হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো,( পর্ব: 2 )
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
সময় টা তখন ২০২২ সালের মার্চ মাস। ২০২১ সালের শেষের দিকে শীতের আগে একদিন বরফ গোলা খেয়েছিলাম। কিন্তু শীতের মধ্যে আর পাইনি। সাধারণত শীতের মধ্যে এগুলো সেরকম কেউ খাই না। সেজন্য বিক্রিও করে না। ঐ চার মাস আমি অনেক খুজেও পাইনি। তখন মার্চ মাস চলছিল। আর কিছুদিন পরেই আমার পরীক্ষা শুরু হবে। আমি এবং আমার দুই বন্ধু নাভিদ ও তুহিন কলেজে গেছিলাম প্রবেশপএ আনতে। প্রবেশপএ নেওয়ার পরে আমরা কলেজ থেকে বের হয়ে হাঁটা শুরু করলাম কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের দিকে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন। তো যেতে যেতে দেখি কলেজের সামনেই গোলা বিক্রি করছে। দেখে বেশ খুশি হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার বন্ধু নাভিদ খেতে রাজি হয়নি। আমার বেশ কয়েকবার বলার পর ও রাজি হয়ে গেল। তখনই গিয়ে তিনটা বরফ গোলা অর্ডার করলাম।
সাধারণত এই দোকানগুলোতে বেশি দেরি করে না। ঐ তৈরি করতে যতক্ষণ সময় লাগে আর কী। তবে ওখানে আমাদের থেকে মেয়েদের সংখ্যা ছিল বেশি। তাতে আমার কী আমি তো একেবারে ভদ্র ছেলে ঐসব দিকে নজর দেয় না। কিছুক্ষণ পর গোলা পেয়ে গেলে আমি গোলা নিয়ে প্রথমে কয়েকটা ছবি উঠি। এরপর আমরা শুরু করলাম খাওয়া। প্রায় চার মাস পর আমি বরফ গোলা খেলাম। তখন মাএই গরম পড়েছে। আর দুপুরের রোদে বরফ গোলা বেশ দারুণ লাগছিল। তারপর আর খাওয়া হয়নি প্রায় দুইমাস। কারণ তিনদিন পর থেকেই ছিল আমাদের মাহে রমজান মান। সেজন্য ঐদিন ঐটা খাওয়া বেশ উপভোগ করেছিলাম। এখন ছবিগুলো দেখলেই দিনটার পুরো কথা মনে চলে আসে। কী জানি কবে এগুলো ভুলে যায়। সেজন্য কথাগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে রাখা ভালো হা হা।
এই ছবিগুলো দেখে আরও কিছু কথা মনে পড়ে গেল। এটা হলো গড়াই নদী হরিপুর ব্রীজ। সাধারণত ঐসময়ে গড়াই নদীটা একেবারে শুকিয়ে যায়। পানি একেবারেই থাকে না। মার্চ মাসে নদীর সাধারণত এই অবস্থায় থাকে। কুষ্টিয়াতে প্রায় বছর দুই নিয়মিত যাতায়াত করলেও কখনো হরিপুর ব্রীজে আমার যাওয়া হয়নি। ঐসময়ে আমার ভাইয়ের ছেলে অসুস্থতার জন্য কুষ্টিয়ার একটা শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তখন দিনের বেশিরভাগ সময় আমার হাসপাতালেই কাটত। এবং হাসপাতাল থেকে ব্রীজ টা একেবারেই কাছে। তো বিকেলের দিকে আমি একদিন সময় পেয়েছিলাম। তখন ভাবলাম না বাড়ি যাওয়ার পূর্বে একটু বিকেল টা এখানেই কাটিয়ে যায়। বিকেল বেলা এই হরিপুর ব্রীজের উপর অসংখ্য মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। সেদিন সেটার একটা বাস্তব প্রমাণ আমি পেয়েছিলাম। এবং শুক্রবার হওয়াই আরও বেশি মানুষ এসেছিল।
এই ছবিগুলো ঐদিন তুলেছিলাম আমি। মজার ব্যাপার হচ্ছে ঐ প্রথম এবং এখন পযর্ন্ত ঐ শেষবার। তারপর থেকে এখন পযর্ন্ত আমি আর হরিপুর ব্রীজে যায়নি। ফোনের গ্যালারীতে ছবিগুলো দেখে দিনটার কথা মনে পড়ে গেল। তারপর প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে না এইতো সেদিন ছিল দিনটা। এই দেড় বছরে আমার চেহারার কোন পরিবর্তন না হলেও আমার মন মানসিকতা দায়িত্ব সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ছবিগুলো ঐরকমই আছে। আমার স্মৃতিগুলো ধরে রেখেছে। এবং এই ব্লগ প্রকাশের পর থেকে আজীবনই থেকে যাবে। আমি অনেক আগেই বলতাম একটা ছবি শুধু একটা ছবি না। একটা ইতিহাস বা একটা পুরো ঘটনা বর্ণনা করতে পারে। আমার ক্ষেএেও ঠিক তাই হয়েছে। আজ এই পযর্ন্তই। পরের দিন আবার অন্য কোন এক হারিয়ে যাওয়া দিনের স্মৃতিকথা নিয়ে আসব। সবাই ভালো থাকবেন।।
.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। যেখানে কুষ্টিয়ার সুন্দর একটি স্থানের দৃশ্য খেয়াল করে দেখলাম হরিপুরের সেই সুন্দর ব্রিজ আজ পানি শূন্য হয়ে শুকিয়ে গেছে প্রায় এমন দৃশ্য ধারণ করে রেখেছিলেন পূর্বে আর শেয়ার করেছেন এখন। সত্যি বেশ ভালো লাগলো সুন্দর এই দৃশ্যগুলো দেখতে পেরে। পাশাপাশি সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন খাওয়া-দাওয়ার মধ্য দিয়ে সেটাও ফটোগ্রাফি করে রেখেছিলেন।
ভাই, তিন বন্ধু মিলে গোলা খাওয়ার মুহূর্তটি খুব এনজয় করেছেন তা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারছি। আর এনজয় তো হবেই পাশে যদি সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। যদিও বা আপনি খুব ভদ্র মানুষ😜 তা তো আমরা সকলেই জানি। মেয়ে দেখলে আপনি আবার সেদিকে একদমই তাকান না😍। যাই হোক ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন, একটা ছবি শুধু ছবি না বরং একটা ছবি ইতিহাস বা পুরো ঘটনা। আর তাইতো পুরনো দিনের সেই ছবিগুলো দেখে এত সুন্দর স্মৃতিচারণ করতে পারলেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো নিয়ে দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করার জন্য।
এটা ঠিক বলেছেন, পুরনো ফটোগ্রাফি গুলো দেখলে সেই সময়ের স্মৃতিগুলো চৌখের উপর ভেসে উঠে।আপনি চমৎকার ভাবে স্মৃতি রোমন্থন করলেন।ধন্যবাদ আপনাকে অনুভুতি গুলি শেয়ার করার জন্য।
এই বরফের গোলাগুলো কখনো খাওয়া হয়নি তবে শুনেছি এগুলো খেতে খুব মিষ্টি হয়। তিন বন্ধু মিলে খুব মজা করেছেন সেটা আপনার পোস্ট টি পড়ে বুঝলাম।এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া পুরনো ছবিগুলো দেখলে অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া পুরোনো কিছু স্মৃতিচারণ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলে ভাই মাঝে মাঝে পুরনো অ্যালবামের ফটোগুলো দেখলে অনেক কথাই মনে আসে। গত জীবনে যত সব স্মৃতি রয়েছে সেগুলোর একটি রূপরেখাও বটে এই পুরনো ছবিগুলো। যাইহোক অনেক ভালো লাগলো আপনার পুরো ব্লগ পড়ে। বিশেষ করে বন্ধুরা মিলে আইসক্রিমের গোলা খেয়েছেন সেটি আসলে অনেক মজার একটি বিষয়। আর আমিও ভাই আপনার মত ভদ্র । মেয়ে দেখলে এদিক ওদিক তাকাই না। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
গড়াই নদীর হরিপুর ব্রীজটি অনেক সুন্দর।কিন্তু মনে হচ্ছে নদীটি প্রাণ নিস্তেজ আর কোনো মাটি নেই,বালুভূমির চর জেগেছে।যাইহোক ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে।তাছাড়া শীতকালে বরফ গোলা না খাওয়াই ভালো তাতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে।যাইহোক গরমকালে আপনারা সবাই বরফ গোলা খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া।