"শৈশব স্মৃতির মিশেলে গরমে আইসক্রিম খাওয়ার অনুভূতি"
নমস্কার
শৈশব স্মৃতির মিশেলে গরমে আইসক্রিম খাওয়ার অনুভূতি:
আইসক্রিম খাওয়ার অনুভূতি লিখতে যেয়ে মনে পড়ে যায় আমার শৈশবের একগুচ্ছ গল্পের মধ্যেকার এক টুকরো স্মৃতি।আর সেটা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অনুভূতি।তো শৈশবে আমরা মুখে তো আইসক্রিমওয়ালা বলতাম-ই না ।বরং বলতাম মালাইওয়ালা কিংবা বরফওয়ালা।রাস্তা দিয়ে গরমের সময় দেখা যেত এই বরফওয়ালা কাকুদের।সেটাও আবার দিনে এক থেকে দুইজনের আগমন ঘটতো।
আমাদের বাড়ি ছিল মেইন রোডের থেকে একটু ভিতরে অনেকটা জায়গা জুড়ে।কিন্তু আমাদের পুকুর পাড় থেকে মেইন রোড দেখা যেত।তাই রীতিমতো বরফ খাওয়ার আশায় আমাদের পুকুর পাড়ে বসে থাকতাম মেইন রাস্তার দিকে তাকিয়ে।কখন মালাইওয়ালা ভ্যানে করে মাইকে গান বাজাতে বাজাতে মালাই নিয়ে আসবে সেইজন্য।কোনো কোনো দিন বৃথা যেত আবার কখনো দূর থেকে মাইকে গান বাজানোর শব্দ শুনেই বুঝে যেতাম মালাইওয়ালা আসছে।তাই হাতে গোজা দুই টাকার নোট নিয়ে ছুটতাম মালাইওয়ালার কাছ থেকে মালাই নিতে।তখন দুই টাকার মালাইয়ের স্বাদ ছিল অফুরন্ত।দুধ আর নারিকেলের ফ্লেবার দিয়ে তৈরি সাদা চওড়া কিংবা গোল মালাই কিনে এনে খেতাম।কখনো আবার পরিবারের সবার জন্য কিনে এনে মজা করে খেতাম।
আম ও লিচুর পেপসি পাওয়া যেত সেই সময়ে 1 টাকায়।খুব বেশিদিন আগের কথা নয়।আর এখন 10 কিংবা 40-50 টাকার আইসক্রিম কিনে খেয়েও সেই দুই টাকার আইসক্রিমের মতো স্বাদ আর খুঁজে পাই না।1 টাকার পেপসির দাম নেয় এখন 5 টাকা করে।আর মালাইওয়ালার তো অভাব নেই তার উপরে দামেরও বাহার।যাইহোক মজার ব্যাপার হচ্ছে-আগে কোনো কোনো সাবানের খোসা দিয়েও আমরা মালাই খেয়েছি।আর সেই মালাইগুলিতে বরফ থাকতো বলে অনেক্ষন ধরে ধরে খাওয়াও যেত।কিন্তু এখন আইসক্রিমে দুই কামড় বসালেই শেষ নিমিষের মধ্যে।আইসক্রিমের দাম যত বেশি হবে ততই খেতে সফট হবে কিন্তু তার মধ্যে বরফের কোনো চিহ্ন-ই না পাওয়া যাওয়ায় শরীরকে প্রশান্তি দেয় না। তাছাড়া বরফের কোনো কিছু তো পাওয়াই মুশকিল।
প্রতিনিয়ত এত গরম পড়ছে যে আইসক্রিম না খেয়ে পারলাম না।পরশুদিন 10 টাকা দামের আইসক্রিম খেয়ে স্বাদ মিটেছিল ঠিকই কিন্তু প্রানে শান্তির হাওয়া বইনি।তাই আজ ভাবলাম 5 টাকা দামের আইসক্রিম খাবো।তাতে বরফের স্বাদ পাওয়া যাবে আর প্রাণও ঠাণ্ডা হবে।মূলত 5 টাকা দামের আইসক্রিমগুলি দ্রুত বিক্রি হয়ে যায় তাই অনেক সময় খুঁজে পাওয়াও যায় না।কিন্তু গতদিন অনেক ধরনের মালাই ছিল 5 টাকা দামের।সাদা ও রঙিন মালাই ছাড়া পেপসিও ছিল।এখন আর মাইকে সেই গান শোনা যায় না শুধুই ঘন্টার টুং টাং করে আওয়াজ শোনা যায়।আমি ও মা লাল রঙের আইসক্রিম নিয়েছিলাম গোল ও চওড়া সাইজের।বাবা ও দাদা সাদা রঙের নারিকেলের ফ্লেবারে তৈরি আইসক্রিম নিয়েছিল।আমরা তো মালাইটি খেয়ে প্রশান্তি পেলাম।তো এটাই ছিল আমার আজকের অনুভূতি।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thanks.
আপনি কিন্তু একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু আগেকার দুই টাকার বরফে যে স্বাদ পেয়েছি এখনকার ৩০-৪০ টাকার এই আইসক্রিম গুলোতে সেই সাদ পায় না। তবে অতীতের এমন মধুর স্মৃতি আমারও কিন্তু রয়েছে অনেক। আমরাও যখন রাস্তায় শুনতাম বরফ বিক্রেতা এসেছে, তাদের হাতের ঘণ্টা বাজা তো আমরা ছুটি যেতাম।
আপনার অনুভূতি জেনেও ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমিও ছোটবেলায় খুব আইসক্রিম খেতাম। রাস্তা দিয়ে যখন আইসক্রিম বিক্রেতা যেত আমিও বাড়ি থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে সেখানে পৌঁছে যেতাম দুই টাকা পাঁচ টাকা দশ টাকা নিয়ে। তবে সময়ের ব্যবধানে এখনো হয়তো সেভাবে আর খাওয়া হয়না। যদিও মাঝেমধ্যে দোকান থেকে কিনে খাই তেমন শান্তি পায় না। সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আসলেই সময়ের ব্যবধানে সবকিছু কোথায় হারিয়ে যায়, ধন্যবাদ আপু।
আসলে ছোটবেলা আইসক্রিম কেনার মুহূর্তগুলো অসাধারণ। আমাদের গ্রামের বাড়ির পাশ দিয়েই চলে যেত তারা আইসক্রিম নিয়ে, আর আমরা দৌড় যেতাম, দুই টাকা তিন টাকা পাঁচ টাকার আইসক্রিম খেতাম। আর সেই আইসক্রিম যে কত মজাদার ছিল, এখন আর দামী দামী আইসক্রিমের ভিতরে এই মজাটা নেই।
হ্যাঁ ভাইয়া, সেই অনুভূতিটাই তো তুলে ধরলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
শৈশবে আইসক্রিম খাওয়ার সুন্দর স্মৃতিচারণ করেছেন আপু।ভীষণ ভালো লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে।আমাদের বাড়ির সামন দিয়ে মাইকে গান বাজিয়ে এখনো দিনে দুতিনজন আইসক্রিমওলা আনাগোনা করে।সত্যি দামী আইসক্রিমে বরফের ছিটেফোঁটা ও পাওয়া যায় না।কমদামি আইসক্রিমের বরফ চুষে খেতে অসাধারণ লাগে প্রানটাও জুড়ে যায়।আপনি রঙ্গিন আইসক্রিম খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।রঙ্গিন আইসক্রিম আর পাওয়া যায় না আমাদের এখানে।ধন্যবাদ দিদি সুন্দর আইসক্রিম খাওয়ার অনুভুতির কথা গুলো আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
আপনাদের ওখানে রঙিন আইসক্রিম পাওয়া যায় না জেনে হতাশ হলাম,ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোটবেলায় এই আইসক্রিম ওয়ালাদের কে নিয়ে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। গরমের দিন আসলেই আইসক্রিম ওয়ালাদের আসার খবরটা পেতাম। আমরা তো টাকার থেকেও বেশি নিতাম বোতল দিয়ে। কাঠের বড় একটা বক্সে আইসক্রিম রাখতো বরফ দিয়ে, আর ঢাকনা বাজিয়ে বাজিয়ে আসতো। যার কারণে অনেক দূর পর্যন্ত আওয়াজটা পেতাম। যখনই এই আওয়াজ পেতাম তখন সবাই বোতল নিয়ে অথবা দুই টাকা পাঁচ টাকা নিয়ে চলে যেতাম আইসক্রিম খাওয়ার জন্য। দুইটা বোতল দিয়ে একটা আইসক্রিম পেতাম। সত্যি সেই আইসক্রিমগুলোর মধ্যে যে স্বাদ ছিল, সেটা এখন দামী দামী আইসক্রিমের মধ্যেও পাওয়া যায় না।
আপনার সুন্দর অনুভূতি জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনার আজকের এই পোস্টটা পড়ে তো আমার ছোটবেলার কথা অনেক বেশি মনে পড়ে গিয়েছে। ছোটবেলায় এই আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে কত যে স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এটা বলেই শেষ করা যাবে না। তখনকার অনুভূতিগুলো ছিল সব থেকে বেশি সুন্দর এবং আলাদা। ছোটবেলায় প্রচুর আইসক্রিম খেয়েছিলাম আইসক্রিমওয়ালাদের থেকে কিনে কিনে। যখন আইসক্রিম ওয়ালা আসার আওয়াজ শুনতাম, তখনই ছুটে চলে যেতাম রাস্তার উপর। আর সেই আইসক্রিম গুলো খাওয়া হলে তৃপ্তি পাওয়া যেতো। যা এই সময় কোন আইসক্রিমে পাওয়া যায়ই না।
আসলেই এখন সব কিছু ভেজাল হয়ে গেছে।ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি জানানোর জন্য।
আমি কিন্তু এখনো আইসক্রিম খাওয়ার চেষ্টা করি। তবে দোকান থেকে। আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লেগেছে আপু। ছোটবেলায় থেকে এভাবে আমরাও আইসক্রিম খেয়েছি। এখনো আইসক্রিম আলা আসে যায় কিন্তু সে সময় তো আর নেই। বেশ ভালো লাগলো পড়ে।
আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ আপু।