সাঁতার শেখার শৈশব স্মৃতি- সফল প্রচেষ্টাsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা,

আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। আমি ঠিক আগের মতোই চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালোর সাথে সুস্থ্যতা ধরে রাখার। এই মুহুর্তে দেশের যে অবস্থা এবং তার সাথে সাথে পরিবেশের ভিন্নতা, সত্যি ভালো থাকাটা বেশ দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন আর চাইলেই আমরা ভালো থাকতে পারছি না, ভয়ে ভয়ে থাকি কোন ফাঁকে কোন দিক দিয়ে হুট করে মশা একটা কামড় বসিয়ে দেয় আর তারপর ডেঙ্গুর আতংকে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। আসলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশ যেমন একটা অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে ঠিক তেমনি পরিবেশও আমাদের এক অনিশ্চয়তার আতংকের মাঝে ঠেলে দিচ্ছে।

জীবন সত্যি বেশ কঠিন হয়ে উঠছে দিন দিন, আমাদের শৈশব স্মৃতিগুলো মনে করে ভাবি আহ! কি সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলো। কতটা আনন্দময় ছিলো সেই মুহুর্তগুলো! না ছিলো দেশ ও রাজনীতি নিয়ে চিন্তা আর না ছিলো পরিবেশের এই রকম আগ্রাসী মানসিকতা। যেহেতু পরিবেশ তখন এতোটা নোংরা ছিলো না তাই ডেঙ্গুর মতো কোন আতংকও ছিলো না তখন, সত্যি বেশ নির্মল ছিলো সেই সময় এবং সেই দিনগুলো। কফি হাউজের সেই গানটার মতো আমাদের শৈশবের সেই দিনগুলোও যেন কোথায় হারিয়ে গেলো, নির্মলতা হারিয়ে আতংক এসে জীবনে ভর করলো। মাঝে মাঝে সত্যি মনে চায় যদি সেই দিনগুলোর মাঝে আবার ফিরে যেতে পারতাম, যদি সেই নির্মল পরিবেশের মুহুর্তগুলো আবার ফিরে পেতাম!

এর আগের পর্বে আমি সাঁতার শেখার শুরুটা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, বর্ষাকালে নদীর পানি কতটা সুমিষ্ট আর ঘোলাটে থাকে সেটা টেস্ট করেছিলাম, হা হা হা। না না জীবনের প্রথম বার নদীর ঘোলা পানি খেয়েছি মোটেও খারাপ লাগেনি, বরং টানটান একটা উত্তেজনায় সেটাও কেমন জানি সুমিষ্ট হয়ে গিয়েছিলো হা হা হা। প্রথম খালটা পার হয়ে আমি যখন ভাইকে ডাক দিলাম, ভাইও আরেকটা খাল পার হয়ে দ্রুত আমার কাছে ছুটে আসলেন। বুঝতে পারলেন যে ছোট ভাই নাছোর বান্দা, তাকে রেখে যাওয়া যাবে না। তারপর কিছু পরামর্শ দিলেন এবং সাঁতারের ব্যাপারে টিপস দিলেন। সবচেয়ে বড় বিষয় ছিলো হাত এবং পায়ের সাহায্যে নিজেকে ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করা। আর যেহেতু প্রথমবার সাঁতার শিখছি তাই মাথা পানিতে ডুবিয়ে রাখতে নিষেধ করলেন।

children-4695333_1280.jpg
Pixabay

কারন এটা না করলে আনলিমিটেড ঘোলা পানি খাওয়া বন্ধ হতো না হা হা হা। সত্যি সেদিনের সেই মুহুর্তগুলো দারুণ উত্তেজনাময়কর ছিলো আমার জন্য। প্রথমবার সাঁতার শেখার চেষ্টা করা, তার সাথে প্রথম বার বিনা পয়সায় নদীর ঘোলা পানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা তাও আবার পেট পুরে। তবে ছাড়িয়ে আবার কাছে বেশী আনন্দের ছিলো সাঁতার শেখার প্রথম ধাপ অতিক্রম করাটা। সেদিনের মতো আমি সফল হয়েছিলাম এটা সত্য, যদিও পুরো সাঁতার শেখা সম্ভব হলো না। কারন একদিনে সবটা আয়ত্ব করা যায় না, এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। আমার ক্ষেত্রেও তেমনটা হলো, কিন্তু যেহেতু প্রথমধাপ সফলতার সাথে অতিক্রম করতে পেরেছিলাম সেহেতু আমার কাছে মনে হয়েছিলো আমি পুরো সাঁতার শিখে ফেলেছি হি হি হি।

সেদিন আমরা বাড়ি চলে আসি কিন্তু বাড়িতে ভুলেও সেটা জানতে দেয়া হয় নাই, তাহলে আমি কতটা মাইর খেতাম আমার থেকে ডাবল মাইর খেতো বড় ভাই হি হি হি। এরপর আমাদের স্কুলের সামনে বেশ বড় সাইজের একটা পুকুর ছিলো, যেটাকে আমরা মফিজের পুকুর নামে চিনতাম। সেটাতে খুব বেশী পানি ছিলো না, তাই এরপর হতে নিয়মিত সেখানে সাঁতার শেখার প্রাকটিস করতে থাকি সহপাঠিদের সাথে। দারুণ একটা অধ্যায় শুরু হলো আমার, সুযোগ পেলেই পুকুরে ঝাঁপ দিতাম, সাঁতার শেখার সাথে সাথে পুকুরের মাঝেই বল খেলতাম। এভাবেই আস্তে আস্তে দক্ষ হয়ে উঠি সাঁতারের ক্ষেত্রে। তারপর ঠিক আগের মতো ঝাঁপ দিতাম শীতলক্ষ্যা নদীতে, তবে আমি খুব বেশী দূরে যেতাম না। কারণ তখন প্রচুর নৌকা চলতো নদীতে।

শেষ কথা, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনি যদি কিছু করতে চান বা কিছু অর্জন করতে চান, তাহলে হার না মানা একটা জেদ সামনে আনতে হবে। আপনি পারবেন এই বিশ্বাস ধরে রাখতে হবে, না পারকে কি হবে, হেরে গেলে কি হবে এসব ভুলেও ভাবা যাবে না। কারন আপনার সামনে একটাই বিকল্প দাঁড় করাতে হবে, আপনি পারবেন এবং বিজয়ী হবেন। হ্যা, সেদিন এই রকম একটা জেদ আমার মাঝে কাজ করেছিলো বলে বেশ ভালো ভাবেই সাঁতার শিখতে পেরেছিলাম এবং এখনো আমি বেশ দক্ষ সাঁতার কাটার ব্যাপারে।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

সত্যি বলেছেন ভাই আমরা যে কাজেই যাই না কেনো আমাদেরকে হার না মানার এক জেদ তৈরি করতে হবে নিজের ভেতরে। সাঁতার শিখতে গিয়ে পুকুর বা নদীর জল খায় নাই এমন ব্যক্তি খুব কমই পাওয়া যাবে। আসলে খুব তাড়াতাড়ি সাঁতার শিখতে পারাটা বেশ আনন্দের একটি ব্যাপার জলের উপর ভেসে থাকার মজাই আলাদা। ছোটবেলার বেলার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

এটাই আসল কথা, জেদ তৈরী করতে না পারলে কাংখিত সফলতা কখনোই আসবে না। ধন্যবাদ

 last year 

হুম ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ।

 last year 

আমি একদিন এ সাঁতার শিখেছিলাম। তবে দুই তিন বার পানি খেয়েছিলাম। একদিন তো প্রায় ছয় থেকে সাত ঘন্টা নদীতে সাঁতার কেটেছিলাম। পরে আমার চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল। বাসায় এসে মায়ের কাছে মাইর খেয়েছিলাম। আজকে আপনার পোস্ট ভিজিট করে সব কিছু মনে পড়ে গেলো। ছোট বেলায় মধুর স্মৃতি গুলো মনে পড়লে ভীষণ ভালো লাগে।

 last year 

ভাইয়া আসলে এভাবে পুকুরে অনেক সাঁতার কেটেছি। আসলে সাঁতার কাটতে হলে অবশ্যই পানিতে নিজেকে ভাসমান রাখতে হবে। তবে আপনাদের পোস্ট দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সবারই শৈশব অনেক রঙিন ।তবে মানুষ বড়ো হওয়ার পর সেই শৈশব কে মিস করে।আবার যখন বৃদ্ধ হয় তখন যৌবনকাল মিস করে।আসলে মানুষ যে তার নিজের অবস্থান নিয়ে কখনো সন্তুষ্ট না ।একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ,যে জিদ রেখে অনুশীলন করে গেলে ঠিক বিজয়ী হওয়া যায়।আর সাঁতার শিখতে গেলে পানি না খেলে কেমন একটা হয়ে যায়।তাই সবার সাঁতার শেখার গল্পেই এই ব্যপার দেখি😁😁।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ভাইয়া।

 last year 

এটা ঠিক বলেছেন সামনে শুধু একটাই জেদ থাকবে আমাকে জিততে হবেই।তবেই সম্ভব।আপনার সাঁতার শেখার শৈশব স্মৃতি ভীষণ ভালো লাগলো। জেদ করেছিলেন বলেই আজ ভালো সাঁতারু আপনি।আর নদীর ঘোলা পানি না খেলে ভালো সাঁতারু হওয়া ও যায় না,হিহিহি।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ভাই নদীর ঘোলা পানি খাওয়ার স্বাদ এখনো মনে আছে নিশ্চয়ই 😂। যাইহোক জিদ করে তাহলে সাঁতার শিখে ফেলেছিলেন। আসলে জিদ করলে অনেক কিছুই অর্জন করা যায়। কথায় আছে ছেলেরা জিদ করলে হয় বাদশাহ। তবে আমি কখনো সেভাবে সাঁতার শিখার চেষ্টা করিনি। তাই শিখতে পারিনি। ছোটবেলায় আদমজী ছালেহা সুপার মার্কেটে যখন শপিং করতে যেতাম, তখন নৌকা দিয়ে আসার সময় নদীর মাঝখানের পানি পান করতাম। অনেকেই বিশ্বাস করতো নদীর মাঝখানের পানি খেলে অসুখ বিসুখ হয় না। যাইহোক এমন মজার শৈশবের স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65556.02
ETH 2660.30
USDT 1.00
SBD 2.91