বই রিভিউ ( রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন)!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ
----- | ----- |
---|---|
বইয়ের নাম | রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি |
লেখক | মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন |
প্রকাশনী | বাতিঘর |
প্রথম প্রকাশ | ২০১৫ |
দাম | ৫০০ টাকা |
ছবির মতো সুন্দর একটা জায়গা সুন্দরপুর। এই সুন্দরপুরেই গড়ে উঠেছে একটা রেস্টুরেন্ট "রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি"। রেস্টুরেন্ট টার মালিক একজন নারী মুশকাশ জুবেরি। তবে মুশকান জুবেরি বেশ রহস্যময়ী। সেই রেস্টুরেন্ট ঘিরে বেশ অনেক কথা চালু আছে। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি ওদের খাবারের স্বাদ অতুলনীয়। এবং এমন অদ্ভূত নামকরণের পেছনেও রয়েছে একটা ইতিহাস। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে একটা তদন্ত করতে সুন্দরপুর আসে ডিবির জাদরেল অফিসার নুরে ছফা। মূলত একটা অমিমাংসিত কেসের দায়িত্ব দেওয়া হয় তার উপর। কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এবং সবারই শেষ লোকেশন ছিল এই সুন্দরপুরে এবং রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি এর সামনে। সুন্দরপুর এসেই নূরে ছফা প্রথমে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি রেস্টুরেন্টের খাবার খান। এবং তিনি নিজেও খাবারের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে যান।
নূরে ছফার পরিচয় হয় সুন্দরপুরের এক পুলিশ ইনফরমার অতর আলীর সাথে। আতর আলীকে সবাই বিবিসি বলত। কারণ সুন্দরপুরের সব খবর তার কাছে থাকত। আতর আলী এবং নূরে ছফা মিলে তদন্ত শুরু করে। এবং নূরে ছফা গ্রামের এক প্রবীণ মাস্টার রমাকান্তকামারের থেকে জানতে পারে ঐ জমিদার বাড়ি এবং রেস্টুরেন্টের নামের আসল কাহিনী। মূলত ঐটা ছিল জমিদার এিলোকনাথ বসুর সম্পত্তি। উনি রবীন্দ্রনাথের সময়কার জমিদার ছিলেন। উনি একবার রবীন্দ্রনাথ কে নিজের বাড়িতে দাওয়াত দেন এবং রবীন্দ্রনাথ সেটা স্বীকার করেন। তবে আমন্ত্রণে আসার ঠিক আগের দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ কন্যা মাধুরিলতা দেবী মারা যায়। ফলে রবীন্দ্রনাথ এখানে খেতে আসে না। এই ঘটনা থেকেই এিলোকনাথ বসুর নাতবৌ ঐ রেস্টুরেন্টের নাম দেয় ঐটা। পাশাপাশি মুশকান জুবেরি ছিল রবীন্দ্রনাথের অনেক বড় ভক্ত।
ইনফরমার আতর আলী নূরে ছফাকে বলে মুশকান জুবেরি একজন ডায়নি। পাশাপাশি তদন্ত করতে গিয়ে নূরে ছফা বেশ কিছু জিনিস আবিষ্কার করে। এবং নূরে ছফা একজনের সাহায্য নেয় তিনি ডিবির সিনিয়র অফিসার কে এস খান। দুইজন মিলে রহস্যের উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। সামনে চলে আসে ১৯৭২ সালের একটা প্লেন ক্র্যাসের ঘটনা। যেখানে ১৮ জন মানুষ দীর্ঘ ৮০ দিন একটা জনশূণ্য প্রান্তরে ছিল। এবং তারা বেঁচে ছিল মানুষের মাংস খেয়ে। তাদের মধ্যে একজন ছিল এই মুশকান জুবেরি। কেএস খান জানতে পারে মুশকান জুবেরির বয়স ১৯৭২ সালে ছিল ২৫। সেই হিসেবে এখন তার বয়স হওয়ার কথা ৬৬। কিন্তু নূরে ছফা বলে মুশকান জুবেরির বয়স ৩০-৩৫ এর বেশি হবে না। এবং মুশকান জুবেরি দেখতে খুবই সুন্দর। রহস্য আরও জটিল হয়ে যায়।
আপনাদের কী মনে হয় এই মুশকান জুবেরি আসলে কে? শেষ পযর্ন্ত কী নূরে ছফা রহস্যের উদঘাটন করতে পারবেন। এটা জানতে হলে আপনাদের বইটা পড়তে হবে। আমি মূলত স্পয়লার দিলাম না যেন আপনারা বইটা পড়েন আগ্রহ নিয়ে।
ব্যক্তিগত মতামত
বাংলাদেশের থ্রীলার সম্রাট বলা হয় মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কে। তবে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি বইটা প্রকাশিত হলে উনি বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এবং এই বইটার দ্বিতীয় পার্ট রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি রয়েছে। এবং সম্ভবত এই বছরে আসবে তৃতীয় পার্ট রবীন্দ্রনাথ এখানে এসেছিলেন। আমার কাছে বইটা দারুণ লেগেছে। একেবারে ভিন্ন ধর্মী একটা থ্রীলার। শেষ মূহূর্ত পযর্ন্ত আকর্ষণ ধরে রেখেছিল। এবং এই বইটার উপর কলকাতার পরিচালক শ্রীজিৎ মুখার্জী একটা ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেন এই নামেই। এবং এটা ওটিটি প্লাটফর্ম হইচই আপনারা দেখতে পাবেন। আপনারা যারা থ্রীলার পছন্দ করেন তাদের বলব অবশ্যই পড়তে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 6/8) Get profit votes with @tipU :)
এই বইটি আমি পড়িনি তবে সিনেমা হয়েছে বইটাকে কেন্দ্র করে সেটা দেখেছি। কি অসাধারণ সিনেমা তবে একটা কথা না বললেই নয় এই গল্পের প্লট মানে ওই যে আশি দিন ধরে বেঁচে থাকা ১৮ জন মানুষ যারা মানুষের মাংস খেয়ে বেঁচে ছিলেন। ঘটনাটা কিন্তু একেবারেই বানানো গল্প নয়। প্লেন ক্রাশে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই সত্য ঘটনা কে অবলম্বন করেই এই উপন্যাস রচিত হয়েছে। আপনার রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লাগলো এবং স্মৃতি রোমন্থন করলাম।