অপরিকল্পিত নগরায়ন।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি মোটামুটি। আজ একটু অন্যরকম বিষয় নিয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলব। প্রতিটা দেশ বা রাষ্ট্রের একটা লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকে। তারা তাদের শহরকে একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে উন্নয়ন করতে থাকে। এমন কোন কাজ বা প্রকল্প করে না যেটা ভবিষ্যতে সমস্যা সৃষ্টি করবে। যাইহোক দেশের উন্নতি অবকাঠামোগত উন্নয়ন সবাই চাই। সবাই চাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু এই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় একটা পুরো জেনারেশন হয়ে যাচ্ছে ধ্বংস। কথাগুলো হয়তো এখন আপনারা বুঝবেন না। আরেকটু খুলে বলি। বতর্মানে বাংলাদেশের ঢাকা সহ বড় বড় শহরে খালি জায়গা বা মাঠ বলতে কিছু নেই। যেখানে একটা সময় প্রতিটা এলাকায় একাধিক খেলার মাঠ ছিল এখন সেখানে একটাও নেই। সেখানে অনেক বড় বড় বিল্ডিং অথবা ইন্ডাস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা কিছুদিন আগে আমার ভালোভাবে নজরে এসেছে।
ঢাকাতে আমি যেখানে থাকি সেখানে আশপাশে কোন মাঠ নেই। দুই একটা যা আছে সেগুলো খেলার উপযোগি একেবারেই না। আমি এখানে সেরকম কোন মাঠে খুজে পাইনি যেখানে বিকেলে ছেলেরা খেলা করবে। কিছুদিন আগে আমি যাএাবাড়ি গিয়েছিলাম আমার চাচাতো ভাইয়ের বাসায়। দিনটা ছিল সরকারি ছুটির দিন। তো সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমি আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে একটু হাঁটতে বের হয়েছিলাম। এলাকার গলির মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমি এই জায়গাটাই পৌঁছে যায়। এবং সেখানে গিয়ে দেখি প্রাচীল দিয়ে ঘেরা একটা ছোট বালির মাঠ। মাঠের পুরোটাই বালি কোন ঘাস নেই। এবং সেখানে অসংখ্য বাচ্চারা ফুটবল খেলছে। ঐটুকু মাঠের মধ্যে কিছু না হলেও ২৫-৩০ জন ছেলে ভিন্ন ভিন্ন তিনটা দলে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলছে।
আমি বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের খেলা দেখছিলাম। ফুটবল আমার অনেক পছন্দের একটা খেলা। যদি আমার পরিচিত হতো আমি তাহলে ততক্ষণে খেলতে নেমে পড়তাম। তাদের মধ্যে কয়েকটা ছেলে খুবই ভালো খেলছিল। ভালো খেলছিল বলতে তাদের পাসিং, বল রিসিভ একেবারে আলাদা। সেজন্যই আমার বেশি ভালো লাগছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে গিয়ে আমার বেশ খারাপ লাগছিল। কারণ শুনলাম এই বাচ্চারা শুধু ছুটির দিনে সকালেই খেলার সুযোগ পাই। কারণ প্রতিদিন বিকেলে এখানে বড়রা অনুশীলন করে থাকে। সেখানে তাদের কোন সুযোগ হয় না। আর আশপাশে এমন কোন মাঠ নেই যে ঐ ছেলেরা খেলবে। সেজন্য একটা ছুটির সকালও তারা মিস করে না। এখন কথা হচ্ছে শহরে এতকিছুর প্রয়োজন আছে। কিন্তু একটা খেলার মাঠ প্রয়োজন নেই প্রতিটা এলাকায় বা প্রতিটা মহল্লায় অবশ্যই আছে।
একটা সময় আমাদের দেশের ছেলেরা বিকেল হলেই মাঠে চলে যেত খেলতে। তখন এইসব স্মার্টফোন ছিল না তখন কিশোর গ্যাং ছিল না। কিন্তু এরপরে গিয়ে তাদের পরিবার থেকে বিকেলে জোর করে বসিয়ে দেওয়া হয় পড়ার টেবিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোচিং এ। যে খেলে কী হবে লেখাপড়া করো। সেখান থেকেই এইটার শুরু। ছেলেরা যখন মাঠে যাওয়া বন্ধ করল তখনই প্রভাবশালীরা দখল করল মাঠটা। খেলার মাঠে গড়ে তুলল এইসব বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি গুলো। আর আমাদের দেশের ছেলেরাও ভীড়ে গেল স্মার্টফোন ইন্টারনেট গেমস এগুলোর মধ্যে। এবং অন্যদল চলে গেল কিশোর গ্যাং এ। যেটার কুফল এখন সবাই বুঝছে। তাহলে সবমিলিয়ে এখানে আমাদের লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। ব্যাপার টা খুবই দুঃখজনক। অ্যাথলেটিকস, ফুটবল, বা বিভিন্ন জনপ্রিয় গেমসগুলোতে অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস এ বাংলাদেশের অর্জন শূণ্য বলা চলে। কারণ এগুলো তে কোন অভিভাবক আগ্রহ দেখাই না। অন্যদিকে সেই মাঠও আর নেই যে বাচ্চারা বা কিশোর রা নিজে থেকে আগ্রহী হবে।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | অক্টোবর ,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঢাকা শহরে যারা বড় হচ্ছেন তারা বুঝতে পারে কতটা বন্ধ অবস্থায় জীবন যাপন করতে হয়। নেই কোন খেলার মাঠ, নেই কোন ফ্রি বিনোদনের জায়গা। যদি যেতে হয় তাহলে টাকা খরচ করে কোথাও প্রাইভেট পার্কে যেতে হয়। কিংবা কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে সময় কাটাতে হয়। অথবা যদি যেতে হয় তাহলে দূরে সমুদ্র পাড়ে যেতে হয়। কিন্তু সরকারিভাবে যেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে প্রচুর পরিমাণ টাকা নেই। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই হতাশ হলাম। কারণ এত বড় শহরে কোন খেলার মাঠ নেই এটা আসলে বড়ই দুঃখজনক ব্যাপার।