শোক সংবাদ
29-10-2023
১৪ কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
সকাল সকাল আজ ঘুমটা ভেঙে গেল মাইকের আওয়াজ শুনে। মাইকে সকাল সকাল মক্তবে যাওয়ার অথবা পাড়া বা মহল্লার কেউ মারা গেলে বলে দেয়া হয়। আমাদের বাড়ির পাশে খান বাড়ি জামে মসজিদ। দৈনিক পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ সেখানেই আদায় করা হয় বেশি। খান বাড়ি মসজিদ নামটিও গ্রামের খান পরিবারদের নাম অনুসারে দেয়া হয়েছে। সকাল সকাল মাইকে বলে দিল খান বাড়ির আনার খান মারা গিয়েছে! গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি একজন। ছোটবেলা থেকেই ভদ্রলোককে দেখে আসছি। ছেলে মেয়ে সবাই প্রতিষ্ঠিত।
বাপ দাদার ভিটার মায়া ছেড়ে শহরে যায়নি। তবে শহরে শুনেছিলাম বাসা বাড়ি করেছে। আনার খানের বয়সও হয়েছে। অনেকদিন ধরেই হাসপাতালে এডমিট ছিল। আজ মারা গেল। গ্রামের মানুষ ইতোমধ্যে বলাবলি শুরু করে দিয়েছে, এতো ধনসম্পত্তি লাভ করে কি হলো! কোনো কিছুই তো কবরে নিয়ে যেতে পারবে না। এমন কথা শুনে আসলে খারাপ লাগারই কথা। আনার খানের ধনসম্পত্তির দিকেই নজর ছিল বেশি। কিভাবে সমাজে আরও প্রভাবশালী হওয়া যায়। হয়তো ভদ্রলোক ভাবেনি তাকেও যে একটা সময় পরপারে চলে যেতে হবে।
আসলে মৃত্যু অনিবার্য! আমাদের জন্ম যেহেতু হয়েছে অবশ্যই আমাদের মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মানুষের ছোট্র জীবনে অনেকের সাথেই উঠাবসা করা হয়। একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠে তার চরিত্রের মাধ্যমে। আপনার চরিত্র ভালো হলে মানুষ আপনাকে দেখলেই সালাম দিবে, সম্মান করবে। কিন্তু সেটা না হলে সামনে কিছু না বললেও পিছনে ঠিকই আপনার ভালো চাইবে। এজন্য আসলে কারো সাথে খারাপ আচরণ করা উচিত নয়। এই ছোট্র মানুষ বাচেঁই আর কয়দিন। অথচ কিছু মানুষের অহংকার, দাম্ভিকতা দেখলে মনে হয় মানুষটা মরবে না, আজীবন বেচেঁ থাকবে! তারা হয়তো ভুলে যায় তাদেরকেও যে এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে হবে।
একজন মানুষ মারা যাওয়ার পর তাকে আর ঘরে রাখা হয় না! সে যত বড় জমিদারই হোক না। শেষ বিদায়ের জন্য প্রস্তুতি করা হয়। মানুষ তখন তার নাম দেয় লাশ। অথচ একদিন আগেও যে ব্যক্তির নাম ছিল আনার খান। একটু ভাবতে পারছেন বিষয়টা! মৃত্যু কত সহজে একজনের পরিচয় পরিবর্তন করে দেয়। একদিন আমাদেরও হয়তো এভাবেই নাম পরিবর্তন হয়ে যাবে। মারা গেলে আমাকেও বলবে আমি এখন মরা লাশ! কতটা নিষ্ঠুর সত্য কথা! এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আমি মারা গেলে কেউ কি মনে রাখবে আমাকে? হ্যাঁ, রাখবে। আমার কর্ম, আমার ব্যবহার যদি ভালো থাকে মানুষ ঠিকই আমাকে মনে রাখবে। চায়ের দোকানে বসে গ্রামের কোনো এক চাচা গল্পে গল্পে হয়তো বলতে থাকবে, ছেলেটা খুব ভালো ছিল রে!
আমি সেদিন থাকবো না। আমার কর্মগুলোই সেদিন রয়ে যাবে। আমার ব্যবহার অনেকের মনে হয়তো স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে। আর এটাই তো জীবনের স্বার্থকতা। মৃত্যুর পরেও এতোটাও আফসোস থাকবে না। এজন্য আমাদের উচিত মানুষের মনে জায়গা করে নেয়া ভালো আচার-আচরণ অথবা ভালো কোনো কর্মের মাধ্যমে। আপনার ভালো আচরণ, ভালো কর্মই আপনাকে দামী করবে। বেচেঁ থাকলে হয়তো কেউ বলবে না, কিন্তু একটা সময় পরে যখন দেখবে আপনার ভালো কর্মের নিদর্শন আছে তখন ঠিকই মানুষ আপনাকে মনে করবে। হয়তো আফসুরে বলবে, ছেলেটা থাকলে আরও ভালো কিছু করতো।
আমাদের জীবনটাকে এমনভাবে সাজানো উচিত যেখানে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। যেখানে থাকবে না কোনো অন্যায়-অত্যাচার। আমাদের উচিত মৃত্যুর কথা স্মরণ করা। যেকোন কাজ করার সময় মৃত্যুর কথা স্মরণ করা। আপনি একটা খারাপ কাজ করতে চাচ্ছেন, এখন যদি মৃত্যুর কথা স্মরণ করেন তাহলে দেখবেন সে কাজটি করছেন না, আপনার ব্রেইন অনুতপ্ত অনুভব করবে। সৃষ্টিকর্তার উপর সন্তুষ্ট থাকা। দিনশেষে, আমি, আপনি সবাইকে এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। যাওয়ার আগে বিন্দু পরিমাণ ভালো কাজ করে যেন যেতে পারি এটাই হোক আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
আসলে মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই। একটি বাড়ি নির্মাণ করতে পারলে,আরও ৫/১০ টা বাড়ি কিভাবে নির্মাণ করা যায়, সারাক্ষণ সেগুলো নিয়ে ভাবতে থাকে। ১০ কোটি টাকার মালিক হলে ১০০ কোটি টাকার মালিক কিভাবে হওয়া যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে থাকে। সেটা মানুষ ঠকিয়ে হোক,আর যেকোনো উপায়েই হোক না কেনো। একবারও ভাবে না যে অন্যের হক নষ্ট করছি এবং মৃত্যুর পর অবশ্যই এটার বিচার হবে। আসলে লোভ লালসা এমনভাবে আঁকড়ে ধরে, মৃত্যুর কথা স্মরণ থাকে না একেবারেই। আমরা দুনিয়াতে যা করবো, প্রতিটি জিনিসের হিসাব দিতে হবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। সুতরাং দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় এমন কাজ করা উচিত, যাতে করে পরকালে হিসাব দিতে সহজ হয়। অবশ্যই ভালো ভালো কাজ করা উচিত, যাতে করে আমরা মরেও বেঁচে থাকতে পারি পৃথিবীতে কর্মের দ্বারা। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এজন্য দুনিয়াতে ভালো কাজ করা উচিত, আল্লাহ তায়ালার অনুগত্য স্বীকার করা উচিত। দিনশেষে আমরা মারা গেলেও যেন আমাদের ভালো আমলগুলো শাফায়েত করতে পারে।
একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, আমাদের সবার লক্ষ্য এমনটাই হওয়া উচিত। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুক,আমিন।
ভাইয়া এই যুগে একটা মানুষের যত টাকা পয়সা থাকে না। আস্তে আস্তে দিনের পর দিন মানুষের চাহিদা বাড়তেই থাকে। কারো যদি মাসে ইনকাম এক লাখ হয়। সে আরো আশা করে তিন লাখ। প্রতিটা মানুষ ও পরকালের কথা ভুলে যায় টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতে। টাকা আমাদের অমানুষ করে তোলে এটা সত্য কথা। টাকায় সুখ দেয় না ভাইয়া। যার যত টাকা তার তত টেনশন মেলা এবং লোকটা মারা গেল কিছুই নিয়ে যেতে পারলো না কিন্তু সে অনেক প্রভাবশালী সব সময় টাকার পিছনে ছুটতো। সে যদি একটু আমল করতো তাহলে আজকে মানুষটা মারা গেল। অনেক মানুষ বলতো যে না লোকটা ভালো ছিল। যাই হোক।মৃত্যুর পরে মানুষের কথাগুলোই সৃষ্টিকর্তা এগুলো কবুল করে নেন।একটা ভালো মানুষের জন্য মানুষের কাছে সার্টিফিকেটাই আসল। দিনশেষে ভাই আমাদের বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে। আমরা কেউ এ দুনিয়ায় থাকতে আসি নাই এবং আমাদের অল্পতে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।প্রতিটা মানুষ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এবং আমাদেরও চলে যেতে হবে তাই আমাদের টাকার প্রতি লোভ কমিয়ে দিয়ে নিজের আমলের প্রতি নজর দেয়া উচিত। অবশেষে লোকটাকে যেন আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে বাসি করুক। আমিন
একদম ঠিক বলেছেন ভাই, দিনশেষে আমরা কেউই এ দুনিয়ায় স্থায়ী নয়। একদিন এ দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে যেতেই হবে।
প্রতিটি মানুষ যদি মৃত্যুর কথা ভাবতো তবে আর এতো দাম্ভিকতা দেখাতে পারতো না।সবাই বেমালুম মৃত্যুর কথা ভুলে গিয়ে ধন-সম্পদের লোভে পরে যায়।আনার খান মারা গেলেন। কিছুই সাথে নিয়ে যেতে পারেন নি।শুধু নিয়ে যেতে পারবে মানুষের সাথে ভালো ব্যবহারের ওই ব্যবহারটুকু।সবাই যখন বলবে লোকটি খুব ভালো ছিলেন, তবেই ততটুকুতেই শান্তি।পাঁচজনে ভালো বললে আল্লাহ ও তাকে ভালো বলেন।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
যে আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন ,আসলে মারা গেলে আমাদের ভালো ব্যবহার এবং ভালো কর্মগুলো থেকে যায় ।
দুই দিনের দুনিয়ায় ধন-সম্পদ কিছুই না। মরে গেলে সবকিছু ছেড়ে যেতে হবে। আনার খান সাহেবের মৃত্যুর পর তার সব সম্পত্তি হয়ত অন্য কেউ ভোগ করবে। শুধু শেষ ঠিকানা তার রয়ে যাবে। যাইহোক ভাইয়া ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো।
জি আপু। দুই দিনের দুনিয়ায় আমরা কত অহংকার করে বসে থাকি। মরে গেলেই যে সব শেষ