সুখে থাকতে ভুতে কিলায়।বাস্তব ঘটনা নিয়ে লেখা।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
বাস্তবিক একটা ঘটনা এই ২দিন যাবৎ আমাদের বাড়িটাকে একদম নির্বাক করে দিয়েছে।আহ,মানুষ এমন কেন হয়।সুখে থাকতে ভুতে কিলায়,বাংলা একটা প্রচলিত কথা।আর এটাই হলো আমাদের বাড়ির এক লোকের সাথে। গতকাল রাত ৯টার ঘটনা।হঠাৎ করেই বাড়িতে সিএনজি এলো।আমরা জানালা দিয়ে দেখেছি কিন্তু কে এলো সেটা আর যাচাই করিনি।কারণ যেহেতু বাড়ির ভেতরের দিকেই গিয়েছে সে হিসেবে ভাবলাম কেউ না কেউ এসেছে।যাইহোক নিভৃতকে নিয়েই আমরা খেলা করছিলাম।রাত ১০টার পর খেতে গেলাম।খাওয়া শেষ হতে না হতেই এলো কল,আম্মুর কাছে।
ওপাশ থেকে আমার এক বড় ভাই আম্মুকে বলতেছে যে আপনাদের বাড়িতে নাকি আপনার নতুন জা এসেছে।এই শুনে তো আম্মু অবাক,ভাবলো কি না কি।পরে যখন ডিটেইলস জানতে লাগলো তখন বললো যে তিনি নাকি কোনো এক মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। তখন আমরা সবাই শুনেছি কিন্তু বিশ্বাস করছিলাম না।কারণ আমরা কখনো বিশ্বাসই করি নি এসব কিছু হবে।গত রমজানেই তার মা মারা যায়।তবে তিনি ছিলেন পালক মা।মানে ছোট বেলায় সেই কাকাকে উনি নিয়ে এসেছেন এবং বড় করেছেন।তার সাথে ছোট আরেকজন মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন।মোটকথা আমার সেই দাদুর ছেলেমেয়ে ছিলনা বলে তিনি ২জনকে দত্তক নিয়েছিলেন।
কিন্তু এই ছেলেকে তিনি নিজের সন্তান থেকেও বেশি আদর যত্নে বড় করেছিলেন। কিন্তু সেই সন্তান ধীরে ধীরে মায়ের সাথে নহুব বাজে ব্যবহার করতো।বিয়ে করিয়েছিল তা মা বাবা মিলে ২০১১ সালে।২০১২ সালেই তার বাবা মারা যায়।কিন্তু ধীরে ধীরে তার মা তার কাছে অবহেলিত হতে থাকে।সে কোনো কাজকর্ম করে না।সে সবসময় অন্যের থেকে নিয়ে খেয়ে থাকে।জায়গা জমি নিয়েও অনেক ঝামেলা ছিল,সেই জায়গা নিজের যা যা পেয়েছে সেগুলো বিক্রি করে করেই খাচ্ছে।এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো কাজ সে করে নি।আজ কোনো কাজ তাকে ধরিয়ে দিলে ২দিন পর সেখান থেকে চুরি করে পালিয়ে যাওয়া তার স্বভাব।
এর মাঝে তার ওয়াইফ চাকরি করেই সংসার চালিয়েছে।প্রথম মেয়ে হওয়ার পর থেকেই তার স্ট্রাগল শুরু হয়েছে।কিন্তু কাকা কখনো এসব যেন বুঝতোই না।বরং প্রতিনিয়ত কাকির সাথে আর মায়ের সাথে ঝগড়া করতো।এরপর ২য় মেয়ে হলো,আর কাকি তখন চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়।প্রায় ২বছর চাকরি ছাড়া চলেছে কিন্তু তার স্বামীর বিন্দুমাত্র বুঝ নেই।সে নিজের মত অনেক মেয়ের সাথে কথা বলে আর তাদের থেকে টাকা নিয়ে চলে। এটা বাড়ি এবং এলাকার সবাই জানে।একনামে সবাই তাকে চাপাবাজ নামে চিনে।
যাইহোক এখন প্রায় ৪ বছর ধরে কাকি একটি সরকারি চাকরি করছে।দলিল লেখকের কাজ। তিনি বাড়ি থেকেই আসা যাওয়া করতেন।২মেয়েকে তাদের দাদু দেখে রাখতো।কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে তারা ফেনীতে বাসা নিয়েছিল।মা অসুস্থ ছিল তাই তার মেয়ের কাছেই ছিল।তবে মারা যাওয়ার আগে বাড়িতে এসে কিছুদিন থেকে আবার ফেনিতে তাদের বাসায় গেল এবং সেখানেই মারা গেল।মাটি দেয়ার কিছুদিন পর তারা আবার বাসায় ফিরে যায় বাড়িতে তেমন আসে না। কিন্তু আগে তো ঝগড়া হলে বাড়িতে দেখা যেত এখন তো আর কেউই দেখছে না।যাইহোক কালকে হঠাৎ করেই এসব শুনে আমরা অবাক হলাম।
এখানে তো তার কিছু ইতিহাস শেয়ার করলাম, এখন আসি মূল ঘটনায়।আমরা রাতের খাওয়া শেষ করেই সামনের দিকে এলাম।আমার যে বড় ভাই কল দিয়ে বলেছিল সে আমাদের ঘরে এলো।বললো বউ দেখেছি কিনা।তখন আমরা বলছিলাম এসব কি কথা, ২টা মেয়ে আর বউ বর্তমান রেখে এখন কাকে নিয়ে এসেছে।তখন তারা সম্পূর্ণ ঘটনা বললো।রাত ৮টায় সে তার নতুন বউকে নিয়ে বাজার দিয়ে আসতেছিল, হোটেল থেকে ভাত নিচ্ছিল।তখনই সবার চোখে পড়ে যায়।কারণ নতুন বউ নতুন শাড়ীতেই ছিল,বাজারের উপরে।এরপর আমাদের বাড়ির মুরুব্বীদের কল দেয়া হলো, যাচাই করার জন্য।তখন সবাই বললো বাড়িতে গিয়ে দেখতে। তাই তারা এসেছে।
এদিকে সবাই এসে আমাদের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আসলেই কি ঘটনা সত্যি তা যাচাই করতে।ইতোমধ্যেই তার প্রথম বউ ফেনী থেকে কল করলো আমার এক জেঠিমায়ের কাছে।তিনি বলছিলেন তার স্বামী কি সত্যিই কাউকে নিয়ে এসেছে?তখন জেঠি বললো আমরা তো জানিনা,তখন তিনি বের হয়ে দেখেন আশেপাশে মানুষ আছে তবে কাকা দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।এখন তিনি জানালেন কাকাকে দেখেছে কিন্তু কোনো মহিলাকে না।তখন আবার আমার জেঠাতো ভাইকে ভিডিও কল দিয়ে বলে ঘরে যেতে,সব দেখাতে।আসলেই কি কেউ আছে কি না। কিন্তু তখন সে কাউকে পায় নি।আবার সে বেরিয়ে গেল, এদিকে কাকা দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তারা সবাই বাইরে ঘুরঘুর করছে,আর জানালা দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে যে কেউ সত্যিই আছে কিনা।.....(চলবে)
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | বাস্তবিক ঘটনা |
ক্যামেরা.মডেল | জে৫ প্রাইম |
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে আমাদের সমাজে এখনো দেখা যায় যে ঘরে একটি স্ত্রী থাকতেও দ্বিতীয় বিয়ে করে অশান্তি ডেকে আনা। আসলে এ ধরনের কাজগুলো অতীতে খুব হয়েছিল তাই এর চলন এখনো কাটেনি। কিন্তু এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে আমাদের সকলের একেবারেই বিরত থাকা উচিত এবং সকলকে সচেতন হওয়া উচিত।
সুখে থাকতে তাদের সহ্য হয় না, তাই একটু বেশি সুখে থাকার ইচ্ছা জাগলো তার।
আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন মানুষের সুখে থাকতে ভুতে কিলায়। খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা একেতো নিজের কাজ করে না কোন ইনকাম নেই তার উপর বড় বউয়ের টাকায় সংসার চলে, সেই লোক আবার এরকম একটি ঘটনা ঘটাতে পারে মাথায় কাজ করল না আমার বিষয়টি জেনে। তার উপর আবার দুটো ছেলে মেয়ে আছে ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করেও আপনার ঐ কাকার ২য় বিয়ে কোনভাবেই করা উচিত হয়নি। পরবর্তী ঘটনায় কি ঘটে তার অপেক্ষায় রইলাম।
"সুখে থাকতে ভুতে কিলায়" একদম চরম সত্য কথা বলেছেন আপু। আর তাইতো আপনার সেই কাকা, ঘরে প্রথম পক্ষের বউ আবার দুই মেয়ে থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরে নিয়ে এসেছে। এমনিতেই তার স্বভাবে ছিল অনেক অনেক দোষ, তার ওপরে আবার এমন জঘন্য একটা কাজ নিশ্চয়ই তাকে কখনো শান্তি দেবে না। আপু আপনি বাস্তব ঘটনাটি খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন, আর এই বাস্তব ঘটনার শেষ মুহূর্তে কি হলো তা জানার জন্য অধীর আগ্রহে রইলাম।
আসলে আপু আপনি ঠিকই বলেছেন সুখে থাকতে ভুতে কিলাই। আসলে আজকাল আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা সুখের সময়টাও দুঃখময় করে কাটাই। আসলে প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করাটা খুবই খারাপ একটা বিষয় এবং সমাজের চোখে এটি বিশাল একটা অপরাধ। তবে বাস্তবিক একটা বিষয় পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
যারা প্রথম বউ রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে তাদেরকে দেখলে আমারও এটাই মনে হয়। আসলেই তাদের সুখে থাকতে ভুতে কিলায়। এ সমস্ত লোক জেনেশুনে সংসারে অশান্তি টেনে আনে।পরে পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু।সত্য ঘটনা অবলম্বনে সুন্দর এই গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
এমন খারাপ প্রকৃতির লোকদেরকে ধুলাই দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করা অনেক দরকার। এমনিতে তো কোন কাজকর্ম করে না সেই সাথে আবার দ্বিতীয় বিয়ে। অনেক নাজাহাল একটি অবস্থা আপু। আপনার বিস্তারিত লেখা গুলো পড়লাম খুবই খারাপ লাগলো। এই ধরনের লোকদের কাছে যে কোন কাজ করতেই আসলে কোনো বাধা হয় না। শেষমেষ প্রথম বউ অনেক বেশি বিপদে পড়লো। আপনি বিষয় টি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন ধন্যবাদ।
আসলে আপু, স্বার্থের জন্য অনেকে অনেক কিছুই করে।যদিও আমাদের বাড়ির তথাকথিত কিছু ভদ্রলোক আছে যারা চায় তার সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে।তাই তারা বিয়েটাও করিয়ে দিল।
আসলেই কিছু কিছু সময় মানুষ সুখে থাকতে ভুতে কিলায়।দুইটা মেয়ে থাকার পর ও কাকা অন্য একটা বিয়ে করবে এটা মেনে নেয়াটা কঠিন। দেখা যাক তার কপালে কি আছে।