রাতের বাঁশিওয়ালা( চতুর্থ পর্ব )।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
অনেকদিন পর সিগারেটে টান দিল দিপু। সেই জয়ীতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকে যেটা বাদ দিয়েছিল। কিন্তু আজ কী এমন হলো যে বাঁশিওয়ালার কথায় সে সিগারেট ধরালো। বাঁশিওয়ালা একভাবে দিপুর দিকে তাকিয়ে। হঠাৎ বাঁশিওয়ালা দিপুকে বলল
আচ্ছা আপনি হঠাৎ এমন হয়ে গেলেন কেন। আগে তো বেশ চঞ্চল ছিলেন। সারাদিন চাকরি খোঁজা জয়ীতার সঙ্গে দেখা করা এবং সন্ধ্যায় নিজের ব্রান্ড নিয়ে মেতে থাকতেন। কিন্তু এখন সবকিছু ছেড়ে পালাতে কেন চাচ্ছেন। আসলে আপনি চান কী?
জানি কোনো কাকতলীয়ভাবে আপনি সবকিছু জানেন। তবে এটা কেন জানেন না আমার কী হয়েছে। এটার উওর আমিও খুজছি। এটা বলল দিপু।
আমি জানি আপনার কী হয়েছে। আপনার আর এই পরিবেশে থাকার ইচ্ছা নেই। আপনি মুক্তি চান এই অবস্থা থেকে। পালিয়ে যেতে চান অনেক দূরে। দিপু কে বলল বাঁশিওয়ালা।
হ্যা এটাই। আপনি তো সবকিছুই জানেন। কিন্তু এগুলো কী হবে। এটা কী আসলেই সম্ভব হবে। আমি চলে গেলে আমার বাবা মায়ের কী হবে। জয়ীতা কীভাবে থাকবে আর আমার ব্রান্ড এর জন্য গানই বা কে লিখবে।
কথাটা শুনে বেশ অট্টহাসি দিল বাঁশিওয়ালা। সে হাসি যেন থামার না। বাঁশিওয়ালার হাসি দেখে কিছুটা রেগে গেল দিপু। কিন্তু বাঁশিওয়ালা হেসেই যাচ্ছে। হঠাৎ দিপু বাঁশিওয়ালার উদ্দেশ্যে বলল
আরে মশাই আপনি তো বেশ খারাপ মানুষ। আমার দুঃখের কথাগুলো শুনে রীতিমতো হাঁসছেন। আপনার মধ্যে কোন অনুশোচনা নেই। কোথায় আমাকে একটু সান্ত্বনা দিবেন। তা না আপনি আমাকে রীতিমতো অপমান করছেন।
সান্ত্বনা! সান্ত্বনা দিলে আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আপনি আবার সেই আগের জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।
না সেটা হয়তো হবে না।
তাহলে সান্ত্বনা দিয়ে কী লাভ বলুন। এই সান্ত্বনা গুলো আমাদের জীবনে কোনো কাজেই আসে না। এগুলো শুধুমাত্র একটা মিথ্যা আশ্বাস।
বাঁশিওয়ালার এমন কথায় যেন চুপ হয়ে গেল দিপু। আসলেই তো এই সান্ত্বনা দিয়ে তার কী হবে। বাঁশিওয়ালা এক মনে তার সেই বাঁশি বাজাচ্ছে। আকাশের নক্ষত্র গুলোর দিকে এক অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে দিপু। হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে নক্ষত্র গুলো জ্বলছে ধিকে ধিকে। হঠাৎ বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুর থেমে গেল। বাঁশিওয়ালা বলে উঠল
আপনি ভুল ধারণা নিয়ে আছেন। আপনি চলে গেলে কারো কিছুই হবে না। আপনার বাবা মা কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবেন জয়ীতাও নতুন কাউকে খুঁজে নেবে আপনার ব্রান্ডও নতুন কাউকে খুজে নেবে। সবকিছু আবার আগের মতোই চলবে। আপনার না থাকায় কোনো কিছুতেই প্রভাব পড়বে না।
একটু মন খারাপ করে অন্যমনস্ক হয়ে দিপু বলল, সত্যি আমাকে কেউ মনে রাখবে না। আমি চলে গেল সবকিছু আবার আগের মতোই চলবে।
হ্যা। সব আগের মতোই চলবে। যাবেন আমার সঙ্গে!!
কোথায় যাব আপনার সঙ্গে।
নতুন এক দুনিয়ায়। যেখানে আপনাকে কেউ চিনবে না আপনি কাউকে চিনবেন না। আপনার কোনো এক্সপেক্টটেশন থাকবে না জীবন নিয়ে ভাবনা থাকবে না। আপনার প্রতি কেউ আশা রাখবে না। এমন জায়গা। এবং হারিয়ে যাওয়া সবকিছু আবার ফিরে পাবেন।
কী সত্যি আবার ফিরে পাব সবকিছু যেগুলো আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমার ঐ হলুদ রঙের বলটা, মামার দেওয়া বিদেশী রঙিন রং পেনসিল বক্স টা। কিংবা কিংবা...... না থাক।
কী আপনি কী জয়ীতার দেওয়া সোনার আংটি টার কথা ভাবছেন। যেটা ও আপনাকে দিয়েছিল। গত বছর হারিয়ে ফেলেছেন।
হ্যা।
তো কী যাবেন আমার সঙ্গে অজানায় হারিয়ে যেতে।
দিপু বলল বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকল। তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। হঠাৎ বলল হ্যা যাব আমি আপনার সঙ্গে।
বাঁশিওয়ালা একটা চোরা হাসি দিয়ে বলল ঠিক আছে কাল রাতে তৈরি থাকবেন। সবকিছু শেষবারের মতো দেখে আসবেন।
এটা বলে বাঁশি বাজাতে বাজাতে সামনের দিকে চলে গেল বাঁশিওয়ালা। কিছুক্ষণ পরেই যেন কুয়াশায় মিশে গেল বাঁশিওয়ালা। দিপু বাড়ি ফিরে আসলো।
চলবে.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গল্পটা বেশ জটিল হয়ে যাচ্ছে।আসলে বাঁশিওয়ালাটা কে? সে সবকিছুই জানে কি করে? এখন দিপু সত্যি ই কি তার সাথে কাল রাতে চলে যাবে?? পর্বটা শেষ করেন ভাইয়া তাড়াতাড়ি।ধন্যবাদ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য।