স্বরচিত কবিতাঃ দূরন্তপনার শৈশব
21-12-2023
০৭ পৌষ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছ সবাই অনেক ভালো ও সুস্থ্য আছেন। আজকে সকাল সকাল চলে এলাম। রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। শীতের রাতে বেশি দেরিতেও ঘুমানো যায় না। ল্যাপ মুড়িয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকেন দেখবেন এমনিতেই চোখে ঘুম চলে আসছে। তবে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোই ভালো। সারাদিন একটা রিফ্রেশমেন্ট কাজ করে। তো সকাল সকাল আপনাদের মাঝে কবিতা নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম বুঝতেই পারছেন। আসলে ডিসেম্বরের এ সময়টা শৈশবে অনেকটা রঙিন সময়ই কাটতো বলা যায়। সকাল হলেই দাড়িয়াবান্ধা খেলা, ব্যাডমিন্টন খেলা! বিকেল হলে আবার গোল্লাছুট, ক্রিকেট তো আছেই! বার্ষিক পরীক্ষার পর এ সময়টা একদম ফ্রি থাকতো। মাথায় কোনো টেনশন কাজ করতো না! সারাদিন শুধু দূরন্তপনার মধ্যেই কেটে যেত! তবে সময়ের সাথে বহমান জীবনের ধারাও যে ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হয়। সেটা আমাদের মেনে নিতেই হবে।
একটা বয়সে এসে সবাই মিস করে কমবেশি তার ফেলে আসা সেই শৈশবকে! মাঝে মাঝেই ফিরে যেতে ইচ্ছে করে ফিরে যেতে সেই দূরন্তপনার শৈশবে। হারিকেন আর কুপিবাতি জ্বালিয়ে পড়ার সময়টাকে এখন বড্ড মিস করি, মিস করি সকাল হতেই দাদার কাছ থেকে বস্তু পাওয়ার বায়না! সবচেয়ে বেশি মিস করি পুুকুরের ডুব সাতারঁ! কে আগে জয়ী হতে পারবে! এক পাড় থেকে আরেক পাড়ে কে আগে যেতে পারবে! এইতো এগুলাই তো সোনার শৈশব! আজকের কবিতাটি তারই ভাবনায় লেখা! আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
দূরন্তপনার শৈশব
হয়তো আবার ছুটবো ভীষণ দিগবিদ্বিক,
স্কুল ফাঁকি দিয়ে করবো খেলা খড়া-রোদ্দুরে
এসেম্বলির ভয়ে স্কুলে যাবো দেরি করে
স্যারের চোখকে ফাঁকি দেব করুণ সুরের ভোরে
সকাল সকাল খেলবো দাড়িয়াবান্ধা আমাদের উঠোনে
' পড়া শিখেছি ' এই বলে মাকে ছুটে যাবো মাঠে।
গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে হবে হৃদয় উষ্ণ
নারকলের আইসক্রিম খেয়ে করবো যে তা শান্ত
ঝড়ের রাতে চলবে পাল্লা আমকুড়ানোর,
পাকা আমের মধুর গন্ধে মন যে হবে ব্যাকুল!
খড় দিয়ে বল বানিয়ে খেলব যে ভীষণ,
গোল হল চিৎকার দিয়ে পুকুরে লাফ দিব তখন!
বিকেল হলে খোলা মাঠে খেলবো ক্রিকেট,
চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে খেলা পাবে ফিরে ছন্দ।
সন্ধ্যা হলেই কুপি জ্বলা আর হারিকেনের গন্ধে,
ক্লান্ত শরীরে দেখবো গ্রামের সন্ধ্যাবেলার জ্যোৎস্নে।
চাদনী রাতে জোনাক পোকার মিটিমিটি আলো,
মুঠো বন্দি করবো আমি জোনাক পোকার আলো।
চাদনী রাতে করবো লুকোচুরির খেলা,
এক গুণতে যত সময় হয়ে যাবে তার বেলা!
ভূতের ভয়ের কারণ হবে বিস্তর ঝাউবন,
ভয়ে সবাই হুমড়ি খেয়ে পরবে যে ভীষন!
সকাল হলেই চলবে দাদার কাছ থেকে বস্তু পাওয়ার বায়না,
এক টাকা দিয়ে চারটা চকলেট পেলে মন পাবে সান্তনা।
ডুব সাতাঁরে জিতেই আবার মাথা তুলবো,
লাল-লাল রঙা চোখ হলে কেবল পুকুর ছেড়ে উঠবো।
আম-আটিঁ আর মার্বেল খেলায় জিতে মাঠ ছাড়বো,
খেলায় যে কাক হলো তাকে সারা গ্রাম 'চোর' বলে ঘুরাবো।
সকাল সকাল আবার মায়ের হাতের ভাপা পিঠার ঘ্রাণ,
গরম গরম ভাপা পিঠা খেয়ে জুড়াবো পরাণ।
দূরন্তপনার রঙিন শৈশব হারিয়েছি তোমাকে অনেক আগে ,
তবুও আমি জীবনের এই অবেলায় তোমাকেই খুজেঁ ফিরি সকাল থেকে সন্ধ্যে ।
আজ এই পর্যন্তই। কবিতাটি ভালো লাগলে মন্তব্য করে জানাবেন আশা করি। আপনাদের ছোট্র একটি মন্তব্য আমাকে নতুন কিছু করতে আগ্রহী করে তুলে। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর ভাবে আজকের কবিতার মধ্য দিয়ে আপনি শৈশবকে ফুটে তোলার চেষ্টা করেছেন ভাইজান। আপনার এইসব অনুভূতি নিয়ে লেখা কবিতাটি কিন্তু আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আর এরই মধ্য দিয়ে ফিরে পেয়েছি আমার অতীতের শেষ সুমধুর দিনগুলো। যেখানে স্কুল ফাঁকি দিয়ে আমরাও অনেক কিছু করার চেষ্টা করতাম স্যারের এসেম্বলি আমাদের ভালো লাগলো না মোটেও, তাই একটু দেরি করে যেতাম। যাইহোক সেই সমস্ত দিকবিদিক খুঁজে পেয়েছি কবিতার মাঝে।
জি ভাইয়া চেষ্টা করেছি শৈশবের সময়টাকে কবিতার মাধ্যমে ফুটে তোলার জন্য 🌼
কবিতা পড়তে আমি অনেক ভালবাসি। সব সময় চেষ্টা করি কবিতা পড়ার জন্য৷ আজকে আপনার শৈশবকে নিয়ে এরকম সুন্দর একটি কবিতা পড়তে পেরে খুবই ভালো লাগলো৷ খুবই সুন্দর ভাবে আপনি কবিতার সবগুলো লাইনের সামঞ্জসতা বজায় রেখেছেন৷
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 🌼
আসলে আমাদের সবার শৈশবটা ছিলই এরকম। তাহলে সেই সময়গুলোকে অনেক বেশি মিস করি। অনেক সুন্দর করে আপনি সেই সময়গুলোকে মনে করে পুরো কবিতাটা লিখেছেন, যেটা আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। কবিতার সবগুলো লাইন আপনি ছন্দের সাথে ছন্দ মিলিয়ে অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। এত সুন্দর করে সম্পন্ন কবিতা লিখেছেন এবং সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে সত্যি খুব ভালো লেগেছে। জাস্ট অসাধারণ ছিল আপনার লেখা এই কবিতাটা।
জি আপু চেষ্টা করেছি কবিতার ছন্দে ফুটিয়ে তোলার জন্য। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যকরে আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য 🌼
আপনার কবিতাটা পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। কবিতার প্রতিটি লাইনে ছন্দ খুবই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতার লাইনের গাঁথুনিগুলো ছিল অসাধারণ। আপনার কবিতা পড়ে সেই শৈশবের ফিরে যাওয়ার ইচ্ছাটা বেড়ে গিয়েছে। মন চাইতেছে সেই শৈশবে আবার ফিরে যাই।
হুমম ভাই, শৈশবের সময়টাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি কবিতার মাধ্যমে 🌼
খুবই অসাধারণ ভাই।