অস্বস্তিকর অনুভূতি ও প্রকৃতির ফটোগ্রাফি || Original Photography by @hafizullah

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। যদিও পরিবেশটা ভয়ানক হয়ে উঠছে এবং ভালো থাকার সুযোগগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। সত্যি বলতে অন্য রকম একটা ভয় এমনিতে আমাদের মনে জাগ্রত হয়ে আছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তারপর আবার পরিবেশ ভিন্নভাবে আমাদের চোখ রাঙ্গাচ্ছে, তাই ভয়টা ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে দ্রুত। এই তো কিছু দিন আগেও ভারতের কিছু অঞ্চলের অবস্থা বেশ খারাপ হয়েছিলো হঠাৎ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে, জলবদ্ধতা দারুণভাবে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা নষ্ট করে দিয়েছিলো। তারপর আবার নতুন করে খবরের পাতায় আসতে শুরু করেছে বেইজিং এর অতিবৃষ্টিপাত অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবং অনেক স্থানে বন্যার পানি নদীর মতো অবস্থা সৃষ্টি করেছে।

আর এই খবরগুলো আমাদের মাঝে ভয় তৈরী করছে কেন? দেখুন ভারত কিংবা চীনের অতিবৃষ্টির এই পানিগুলো কিন্তু কোন না কোন ভাবে আমাদের দিকেই তেড়ে আসবে আর হঠাৎ করে আমাদের এখানেও বন্যার সৃষ্টি করবে, এই রকম একটা সংকেত কিন্তু বিশেষজ্ঞতা আগ হতেই দিয়ে রেখেছেন। তারপর আবার আমাদের আবহাওয়া অফিস বলছে আগষ্টে বৃষ্টির পরিমান অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করতে পারে এবং কিছু অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা এর মতো একটা অবস্থা তৈরী হয়েছে আমাদের মনের মাঝে। এমনিতে দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো না, রাজনীতি কিংবা ডেঙ্গু দুটোই এখন নিয়ন্ত্রনহীন গতিতে চলছে, হাসপাতালগুলোর দিকে তাকালেই সেই চিত্রটা বার বার বেরিয়ে আসছে।

এখন এমনিতে আমাদের দেশের বর্তমান চিত্র ভালো না, নানা ইস্যু নিয়ে চলছে অস্থিরতা। এর মাঝে যদি হঠাৎ করে বৃষ্টিপাত শুরু হয় এবং তারপর অনাকাংখিত বন্যা তাহলে সব দিক হতে বেশ অসহায় হয়ে পড়বে আমাদের দেশের সাধারন ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। কারন জনসংখ্যা হিসেবে এই শ্রেণীর মানুষগুলোর সংখ্যাই আমাদের এখানে বেশী, তাই সমস্যা তৈরী হলে সবচেয়ে বেশী বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তারাই। তবুও আমরা সব কিছু উপেক্ষা করে আশা করছি পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হবে না এবং প্রকৃতি আমাদের বিরুদ্ধে এতোটা আগ্রাসী হবে না। কিন্তু তবুও চারপাশের নানা সংবাদ এবং চিত্র আমাদের অস্থির করে রাখছে, হতাশাগুলোকে আরো বেশী জাগ্রত করে তুলছে।

আসলে প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মে প্রতিরোধ এবং প্রতিশোধ নিয়ে থাকে, এটাই হয়তো আমারও ভিন্নভাবে প্রমানীত হবে। কিন্তু কথা হলো আমরা তার জন্য কতটা প্রস্তুত? আমাদের কি সেই সক্ষমতা আছে? একদমই নেই, আর একদমই প্রস্তুত নই আমরা। কারণ উন্নয়নের নামে নানাভাবে আমরা প্রকৃতি ধ্বংস করেছি এবং গাছপালা কেটে আধুনিক হওয়ার চেষ্টা করেছি। ঢাকা শহরের নানা সড়ক উন্নয়নের দোহাই দিয়ে সবুজ প্রকৃতি মুক্ত করা হয়েছে এবং ইট বালুর আস্তরে সব কিছুতে চাকচিক্য আনার চেষ্টা করা হয়েছিলো।

তার পরের দৃশ্যটাও আমরা দেখছি, মেয়র সাহেব খুব হৈ চৈ করে দুই কোটি গাছের চারা রোপন করার ঘোষণা দিলেন এবং চাকচিক্য আর উন্নয়নের প্রমাণ সেই সড়কগুলোতে আবার ‍খোড়াখুড়ি শুরু করা হয়েছে এবং সেখানে গাছ লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সত্যি আমরা এখনো পিছনের দিকে যাচ্ছি, যেখানে বিশ্বের সবাই উন্নত চিন্তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

যাইহোক, পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং অনাকাংখিত সমস্যাগুলো আমরা রেহাই পাবো সেই প্রত্যাশা পুনরায় ব্যক্ত করছি। কিন্তু তার সাথে সাথে একটা বিষয় আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, সবুজ প্রকৃতি এবং প্রাকৃতিক বনাঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে। এই একটা প্রচেষ্টা হয়তো প্রকৃতির এই আগ্রাসনকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পারে।