আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ অপরাধবোধ ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমি তো আমার মতোই আছি এবং থাকার চেষ্টা করছি। আজকে আবার আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে কিছু কথা বলবো, জীবনের গল্প বললে পুরোটা ঠিক হবে না কারন এখানে গল্প বলতে বাস্তব জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। আপনাদের কারো কারো হয়তো ভালো লাগে আবর কেউ কেউ হয়তো পুরোটা পড়েও কিছুই বুঝতে পারেন না। এটাও কিন্তু একটা বাস্তবতা, সব কিছু সকলের মাথায় সহজেই ঢুকে না। শুরুতে আমি যখন এই প্লাটফর্মে কাজ করা শুরু করি তখন কারো পোষ্টে কমেন্ট করার পূর্বে মাঝে মাঝে আট-দশবার সেই পোষ্টটা পড়তাম এবং তার মূল বক্তব্য বুঝার চেষ্টা করতাম। সত্যি তখন একটা কমেন্ট করার আগে অনেক চিন্তা ভাবনা করে করতাম, যাতে লেখকের কাছে আমার রেপুটেশন নষ্ট না হয়ে যায়।
আজকাল অবশ্য কেউ সেই চেষ্টাটা করে না, সত্যিই করে না। অবাক করার বিষয় হলো আমরা মানে আমার বাংলা ব্লগ এর এ্যাডমিন/মডারেটর টীম বার বার এই বিষয়ে শুধু বলা না বরং ভুল ধরিয়ে দেয়ার পরও সেটা সংশোধন করা হয় না। কতটা পার্থক্য তৈরী হয়ে গেলো দেখুন। আমাদের সময় আমরা কি করতাম, কতটা চিন্তা করতাম একটু কমেন্ট করার পূর্বে আর বর্তমান ইউজাররা কি করছেন? ভুল ধরিয়ে দেয়ার পরও সেটা ঠিক করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। সময় সত্যি সব পাল্টে দেয়, শুধু চুল দাড়ি না বরং মানসিকতাও দারুণভাবে পাল্টে দেয়। আমাদের সময় রিওয়ার্ডস প্রাপ্তির সাথে সাথে রেপুটেশন ধরে রাখাটা ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ আর এখন রেপুটেশনের যা খুশি হোক রিওয়ার্ডস ধরে রাখতে হবে যে কোন উপায়ে।
না আজকে একটু অন্য দিকে অন্য বিষয়ে কথা বলবো, শুরুটা ছিলো ফ্রি বল, হি হি হি। কিছু দিন পূর্বে আমার বাংলা ব্লগের মডারেটর রুপক ভাইয়ের একটা লেখা পড়েছিলাম সত্য ঘটনা অবলম্বনে যার টাইটেলের কিছু অংশ ছিলো কার অপরাধ বেশী, ঘটনাটি পড়ে সত্যি বেশ খারাপ লেগেছে। কারন আমাদের দেশে এই রকম অজস্র সত্য ঘটনা ঘটনার আড়ালে থেকে যাচ্ছে, কেউ জেনে চুপ থাকছি আর কেউ দেখেও না দেখার ভান ধরছি। কারন যার যার সমস্যা নিয়ে সে সে নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছে আর কেউ তার যন্ত্রণার ভাগ নিতে ইচ্ছুক না কিংবা তাকে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত নই। অনেকটা এই রকমই একটা বিষয় নিয়ে আজকে আমি কথা বলবো। কারন সেদিনের সেই গল্পটা পড়ে কিছুটা খারাপ অনুভূতি তৈরী হয়েছিলো, যদিও সময়ের অভাবে মন্তব্য করতে পারি নাই। সত্যি বলছি আজকাল খুব একটা সময় বের করতে পারছি না, নিজের পোষ্টের কমেন্টগুলোর রিপ্লাইও ঠিক মতো দিতে পারছি না।
তবে কমেন্ট করতে না পারলেও আপনাদের লেখাগুলো কিন্তু আমি ঠিক পড়ি, বিশেষ করে সকালে এবং বিকালে অফিস হতে বাড়িতে আসা যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। শুধু এই কাজটুকুই মোবাইল দিয়ে করতে পারি, আসলে মোবাইল ফোন দিয়ে আমি ফোন কিংবা মেসেজ দেয়া ছাড়া খুব একটা কিছু করতে পারি না, তবে মাঝে মাঝে কপি-পেষ্টের মাধ্যমে নিজের পোষ্টটা করতে পারি, হি হি হি। যে অভিজ্ঞতাটা ভাগ করে নিবো আজ সেটা বাস সেবা সম্পর্কে। আমি সাভার হতে মহাখালি পর্যন্ত প্রতিদিন যাতায়াত করি, দুঃখের বিষয় হলো এই লাইনে শুধুমাত্র একটা কোম্পানীর বাস চলাচল করে, যার কারনে আমরা বাস ভাড়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই জিম্মি। একটু পরিস্কার করে বলছি জিম্মির বিষয়টি। সাভার হতে মহাখালি পর্যন্ত বাস ভাড়া নেয় ৬০ টাকা। কিন্তু আমি যদি সাভার হতে গাবতলী আসি একই বাসে তাহলে ভাড়া নেয় ৩০ টাকা। আবার সেই বাসে যদি গাবতলী হতে মহাখালি আসি তাহলে ভাড়া নেয় ২০ টাকা। অর্থাৎ ভেঙ্গে ভেঙ্গে যদি দুইবারে আসি তাহলে ভাড়া দাঁড়ায় ৫০ টাকা কিন্তু সরাসরি সাভার হতে মহাখালি আসলে বাড়া নেয় ৬০ টাকা।
এখন এই সমস্যার বিষয়টি কাকে বলবো? এর জন্য কে বেশী অপরাধী আমরা নিরীহ যাত্রীরা নাকি চোখ বন্ধ করে থাকা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ নাকি অতি লোভী বাস ব্যবসায়ীরা? আমরা সত্যি প্রতিনিয়ত এই রকম অজস্র সমস্যার সাথে আপোষ করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি, টিকে থাকার লড়ািইয়ে নিজেদেরকে শান্তি কামী মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছি কারন এই মুহুর্তে আমাদের কাছে বিকল্প কোন উপায় বা অপশন নেই। কেন বললাম এই কথা? কিছু দিন পূর্বে যাত্রাবাড়ীতে একজন যাত্রীকে বাস হতে ধাক্কা মেরে ফেলা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তার বিচারের দাবীকে কাউকেই তেমন সোচ্চার হতে দেখা যায় নাই। আর এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিভাজনের কারণেই আমরা সবাই নিজের অবস্থান হতে নিজেকে শান্তিচুক্তিতে বিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
কতটা পরিবর্তন হয়েছে আমাদের সমাজের, কতটা উন্নত হয়েছি আমরা যেন তেন কারনে আজকাল মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করছি না? কারণ না কারণটা আমি বলবো না কারন ঐ যে আমিও শান্তিচুক্তিকে বিশ্বাসী তাই নিজের অবস্থান নিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করি। আসলেই দোষী সাবস্ত্য করতে গেলে অনেক গুলো বিষয় সামনে চলে আসবে, যেমনটা রুপক ভাইয়ের গল্পের আড়ালে ছিলো প্রকৃত ঘটনাটি যারা স্বীকার করতে চাইছিলো না। প্রতিটি বিষয়ই ঠিক এমনভাবে চলছে এখন, পত্র পত্রিকায় মাঝে মাঝে লেখা হচ্ছে বাস ভাড়া নিয়ে কিন্তু কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতোই দাবী করে থাকে সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী চলছে দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। মজার বিষয় হলো এই দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাই ছিলো প্রকৃত কিংবা আসল ঘটনা, যা অনাকাংখিতভাবে উপরে দিকে যেতে যেতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
হয়তো এই সকলের পিছনে আমাদের নিজেদের অপরাধটাই বেশী, কারন আমরা শান্তি চুক্তিতে বিশ্বাসী বলেই হয়তো তারা সব কিছু বিচ্ছিন্ন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাচ্ছে। হয়তো আমাদের নিরীহ সাজার অভিনয়ের কারনেই তাদের অপরাধ বোধটাই নষ্ট হয়ে গেছে, হয়তো ............ এই রকম অজস্র কারণ থাকতে পারে কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সেদিকে যাওয়া যাবে না তাহলে হয়তো এর পর আরো অনেক কিছুই নতুনভাবে যোগ হতে পারে, তাই নতুন কিছুর সম্ভাবনা না বাড়িয়ে আজ এখানেই ইতি টানলাম।
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার প্রথম উপদেশ গুলো মেনে চলার চেষ্টা করছি ভাইয়া।মন্তব্যের সমস্যা গুলো আশা করি সবাই খুবই জলদি কাটিয়ে উঠব।আর আসলেই পরিবহন সিন্ডিকেটের কাছে আমরা জিম্মি।১বছর আগে যেখানে ১০০টাকা দিয়ে যাওয়া আসা হত,এখন সেখানে যেতেই ১০০। প্রতিবাদ করলে সহযাত্রীরাই বিরক্ত হয়। তাই আর প্রতিবাদ করি না।সমাজ দিন দিন অধপতনের দিকে যাচ্ছে,আমাদের এই চুপ থাকার কারনে। সময় উপযোগী একটি পোস্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
জীবনের প্রতিটি স্তরে আজ সিন্ডিকেটের প্রভাব, জানি না আমাদের অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
ভাই আজকে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বাস্তবতার সাথে এই পোস্টটির কথাগুলো একদম মিল রয়েছে। আসলে আমরা এখন কাজ করছি রিওয়াড পাওয়া জন্য রেপুটেশন ধরে রাখার জন্য নয়। আমাদের প্রত্যেকেরই এ কাজের বিষয়ে অনেক সচেতন হতে হবে। এডমিন মডারেটররা প্রতিনিয়ত আমাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারপরে আপনি রূপকের একটি পোস্টে কথা বলেন, ওই পোস্টে আমিও পড়েছি। আসলে আমরা কাকে দোষ দেব এবং কে বেশি অপরাধী। আমাদের সমাজে ব্যবস্থা এভাবেই চলছে। আপনি বাসভাড়া ভেঙে গেলে ৫০ টাকা লাগে কিন্তু সরাসরি গেলে ৬০ টাকা দিতে হয়। সরাসরি গেলে আরো কম টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে আরও সরাসরি গেলে বেশি দিতে হয়। এটাআমার মনে হয় কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং বাস শ্রমিকদের অতি লোভ সামলাতে হবে। যাই হোক ভাই আপনার পোস্টটি আমার ভালো লেগেছে।
আসলে এটা ছিলো একটা উদাহরণ, আমাদের সমাজের প্রতিটি রন্ধে রন্ধে আজ এই অবস্থা।
আমার কেনো জানি মনে হয় ভাইয়া এই শান্তি চুক্তিটা নামের শান্তি হলেও কাজে সম্পূর্ণটাই অশান্তি।কারণ সমাজ এর বিষয় খেয়াল করতে গেলে,আসলে ঘুরে ফিরে সবাই বিপদে,শুধু লাভবান হচ্ছে এক পক্ষ।যার কাছ থেকে কারো কিছু নেওয়ার ক্ষমতা নেই সে ই শুধু লাভবান হচ্ছে।মাঝের সবাই শুধু বসে বসে নিজেদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
পুরাই অশান্তির, এখানে শান্তি ম্যাডামের কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা সেটা আগে খুজে দেখতে হবে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আমাদের সমস্যা টাই এই জায়গা ভাই। অন্য সবাই এক হলেও আমরা এই সাধারণ মানুষ কখনোই এক হতে পারব না। যখন যে বিপদে পড়বে সেই বুঝবে আর কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এগিয়ে আসবে না। কিন্তু দেখুন পরিবহন শ্রমিক মালিক রা কিন্তু একতাবদ্ধ। আপনার
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু আমি বুঝতে পেরেছি। আসল সর্বক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের এই নাজুক অবস্থার জন্য আমাদের শান্তিকামি মানসিকতায় দায়ী।।
ভাই দুঃখ করার কিছু নেই আর কারো কাছে বলারো কিছু নেই কারন যে দেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে পারেনা সেই দেশে সবকিছুতেই স্বেচ্ছাচারিতা আর নৈরাজ্যের স্বীকার হবে এটাই স্বাভাবিক। শুধুমাত্র বাস ভাড়া কেন সব জায়গাতেই এখন সিন্ডিকেট আর দুর্নীতি গ্রাস করে নিয়েছে। অপরাধ আমাদের সকলের। আমরা শুধু নিজের স্বার্থটা বুঝে নিতে পারলেই চুপ হয়ে যাই আর কারো ব্যাপার নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই।
আবোল তাবেল জীবনের গল্পে (অপরাধবোধ) অসাধারণ আলোকপাত করেছেন ভাই। সত্যিই এটা শুধু ঢাকা শহরেই নয়। জেলা শহরগুলোতেও যাত্রীবাহী বাসে একই অবস্থা। দেখার কেউ নেই। বিষয়টা এমন আপনি বাসলে বাপের নাম। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভাই।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া,এটা আমিও খেয়াল করেছি।বর্তমান সময়ে সবাই নিজ নিজ লাভের আশাটা বেশি করে।সেটা করতে গিয়েই এক পক্ষ লাভবান হচ্ছে আরেক পক্ষ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।তবে প্রতিবাদী মানসিকতার অভাবই এরজন্য দায়ী।সুন্দর লিখেছেন।