আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ পরিবেশ ও ডেঙ্গু ]steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। পরিবেশ যেহেতু এখন কিছুটা ভালো এবং শীতের কিছুটা উষ্ণতা দারুণভাবে পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকার কথা। যদিও ডেঙ্গুর আতংক এখনো পুরোপুরি চলে যায় নাই, প্রতিদিনই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল হতে মৃত্যুর খবর আসছে পত্রিকায়। আসলে এটা হতে খুব সহজেই আমরা রেহাই পাবো না, কারন আমরা এবং আমাদের চারপাশটা এখনো যথেষ্ট পরিমানে উন্নত বা পরিচ্ছন্ন হয় নাই। এই ব্যাপারে আমরা যত দিন অসতর্ক থাকবো ততোদিন এই সমস্যাটা আমাদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে যাবে, এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

আসলে আমরা সবটা চাই, সকল ধরনের সুবিধা চাই কিন্তু তার জন্য বিন্দুমাত্র চেষ্টা করতে রাজি নই, এই বাস্তবতা হতে আমরা যত দিন বের না হতে পারবো ততোদিন এই সমস্যাটা আমাদের সামনে এবং পিছনে সমানভাবে থেকে যাবে। আমরা এ থেকে বেরিয়ে আসবো সেই ধরনের কোন সম্ভাবনাও আমাদের মাঝে নেই। কারন আমরা দিন দিন আরো বেশী নোংরা হচ্ছি এবং সবুজ হতে আরো বেশী দূরে সরে যাচ্ছি। দেখুন বাস্তবতা অস্বীকার করে খুব বেশী দুর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না এবং সেটা আমরা পারবোও না। আপনি বিগত দশ বছর আগের শহর কল্পনা করুন, তখন মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে এতো বেশী আতংক হতো না কিংবা এতো বেশী মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতো না।

dirt-873208_1280.jpg

এটা কি হঠাৎ করেই এতো ভয়াবহ ধারণ করেছে? মোটেও না, ধীরে ধীরে পরিবেশ যখন তার নিজস্ব রূপ হারিয়ে ফেলেছে ঠিক তখনই প্রকৃতি প্রতিশোধের নেশায় আপন মহিমায় নতুন রূপে ফিরে এসেছে। তাই এই পরিস্থিতিটা আমাদের কাম্য ছিলো। চারপাশের পরিবেশ যখন আমরা উন্নয়নের স্বাপ্নের ছোঁয়ার আশা ধ্বংস করার খেলায় মেতে উঠেছি, পরিস্থিতি যখন দ্রুত পরিবর্তন হতে ছিলো তখন আমরা মোটেও এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করি নাই বা চিন্তা করার সময় পাই নাই। কিন্তু এখন প্রিয়জনকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা হাসপাতালে সময় ব্যয় করতে পারছি। উন্নয়নের চিন্তা বাদ দিয়ে এখনো প্রিয়জনের জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় দৌড়ের উপর রয়েছি, কত সময় কিংবা কতদিন থাকবো সেটার কোন নিশ্চয়তা নেই।

বর্তমান দৃশ্যগুলো একটু চিন্তা করুন, অনেকেই শহরের উন্নত জীবনের আড়ালে এখন প্রিয় মানুষ হারিয়ে তার ফটোর সম্মুখে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছেন নীরবে। কারন উন্নত পরিবেশ মানে আধুনিক বিল্ডিং, দামী আসবাবপত্র এবং দামী গাড়ি আমাদের দামী জীবনকে আরো বেশী কমদামী করে দিয়েছে। আমরা প্রাচুর্যের পিছনে ছুটেছি পরিবেশ বিপন্ন করে, চারপাশের সুন্দর পরিবেশ ধ্বংস করে, যার ফলাফল আমরা নিদারুণভাবে এখন উপলব্ধি করছি। এই মুহুর্তে আমাদের যে কাজটি করতে হবে, অধীক সতর্কতার সাথে প্রিয় মানুষটির ফটো পরিস্কার না করে বাড়ীর চারপাশের পরিবেশটা পরিচ্ছন্ন করতে হবে, প্রকৃতির সজীবতা প্রকৃতিকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

সুন্দর কিংবা সজীব পরিবেশ ছাড়া আমরা যেমন নিরাপদ কিংবা আতংকমুক্ত থাকতে পারবো না ঠিক তেমনি আমাদের এই ধরণীয়ও নিরাপদ থাকবে না। আমরা আমাদের এই পরিবেশটা যত বেশী সুন্দর রাখতে পারবো প্রকৃতি হয়তো আমাদের ততোবেশী নিরাপদ রাখবে, এটাই এখন সবচেয়ে সহজ এবং সত্য বাস্তবতা। জীবনের শেষ মুহুর্তে আমরা এমন অনেক বিষয় উপলব্ধি করি যখন আমাদের আর কিছুই করার থাকে না। সময় থাকতে সময়ের সঠিক মুল্যায়ন করতে না পারলে যেটা হয় আমরা ঠিক সেই পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে যাচ্ছি। সময় হয়তো সব কিছু দেখিয়ে দিয়ে যায় কিন্তু মাঝে মাঝে শুধু নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় আমাদের। পরিবর্তন আসুক আমাদের চিন্তাধারায়, আবোল তাবোল জীবনের গল্পের আজকের পর্ব এখানেই শেষ করলাম।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

ভাইয়া আজ আবোল-তাবোল জীবনের গল্পে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে বিশেষ কিছু কথা শেয়ার করলেন।ডেঙ্গু আতংক এখনো কমেনি প্রতিদিন কেউ না কেউ খবরে আসছেন।আসলে আমাদের উচিত প্রিয় মানুষটির ছবি পরিষ্কার না করে বাইরের পরিবেশটাকে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন রাখা।বাইরের প্রকৃতি যতটা আমরা নিরাপদ রাখবো।ততোটাই আমরা নিরাপদ থাকবো।সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

 10 months ago 

শীতের উষ্ণতা বেশ দারুণভাবেই পাচ্ছি ভাইয়া। বেশ ভালো লাগছে মন ও শরীর।ঢাকা তো এখন মৃত্যুর রণক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। জানি না সামনে আরো কত কি হবে। প্রতিনিয়ত মানুষ মরতেছে আর হসপিটালে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। সুদিন যে কবে ফিরবে তাই বলা যাচ্ছে না। সামনে নির্বাচন। খুব ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি হতে পারে। ডেঙ্গু নিয়ে মানুষ অনেক আতঙ্ক। আমার আম্মু কিছুদিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম পরিবার নিয়ে। সরকারি হাসপাতালে যা অবস্থা আমি তো দুই মিনিটও থাকতে পারলাম না। বমি হয়ে যাচ্ছে দুর্গন্ধে। থাকার বসার কোন জায়গা নাই। এমন একটা অবস্থা হয়ে গেছে সরকারি হাসপাতালে। তাও কষ্ট করে থাকলাম বেসরকারিতে তো কোন সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি ঔষধ গুলা পাওয়া যায় না। আম্মুকে অনেক কষ্ট করে ভর্তি করলাম তারপর ডেঙ্গু বেডে রেফার্ড করে দিল। তারপর কিছুটা স্বস্তি পেলাম। ওখানে ৭ দিন ভালো-মন্দ খাওয়া এবং চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। এখনো প্রায় ডেঙ্গু চলতেই আছে। হসপিটালে গেলে বোঝা যায় যে মানুষ কতটা অসুস্থ। আমাদের সব সময় মশারি টাঙিয়ে শুতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বাড়ির আশপাশ। জি ভাইয়া সজীব পরিবেশ ছাড়া আমরা কোথাও নিরাপদ নয় তাই আমাদের পরিবেশটাকে অনেক সুন্দর করে তুলতে হবে তাহলে আমরা নিরাপদ থাকতে পারবো।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

দারুন সুন্দর করে গুছিয়ে কথাগুলো লিখেছেন ভাইয়া। আজকের লেখার প্রতিটি কথায় অত্যন্ত মূল্যবান। আমরা আসলে ছেলের পিছে শুধু ঘুরে যাচ্ছি। কিন্তু নিজের কানটি ধরে দেখছি না। আমাদের পরিবেশ যদি আমরা ঠিক করতে পারি। তাহলে হয়তো আমাদের এত ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হত না। সব মিলিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

হাসপাতালে গেলে দেখা যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং মারা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। এসব নিউজ আমরা প্রতিনিয়ত দেখার পরও ততটা সচেতন হই না। আসলেই আমরা দিনদিন নোংরা এবং অলস প্রকৃতির হয়ে যাচ্ছি। তাইতো বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি না। কিন্তু তবুও আমরা কিন্তু প্রকৃতির কাছে আশা করে থাকি, প্রকৃতি আমাদেরকে ভালো কিছু উপহার দিবে। কিন্তু প্রকৃতির কাছ থেকে এমনটা আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। কারণ সবকিছুই এখন গিভ এন্ড টেক হয়ে গিয়েছে। আমরা যা দিবো বা করবো, ঠিক সেটাই ফেরত পাবো। সুতরাং প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা যদি ভালো কিছু পেতে চাই,তাহলে অবশ্যই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। তাহলে অবশ্যই প্রকৃতি আমাদের দিকে সুনজর দিবে। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

এইটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া,আমরা সুবিধা চাই কিন্তু তার জন্য প্রপার পরিশ্রম করতে চাইনা কেউ।পরিবেশ কে নিজেরাই হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে নিজেরাই সুবিধা ভোগ করতে চাচ্ছি।আর এইটা তো কখনো সম্ভব না।একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন আনতে হবে দ্রুত।আজকের পোস্টটিতে মূল্যবান কিছু কথা লিখেছেন আপনি।চমৎকার ছিল পোস্টটি। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার লেখাগুলো বাস্তবতা নিয়ে। আর আপনি সবসময় বাস্তবকে কেন্দ্র করেই লিখে থাকেন। আমরা নিজেদের জন্যই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আসলে আজ থেকে ১০ বছর আগের পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশ যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে পার্থক্যটা নিজেরই উপলব্ধি করতে পারি।বাইরের পরিবেশ যত ভালো থাকবে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ থাকবে। পরিবেশ ভালো থাকলে আমাদেরও এত অসুস্থ ডেঙ্গু করোণা এই মহামারি রোগ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। আসলে আমরাই আমাদের বিপদ ডেকে আনছি। অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই পড়ে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54337.36
ETH 2271.99
USDT 1.00
SBD 2.32