ফুটবল এবং বৃষ্টিময় দিনের যত স্মৃতি
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। পরিবেশ যেভাবে তার খেলা দেখাচ্ছে তাতে কতটা সময় ভালো থাকা যাবে সেটা নিয়ে নিজের মাঝেই অবিশ্বাস তৈরী হচ্ছে। গতকাল যে পরিমান গরম অনুভূত হয়েছিলো তাতে যে খুব বেশী দিন সুস্থ্য থাকতে পারবো না সেটা বেশ পরিস্কার হয়ে গেছে। আগে তো একটু বেশী গরম পড়লে সকাল সন্ধ্যা দুইবার গোসল করতে পারতাম এখন সেটার সুযোগও নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিক বুঝলেন নাতো? আসলে চারপাশে যেহারে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি লক্ষ্য করছি তাতে দ্বিতীয়বার গোসল করার সাহস পাচ্ছি না। তাছাড়া আমি নিজেও কিছু দিন আগে বেশ ঠান্ডায় কাহিল ছিলাম, ঔষধেও মনে হচ্ছিল আগের মতো কাজ করে না।
এটাও পরিবেশের এক ধরনের প্রতিশোধ, গরমে মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং আবার হুট করে বৃষ্টির পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া, আবার দেখুন বৃষ্টি হলেও আজকাল গরমের অনুভূতিটা হ্রাস পায় না। আমরা ছোট বেলা দেখতাম, বৃষ্টি হলেই চারপাশের পরিবেশটা কেমন জানি শীতল হয়ে যেতো এবং অন্যরকম একটা স্বস্তিকর পরিবেশ বিড়াজ করতো। কিন্তু এখন সেটা আর কল্পনা করা যায় না, কারন বৃষ্টি থামার সাথে সাথে গরমের মাত্রাটা পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং অসহ্যকর খারাপ লাগা কাজ করতে থাকে। এটাই এখনকার বাস্তবতা এবং হয়তো এই রকম পরিবেশকেই আমাদের মানিয়ে নিতে হবে এবং জীবনের গতিধারাকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করতে হবে।
যাইহোক, পরিবেশ নিয়ে আজকে আমার কিছু বলার নেই, কারন এটা নিয়ে আমি প্রতিনিয়ত বলে থাকি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা নিয়ে। আজকে শৈশবের কিছু স্মৃতি শেয়ার করবো, কিছু বলতে বৃষ্টিময় পরিবেশ নিয়ে অতীতের দিনগুলোকে মনে করার চেষ্টা আরকি। আমি যখন ক্লাস ফোর এ পড়ি, তখন হতেই স্কুলে আমার বেশ একটা সুনাম সৃষ্টি হয়, না না না মোটেও অন্য দিকে যাবেন না, আমি কখনোই ভদ্রতার আড়ালে ভালো ছিলাম না বরং দুষ্টমিতে সবার কাছে সেরা ছিলাম, হি হি হি। এটা বলতে পারেন আমার অন্যরকম একটা ক্রেডিট, হা হা হা। আসলে সবাইকে দিয়ে সবটা হয় না, এটা আমি বেশ দারুণভাবে বিশ্বাস করতাম এবং কাজের ক্ষেত্রেও সেটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করতাম।
স্কুল ফাঁকি দেয়ার অভ্যেসটা আমার সেই প্রাইমারি সেকশন হতেই শুরু, বিশেষ করে বৃষ্টির দিন সমূহে আমাকে ক্লাসে খুঁজতে যাওয়া মানে সময় নষ্ট করার মতো বিষয় ছিলো। এই রকম বহুবার হয়েছে ক্লাসে বই আছে কিন্তু আমি নেই, স্যার বই নিয়ে গেছেন কিন্তু তারপর আবার ঠিক সেগুলো আমার কাছে চলে আসছে হি হি হি। তো বৃষ্টি হলেই যেটা করতাম বই সাথে করে নিয়ে বের হতে না পারলে বই রেখেই বেড়িয়ে যেতাম, না না বাড়িতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না, বরং ফুটবল খেলার মাঠে চলে যেতাম। আমাদের বাড়ি এবং স্কুল এই দুটোর মাঝেই পড়তো আমাদের ফুটবল খেলার মাঠ। বিশাল বড় সাইজের তিনটি মাঠ ছিলো একত্রে, তবে মাঝেরটা আমাদের আমাদের এলাকার জন্য নির্দিষ্ট। অবশ্য আমাদের এলাকার ফুটবল ক্লাবটির বেশ সুনাম ছিলো তখন।
আমি নিজেও সেই ক্লাবের খেলোয়াড় হয়ে ঢাকায় জাতীয় কিশোর লীগে খেলেছিলাম, আমার বড় ভাইও খেলেছিলেন, দারুণ একটা অভিজ্ঞতা ছিলো সেটা আমার জন্য। যদিও আমরা ভালো ফলাফল করতে পারি নাই, প্রথম রাউন্ডেই বাদ পড়ে গিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কি, জাতীয় লীগে খেলার আলাদা একটা অনুভূতি কিংবা অভিজ্ঞতা তৈরী হয়েছিলো তখন। সত্যিকারের ফুটবল খেলোয়াড় মনে হয়েছিলো তখন। ঐ যে প্রাইমারি সেকশন হতেই যেটার প্রতি অন্য রকম ভালোবাসা ছিলো, সেটাকে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারি নাই। তবে জাতীয় কিশোর লীগে খেলার পর আমার মনে হয়েছিলো ফুটবল খেলা শিখাটা কিছুটা হলেও স্বার্থক হয়েছে হি হি হি।
এই রকম অনেক স্মৃতি রয়েছে, তুমুল ঝড় হচ্ছে কিন্তু তাতে আমাদের কোন চিন্তা নেই, হৈ হুল্লোর করে আমরা মাঠে ফুটবল খেলে যাচ্ছি। আর বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলার আসল মজাটা ছিলো পিছলে পড়ে যাওয়া হা হা হা। বৃষ্টিতে মাঠ কিছুটা কাদাময় এবং পিছলে হয়ে যেতো, তাতে বল দিয়ে একটু বেগতিক দৌড় দিলেই চপাট, হা হা হা এটা আমি দারুণ উপভোগ করতাম। অবশ্য আমি নিজেও পড়ে বহুবার পা মচকে গিয়েছিলো। কিন্তু তাতে কি ভালো লাগার বিষয়টির প্রতি দারুণ একটা আগ্রহ ছিলো সব সময়ের জন্য। যদিও এখন আর ফুটবল খেলার সুযোগ হয় না, তবে লাষ্ট কয়েকবার আমাদের অফিস হতে অফিসিয়াল পিকনিকে ফুটবল সাথে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো এবং সেখানে ফুটবল খেলা হয়েছিলো। বয়স বাড়ে, শারীরিক সক্ষমতা পরিবর্তন হয় কিন্তু স্মৃতিগুলো ঠিক আগের মতোই সতেজ রয়ে যায়।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আপনার এই কথাটার সঙ্গে আমি একমত ভাই। বিষয়টি আমিও খেয়াল করেছি এখন বৃষ্টি হলে বৃষ্টি থামার পর গরম আরও বেড়ে যায়। এটা পরিবেশের প্রতিশোধ বলাই যায়। বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলেনি এমন ছেলের সংখ্যা খুবই সীমিত। তবে আমি আপনার মতো স্কুল পালিয়ে কখনো ফুটবল খেলিনি। এবং আপনার জাতীয় লীগে খেলার বিষয়টি বেশ লেগেছে। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল আপনার পোস্ট টা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ক্লাসে বই আছে আপনি নেই দারুন লাগলো কথাটি পড়ে। ভাইয়া আপনি ঢাকায় জাতীয় কিশোর লীগে খেলেছিলেন।যদিও বাদ পরে গেছেন।তবুও অভিজ্ঞতা তো হলো।সেই সময় আর এই সময়।এখন সুযোগ আছে কিন্তু শক্তি, সামর্থ নেই।অনেক ধন্যবাদ অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
প্রতিটা মানুষের জীবনে এই রকম ফুটবল খেলার স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা রয়েছে। কেন জানি বৃষ্টির সাথে ফুটবল খেলার সম্পর্কটা মধুর । বৃষ্টি শুরু হলেই যেন নেশা লেগে যেত ফুটবল খেলতে হবে বৃষ্টির মধ্যে কি একটা তৃপ্তি ময় মুহূর্ত যেটা খুবই মিস করি। আপনার পোস্ট পড়ছি আর সেই অনুভূতির কথা স্মরণ করছি। বহুবার এরকম আমারও রেকর্ড রয়েছে ফুটবল খেলার জন্য ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ফুটবল খেলতে যাওয়া। এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন সত্যিই এই অনুভূতিটা আপনি ভাল বোঝেন ভালো লাগলো।
আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া জ্বর,সর্দি ও কাশি এখন ঘরে ঘরে। বলা যায় মহামারী। বৃষ্টিসিক্ত দিনে ফুটবল খেলার স্মৃতি অনেক সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনি জাতীয় কিশোর লীগে ফুটবল খেলেছেন দারুণ ব্যাপার। আপনার লেখাটি পড়ে ছোটকালের অনেক কথাই মনে পড়ছে-সেইসব দূরন্তপনা দিনগুলি! সুন্দর এই লেখাটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
জাতীয় কিশোর লীগে আপনার খেলার সুযোগ হয়েছিল জেনে সত্যি ভালো লাগল ভাইয়া। আসলে সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলে যায়। আর হারিয়ে যায় আমাদের অতীতগুলো। সেই সাথে শৈশবের স্মৃতিগুলো শুধু স্মৃতিই হয়ে যায়। এই সময় ভালো থাকাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও আমাদেরকে ভালো থাকতে হবে। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে।
আসলেই ভালো থাকতে পারাটা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ধন্যবাদ আপনাকেও।
এটা ঠিক বৃষ্টির পরেও এখন একটা ভ্যাপসা গরম অনুভূত হয় যেটা আগে হতো না। জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে, সামনে আরও হবে হয়তো! যাক, শৈশবের সেই পা পিছলে যাওয়া, ক্লাসে বই রেখে মাঠে খেলতে যাওয়ার ব্যাপারগুলো দারুণ ছিল। মজার ব্যাপার হলো আপনি তো ভালো ফুটবল প্লেয়ার ছিলন! জাতীয় পর্যায়েও খেলছেন দেখছি।
আসলে ভাইয়া বৃষ্টি হলে প্রথমেই ফুটবল খেলার কথাটি মনে পড়ে যায়। ছোটবেলায় বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলতে খুবই ভালো লাগতো। আরো বেশি ভালো লাগতো বৃষ্টিতে ভিজে কাদা মাখামাখি করতে। তবে এই পোস্টের মাধ্যমে শৈশবে সেই স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই ভাই বৃষ্টি হলেও এখন পরিবেশ ঠান্ডা হয় না। উল্টো যেন গরম আরো বেড়ে যায়। আপনি তো বেশ ফাঁকিবাজ ছিলেন। বই রেখে ফুটবল খেলতে চলে যেতেন 😂। আপনি ঢাকায় জাতীয় কিশোর লীগে ফুটবল খেলেছিলেন,জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। ছোটবেলায় বৃষ্টির দিনে প্রায়ই ফুটবল খেলতাম। আপনার পোস্ট পড়ে সেই মধুর স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেল। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হাহা ক্লাসে বই আছে আপনি নেই,কথাটি চমৎকার লাগলো ভাইয়া।বৃষ্টির দিনে এরকমই হয় অবশ্য।ক্লাসে বই থাকে আর ছাত্ররা ফুটবল খেলতে মাঠে।আপনি তার মানে বেশ ভালো ফুটবল খেলতেন।যেহেতু ঢাকায় কিশোরলীগে খেলেছেন।ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার বৃষ্টি আর ফুটবল খেলার মুহূর্তের পূর্বের স্মৃতিচারণ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।