৬ষ্ঠ পর্বঃ লিপা
20-01-23
০৭ মাঘ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সকাল 🌼🦋। সকালের শুরুটা হোক সুন্দরভাবে এই প্রত্যশায় করছি! যাক, গল্পের ষষ্ঠ পর্বে চলে এলাম। আশা করি এ পর্বটিও আপনারা উপভোগ করবেন!
৫ম পর্বের পর থেকে
ফোনটি পাশে রেখে দেয় লিপা! শাওন তাকে ঠিকই মেসেজ দিতে থাকবে। ছেলেটা তার জন্য দিনকে দিন পাগল হয়ে যাচ্ছে! এটা কি ভালোলাগা নাকি মোহ! লিপা আনমনে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে! হঠাৎ-ই শিলার ফোন!
-গেটের সামনে আয়! দাড়িঁয়ে আছি!
-ওকে, দাড়াঁ!
লিপা গেটের সামনে এসে হাজির! শিলা আর অভি দাড়িঁয়ে আছে। দুজনে কিছুটা সময় একসাথে কাটাতে পেরেছে! শিলা অনেকটা খুশি তার চোখ-মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে! শিলার হাতে অনেকগুলো গোলাপ! বুঝার বাকি রইল না! অভি, শিলাকে দিয়েছে ফুলগুলো! সকাল থেকে বিকাল অবধি সময় কাটানোর পর বাসায় যাওয়ার সময় হলো! অভি চলে যাবে! কিছুটা মন খারাপ শিলার! শিলাকে বিদায় জানিয়ে রিকশায় উঠে পরে অভি! যাওয়ার সময় কিছুক্ষণ শিলার দিকে তাকিয়ে ছিল! এই চোখের ভাষা ভালোবাসার দুটি মানুষই ভালো করে বুঝতে পারে।
-চল, বাসায় চলে যায়! নাকি আরও কিছুক্ষণ দাড়িঁয়ে থাকবি? (লিপা)
-হুম, চল!
ক্যাম্পাস থেকে তাদের বাসা কাছেই। হেটেঁ গেলে বেশিক্ষণ লাগে না।
-ভাইয়া, তো ভালোই দেখছি! অনেক কেয়ার করে তোর!
-হাহা! করে কিছুটা! না হয় এতোদূর গড়াতো সম্পর্কটা!
-আমাকে একটা গোলাপ দিবি না?
-তোর লাগবে!
-না, লাগবে না! (কিছুটা মন খারাপ হয়ে)
-এই নে, সবগুলাই তোর!
-একটা দিলেই হবে।
ফুলগুলো সুন্দর। আমাকে গোলাপী রঙের ফুলটাই দে। আমার তো এমন মানুষ নেই যে আমাকে ফুলে দিবে এনে!
-নেই কেন? তোকে কতবার বলেছি রিলেশন এ যা একটা! শুনলি না আমার কথা!
-আমার মা-বাবা শুনলে হার্ট-এ্যাটাক করবে!
-হুমম বুঝেছি! মা-বাবার বাধ্য মেয়ে, হাহা!
বান্ধবীদের সাথে চলার পথে মাঝে মাঝে এমন কথা শুনতে হয় লিপার! মজার চলে বান্ধবীরা কত কিছু বলে! একেকজনের আবার দুইটা বয়ফ্রেন্ড, বাইক দিয়ে সারাদিন ঘুরাফেরা করে! এসব কথা লিপা এক কান দিয়ে ঢুকায় আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়। যার জন্য ঢাকা শহরে আসা, সে কাজটাই করতে চাই লিপা।
দেখতে দেখতে বাসার কাছে চলে আসে দুজন! বাসার সামনে হঠাৎ এক ঝালমুড়ি মামাকে দেখতে পায়। লিপার সকাল থেকেই ক্ষুধা লেগেছিল, কিছুই খাইনি সে! লিপার আবদার চল ঝালমুড়ি খাই! এই মামার ঝালমুড়ি খেতেও ভীষণ মজার হয়। আমাদের ক্যাম্পাসেই বসে। শিলার ক্ষুধা নেই! অভির সাথে বাহির থেকে খেয়ে নিয়েছে। লিপা তখন দশ টাকার এক প্লেট ঝালমুড়ি নেই। শিলাকে একবার খেয়ে ট্রাই করতে বলে। কিন্তু বেচারি রাজি আর হলো না। খাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে দুজনেই বাসায় চলে যায়।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যে হলো! বাহিরে গেলে কিভাবে সময় চলে যায় টেরই পাওয়া যায় না। বাসার ভিতরে থাকলে সময়ই যেতে চাইনা। বাসার ভিতরে থাকলে যাবে কি করে? সারাদিন অভি ভাইয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করলে সময় তো চলেই যাবে। প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটালে সময় চলে যায়! মনে হয় টাইম মেশিনটা জুরে ঘুরছে। যতটা সময় অভি পাশে ছিল পুরোটা সময় শিলা অনেক খুশি ছিল। প্রথম দেখা, দুজনের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশটাও বেশি ছিল। কিছুক্ষণ পরে শিলা অভিকে ফোন দেয়।
-বাসায় পৌঁছেছো! (শিলা)
-না, এখনো জ্যামের মধ্যে! তুমি গিয়েছো!
-হ্যাঁ! এসে ফ্রেশ হয়ে ফোনটা হাতে নিলাম!
-ওহ! আমার যেতে যেতে মনে হয় রাত হয়ে যাবে।
-আচ্ছা! সাবধানে যাও।
কি রে ভাইয়া কি বললো! কোন পর্যন্ত গেছে?
-ও এখনো জ্যামের মধ্যে বসে আছে! যেতে যেতে রাত হয়ে যাবে বললো!
-কেন যে বেচারা এতো দূর থেকে আসলো! এসেই ফেঁসে গেল জ্যামে, হাহাহা!
-তুই হাসতেছিস! জ্যামের মধ্যে বসে থাকাটা বোরিং ব্যাপার! তোর ফোন বাজছে মনে হচ্ছে।
লিপার মায়ের ফোন!
-কেমন আছিস লিপা?
-ভালো, আম্মা! তোমরা কেমন আছো! আব্বার শরীরটা কেমন?
-এখন ভালোই আছে। তোর পড়াশোনার খবর কি? সব ঠিকঠাক চলতেছে?
-হুম, আম্মা সব ঠিকঠাক চলতেছে!
-তোর আব্বা বলতেছিল তোর জন্য একটা ছেলে দেখতে। ছেলে ব্যাংকে জব করে!
-আম্মা! আমার সামনে পরীক্ষা! এখনি ছেলে দেখার প্লেন নেই। আব্বাকে বলো, আমার যখন সময় হবে ঠিক তখন বিয়ে করে ফেলবো। গ্রাডুয়েশন কম্প্লিট না করে কিভাবে কি করবো! আমাকে জব করতে হবে একটা!
-আমি বলেছি তোর বাবাকে! তোর বাবার কাছে শুধু প্রস্তাব এসেছে। তাই আমি তোকে বললাম।
-বিয়ে-টিয়ে পরে! আগে আমাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দাও!
-তুই যেটা ভালো মনে করিস! দুপুরে খেয়েছিলি
-হুমম! তোমরা খেয়েছো?
-হুমম, সাবধানে থাকিস তাহলে।
-হুম, আম্মা! আমার সামনে পরীক্ষা, দোয়া কইরো!
-ঠিক আছে!( এই বলে ফোন রেখে দেয়)
হঠাৎ করে লিপার বাবার মাথায় বিয়ের চিন্তা আসলো। লিপাকে বিষয়টা ভাবাচ্ছে। এখনে তো তার পড়ালেখায় শেষ হয়নি। আরও অনেকটা পথ বাকি। না না! নিজের স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবে না। আনমনে হাটঁতে হাটঁতে বেলকনীতে চলে যায়। সূর্য তখন পশ্চিম কোণে হেলে পরেছে। কিছুক্ষণ পরেই সূর্যের দেখা পাওয়া যাবে না। প্রতিদিনের মতো এভাবে সূর্যাস্ত হয়। এইভাবেই তো একটি জীবনের সমাপ্তি হয়ে যায়।
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই গল্পটি তো দেখছি আরো ইন্টারেস্টিংয়ের দিকে চলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। আমি তো ভেবেছিলাম এই পড়বে লিপা এবং শাওনের ভালোবাসার ব্যাপারে পড়বো। কিন্তু দেখি তার একটুও হয়নি। এখন তো আরো পর্ব বাড়িয়ে অপেক্ষায় ফেলে দিলেন। এখন তো কিছু করার নেই তাই অপেক্ষা করতে ই হবে। যাইহোক হঠাৎ করে লিপার বাবার মাথায় বিয়ের চিন্তা আসলো কেন এ ব্যাপারে লিপা চিন্তায় পড়ে যাওয়ারই কথা।
হাহহা! আপু স্টরিটা আরেকটু ডিপের দিকে যাচ্ছে। পরের পর্বগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন। ধন্যবাদ
আমি তো অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন লিপার ভালোবাসার গল্পের ব্যাপারে পড়ব।কিন্তু একে একে দেখছি এই গল্পের পর্ব আরো বেড়ে যাচ্ছে। আমার কাছে কিন্তু বেশ ভালোই লাগছে পর্বগুলো পড়তে। লিপার ফ্রেন্ড শিলার ভালোবাসার কাহিনী তো পড়ে নিলাম। এখনো তো লিপার ব্যাপারেই পড়তে পারলাম না। এবার আশা করছি পরবর্তী পর্বে তাদের ভালোবাসার কথা পড়তো। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
জি আপু! গল্পের স্বার্থকতা তো সেখানেই পাঠকদের মনে পড়ার আগ্রহ তৈরি করা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼🦋