ্জ গেলে মামার চা খাওয়া হয়। তো গতকাল আমার বন্ধু পলাশকে বলে রেখেছিলাম আমি কিশোরগঞ্জ আসবো। সে বলেছিল কিশোরগঞ্জ এসে যেন ফোন দেয়। তারও বিবিএ পরীক্ষা চলছে। সে গুরুদয়াল কলেজেই পড়াশোনা করছে।
আমার আবার কিশোরগঞ্জ কিছু কাজ ছিল। মামাদের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। তো গতকাল সকাল এগারোটার দিকে রওনা দেয়। আমাদের নান্দাইল থেকে কিশোরগঞ্জ গেলে বেশি সময়ও লাগে না। আসলে গতকাল বাস দিয়ে গেলাম। অনেকদিন পরে বাসে চড়লাম। বাসের ভাড়া যে বেড়েছে এটা আমি নিশ্চিত ছিলাম। নান্দাইল থেকে কিশোরগঞ্জ আগে ভাড়া ছিল ৩০ টাকা আর সেটা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা। মজার ব্যাপার হলো আগে স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়ে বাসের অর্ধেক ভাড়া দিয়ে দিতাম। আর এখন বই খাতা থাকলেও স্টুডেন্ট বলতে পারি না। বলতে গেলে একটা আইডেন্ট ক্রাইসিসে আছি আসলে।
বাসের ভাড়া নান্দাইল থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু তখন বাসস্ট্যান্ডে গেলাম দেখি এমকে সুপার বাস চলে গেছে। তো আমি অটো করে নান্দাইল চৌরাস্তা চলে গেলাম। নান্দাইল চৌরাস্তা যেতে ১০ মিনিটের মতো লাগে। নান্দাইল চৌরাস্তা গিয়ে দেখি বাস এখনও দাঁড়িয়ে আছে। নান্দাইল চৌরাস্তা পর্যন্ত অটো ভাড়া ১৫ টাকা। সেখানে গিয়ে এমকে সুপার বাসে করে সোজা কিশোরগঞ্জ চলে এলাম! কিশোরগঞ্জ আসতে বেশি সময় লাগে নি। তারপর সেখান থেকে সোজা চলে গেলাম গুরুদয়াল কলেজ মাঠে। অনেকদিন পর গুরুদয়াল কলেজে গিয়ে দেখলাম অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। মাঠের স্টলগুলোর পাশে আগে গাছ ছিল না। এখন দেখতে পেলাম পুরো মাঠ জুড়েই সবুজের সমারোহ। দূর থেকে সুন্দরই লাগছিল আসলে।
কলেজের এখানে গিয়ে পলাশকে ফোন দিলাম। কিন্তু ফোনে যা বললো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম! সে ইমার্জেন্সি বাড়িতে চলে গেছে। আমি শুনে তো মেটামোটি মন খারাপ করে বসলাম। আমি এতো আশা নিয়ে আসলাম দেখা করা জন্য। কিন্তু কিছু করারও নেই আসলে কার কখন সমস্যা এসে হাজির হয়ে যায় বলা যায় না। আমি একা একা কিছুক্ষণ ঘুরলাম। গুরুদয়াল কলেজের ভিতরে গেলাম। কলেজ শনিবারে বন্ধ থাকে। ভিতরে দেখলাম অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফুলের গাছ লাগানো। আমি বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। পরের কোনো পোস্টে শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। যাক, ভিতরে বেশ কয়েকটি বিভাগ দেখলাম। বাংলা, ইংরেজি, হিসাব বিজ্ঞান আরও কয়েকটা। এই গুরুদয়াল কলেজ থেকেই পাশ করেছে সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
কলেজের ভিতরে খেয়াল করলাম স্কাউটের দলকে ডিসপ্লে প্র্যাকটিস করছে। সামনে যেহেতু ১৬ই ডিসেম্বর সে উপলক্ষে কলেজের স্কাউটের দল আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছে। আসলে একা একা ঘুরার কি কোনো মজা আছে! আমি আর ভিতরে যায়নি। তারপর সেখান থেকে চলে এলাম।
Device | Oppo A12 |
---|---|
photogrpher | @haideremtiaz |
Location | w3w |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.