বিদায়বেলা

11-01-23

২৮ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন! আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি! তবে গতকাল থেকে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়ছিলাম! কলেজের কিছু কাজ নিয়ে! যেতে হলে সেই সুূদূর ফেণী! আর আবার দিনের বেলা ফিরে আসা! যাক, এ ব্যাপারে আপনাদের সাথে অন্য পোস্টে কিছু কথা শেয়ার করবো!

বিদায় জিনিসটা সবসময় কষ্টের! এটা মানেন আর নাই মানেন! তবে কিছু বিদায় যেন চিরন্তন সত্য আবার কিছু বিদায় সাময়িক সময়ের জন্য! আপনারা হয়তো জানেন যে, আমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করার জন্য আশুগঞ্জ ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্টে এসেছিলাম! আমিসহ আমার টিমমেট ১৩ জন ট্রেনিং করতে এখানে এসেছিল! যদিও শুরুর ইতিহাসটা এতোটাও ভালো ছিল না! একে তো কলেজ থেকে আমাদের দিচ্ছিল না ; দুই ট্রেনিং করতে হলে ঢাকা ইউনাইটেড আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট হেড অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে!

IMG20230110191405.jpg

IMG20230110191359.jpg

আমাদের কলেজের ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজির স্যার জনাব শাহআলম স্যার আমাদের মোটেও পাওয়ার প্লান্টে দিচ্ছিল না! এর পিছনে অবশ্য কারণও রয়েছে! চট্রগ্রামে আটটি ইন্ডাস্ট্রির সাথে স্যার আগেই কনটাক্ট করে ফেলেছিল! কোনোভাবেই আমাদের আশুগঞ্জ এ দিবে না! তারপর অনেক কষ্টে বলতে গেলে ইলেকট্রিক্যাল প্রধান স্যারকে বলে আমরা ম্যানেজ করিয়েছি! তারপর তো আবার দৌড়াদৌড়ি ঢাকা থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে! সেটাও পসিবল হয়েছিল। সেই সুবাধে আমরা আশুগঞ্জ ইউনাইটেড এনার্জি লিমিটেড কোম্পানিতে তিনমাসের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করার সুযোগ পায়!

পাওয়ার প্লান্টের বিষয়টা এমন ছিল যে, আমরা শুধু বইয়েই পড়েছি! কিন্তু বাস্তবিক জ্ঞান ছিল একদম শূন্য! এখানে আসার পর ধীরে ধীরে আমাদের বাস্তবিক জ্ঞান বাড়তে থাকে! বিশেষ করে একটা ইন্ডাস্ট্রিতে গেলে যে বিষয়গুলো শেখা দরকার, সে বিষয়গুলো আমরা ধীরে ধীরে শিখতে থাকি! আমার কথায় যদি বলি! আমি আগে তো বিদ্যুৎ এর ধারে কাছেও যেতাম না! সত্যি বলতে অনেক ভয় পেতাম! ডিপ্লোমা লাইফে তো কোনো কিছুই শিখতে পারেনি! জাস্ট তাত্বিক নিয়ে পড়েছিলাম! এজন্য প্র্যাকটিক্যাল নলেজ আমার শূন্য ছিল বলা যায়! তবে ইউনাইটেড আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টে আসার পর ধীরে ধীরে স্কিল অর্জন করতে থাকি! পুরো ক্রেডিট যদি দিতে হয়, তাহলে আমি স্যারদেরকেই দিব! কারণ এতো সুন্দর করে ফ্রিভাবে আর কোথাও শিখিয়ে দিবে কিনা আমার সন্দেহ আছে!

IMG20230110191418.jpg

আমার কাছে কোম্পানির সবথেকে ভালো লাগা জিনিস হলো শৃঙ্খলা! পুরো প্লান্ট একটা ডিসিপ্লিন এর মধ্যে পরিচালিত হয়! এখানে টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার সবাই একে অপরকে সব কাজে কো-অপারেট করে! টেকনিশিয়ান হয়তো বেশি কাজ জানে তবে তার জায়গা থেকে সে সমান অধিকারটুকুই পাবে! আমরা এখানে একদম ফ্রিলি সব করেছি! ইঞ্জিন থেকে শুরু করে সবকিছু একদম সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে! আমাদের কিছু বুঝতে সমস্যা হলে স্যারদের শরণাপন্ন হয়েছি এবং স্যারেরা আমাদের সেই বিষয়টুকু সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছেন!

শুনেছি, প্রতি বছর বুয়েট, ডুয়েট থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করতে এখানে আসে! বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার সম্পন্ন করা তারাও এখানে ট্রেনিং করতে আসে! আপনি একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন, প্রাইভেট সেক্টরগুলাতে সবাই খুব প্রোডাক্টিভ! মানে হচ্ছে আপনি এখানে এসে এক মুহূর্তের জন্য বসে থাকতে পারবেন না! সবাই সিডিউল মেইনটেইন করে কাজ নিয়ে ব্যস্ত! ডুয়েট, বুয়েট থেকে আসা অনেক বড় ভাইয়ের জব অনেক ভালো জায়গায় হয়েছে, শুধুমাত্র স্কিল অর্জন করার জন্য! একটু আগে যে কথাটা বললাম, একটা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে হলে যে বিষয়গুলো শেখা দরকার সেগুলোই শেখায়! যার ফলে দেখা যায়, তারা ভালো অবস্থানে কাজ করছে!

IMG20230110191449.jpg

এইতো কিছুদিন আগে, ১১ কেভির লাইনের ক্যাবল পুড়ে গিয়েছিল! সেটার অবশ্য কারণ আছে! চুর তার কেটে নিয়ে গিয়েছিল! যার জন্য ক্যাবল ফ্ল্যাশিং করেছিল! এই ক্যাবল জয়েন দিতে বাহির থেকে লোক নিয়ে জয়েন দিতে হয়! কিন্তু এখানে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ান মিলে ক্যাবল জয়েন দিয়েছে! শুনেছি, সরকারি এপিএসিএল পাওয়ার প্লান্টে ঠিক এক বছর আগে এ ক্যাবল জয়েন দেয়ার জন্য বাহির থেকে লোক হায়ার করে নিয়ে আসা হয়েছিল! ক্যাবল জয়েন দেয়ার জন্য তাদেরকে এক কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল! সো, বুঝতেই পারছেন কোম্পানির কি পরিমাণ টাকা তারা বাচিঁয়েছে!

তিনমাস এখানে ট্রেনিং করে যা বুঝলাম! আপনাকে অবশ্য ভালো জব পেতে হলে স্কিলফুল হতে হবে! নতুবা কোনো জব আপনি পাবেন না! স্যারেরা আমাদের সেই পরামর্শই দিয়েছে! দেখতে দেখতে তিনটি মাস চলে গেল! অনেক কিছু শিখেছি আবার অনেক কিছু শেখার অনেক বাকি! শেষের দিন আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের ম্যানেজার স্যার ব্যস্ততার কারণে আর সেভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি! তবে শেষে স্যারদের সাথে ফটোসেশনে আমরা সবাই অংশগ্রহণ করি!

যাক, তিনটা মাসে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়েছিল! বুঝতেও পারছিনা আমাদের ট্রেনিং শেষ হয়েছে কি না! প্রতিদিন সকাল সকাল কাজ করার রুটিনটা মিস করবো! মিস করবো স্যারদের! তবে স্যারদের পরামর্শ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে! যেখানেই জব হয়না কেন অবশ্যই সব কাজকে সমান চোখে দেখার জন্য বলে স্যার!

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w
Date10 January, 2023

যাক, আর বেশি কথা বাড়ালাম না! আপনাদের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আসলে পাঠ্যবই থেকে প্র্যাকটিক্যালি দেখলে অনেক কিছু বোঝা যায়।পাঠ্যবই তো খালি মুখস্থ জিনিস আর সরাসরা দেখলে অনেক কিছু শেখা যায়।আসলে টিম নিয়ে কাজ করার মজাই আলাদা। আসলে ভালো সময় গুলো খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায় তাই তো তিনমাস দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে। যাই হোক আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

জি আপু! টিম ওয়ার্ক কাজ করলে কাজটি করতে সহজ হয়! সময়ও কম লাগে! সময়গুলো কিভাবে চলে গেল!

 2 years ago 

যাক আপনার ইন্ডষ্ট্রিয়াল ট্রেনিং তাহলে শেষ হলো। আসলে বিদায় জিনিসটা বেশ কষ্টকর, তবে এটার মধ্য দিয়ে নতুন কিছুর সূচনা হয়।
হ্যা ভালো জব পেতে হলে ভালো স্কিল অর্জন করতে হবে। তবে এর সাথে আউট নলেজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যাক এগিয়ে যান এই কামনা করছি। তবে কখনোই জবের উপর নির্ভর করবেন না।

 2 years ago 

জি ভাইয়া! আপনার কথাটা সবসময় আমি মাথায় রাখি! জবের উপর নির্ভর না করে নিজে করতে পারলেও মন্দ হয়না!

 2 years ago 

ফাইনালি আপনার আশুগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেইনিং শেস হয়েছে জেনে ভাল লাগল। আপনি দীর্ঘ ৩ মাসের ট্রেইনিং শেষে আপনি নিশ্চয়ই অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। আসলে পাঠ্যবই আপনাকে শুধু থিওরি শিখাবে কিন্তু প্র্যাক্টিক্যাল কাজ আপনাকে কাজ শিখাবে। আপনারা টিম ওয়ার্ক করেছেন তা আপনাদের গ্রুপ ছবি দেখে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে। বুয়েট, চুয়েট বা রুয়েট, খুয়েট যেখান থেকেই পড়ালেখা করেন প্র্যক্টিক্যাল কাজ ছাড়া সামনে এগুতে পারবে না। আপনার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

জি ভাইয়া! প্র্যাকটিক্যাল নলেজ থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🌼🦋

 2 years ago 

অবশেষে আপনার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং শেষ হয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। টিম নিয়ে কাজ করার মজাটাই কিন্তু অন্যরকম হয়ে থাকে। তিন মাস দেখতে দেখতে শেষ। আসলে এরকম সময় গুলো খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

জি আপু সময়টা কিভাবে চলে গেল! ভালো সময় কেটেছে এই তিনমাস। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

এটা কিন্তু একেবারেই ঠিকই বলে আপনার স্যার যেখানেই জব হয় না কেন অবশ্যই সব কাজকে সমান চোখে দেখা উচিত আমাদের সবার। এটা কিন্তু আমিও সবসময় মনে করি। আপনি কিন্তু ঠিকই বলেছেন বিদায় জিনিসটা সব সময় কষ্টের। আপনার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং শেষ হয়েছে এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। এমনিতেই ভাল মুহূর্তগুলো কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়। যেমন এই তিন মাস খুবই তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছে। ভালোই লিখেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60270.61
ETH 2411.66
USDT 1.00
SBD 2.43