রাতের বাঁশিওয়ালা ( তৃতীয় পর্ব )।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বাঁশিওয়ালার মুখে ভাই'সাব ডাকটা শুনে একটু থমকে গেল দিপু। কন্ঠটা একেবারে অন্যরকম। কখনো দেখা হয়নি কিন্তু যেন কত পরিচিত দুজনে। হঠাৎ দিপু বলে উঠল
ভাই বললেন যে আমাকে??
তাছাড়া আর কী বলব, বলেন।
না আমাক তো চিনেন না আপনি। হঠাৎ প্রথম দেখাই আমাকে ভাই বললেন যে। এর আগে বলুন আপনি এতো রাতে এই এলাকায় বাঁশি বাজিয়ে ঘুরে বেড়ান কেন।
উচ্চস্বরে হেসে বলল আপনি আপনার জন্যই এসেছি ভাই। আপনার জন্যই আমার এখানে আসা।
আমার জন্য আসা মানে?
আরে সব বলব। তার আগে বলুন সিগারেট আছে। অনেকক্ষণ হলো সিগারেট খাই না।
না আমি সিগারেট খাই না।
মিথ্যা বলছেন কেন ভাই। আপন তো সিগারেট খান। হ্যা যদিও বেশ কিছু দিন বাদ দিয়েছেন আপনার গার্লফ্রেন্ডের নিষেধ করার জন্য। কিন্তু আপনি তো সিগারেট খেতেন।
হ্যা ঐ আর কী। কিন্তু হঠাৎ দিপুর মনে আসে। দিপু যে সিগারেট খাওয়া বাদ দিয়েছে গার্লফ্রেন্ডের জন্য সেটা এই বাঁশিওয়ালা জানল কীভাবে। আর তার যে গার্লফ্রেন্ড আছে সেটাই বা কীভাবে জানলো। বাঁশিওয়ালার উদ্দেশ্য দিপু বলল
আপনি এগুলো কীভাবে জানেন।
একটু হেসে বাঁশিওয়ালা বলল আমি সবই জানি এবং আপনার জন্যই এসেছি।
রাত তখন দুইটা পাড় হয়ে গিয়েছে। মফস্বল একটা শহরের নিস্তব্ধ রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে দুজন কথা বলছে। এই অল্প কিছুক্ষণের পরিচয়েই বাঁশিওয়ালার সঙ্গে কথা বলার প্রতি একটা আগ্রহ প্রকাশ করতে শুরু করেছে দিপু। কিন্তু অনেকদিন হলো সে তার বাবা মা জয়ীতা কিংবা ব্রান্ডের কারো সঙ্গেই আগ্রহ নিয়ে কথা বলেনি। হঠাৎ বাঁশিওয়ালা বলল
আচ্ছা ভাই সাহেব আমি আজকে যায়। আবার কালকে আসব। আর হ্যা কালকে অবশ্যই সিগারেট টা নিয়ে আসবেন আমার জন্য।
একটু দ্বিধার সঙ্গে দিপু বলল আচ্ছ ঠিক আছে।
পরেরদিন ছিল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। সকালে জয়ীতা ফোন করে। জয়ীতার ফোন পেয়ে ঘুম ভাঙে দিপুর;
বলছি আজ শুক্রবার মনে আছে।
হ্যা মনে আছে। তো কী করব।
দিপু তোর কী কিছুই মনে থাকে না। আচ্ছ আমিই বলে দিচ্ছি আজ আমরা বিকেলে বের হবো।
আজ কেন। আমার ইচ্ছ নেই।
কথাটা শুনে একটু বিরক্তিকর সুরে জয়ীতা বলল দিপু তোর খেয়াল আছে আমরা শেষ কবে দেখা করেছিলাম।
ও আচ্ছা ঠিক আছে দেখা করব।
বিকেল বেলায় দিপু এবং জয়ীতা দেখা করে পার্কে। পার্কটা একেবারে নদীর পাশে। এখানেই প্রথম দিপু জয়ীতাকে ঘুরতে নিয়ে এসেছিল। সেজন্য জায়গা টা ওদের জন্য অনেক স্পেশাল। দুজন এসে বসে আছে। যথারীতি দিপু সেই রকম অন্যমনস্ক। দিপু ভাবছে বাঁশিওয়ালা কী আজও আসবে। আজ আসলে কী যাওয়া ঠিক হবে। আর গেলে কী সিগারেট নিয়ে যেতে হবে। হঠাৎ জয়ীতা বলল
কী রে কী ভাবছিস এতো। চাকরির কথা
না ওসব না বাদ দে।
আচ্ছা হঠাৎ তুই এইরকম চুপচাপ হয়ে গেলি কেন। আমার সঙ্গেও ঠিকমতো কথা বলিস না। কী হয়েছে তোর আমাকে খুলে বল।
না কিছু হয়নি। বুকের মধ্যে অসংখ্য হতাশা না বলা জমে থাকা অনেক কথা থাকা সত্বেও কিছু বলতে পারলো না দিপু। কী বলবে দিপু। যে ওর কিছু ভালো লাগে না। ওর আর বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। এটার কারণ কী সেটা ও নিজেও জানে না।
জয়ীতার সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরার পথে মনে করে দুইটা সিগারেট কিনে দিপু। বাঁশিওয়ালা সিগারেট নিয়ে যেতে বলেছে আজ। সঙ্গে একটা লাইটারও কিনে নেয়। দিপু যেন আজও নিশ্চিত বাঁশিওয়ালা আজকেও আসবে। ঠিক রাত একটার পর। সবাই তখন ঘুমিয়ে পড়েছে। দিপু যথারীতি ঐ জানালার সামনে বসে। এবং দিপুর কানে আসলো ঐ বাঁশির সুর। তখন দিপু বের হয়ে গেল। বাঁশিওয়ালা সামনে বাঁশি বাজাতে বাজাতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং দিপু পেছনে। তবে আজকে একটু বেশি দূরে গিয়েই যেন বাঁশিওয়ালা থামে।
কী ভাই আমার সিগারেট টা নিয়ে এসেছেন।
হ্যা এই যে।
লাইটার টা কোথায়।
এই যে নিন।
আপনি খাবেন না।
না আমি সিগারেট খাই না। আপনি জানেন না। আরে আজকে খান আমার সঙ্গে, কিছু হবে না।
বাঁশিওয়ালার কথায় মূহুর্ত্তের মধ্যে সিগারেট ধরিয়ে একটা সূক্ষ্ম টান দিল দিপু।।
চলবে.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.