এই অধ্যায় আমি পড়ে এসেছি!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
১ তারিখে ঢাকায় এসেছি। একটা চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য। ইন্টারভিউ দেওয়ার পরে ফলাফল যা আসছে খারাপ না। আমার চাকরি টা হয়নি। যাইহোক ব্যাপার না। কপালে যেখানে আছে সেখানেই হবে। আমি নিজেও চাইছিলাম বাড়ি থেকে দূরে কোথাও গিয়ে কিছুদিন সময় কাটাতে। হঠাৎ ঢাকায় চলে আসা। যাইহোক চাকরি টা যখন হলো না আমি ভাবলাম যাক কিছুদিন ঘুরে যায়। এখন বাড়ি গিয়ে তো ঐ সারাদিন শুয়ে থাকা। তো তারপর থেকে ঢাকায় রয়েছি আজ একসপ্তাহ। যতদিন ভালো লাগবে থাকব। আমি বতর্মানে রামপুরা তে আছি। জায়গা টা বেশ ভালো। বাসা টা একেবারে নিরিবিলি। শুধু খাওয়া ছাড়া আমার আর কোন কাজ করা লাগে না। কিন্তু সমস্যা একটাই ওয়াইফাই নেই। সেজন্য জিবির পর জিবি মোবাইল নেট ফুরিয়ে যাচ্ছে। সারাদিন বাসার মধ্যে থাকলেও বিকেল টা একটু প্রকৃতির মধ্যে যেতে চাই মনটা।
আমি যেখানে আছি এখান থেকে হাতিরঝিল যেতে হেঁটে পাঁচমিনিট মতো লাগে। এখন প্রতিদিন আমি সন্ধ্যার একটু আগে বের হয়। হাতিরঝিলে গিয়ে হাটাহাটি করি বসে থাকি এবং তারপর বাসায় ফিরি। এভাবেই চলছে। তো প্রতিদিনের মতো গতকালও গিয়েছিলাম হাতিরঝিলে। কিন্তু গতকাল একটা ঝামেলায় পড়ে গেছিলাম। যাইহোক আমি হেটে যাচ্ছি। হঠাৎ পেছন থেকে একজন আমাকে ডাকছে। লোকটার বয়স এই ২৫-৩০ এর মধ্যে হবে। মুখে মাস্ক পড়া। তো প্রথমেই পরিচয় দিল আমি এই এলাকার ছাএলীগের সভাপতি। তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করছে তোমার বাড়ি কোথায় এখানে কোথায় আসছে এসব। এরপর বলছে তুমি যে আমাকে লাথি দিয়ে চলে আসছ সেটা খেয়াল করছ। তখন আমি একটু অবাক হলাম। আমার যতদূর মনে পড়ে কারো শরীরের সঙ্গে আমার সংস্পর্শ হয়নি।
ততক্ষণে তার আরও কয়েকজন সদস্য এসে গেছে। অর্থাৎ তখন তারা মোট চারজন। তখন উনি বলছে ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই তুমি ভুল করেছ ব্যাপার না। এমনটা আর করবা না। যদিও আমি নিশ্চিত ছিলাম আমি কিছু করিনি কিন্তু তারপরও নিজের ভুল হতে পারে ভেবে আমি ক্ষমা চেয়ে নেয়। এরপর উনি বলছে ঠিক আছে সমস্যা নেই। তোমার কোন সমস্যা হলে আমাকে বলবা। আমার নাম্বার রাখ। আমার চারপাশে উনার বেশ কিছু সদস্য। উনার ফোনের পর ফোন আসছে উনি নিজেকে অনেক ব্যস্ত দেখাচ্ছে। এরপর আমাকে নাম্বার দেওয়ার অজুহাতে বলল তোমার ফোনটা দাও আমি তুলে দিচ্ছি। আমি তখনই ব্যাপার টা ধরে ফেলেছি। যথারীতি আমি ফোনটা দিলাম। আমার ফোনটা হাতে নিয়ে উনি নাম্বার তুলছে। ব্যাপার টা এমন একটা ডিজিট তুলছে আবার কাটছে। তখন উনাদের আরেকজন সদস্য আমাকে একটা ৫০ টাকার নোট দিয়ে বলছে এই যাও তো ভাইয়ের পানি পিপাসা লাগছে ঐ দোকান থেকে পানি নিয়ে এসো।
আমি তো আগেই ধরে ফেলেছি তাদের উদ্দেশ্য। আমি বললাম ঠিক আছে দাঁড়ান যাচ্ছি। আগে ফোন টা নিয়ে নেয়। উনি নাম্বার টা দিক। তখন একজন একটু উচ্চস্বরে বলছে এই তুমি ভাইকে চেন? আমি খুবই শান্তভাবে বললাম হ্যা চিনি। উনি নাম্বার টা দিক ফোনটা নিয়ে আপনাদের পানি এনে দিচ্ছি সমস্যা নেই। পরবর্তীতে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করেও উনারা আমাকে ওখান থেকে সরিয়ে দিতে না পেরে অবশেষে আমার ফোনটা দিয়ে দিল। এবং বলল যাও পানি আনা লাগবে না হা হা। আসার সময় মনে মনে বললাম তোদের মতো অনেক বাটপার কে দেখে এতদূর এসেছি। বলতে গেলে ওদের থেকে বড় বড় বাটপার এর সঙ্গে মিশেছি আমি। আমাকে বোকা বানানো কী এতোটাই সহজ হবে। আর দ্বিতীয়ত আমি যখন দেখি আমি কোন ভুল করিনি তখন আমি কাউকেই ভয় পাই না। সে যে ব্যক্তিই হোক। আমি ভুল করিনি তখন আমি তাদের নজরে নজর রেখে কথা বলি। মোটের উপর দিয়ে কাল আমার ফোনটা আমি বাটপারদের হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছি বলতে পারেন। এবং ওদের কেউ বলতে ইচ্ছা করছিল বৎস ঐ অধ্যায় আমি পড়ে এসেছি। অন্য কাউকে গিয়ে ধরো।
------ | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | Redmi 12 |
সময় | মার্চ,২০২৪ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ মারাত্মক ব্যাপার তো। তবে আসলেই অনেক বুদ্ধিমানের পরিচয় দিয়েছো তুমি। ঢাকা শহরে এসেছি প্রায় দুই বছর হয়ে যাচ্ছে এখন পর্যন্ত এমন সিচুয়েশনে পড়েনি। তবে একা একা পেলে ওরা একটু ঝামেলা করে। ভাগ্যিস তুমি মোহাম্মদপুর আসো নাই না হলে তো ওরা ছুরি ধরে নিয়ে চলে যেত। সাবধানে চলাফেরা কইরো।
আপনার এই পোস্ট আমাদের জন্য শিক্ষনীয় ভাইয়া। কারণ এমন ঘটনা আমাদের ছোট ভাই-বোনদের মাঝেও হয়ে যেতে পারে। বাটপারদের কত রকমের কৌশল থাকে। আপনি ভাগ্যের টাকা নিয়ে তাদের পানি আনতে যাননি নয় আপনার মোবাইল গায়েব করে দিতে। যাইহোক আপনার এই ঘটনা আমি আমাদের ভাইবোনদের মাঝে বলবো যেন এই বিষয়ে তারা সচেতন থাকে। সুন্দর একটি বিষয় আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
প্রথমত বলবো চাকরি হয় নি সেটা খারাপ লাগলো ৷ কিন্তু তার পরেও ব্যাপারটা বেশ ভয়ানক ঘটনা বা অনাকাঙ্খিত৷ আমিও শুনেছি ঢাকা শহরে এমনটা প্রায় ই ৷ তবে তারা অনেক জন ছিল এই দিকে আমার ভয় ছিল ৷ না জানি কথার মাঝে মারধর ৷ যা হোক ফোনটা নিতে পেরেছেন তো সেটাই যতেষ্ট ৷
আসলে মানুষ জীব বড় ভয়ংকর ৷
ভালো লাগলো পোষ্ট টি ৷
চাকরির বাজার বর্তমানে আসলেই খুব খারাপ। তবে চেষ্টা তো চালিয়ে যেতেই হবে। হাতিরঝিলে বিকেলে এবং সন্ধ্যার পরে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। যাইহোক বেশ ভালোই তো অভিনয় করলো লোকগুলো আপনার মোবাইলটা নিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে তাদের হাতে আপনার মোবাইল দেওয়াটা উচিত হয়নি। কারণ তারা মোবাইলটা নিয়ে চলেও যেতে পারতো। যাইহোক শেষ পর্যন্ত মোবাইলটা নিতে পেরেছেন, সেটাই অনেক। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।