শীতে আগুনের উষ্ণতা
শীত ঋতুটার সাথে বাঙালি জাতির একটা আবেগ যেন জড়িয়ে আছে। এর কারণ শীতের সময় বাঙ্গালীদের বেশ কিছু স্বভাব বা অভ্যাস বা কালচার দেখা যায়। এর মধ্যে অন্যতম কিছু কালচার হল খেজুরের রস খাওয়া, খেজুরের গুড়ের পিঠা খাওয়া, ঠান্ডায় আগুন ধরিয়ে সবাই একসাথে তার ওপরে হাত বা পা রেখে নিজেকে উষ্ণ করা ইত্যাদি। তো বরাবরই আমারও শীত ঋতুটা অনেক ভালো লাগে।
জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকাতে থাকি। বছরে মোটামুটি বলা যায় খুব প্রয়োজন না হলে তিনবার বাড়িতে আসা হয়। এর মধ্যে দুইবার হলো দুটি ঈদ, এবং অন্য আরেকটি হলো শীত। শীতের সময় বাড়িতে বা গ্রামের না আসলে যেন মনে হয় শীতের যে আসল ফিলিংস সেটি পাওয়া যায় না। মানে একরকম মনে হয় যেন ওই বছর আমার শীত ই এলো না। শীতের কুয়াশা দেখার যে ফিলিংস সেটা একমাত্র গ্রামে আসলেই পাওয়া যায়। ভোরবেলা শীতের কুয়াশা, দুপুর বেলা ছাদে উঠে রোদের উষ্ণতায় গোসল করা, সন্ধ্যায় কুয়াশা ভরা ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া, এ সবই যেন শীতের একেবারে অপরিহার্য অংশ।
তো যাই হোক, এই যে শীতের বেলায় আমরা আগুন ধরিয়ে অনেকে একসাথে তার উপরে হাত পা রেখে শরীরটাকে উষ্ণ করি, এটা খুবই একটি আনন্দদায়ক মুহূর্ত বলা যায়। ছোটবেলায় দেখতাম চাচা দাদারা এক জায়গায় সকালে কিছু আগুন করে সেখানে গোল হয়ে বসে শরীরকে প্রশ্ন করে আর নানা ধরনের গল্প গুজব করে। ঠিক সেরকম সেদিন হঠাৎ শীতের রাতে রস খাওয়ার উদ্দেশ্যে মাঠের দিকে গেলাম। সেখানে আমাদের কে রস খাওয়ানোর জন্য যে ব্যক্তি ছিল উনি তার গ্যাস লাইট দিয়ে কিছু শুকনো ঘরে আগুন ধরিয়ে দিলেন, আমরা বেশ দূর থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে গিয়েছিলাম তাই শরীরটা অনেক ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। ওই আগুনের উষ্ণতায় অনেক আরাম লাগছিল। দারুন একটা অনুভূতি। আসলে শীতের আসল মজা বা অনুভূতিগুলোই হলো এগুলো।