ছোট মেয়ের নতুন বিদ্যালয়📚📖❤️
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
স্কুল বা বিদ্যালয় প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। সাংসারিক জটিলতাও জীবনের বাস্তবিক খুঁটিনাটি থেকে চিন্তামুক্ত চিত্ত এই ছাত্রজীবন । স্নিগ্ধ ও স্বচ্ছ বাতাসের মতোই নির্মল এই ছাত্রজীবন । স্কুল লাইফ বা ছাত্রজীবনে কাটানো সময়গুলো তাই প্রায় অধিকাংশ মানুষের কাছেই সবথেকে আনন্দঘন মুহূর্ত।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমন একটি জায়গা যেখান থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুধুমাত্র ভালো সার্টিফিকেট এর জন্য পাঠদান প্রদান করা হয় এমনটা নয় আমাদের সকল বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করে থাকেন শিক্ষকগণ। তাইতো শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর।
আমার ছোট মেয়ে অর্থী চাকী ষষ্ঠ শ্রেণির একজন ছাত্রী।এখানে বেগম মজিদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আছে।আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমার বড় মেয়ে বর্ষা চাকী এবার এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের সহিত উত্তীর্ণ হয়েছে আর ওর কলেজের জন্য আমাদের বগুড়া যেতে হচ্ছে।আমি চাইছি না বড় মেয়েকে এই মুহূর্তে হোস্টেলে দিতে কারণ ও খুব বেশি বড় নয় এখনো দিন দুনিয়ার সম্পর্কে ওর তেমন কোনো ধারণা নেই। এমনিতেই আমার মেয়েরা মা ছাড়া কিছুই বোঝেনা আমি ছাড়া যেনো ওরা গোটা দুনিয়া অন্ধকার দেখে তাই একা রাখা সম্ভব নয়।আর সেই কারণে ছোট মেয়েকেও এখান থেকে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
বছরের মাঝামাঝি নতুন স্কুলে ভর্তি করানোটা অনেকটাই দুষ্কর ব্যাপার হয়ে যায়।আবার দূর থেকে এসে এই স্কুলে পরীক্ষা দেওয়াটাও অনেকটা কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।সব মিলিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে ছিলাম কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না।সেদিন একজন পরিচিত মানুষের মুখে শুনতে পেলাম যে আগামীকাল সমস্ত স্কুল ছুটি হয়ে যাবে আর যেদিন খুলবে সেদিন থেকেই পরীক্ষা শুরু।কথাটা শুনেই যেনো মাথাটা ঘুরে উঠলো কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ছোট মেয়েকে সাথে নিয়ে ওর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলাম তাকে বিষয়টি জানালাম।প্রধান শিক্ষক বললেন একবার চেষ্টা করে দেখতে পারো যদি ভর্তি করানো সম্ভব হয় করিয়ে ফেলো না হলে আমি একটা ব্যবস্থা করে দিবো।প্রধান শিক্ষক আমার জামাইবাবু সম্পর্কে তাই উনি আমাকে এতোটুকু আশ্বস্ত করলেন।তারপর ছোট মেয়েকে নিয়ে আমি বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।আমি যেখানে বাসা নিয়েছি তার পাশে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আছে সেখানে গেলাম।
বিদ্যালয় প্রবেশ করে একজন ভদ্রলোককে বসে থাকতে দেখলাম তাকে জিজ্ঞেস করলাম প্রধান শিক্ষক সাহেবের রুম কোনটা?উনি বললেন কি সমস্যা আমাকে জানাতে পারেন, আমি এই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক।তাকে সম্মান প্রদর্শন করে মেয়ের ভর্তির বিষয়টি বললাম।তখন উনি বললেন অফিস রুমে চলুন,তারপর অফিস রুমে গিয়ে বসে আমার সকল কথাগুলো ওনাকে বিস্তারিত ভাবে জানালাম।তিনি বলছিলেন বর্তমান যে শিক্ষা কারিকুলাম তাতে করে নতুন কাউকে ভর্তি করানোটা সম্ভব নয়। শুনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেলো।তারপর স্যারকে অনেক অনুরোধ করলাম মেয়েকে যদি এ বছর ভর্তি করাতে না পারি তাহলে আরো ছয়টা মাস ওকে ঘরে বসিয়ে রাখতে হবে বিষয়টি খুবই কষ্টদায়ক আমার জন্য।অনেক কিছু বলার পর তিনি প্রধান শিক্ষকের নিকট গেলেন সবকিছু খুলে বললেন এবং প্রধান শিক্ষক ভর্তির অনুমতি দিলেন।
স্কুলের সকল নিয়ম-কানুন মেনে জানুয়ারি থেকে ওকে একদম রেগুলার করে ভর্তি করানো হলো তারপর এক সেট নতুন বই দেয়া হলো।আমি স্কুলটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম শ্রেণিকক্ষ গুলো বেশ সুন্দর ছিলো শিক্ষকদের আলাদা আলাদা রুম ছিলো বেশ বড়সড় একটি লাইব্রেরি আছে যেখানে টিফিন টাইমে মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের গল্পের বই পড়তে পারে।সবকিছু দেখে বেশ ভালোই লাগলো আশা করি খারাপ হবে না!প্রতিটি শিক্ষককে দেখে বেশ ভালো লাগলো সকলেই অনেক স্মার্ট এবং বেশ পরিপাটি।স্কুলের বিশাল মাঠ চারোদিকে ফুলের বাগান সবকিছুই বেশ মনোরম পরিবেশ লাগলো আমার কাছে।বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভর্তি করানো নিয়ে খুবই উদ্বেগ ছিলাম সেখান থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলাম।
সবাই ভালো থাকবে,সুস্থ থাকবেন এবং আমার মেয়ের জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমে আপনার বাবুর জন্য দোয়া করি যেন সে ভালোভাবে লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হতে পারে। বাবুর নতুন স্কুল দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। নতুন পরিবেশে লেখাপড়া করতে খুবই ভালো লাগে। আশা করবো বাবুকে দেখেশুনে রাখবেন এবং বাবুর যত্ন নিবেন।
অনেক সুন্দর পরিবেশ স্কুলটির।এরকম মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বাচ্চাদের মানসিক বিকাশ ঘটে।শুভ কামনা অর্থীর জন্য। ধন্যবাদ পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
পোস্ট পড়তে পড়তে যখন জানতে পারলাম প্রধান শিক্ষক ভর্তির জন্য অনুমতি দিয়েছে তখন অনেকটাই স্বস্তি পেলাম যাইহোক ছোট মামার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আমরা আমাদের পড়াশোনার জীবনে বিভিন্ন ধাপে স্কুল পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু জীবনের প্রথম স্কুলটি আমাদের কাছে খুবই স্মরণীয় হয়ে থাকে। স্কুলে প্রথম দিন যাবার অনুভূতিটা সত্যিই অসাধারণ হয়। এটি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত স্মৃতিময় হয়ে থাকে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এরকম স্মৃতিময় একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।