ছোট বেলার মজার স্মৃতি||নানার বাড়িতে সবাই মিলে মাছ ধরার গল্প।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
সময়টা ছিল বর্ষাকালের শুরুর সময়। আর আমি বোধহয় তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি।আর আমি ছিলাম নানার বাড়িতে।আসলে আমার ছোটবেলার স্মৃতির বেশিরভাগ সময়ই নানার বাড়িতে ছিল।সেখানে আমার বয়সী থেকে শুরু করে বড় ছোট সবাই ছিল।আর আমার নানার বাড়িতে সারাবছরই অনেক লোকজন থাকতো। বিভিন্নরকম কাজের জন্য লোক রাখা হতো।
তো যাইহোক আমার মেঝো আন্টির বিয়ে হয়েছিল কিছুমাস আগে। তখন আমার মেঝো আংকেল আমার নানাদের পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখে অনেক মাছ। এক পুকুর থেকে অন্য পুকুরে যাচ্ছে।আমার নানার বাড়ি একা বাড়ি,আর বড় পুকুর ছিল ১টা, আর ঘরের আশেপাশে মিলিয়ে আরও ৩টা ছোট ছোট পুকুর ছিল। আর সব পুকুরেই মাছে ভরা ছিল।বর্ষার শুরু হলেও ঘরের দক্ষিন পাশের পুকুরটায় পানি কম ছিল। আর সেটাতে ছিল প্রচুর মাছ।
তখন আমার মেঝো আংকেল বললো এই পুকুরে মাছ ধরে নাকি। তখন সবাই বলল যে মাছ তো অনেক শুধুমাত্র জাল দিয়েই ধরা হয়।তখন আমার মেঝো আন্টি বললো যে মাছ ধরতে।তখন আমার বড় মামা আর মেঝো মামা জাল দিয়ে মাছ ধরতে নেমেছিল। আর আমিতো সবসময় মামাদের আশেপাশেই থাকতাম,আর কি করে সেটাতে গিয়ে ঝামেলা বাঁধাতাম। এক পর্যায়ে আমি তার সাথে ধীরে ধীরে পুকুরে নেমে গেলাম। আর এদিকে আমি যে পুকুরে নেমেছি সেটা কেউ দেখেইনি,হাহাহা।
যাইহোক, পরে মামা দেখে তো বকাবকি করছে, কেন নামলাম।তখন বললাম যে আমিও তাদের সাথে মাছ ধরবো। পানি যেহেতু কম ছিল তাই মামা দুজনে মিলে দুই পাশ ধরে জাল টানছিল। আর অনেক মাছ থাকার কারণে জালের মধ্যে অনেকগুলো মাছ ধরা পড়েছে। আর আমি গিয়ে জাল টানার পরে মাছগুলো বের করছিলাম। এদিকে কি যে মজা লাগছিল অনেকগুলো মাছ পড়েছে জালের মাঝে। জালের উপরে হেঁটে হেঁটে মাছগুলো ধরার মজাই ছিল আলাদা।
এভাবে প্রায় আধাঘণ্টার মতো আমি বিভিন্ন ভাবে মাছ ধরছিলাম। মামারা একদিকে জাল টানছিল আমি অন্যদিকে গিয়ে হাত দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছি। আর এভাবে আমি একটি শোল মাছ পেয়ে গেলাম। আর আমার এই মাছ ধরা দেখে আমার ছোট আন্টিরা এবং বাকি মামারা বলল যে আজকে সবাই মিলে মাছ ধরবো। যেই কথা সেই কাজ সবাই দল বেঁধে নেমে গেল মাছ ধরার জন্য।
সবাই নামার পর মাছগুলো লাফালাফি করছিল। কারণ ছোট একটা পুকুরে যদি ১০ জন লোক নেমে যায় তাহলে মাছ নিজে সাঁতার কাটার জায়গাই তো পাবে না। যাইহোক সবাই নিজের মতো করে মাছ ধরছিল। দুজনে এদিক সেদিক করে জাল টান ছিল। আর আমি গিয়ে জালের উপরে লাফালাফি করে মাছ ধরে নিয়ে আসতাম। এভাবে বড় বড় পাতিল নামানো হলো। বাড়ির সবাই এক প্রকার আনন্দ করছিল। এদিকে মাছ, ওদিকে মাছ লাফালাফি করছিল।
অনেক সময় মাছ লাফ দিয়ে নিজেই হাঁড়িতে চলে গেল, হাহা।আর এই ব্যাপারগুলো বেশ মজার ছিল। এক পর্যায়ে আমি পায়ের নিচে একটা মাছ অনুভব করলাম। তখন ডুব দিয়ে মাছটা নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। নানুকে জোরে ডাক দিয়ে বলছি আমি একটা বড় শোল মাছ পেয়েছি। এটা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে দেখলাম এটা লাফিয়ে আমার হাত থেকে পড়ে গেল। আর পড়ে যাবার সাথে সাথে সবাই মিলে হাসাহাসি শুরু করে দিল। তখন আমি আবার ডুব দিয়েছি মাছটা ধরে ফেলেছি।
সাথে সাথে পাশে থাকা একটা পাতিল রেখে দিয়েছি আর এটা নিয়েই আমি উপরে উঠে বললাম, দেখো এই মাছ আজকে আমি খাব তোমাদের কাউকে দেবো না হাহাহা। যা হোক সেদিন প্রচুর মাছ উঠেছিল। বড় বড় দুটো পাতিল এবং বড় দুটো বালতি ভরে বড় বড় মাছগুলো উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। পুকুরের প্রায় অধিকাংশ মাছই সেদিন আমরা তুলে ফেলেছিলাম। বড় মাছগুলোই তুলেছি ছোটগুলো ছেড়ে দিয়েছি। আসলে সেই ভাবে আর কোনদিনও কেউ মাছ ধরতে পারেনি নানার বাড়িতে। আর এটাই ছিল আমাদের সর্বপ্রথম এবং সর্বশেষ মাছ ধরার আনন্দের মুহূর্তটা। আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | কবিতা |
ক্যামেরা.মডেল | জে৫ প্রাইম |
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কোথায় আছো আপু মামার বাড়ি মধুর হাড়ি আম কুড়াতে সুখ। তবে আপনি আমের পরিবর্তে মাছ কুরিয়েছেন। তবে যাই হোক আপু আপনার মামার বাড়ির কথা শুনে। আমার ছোটবেলার নানুর বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। আমার মামার বাড়ি অবশ্য পুকুর ছিল না তবে ফলের গাছ ছিল প্রচুর পরিমাণে । তবে আপু মাছ ধরার নেশাটাও কিন্তু কম যায় না।শোল মাছ ধরাটা কিন্তু অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আপু সবাই কিন্তু শোল মাছ ধরতে পারে না। আপনি যখন দ্বিতীয় বার আবার শোলমাছটি ধরেছিলেন তখন কিন্তু আপনার অনেক ভালো লেগেছিল। এবং আপনি অনেক আনন্দ পেয়েছিলেন। যাইহোক আপনার নানীর বাড়ির কথা পড়ে আমার নানির বাড়ির সৃতি মনে করে দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
সেদিনের কথা এখনো মনে পড়ে,বেশ মজা করেছিলাম সবাই মিলে।
পুকুরে মাছ ধরার মুহূর্ত গুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। ছোট পুকুর আর এজন্য মাছ গুলো বেশি লাফালাফি করতেছিলো। কারন তারা তো চলাচলের জন্য জায়গা পাচ্ছিলো না। আপু আপনি মাছ গুলো অনেক সুন্দর করে ধরেছিলেন। আপনার লেখা গুলো পড়ছিলাম আর আমার ও ছোট বেলায় স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। আমাদের পুকুরে আমিও কয়েকবার মাছ ধরেছিলাম। আপনার অনূভুতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ছোটবেলার কম বেশি সবারই এরকম স্মৃতি রয়েছে। আর একটা পড়তে গেলে নিজের গুলো মনে পড়ে যায়।
আপনি তো দেখছি ছোট বেলায় ভারি দুষ্ট ছিলেন আপু।নানা বাড়িতে আদরে আদরে আরও দুষ্টমী বেড়ে গিয়েছিলো বুঝতে পারছি।চুপি চুপি পুকুরে মাছ ধরতে নেমেছেন প্রথমে। আপনি ডুব দিয়ে মাছ ধরে ফেলেছে বাবা কতো সাহস।মাছটি হাত থেকে পড়ে গেছে আবারও ডুব দিয়েছেন ধরার জন্য জেনে ভালো লাগলো।খুব সুন্দর ছিলো আপনার নানা বাড়িতে মাছ ধরার স্মৃতিচারণ করে গল্পটি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
হাহাহা আপু,আমি সবার আদরের ছিলাম তো তাই একটু দুষ্টুমি করতাম,এখন ভালো হয়ে গেছি🤣।