নদী এবং শৈশব স্মৃতি ঘিরে কিছু অনুভূতি
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি এবং সময়গুলোকে দারুনভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। যদিও মাঝে মাঝে উষ্ণতা সব কিছুকে উলট-পালট করে দিচ্ছে, স্বাভাবিক বিষয়গুলোকে অস্বাভাবিক করে দিচ্ছে। প্রকৃতির এই কম বেশীর খেয়াল আমাদের জীবনের গতি দারুণভাবে ব্যহত হচ্ছে। যদিও এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। কারন এই রকম পরিবেশের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী এবং এটা হওয়ারই কথা ছিলো। মাঝে মাঝে বর্তমান সমস্যা এবং আমাদের শৈশব স্মৃতি নিয়ে চিন্তায় ডুবে যাই এবং নিজেকে চঞ্চল রাখার চেষ্টা করি।
কারণ শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো শুধু রঙিন ছিলো না বরং তার সাথে ছিলো অনুভূতির দারুণ চঞ্চলতা। বর্তমান প্রজন্মের মতো আমরা চার দেয়ালের মাঝে বন্দি ছিলাম না, আমাদের দুনিয়াটা শুধুমাত্র ঘরের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো না, বরং বাহিরের পুরো পরিবেশটা নিয়েই ছিলো আমাদের দুনিয়া। সময়ে কিংবা অসময়ে আমরা হারিয়ে যেতাম সেই অজানায় কারনে কিংবা অকারণে। সত্যি বলতে আমাদের কোন ইস্যুর প্রয়োজন হতো না, বরং হঠাৎ করে কোন আইডিয়া কিংবা চিন্তা মাথায় আসার সাথে সাথে আমরা সেটাকে ছড়িয়ে দিতাম এবং দ্রুততার সাথে তার বাস্তবায়ন সুসম্পন্ন করতাম। কোন বাঁধাই আমাদের সামনে তখন বাঁধা মনে হতো না, আগে পিছনে কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করতাম না।
তবে হ্যা, একটা বিষয়ে প্রতি আমরা খুবই যত্নশীল ছিলাম, কোনভাবে আমরা সেটাকে নষ্ট হতে দিতাম না, সেটা হলো আদব কায়দা, মুরুব্বীদের সম্মান করা এবং কোন অবস্থায় তাদের সামনে কোন খারাপ কিছু করা যাবে না। অর্থাৎ আমাদের কাছে কোন ভালো কিছু কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে সেটা অন্যায়, এমন কিছু আমরা ভুলেও তাদের সম্মুখে করতাম না, সুযোগ থাকলেও আমরা সেটা ছেড়ে দিতাম যদিও পরবর্তীতে তার জন্য আফসোস করতাম। দেখুন এখানে আমাদের কোন বাঁধা বা সমস্যা ছিলো না কিন্তু তবুও আমরা নিজেদের রেপুটেশন ধরে রাখার চেষ্টা করতাম, কখনো যেন তারা এটা বলার সুযোগ না পান যে অমুকের ছেলে তমুক কে দেখেছি ঐ অন্যায়টা করতে।
এই রকম ছোট খাটো অনেক বিষয়ে আমরা বেশ সচেতন থাকতাম। স্কুল ফাঁকি দিলেও কখনো শিক্ষকদের সম্মুখে পড়তাম না। যে দিকে স্যারদের থাকার সুযোগ নেই আমরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে সেদিকেই বেশী যেতাম। আমি অবশ্য শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে বেশী যেতাম। নদীর সাথে তাই দারুণ একটা সখ্যতা ছিলো আমার। আমার শৈশবটা জুড়েই নদীর দারুণ সকল স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যেখানে বড় হয়েছি সেখানে যেমন নদী ছিলো, নানুর বাড়িতেও তেমন নদী ছিলো, মামার সাথে সেই রকম হৈ হুল্লোর করতাম নদীর পানিতে। দাদুর বাড়ীতে তেমন বিশাল সাগর ছিলো, দারুণ উন্মত্তায় সেটাও উপভোগ করতাম। কারন দারুণ সাঁতারু ছিলাম আমি, তাই পানি দেখে দারুণ চঞ্চলতা অনুভব করতাম।
সেদিন পুকুর নিয়ে প্রকৃতির ফটোগ্রাফি এবং নিজের অনুভূতি শেয়ার করেছিলাম, আজ তাই নদী নিয়ে কিছু স্মৃতি চারণ করার চেষ্টা করলাম। আজ পুকুর হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ হতে, আমাদের গ্রাম হতে। ঠিক তেমনি নদীও হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের শহর হতে, আমাদের দেশ হতে। কারন এখন শুধু নদী নামের কিছু ক্ষত রয়েছে আমাদের শহরে এবং দেশে, যেগুলোকে মোটেও নদী বলা যায় না। শৈশবের সেই উন্মত্ত হওয়া, নদীর বুকে ঝাঁপ দেয়ার স্মৃতিগুলো খুব বেশী খোঁচা দেয়, কিন্তু নদীর চিত্রগুলো সেই খোঁচাগুলোকে নিদারুণ যন্ত্রণায় রূপান্তরিত করে দেয়।
শৈশব এবং নদীর স্মৃতির আলোকে বেশ কিছু মজার ঘটনা শেয়ার করার ইচ্ছে ছিলো আজ তবে সেটা আর হলো না। কারণ পত্রিকার একটা রিপোর্ট পড়ে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছে, নদীর পানিতে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতির বেশ ভালো প্রমান পেয়েছেন গবেষকরা। পরবর্তীতে আগে এই বিষয়ে কিছু লিখবো তারপর না হয় মজার ঘটনাগুলো শেয়ার করবো।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
If all human beings were concerned about planting productive plants we would have a good natural environment, but almost no one calls for this to happen, there should be control in each country as a main rule of mandatory planting to recover the ecosystem in the world.. .
আসলেই তীব্র গরমে মাঝেমধ্যে সবকিছু এলোমেলো লাগে। যাইহোক আপনার সাথে আমার এদিক দিয়ে মিল আছে ভাই। আমার শৈশবটাও শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে কেটেছে। শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে বিশাল বড় মাঠ ছিলো। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ক্রিকেট খেলতাম। আবার খাওয়া দাওয়া করে দুপুর ৩ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রিকেট খেলতাম। স্কুলে যেতে বললেই আমার খারাপ লাগতো ক্রিকেট খেলতে পারবো না বলে। সেই দিনগুলোর কথা মনে পরলে আসলেই খুব ভালো লাগে। তবে এখন তো শীতলক্ষ্যা নদীর পানি একেবারে কালো হয়ে গিয়েছে এবং বাজে দুর্গন্ধ বের হয়। যাইহোক নদী নিয়ে আপনার শৈশবের স্মৃতিচারণ পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
তখন আমরা শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে হেঁটে বহু দূর পর্যন্ত চলে যেতাম, পুরো পরিবেশটা নষ্ট হতে শুরু করে সিমেন্ট ফ্যাক্টরী হওয়ার পর থেকে।
হ্যাঁ ভাই শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অনেক অনেক সিমেন্ট ফ্যাক্টরী নির্মাণ করা হয়েছে। ছোটবেলায় শীতলক্ষ্যা নদীর পানি কতো খেয়েছি ক্রিকেট খেলার সময়। আর এখন তো পানির কালার একেবারে কালো হয়ে গিয়েছে।
নদীর পানিতে বিষাক্ত রাসায়নিক মানুষ যেন নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে নিয়ে আসছে ভাই। ব্যাপার টা বেশ আতঙ্কের। শৈশব সবসময় স্মৃতিময় হয়ে থাকে। আপনি যেমন দারুণ কিছু মূহূর্ত শেয়ার করলেন আমাদের সাথে। হঠাৎ কোন সম্পর্কের জেরে কথাগুলো আপনার মনে চলে আসলো। ব্যাপার টা এমনই হয়ে থাকে ভাই।