সেই চেনা পথ!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
এমন একটা রাস্তার কথা চিন্তা করুন তো। যেই রাস্তা ধরে আপনি হেঁটেছেন পুরো পাঁচবছর বা তারও বেশি সময়। একটা দিনও বাদ যায়নি। এমনটা হয়তো অনেকের ক্ষেএেই হবে। কিন্তু সেই রাস্তার উপর কী আপনার কোন স্মৃতি কাজ করে। সেই রাস্তা কী আপনাকে টানে। এমনটা যদি হয় তাহলে রাস্তাটা স্পেশাল বলতেই হয়। এমনই একটা রাস্তা রয়েছে আমার পরিচিত। বস্তুত অনেক রাস্তায় রয়েছে যেটা দিয়ে আমি পাঁচবছর বা তার বেশি সময় চলাচল করছি। কিন্তু এই পথ এই রাস্তা টা আমার কাছে যেন একেবারে আলাদা। কারণ অনেক নতুন কিছুর শুরুই তো এখান থেকে। শুধু রাস্তা না ঐ পুরো জায়গাটাই আমার অনেক পছন্দের। এখন সময় পেলেও কেন জানি আর যাওয়া হয়'না। বলছি আমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর কথা। মেইন রাস্তা থেকে স্কুল গেট পযর্ন্ত পথ সে দূরত্ব এটুকু যেন কখনো শেষ হতেই চাইত না।
প্রথম যখন আমি এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিতে আসি সেদিন যেন ঐ পথটুকু আমার শেষই হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল কত সময় ধরে হাঁটছি কিন্তু শেষ হচ্ছে না। তারপর ভর্তি পরীক্ষায় টিকে নিজের পছন্দের স্কুলে ভর্তি হওয়া। নিয়মিত ক্লাস করা স্কুলের মাঠে খেলা টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের প্রাচীল টপকে নদীর পাড়ে গিয়ে বসে থাকা । কখনো কখনো নদীর শান্ত শীতল পানিতে নিজের পা ভেজানো। সমাবেশ ফাঁকি দিয়ে বাইরে লুকিয়ে থাকা। আবার সমাবেশে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় অন্য কিছু গাওয়া। সত্যি কতশত স্মৃতি কতশত মূহূর্ত কেটেছে এখানে। সেগুলোর কোনটাই এখনো ভুলিনি আমি। এখন তো সেসব কিছুই অতীত। সেই সবকিছুই স্মৃতি। মনে হচ্ছে এইতো ঐগুলো যেন সেদিনকার মূহুর্ত সেদিনকার কথা। কিন্তু দেখতে দেখতে তো প্রায় ৫-৬ বছর কেটে গেছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। সত্যি সময় কত দ্রুতই না যায়।
আজ একটা কাজে গিয়েছিলেন স্কুলের পাশে। সেজন্য অবশ্য সকালে ঘুম থেকে উঠি অনেক দ্রুত। আমার কাজ যখন শেষ হয় ঘড়িতে তখন বাজে ১১ টা। অনেকদিন ধরেই সুযোগ খুজছিলাম আজ সেটা পেয়েও গেলাম। আর কী একা একা হাঁটতে স্কুলের গেট দিয়ে ভেতরে গেলাম। আজ শনিবার স্কুল বন্ধ। সেজন্য সেরকম কেউ ছিল না। ঐ দুই একজন ছাএ ছিল যারা মাঠে খেলছিল। স্কুলের মধ্যে অসংখ্য আম গাছে নতুন কুড়ি এসেছে। ঐ মকুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। স্কুলের মধ্যে সেই প্রশস্ত মাঠ টা আগের মতো আছে। মাঠের মাঠে ঐ ক্রিকেট পিচ টা ঐরকমই আছে। যদিও প্রতি বছর ঐ পিচের সংস্করণ করা হয়ে থাকে। মাঠের পশ্চিম দিকের পুকুর টা বালি দিয়ে ভর্তি করে ফেলা হয়েছে। আমাদের সময় ছিল পুকুর। এবং চারিদিক দিয়ে প্রাচীল তুলে দেওয়া হয়েছে। ওখানে সম্ভবত নতুন একটা ভবন নির্মিত হবে।
আমাদের ক্লাসরুমের দরজা গুলো পরিবর্তন করা হয়নি তবে রঙ করার কারণে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। হঠাৎ ক্লাস টেন এর ক্লাসরুম সামনে এসে কিছুটা সময় থমকে যায়। একটা মূহূর্তে মনে হচ্ছিল আবার একটা দিন যদি ফিরে পেতাম। সবাই আবার একসঙ্গে ক্লাসে বসে ক্লাস করতে পারতাম। কিন্তু যেটা সম্ভব না সেটা ভেবে লাভ নেই। স্কুলের বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে নতুন কিছু কাজ করা হয়েছে। আগের থেকে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। সবচাইতে বড় পরিবর্তন স্কুলের দক্ষিণ দিকে প্রাচীল এর উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের সময়ে আমরা ঐ প্রাচীল টপকে গিয়ে নদীর ধারে বসে থাকতাম। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই হা হা। ব্যাপার টা অবশ্য আমার একটু খারাপই লাগল। যাইহোক কী আর করার। এভাবে আরও কিছু বছর কেটে যাবে আরও কিছু পরিবর্তন হবে স্কুলের। কিন্তু আমার আমাদের স্মৃতিগুলো জীবন্ত হয়ে থাকবে আজীবন।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সুন্দর চিন্তা ভাবনা ফুটে উঠেছে আপনার আজকের এই পোষ্টের মাঝে। আসলে যে পথে দীর্ঘদিন চলা হয়েছে এরপর দীর্ঘদিন না যাওয়ার ফলে হঠাৎ যদি উপস্থিত হওয়া যায় সেই জায়গায় তাহলে বেশ ভালো লাগে আর স্মৃতিগুলো বার বার স্মরণে আসে। এই জীবনে কতজনার সাথে উঠবস করা হলো আজকে হয়তো সবাই সাথে নেই, এটা কালের বিবর্তনে ফল। তবে আপনার সুন্দর চিন্তা ধারা নিয়ে আজকের পোস্ট দেখে খুশি হলাম।