মনের রোগ বড় রোগ😥
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমি পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে এখন অনেকটাই ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজ আমি একটি নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি।আশাকরি আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
মনের রোগ হলো একপ্রকারের ব্যবহারিক বা মানসিক দুর্দশা।মানসিক স্বাস্থ্য হলো আমাদের মন, আচরণগত ও আবেগপূর্ণ স্বাস্থ্যের দিকটি। আমরা কি চিন্তা করি, কি অনুভব করি এবং জীবনকে সামলাতে কিরকম ব্যবহার করি এগুলোই আসলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য। একজন মানসিক ভাবে সুস্থ মানুষ নিজের সম্পর্কে ভালো ভাবে এবং কখনোই কিছু আবেগ যেমন রাগ, ভয়, হিংসা, অপরাধবোধ বা উদ্বেগ দ্বারা আবিষ্ট হবেনা।কিন্তু একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি সবসময়ই রাগ,ভয় হিংসা অপরাধবোধ এগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে দিন দিন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শরীরের রোগের চেয়ে মনের রোগ হলো সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ আকার ধারণ করে।এই রোগে আমরা অনেকেই আক্রান্ত হয়ে থাকি,কিন্তু আমরা কখনোই এই রোগকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি না বা লজ্জায় কারো কাছে বলতে পারি না।আমাদের আশেপাশে যারা থাকে তারাও কখনো বুঝতে পারে না বা চেষ্টা করে না।আজ থেকে তিন বছর আগে আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং আপন মানুষ সে হলো আমার "মা" তাকে হারিয়ে ফেলি এবং সেই কষ্ট টা আমি সহ্য করতে পারিনি। আর তারপর থেকেই আমি মানসিকভাবে অনেকটাই বিধ্বস্ত হয়ে একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।আমার দিন-রাত কিভাবে কেটেছে তা শুধুমাত্র আমার ঈশ্বরই জানেন।
হয়তো ঈশ্বর সহায় ছিলো বলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিলাম এবং সেই সাথে নতুন এক জীবনের সূচনা হয়েছিলো আমার বাংলা ব্লগ এর মাধ্যমে।বেশ ভালোই চলছিলো সবকিছু।স্বামী সন্তান সংসার আর বাকি সময় টা আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সাথে,সবমিলিয়ে এটা ছিলো সুস্থতার একটা বড় লক্ষ্মণ।আমি যে ডাক্তারের চিকিৎসাধীন রয়েছি তার কাছে তিন মাস পর পর আমাকে যেতে হয়,আমার সকল রিপোর্ট দেখে ডাক্তারও অনেক খুশি। তিনি বলেছিলেন আমি শারীরিক ভাবে এখন ৯০% সুস্থ আর কিছুদিন গেলে হয়তো আমার সকল ওষুধ বন্ধ হয়ে হয়ে যাবে,তখন আর আমাকে মাসে হাজার হাজার টাকার ওষুধ খেতে হবে না।শুনে আমরাও অনেক খুশি হয়েছিলাম।ওষুধ যেমন আমাদের রোগ সারিয়ে তোলে সেই সাথে আবার নতুন রোগ কেও আমন্ত্রণ জানিয়ে ডেকে আনে।প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে,একটা রোগ ভালো করে কিন্তু সেইসাথে নতুন রোগেরও সৃষ্টি করে।তাই ওষুধ পরিহার করাটাই শ্রেয়।
সুস্থতা হলো ঈশ্বরের আর্শীবাদ স্বরূপ যা সবার জীবনে থাকে না।ঠিক তেমনি আমার এই আশীর্বাদ খুব বেশিদিন স্থায়ীত্ব হলো না।সাম্প্রতিক সময়ে আমি আবারও একটা বড়সড় মানসিক ভাবে ধাক্কা খাই,যা সামলানোটা আমার জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে।সেই থেকে আমি আবারও অনেকটাই ডিপ্রেশনে চলে যাই।কাজকর্ম কোনোকিছুই আর ভালো লাগে না,সারাদিন শুধু চিন্তা আর চিন্তা এটা কেনো হলো!বা আরও বড় ধরনের কিছু হতে পারতো!এই যে হতে পারতো ভাবনাটাই আমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ালো।যদিওবা তেমন কিছু ঘটেনি কিন্তু আমার নেতিবাচক চিন্তা যদি হতো,তাহলে তখন কি হতো!!এই ভাবনাটা মন থেকে কোনোভাবেই দূর করতে পারিনি, আর তার খেসারত হিসেবে আবারও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি।
তখন থেকে আজ পর্যন্ত সেই একই অবস্থা কোনোভাবেই যেনো মানসিক ভাবে ভরসা পাচ্ছি না।অল্পতেই ভয় কাজ করে সবকিছুই খারাপ মনে হয়,অল্প কিছু হলেই মনে হয় আরও বড় ধরণের কিছু ঘটবে!যেকোনো ঘটনা ঘটলে সেটা ধৈর্য্য সহকারে বুদ্ধি করে সামলানো যায়,কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটেইনি কিন্তু মনে মনে চিন্তা করে অনেক বড় কিছু ভাবাটা সেটার কোনো প্রতিকার নেই।আর এটা যে কি পরিমাণ যন্ত্রণার তা বলে বোঝানো কখনোই সম্ভব নয়।
দীর্ঘদিন কাজকর্মে কোনোভাবেই মন বসাতে পারছিলাম না,তারমধ্যে দূর্গা পূজা চলে আসলো।সবমিলিয়ে একটা বড় বিরতি নেওয়ার চিন্তা করেই টিকিট কেটে কাজের বিরতি নিলাম।তারপর গ্রামে ঘুরতে গেলাম সেখানে গিয়ে আপনজন পরিচিত মুখ দেখে বেশ ভালোই লাগলো।পূজার কয়দিন মোটামুটি ভালোই কেটেছে।তারপর আবারও নিজের সংসারে ফিরে আসা আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়লাম এবং সেইসাথে মনস্থির করলাম আস্তে আস্তে কাজের দিকে মনোযোগী হওয়া দরকার আর তাই আজ আবারও আপনাদের সাথে যুক্ত হয়ে গেলাম।আর আজ অনেক দিন পর আবারও কাজে ফিরতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। হয়তো কাজের গতি ফিরতে একটু সময় লাগবে, তার কারন হলো অসুস্থতা দীর্ঘ সময় বিরতি কাজের গতি অনেকটাই কমে আসছে বুঝতে পারছি।কিন্তু তারপরও মন প্রাণ দিয়ে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো আশাকরি আগামী দিন থেকে আবারও সম্পূর্ণরূপে নিজেকে প্রকাশ করতে পারবো।
সবাই ভালো, সুস্থ থাকবেন আর আমার জন্য আশীর্বাদ,দোয়া করবেন যাতে সবসময়ই সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে পারি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 5/7) Get profit votes with @tipU :)
খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। মনের রোগ আসলেই বড় রোগ। যার মন ফ্রেশ তার দুনিয়া ফ্রেশ। যার মনের মধ্যে খুব চিন্তা তার দুনিয়ায় শান্তি নাই। কিন্তু নিজের কাজের বেলায় যখন অলসতা সৃষ্টি হয় সেখানে দোষ দেয়ার কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু কারণ থাকে অজুহাত। যাই হোক আপনি আবার একটিভ হবেন এটাই কামনা করি।
জ্বি ভাইয়া যার মন যতো ফ্রেশ তার চিন্তাভাবনাও ততোই উন্নত।আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে করে আবারও আগের মতো কাজে মনোনিবেশ করতে পারি।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম ঠিক কথা বলেছেন। মানসিক স্বাস্থ্যই মানুষকে অনেকটা চাঙ্গা করে দেয়। শারীরিক অক্ষমতা সারানো যায়, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন সব সময় সম্ভব হয় না। সবমিলিয়ে আপনি একটি দারুণ প্রাসঙ্গিক পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন আজ।
হ্যাঁ দাদা আমরা চাইলেই শরীরের রোগ সারিয়ে তুলতে পারি, কিন্তু মনের রোগ সহজে সারানো যায় না।ধন্যবাদ দাদা।
হ্যাঁ আপু মানুষের শরীরের রোগের চেয়ে মনের রোগ মানুষকে বেশি আক্রান্ত করে। আর এই রোগের আক্রান্ত কমবেশি সবাই। আর মানুষ অল্পতে যদি ভয় পেয়ে যায় তখন মনে হয় তার অসুখ হয়ে গেছে। যাইহোক এটা শুনে বেশ ভালো লাগলো আপনি ৯০% সুস্থ। আসলে সুস্থতা হচ্ছে আল্লাহর বড় নেয়ামত। আর আমি মনে করি সব মানুষ সুস্থ থাকা দরকার। সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া যখনই আমরা বেশি ভয় পাই তখনই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি।সুন্দর মন্তব্য টি করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।